প্রধান বাংলা সাহিত্যিক (প্রাচীন যুগ থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববর্তী),
নমুনা প্রশ্ন
প্রধান বাংলা সাহিত্যিক (প্রাচীন যুগ থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববর্তী)
লুইপা
চর্যাপদের কবি ও বৌদ্ধধর্মের একজন প্রবীণ মহাসিদ্ধ। ড. সুকুমার সেনের মতে, তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম কবি। আনুমানিক ৭৩০ থেকে ৮১০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। ভারতীয় মহাসিদ্ধের জীবনী নিয়ে লেখা ‘চতুরাশিতি সিদ্ধ’ গ্রন্থে লুইপাকে চুরাশিজন মহাসিদ্ধের একজন বলা হয়েছে। তিনি সিংহলদ্বীপের এক রাজার ছেলে ছিলেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে, তিনি ভারতের রাঢ় অঞ্চলের লোক। তিনি চর্যাপদের ১ ও ২৯ নং পদের রচয়িতা। কবি লুইপা রচিত চর্যাপদের ১ নং পদ: “কাআ তরুবর পাঞ্চবি ডাল; চঞ্চল চীত্র পইঠো কাল।”
শবরপা
বৌদ্ধধর্মের চুরাশিজন বৌদ্ধ মহাসিদ্ধের একজন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও চর্যাপদের প্রথম বাঙালি কবি। তিব্বতীয় ঐতিহাসিক লামা তারনাথের মতে, তিনি বাঙ্গাল প্রদেশের পর্বতবাসী একজন ব্যাধ বা শিকারি ছিলেন। তার জীবনকাল আনুমানিক ৬৮০ থেকে ৭৬০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি। তিনি চর্যাপদের ২৮ ও ৫০ নং পদের রচয়িতা। কবি শবরপার ২৮ নং পদ: “উষ্ণা উষ্ণা পাবত তহিঁ সবই সবরী বালী; মোরাঙ্গ পীচ্ছ পরিহাণ সরবী গীবত গুঞ্জরী মালী।”
কাহ্নপা
চর্যাপদের প্রধান কবি ও চুরাশিজন বৌদ্ধ মহাসিদ্ধের একজন। অন্য নাম ‘কৃষ্ণপা বা কৃষ্ণাচার্য’। তিব্বতীয় ঐতিহাসিক লামা তারনাথের মতে, ভারতের বিদ্যানগর নামক স্থানে তাঁর বাসস্থান ছিল। খ্রিস্টীয় ৭ম থেকে ৮ম শতাব্দীর মাঝামাঝি তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি চর্যাপদের সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেন। তাঁর রচিত পদসংখ্যা ১৩ টি। তাঁর রচিত চর্যাপদের ২৪ নং পদটি পাওয়া যায়নি।
ভুসুকুপা
চর্যাপদের দ্বিতীয় প্রধান কবি ও বৌদ্ধ সহজিয়া সম্প্রদায়ের একজন। প্রকৃত নাম ‘শান্তিদেব’। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লার মতে, তিনি পূর্ববঙ্গের বাসিন্দা।তাঁর লেখায় বাঙ্গাল দেশ ও বাঙ্গালি কথার উল্লেখ আছে। তিনি নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিয়েছেন। আনুমানিক ৮ম থেকে ৯ম শতাব্দীতে তিনি সৌরাষ্ট্রের ক্ষত্রিয় রাজপুত্র ছিলেন। তিনি চর্যাপদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ লেখেন। তার রচিত পদসংখ্যা ৮ টি। কবি ভুসুকুপার ৬ নং পদ: “অপণা মাংসেঁ হরিণা বৈরী, খনক ন ছাড়াই ভুসুকু অহেরী।”
চন্ডীদাস (১৩৭০-১৪৩০)
মধ্যযুগের প্রথম বাঙালি কবি ও বৈষ্ণব পদাবলির আদি রচয়িতা। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, বাংলা সাহিত্যে চন্ডীদাস তিন জন: বড়– চন্ডীদাস (সবচেয়ে প্রাচীন), দ্বিজ চন্ডীদাস ও দীন চন্ডীদাস (চৈতন্যপরবর্তী যুগের কবি)। শুধু চন্ডীদাস বলতে কাকে বুঝায় তা পন্ডিতগণ আজও নিশ্চিত করতে পারেননি। একে বাংলা সাহিত্যে চন্ডীদাস সমস্যা বলে।
সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য তথ্য মতে, চন্ডীদাস বলতে বাংলা সাহিত্যে বড়–চন্ডীদাসকে বুঝায়। বড়–চন্ডীদাসের প্রকৃত নাম ‘অনন্ত’। ‘বড়–’ কবির কৌলিন্য উপাধি। গুরুপ্রদত্ত নাম ‘চন্ডীদাস’। ১৩৭০ সালে তিনি বীরভূমের নানুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৪৩০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার রচিত রাধা-কৃষ্ণের প্রেমবিষয়ক ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম নিদর্শন।
বিদ্যাপতি (১৩৭৪-১৪৬০)
বৈষ্ণব পদাবলির আদি রচয়িতা ও অবাঙালি কবি। তিনি ১৩৭৪ সালে মিথিলার সীতমারী মহাকুমার বিসফি গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৪৬০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। বিদ্যাপতির মাতৃভাষা ‘মৈথিলি’। তিনি একটি বাংলা পংক্তি না লিখেও বাংলা সাহিত্যের মর্যাদাবান কবি।
তাঁর পদাবলি সাহিত্য ‘ব্রজবুলি’ ভাষায় রচিত। বাংলা, প্রাকৃত ও মৈথিলি ভাষার মিশ্রণে সৃষ্ট একটি কৃত্রিম ভাষার নাম ব্রজবুলি। তিনি এ ভাষার স্রষ্টা। কবি বিদ্যাপতির উপাধি: ‘মিথিলার কোকিল, কবি কণ্ঠহার ও অভিনব জয়দেব’। ‘রাজকণ্ঠের মণিমালা’ তাঁর বিখ্যাত কবিতা। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ: কীর্তিলতা (ইতিহাস), পুরুষ পরীক্ষা (নীতিশিক্ষা) ইত্যাদি।
শাহ মুহম্মদ সগীর (আনুমানিক ১৪-১৫ শতক)
রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার প্রথম কবি ও মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম বাঙালি মুসলমান কবি। তাঁর জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্পর্কে সঠিক কিছু জানা যায় না। তাঁর জীবনকাল ১৪ শতকের শেষভাগ থেকে ১৫ শতকের প্রথমভাগের মাঝামাঝি অনুমান করা হয়।
ড. মুহাম্মদ এনামুল হক তাকে চট্টগ্রামের অধিবাসী বলে মনে করেন। তাঁর রচিত প্রথম ও বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ‘ইউসুফ জোলেখা’। গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে (১৩৮৯-১৪১০) তিনি এ কাব্য রচনা করেন। তিনি গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের রাজকর্মচারী ছিলেন।
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী (১৫৪০-১৬০৪)
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি। তাকে দুঃখ বর্ণনার কবি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তিনি ১৫৪০ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার দামুন্যা গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৬০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। মেদিনীপুরের জমিদার রঘুনাথ রায়ের নির্দেশে তিনি ‘চন্ডীমঙ্গল’ কাব্য রচনা করেন। তিনি চন্ডীমঙ্গল কাব্যধারার প্রধান কবি। জমিদার রঘুনাথ রায় কবিকে ‘কবিকঙ্কণ’ উপাধি দেন।
চন্দ্রাবতী (১৫৫০-১৬০০)
মধ্যযুগের তথা বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি ও রামায়ণের প্রথম মহিলা অনুবাদক। দীনেশচন্দ্র সেনের মতে, তিনি ১৫৫০ সালে কিশোরগঞ্জের পাতোয়ারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং আনুমানিক ১৬০০ সালের দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মনসামঙ্গল কাব্যের অন্যতম রচয়িতা দ্বীজ বংশীদাসের কন্যা। তিনি মৈমনসিংহ গীতিকার ‘চন্দ্রাবতী’ উপাখ্যানের নায়িকা হিসেবে অমর হয়ে আছেন।
আলাওল (১৬০৭-১৬৮০)
মধ্যযুগের উল্লেখযোগ্য মুসলমান কবি ও আরাকান রাজসভার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, আনুমানিক ১৬০৭ সালে ফতেহাবাদ (বর্তমান ফরিদপুর) জেলার জামালপুর অঞ্চলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৬৮০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। কারো কারো মতে, তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার জোবরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাব্যিক আবেগের সাথে বৌদ্ধিক চেতনার মিশ্রণ থাকায় তাকে ‘পন্ডিতকবি’ বলা হয়।
কবি আলাওলের প্রথম ও বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘পদ্মাবতী’। তাঁর রচিত মোট কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা সাতটি: পদ্মাবতী (১৬৪৮), তোহফা (নীতিকাব্য),সিকান্দারনামা, সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল, সপ্ত পয়কর, সতীময়না লোরচন্দ্রানী (তৃতীয় খন্ড ) ও রাগতালনামা (সঙ্গীতবিষয়ক কাব্য)।
ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর (১৭১২-১৭৬০)
অন্নদামঙ্গল কাব্যধারার শ্রেষ্ঠ কবি ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের সর্বশেষ কবি। তাকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম নাগরিক কবি বলা হয়। তিনি ১৭১২ সালে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার পেঁড়ো গ্রামে এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৭৬০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর সাথে সাথে বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগের সমাপ্তি ঘটে এবং যুগ সন্ধিক্ষণ শুরু হয়। তিনি নদীয়ার কৃষ্ণনগর রাজসভার কবি ছিলেন।
নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আদেশে তিনি ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য রচনা করেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কবিকে ‘রায়গুণাকর’ উপাধি দেন। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্য: সত্যপীরের পাঁচালি, সত্য নারায়ণের পাঁচালি, নগাষ্টক ইত্যাদি।
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (১৮১২-১৮৫৯)
বাংলা সাহিত্যের যুগ সন্ধিক্ষণের কবি ও সাংবাদিক। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম পরিবেশ সচেতন কবি। তাঁর হাত ধরে মধ্যযুগের গন্ডি পেরিয়ে বাংলা সাহিত্য আধুনিক রূপ লাভ করেছিল। তিনি ১৮১২ সালে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার কাঞ্চনপল্লি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৫৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের রচনায় মধ্যযুগীয় ও আধুনিক ভাবধারা উভয়ই লক্ষ্য করা যায়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁকে ‘খাঁটি বাঙালি কবি’ বলে অভিহিত করেছেন। ১৮৩১ সালে তিনি সাপ্তাহিক ‘সম্বাদ প্রভাকর’ পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং ১৮৩৯ সালে এটি দৈনিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়। ‘সম্বাদ প্রভাকর’ বাংলা ভাষার প্রথম দৈনিক পত্রিকা।
উইলিয়াম কেরি (১৭৬১-১৮৩৪)
ইংরেজ ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি, আধুনিক বাংলা গদ্যরীতির পথিকৃৎ ও বাইবেলের প্রথম বাংলা অনুবাদক। তিনি ১৭৬১ সালে ১৭ আগস্ট ইংল্যান্ডের নর্দানটন শায়ারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৩৪ সালে ৯ জুন কলকাতার শ্রীরামপুরে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৭৯৩ সালে ভারতবর্ষে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আসেন এবং ১৮০০ সালে ১০ জানুয়ারি কলকাতায় ‘শ্রীরামপুর মিশন’ প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি শ্রীরামপুর মিশনের পাদ্রি বা ধর্মযাজক ছিলেন। ১৮০১ সালে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ও বাংলা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নিযুক্ত হন। এ কলেজকে কেন্দ্র করেই আধুনিক বাংলা গদ্যসাহিত্যের যাত্রা শুরু হয়। তিনি পাঠ্যপুস্তকে প্রথম বাংলা গদ্যসাহিত্যের ব্যবহার করেন।
সাহিত্যকর্ম
গদ্যগ্রন্থ: কথোপকথন (১৮০১), ইতিহাসমালা (১৮১২)
ব্যাকরণ: A Grammar of Bengali Language (১৮০১)
রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩১)
হিন্দুধর্মের মহান সংস্কারক, ভাষাবিদ, প্রাবন্ধিক ও বাঙালি দার্শনিক। তিনি ১৭৭২ সালে ২২ মে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ১৮৩৩ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই সমাহিত হন। তিনি ১৮২৮ সালে ‘ব্রাহ্মসমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মসমাজের মুখ্য প্রচারক ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধকরণ ও বিধবা বিবাহ প্রচলনের স্বপক্ষে জোর প্রচারণা চালান।
১৮২৯ সালের তার প্রচেষ্টায় লর্ড বেন্টিংক সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন। রামমোহন রায় পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষায় প্রবন্ধ রচনায় প্রথম কৃতিত্ব দেখান এবং পাঠ্যপুস্তকের বাইরে প্রথম বাংলা গদ্যের ব্যবহার করেন। ১৮১৫ সালে তিনি তার ‘বেদান্ত’ প্রবন্ধগ্রন্থে প্রথম সাধু ভাষা ব্যবহার করেন। তিনি বাঙালিদের মধ্যে প্রথম বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন।
সাহিত্যকর্ম
প্রবন্ধগ্রন্থ: বেদান্তগ্রন্থ, ভট্টাচার্যের সহিত বিচার, গোস্বামীর সহিত বিচার, প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ
ব্যাকরণ: Bengali Grammar in English Language (১৮২৬), গৌড়ীয় ব্যাকরণ (১৮৩৩)
সম্পাদিত পত্রিকা: সম্বাদ কৌমুদী, মিরাতুল আখবার
লালন শাহ (১৭৭২-১৮৯০)
বাউল গানের গুরু, শ্রেষ্ঠ বাউল গান রচয়িতা ও গায়ক। তাঁর বাউল গানগুলো বাংলা লোকসাহিত্যের বিশেষ উপাদান। তিনি ১৭৭২ সালে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ড উপজেলার হরিশপুর গ্রামে (মতান্তরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ভাঁড়রা গ্রামে) এক কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৯০ সালে ১৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াতে নিজের আখড়ায় পরলোক গমন করেন।
তাঁর প্রকৃত নাম লালন চন্দ্রকর। লালন নিজের সম্পর্কে কখনও কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি। তাঁর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। তিনি ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের শাস্ত্র সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ করেন। লালন কোনো জাতিভেদ মানতেন না। তিনি ছিলেন একজন মানবতাবাদী; যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছেন। যৌবনকালে তিনি মুসলমান ফকির সিরাজ সাঁইয়ের সংস্পর্শে আসেন এবং তাঁর দ্বারা প্রভাবিত হন।
তিনি অসাম্প্রদায়িক ও আধ্যাত্মিক ভাবধারায় প্রায় দু হাজার গান রচনা করেন। জীবিতাবস্থায় লালনের লেখা গানের কোনো পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর পরে তাঁর শিষ্যরা তাঁর রচিত গানগুলো সংগ্রহ করেন। কাঙাল হরিনাথ লালনের প্রিয় শিষ্য ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের গানের ভক্ত ছিলেন। তিনি লালনের ২৯৮ টি গান সংগ্রহ করেন এবং সেগুলো থেকে ২০ টি গান ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়াতে লালনের আখড়া অবস্থিত।
সাহিত্যকর্ম
বিখ্যাত গান: আমি অপার হয়ে বসে আছি, সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে, খাঁচার ভিতর অচিন পাখি, বাড়ির পাশে আরশিনগর, সময় গেলে সাধন হবে না, তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে, এসব দেখি কানার হাটবাজার, মিলন হবে কত দিনে, সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন ইত্যাদি।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১)
সমাজ সংস্কারক, সংস্কৃত পণ্ডিত, বাঙালি শিক্ষাবিদ ও গদ্যকার। তাঁকে বাংলা গদ্যসাহিত্য ও সাধুরীতির জনক বলা হয়। তিনি শিশু শিক্ষামূলক বাংলা গ্রন্থের পথিকৃৎ। তিনি ১৮২০ সালে ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২৯ জুলাই ১৮৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর পৈতৃক পদবি ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’। তিনি ‘ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা’ নামে স্বাক্ষর করতেন। ১৮৪০ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে তিনি ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি পান।
তিনি বিধবা বিবাহের সপক্ষে এবং বহুবিবাহের বিপক্ষে ছিলেন। ১৮৫৬ সালে তাঁর প্রচেষ্টায় হিন্দু সমাজে ‘বিধবা বিবাহ আইন’ প্রবর্তিত হয়। ১৮৭০ সালে তিনি তার পুত্র নারায়ণচন্দ্রকে এক বিধবার সাথে বিয়ে দেন। কলকাতার ‘বেথুন কলেজ’ তাঁর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি বাংলা গদ্যে সর্বপ্রথম বিরাম চিহ্নের প্রচলন করেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’। এ গ্রন্থে তিনি সর্বপ্রথম বিরাম চিহ্নের সফল প্রয়োগ করেন।
সাহিত্যকর্ম
শিশুতোষ গ্রন্থ: বোধোদয় (১৮৫১), বর্ণ পরিচয় (২ খন্ড, ১৮৫৫)
মৌলিক গ্রন্থ: বিদ্যাসাগর চরিত (১৮৯১, বাংলা ভাষার প্রথম আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ; মরণোত্তর প্রকাশিত), প্রভাবতী সম্ভাষণ (বাংলা গদ্যসাহিত্যের প্রথম শোকগাঁথা), অতি অল্প হইল, আবার অতি অল্প হইল, ব্রজবিলাস, শব্দমঞ্জরী
অনূদিত গ্রন্থ: বেতাল পঞ্চবিংশতি (১৮৪৭): হিন্দি ভাষায় লল্লুলাল রচিত ‘বেতাল পচ্চিসী’ এর অনুবাদ।
শকুন্তলা (১৮৫৪): সংস্কৃত ভাষায় কালিদাসের ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ এর অনুবাদ।
সীতার বনবাস (১৮৬০): সংস্কৃত ভাষায় বাল্মীকির ‘রামায়ণ’ অবলম্বনে রচিত।
ভ্রান্তিবিলাস (১৮৬৯): শেক্সপিয়ারের ‘Comedy of Errors’ এর অনুবাদ।
বোধোদয় (১৮৫১): ইংরেজি ভাষায় চেম্বার্সের ‘Rudiment of Knowledge’ অবলম্বনে রচিত।
কথামালা (১৮৫৬): গ্রিক ভাষায় ঈশপের ‘ফেবলস’ অবলম্বনে রচিত।
ব্যাকরণ: ব্যাকরণ কৌমুদী (১৮৫৩)
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩)
বাংলা সাহিত্যের যুগ প্রবর্তক কবি ও নাট্যকার। তিনি ১৮২৪ সালে ২৫ জানুয়ারি যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে কপোতাক্ষ নদের তীরে এক জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৭৩ সালে ২৯ জুন কলকাতার আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর পিতা রাজনারায়ণ দত্ত; মাতা জাহ্নবী দেবী। ১৩ বছর বয়সে তিনি কলকাতা যান এবং হিন্দু কলেজে ভর্তি হন।১৮৪৩ সালে ১৯ বছর বয়সে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন এবং মাইকেল নামধারণ করেন।
হিন্দু কলেজে খ্রিস্টানদের অধ্যয়ন নিষিদ্ধ থাকায় তাকে কলেজ ত্যাগ করতে হয়। ১৮৪৮ সালে ২৪ বছর বয়সে তিনি মাদ্রাজের উদ্দেশ্যে কলকাতা ত্যাগ করেন। মাদ্রাজে অবস্থানকালে তিনি Timothy Penpoem ছদ্মনামে ইংরেজিতে কবিতা লিখতেন। ১৮৪৯ সালে এ ছদ্মনামে তাঁর প্রথম ইংরেজি কাব্য The Captive Ladie প্রকাশিত হয়। ১৮৫৯ সালে বাংলা ভাষায় তার প্রথম গ্রন্থ ‘শর্মিষ্ঠা’ প্রকাশিত হয়।
১৮৬৩ সালে ব্যারিস্টারি পড়া বাদ দিয়ে প্যারিস যান এবং ভার্সাই নগরে বসবাস শুরু করেন। সেখানে বসে তিনি ইতালির কবি পেত্রার্ক ও ইংরেজ কবি শেক্সপিয়ারের অনুকরণে সনেট লেখা শুরু করেন। ১৮৬৭ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
মধুসূদনের পূর্বে বাংলা কবিতায় পয়ার ছন্দ প্রচলিত ছিল। পয়ার ছন্দে এক চরণের পরে অন্য চরণের মিল থাকে। তিনি পয়ার ছন্দপ্রথা ভেঙে দিয়ে বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তন করেন। এটি ১৪ মাত্রার অমিল প্রবাহমান যতিস্বাধীন অক্ষরবৃত্ত ছন্দ। মধূসূদন মোট ১০২ টি সনেট রচনা করেছেন।
তাঁর রচিত প্রথম ও বাংলা সাহিত্যের প্রথম সনেট ‘বঙ্গভাষা’। মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বলা হয়: বাংলা সাহিত্যের বিপ্লবী ও আধুনিক কবি; অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক; প্রথম আধুনিক ও সার্থক নাট্যকার; বাংলা সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতার প্রবর্তক; প্রথম প্রহসন রচয়িতা; প্রথম আধুনিক মহাকাব্য রচয়িতা; প্রথম সার্থক ট্রাজেডি, কমেডি ও পত্রকাব্য রচয়িতা।
সাহিত্যকর্ম
নাটক: শর্মিষ্ঠা (১৮৫৯): বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাটক। এটি কালিদাস রায়কে উৎসর্গ করেন।
পদ্মাবতী (১৮৬০): বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক কমেডি। এ নাটকে প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রয়োগ ঘটে।
কৃষ্ণকুমারী (১৮৬১): বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্রাজেডি।
মায়াকানন: মৃত্যুর পরে প্রকাশিত তাঁর সর্বশেষ নাটক।
কাব্য: The Captive Ladie (১৮৪৯): ইংরেজিতে লেখা তার প্রথম কাব্য
তিলোত্তমাসম্ভব (১৮৬০): বাংলায় লেখা তাঁর প্রথম কাহিনীকাব্য। এটি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ।
চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৮৬৬): বাংলা সাহিত্যের প্রথম সনেট সংকলন (১০২ টি সনেটের সংকলন)
বীরাঙ্গনা (১৮৬২): বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রকাব্য। এটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে উৎসর্গ করেন।
মেঘনাদবধ (১৮৬১): অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য। এ মহাকাব্যে ৯ টি সর্গ বিদ্যমান। কাহিনীর উৎস বাল্মীকির সংস্কৃত মহাকাব্য ‘রামায়ণ’।
ব্রজাঙ্গনা (১৮৬১): বৈষ্ণব পদাবলির আধুনিক পরিণতি এই কাব্যে বিধৃত হয়েছে। এটি একটি গীতিকাব্য। এটি ব্যতীত তাঁর সকল কাব্য অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখা।
প্রহসন: বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ (১৮৬০): বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রহসন
একেই কি বলে সভ্যতা (১৮৬০)
দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০-১৮৭৩)
মধুসূদনের সমসাময়িক বাংলা নাটকের অন্যতম রূপকার। তিনি ঐতিহাসিক বা পৌরাণিক নাটক রচনা না করে বাস্তবধর্মী ও সামজিক নাটক রচনা করেন। তিনি ১৮৩০ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার চৌবেড়িয়া গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৭৩ সালে ১ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বাল্যনাম ‘গন্ধর্বনারায়ণ’ এবং উপাধি ‘রায়বাহাদুর’। ইংরেজ নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লেখা তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ঠ নাটক ‘নীলদর্পণ’ (১৮৬০)। নাটকটির প্রথম ইংরেজি অনুবাদক মাইকেল মধুসূদন দত্ত।নাটক ছাড়াও তিনি সমকালীন হিন্দুসমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রহসন রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন।
সাহিত্যকর্ম
নাটক: লীলাবতী (সামাজিক), কমলে কামিনী (রোমান্টিক নাটক ও তাঁর শেষ রচনা), নীলদর্পণ, নবীন তপস্বিনী
প্রহসন: সধবার একাদশী (সামাজিক), বিয়ে পাগলা বুড়ো, জামাই বারিক
বিহারীলাল চক্রবর্তী (১৮৩৫-১৮৯৪)
আধুনিক বাংলা গীতিকাব্যের প্রথম ও প্রধান কবি। তিনি রবীন্দ্রনাথের কাব্যগুরু ছিলেন। ১৮৩৫ সালে ২১ মে তিনি কলকাতার নিমতলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৯৪ সালে ২৪ মে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা খুব বেশি নয়। নিজ উদ্যোগে তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা করেন। প্রকৃতি, রোমান্টিকতা, সঙ্গীতের উপস্থিতি, সহজ-সরল ভাষার ব্যবহার তার কাব্যকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছে।
তাঁর প্রথম কাব্য স্বপ্নদর্শন (১৮৫৮) এবং শ্রেষ্ঠ গীতিকাব্য ‘সারদামঙ্গল’ (১৮৭৯)। রবীন্দ্রনাথ সারদামঙ্গল কাব্যটি পড়ে প্রভাবিত হয়েছেন এবং বিহারীলালকে বাংলা সাহিত্যে ‘ভোরের পাখি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সাহিত্যকর্ম
কাব্য: স্বপ্নদর্শন, বন্ধুবিয়োগ, বঙ্গসুন্দরী, সারদামঙ্গল, নিসর্গসন্দর্শন, প্রেম প্রবাহিনী, সাধের আসন
সম্পাদিত পত্রিকা: পূর্ণিমা, সাহিত্য সংক্রান্তি, অবোধবন্ধু
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪)
বাংলা সাহিত্যের সার্থক ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক। তাঁকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়। সাহিত্যের রসবোদ্ধাদের নিকট তিনি ‘সাহিত্যসম্রাট’ উপাধি এবং হিন্দুদের কাছ থেকে ‘ঋষি’ আখ্যা লাভ করেন। তিনি বাংলা ভাষার তুলনামূলক সমালোচনা সাহিত্যের প্রথম রচয়িতা। তিনি ১৮৩৮ সালে ২৬ জুন পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার কাঁঠালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৯৪ সালে ৮ এপ্রিল কলকাতায় বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর পিতা যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ছদ্মনাম ‘কমলাকান্ত’। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গ্রাজুয়েট এবং পেশায় ছিলেন যশোরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। ১৮৫৮ থেকে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত (৩৩ বছর) তিনি এ পদে চাকরি করেন। ১৮৫২ সালে তিনি প্রথম ‘সম্বাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় কবিতা লিখে সাহিত্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। বাংলা ভাষায় তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস ও বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক উপন্যাস ‘দুর্গেশনন্দিনী’ (১৮৬৫)। তিনি বঙ্গদর্শন (১৮৭২) পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন।
বঙ্কিমচন্দ্রের পরে তাঁর ভ্রাতা সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন। তিনি তাঁর ‘সাম্য’ গ্রন্থটি বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেন। তাঁর কপালকুন্ডলা উপন্যাসের “পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ” কপালকুন্ডলার এ সংলাপটিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক সংলাপ বলা হয়। তার রচিত মোট বাংলা উপন্যাসের সংখ্যা ১৪ টি।
সাহিত্যকর্ম
প্রবন্ধগ্রন্থ: লোকরহস্য (১৮৭৪, ব্যঙ্গরচনা), কমলাকান্তের দপ্তর (১৮৭৫, ব্যঙ্গরচনা), সাম্য (১৮৭৯), কৃষ্ণচরিত্র, বিজ্ঞান রহস্য
কাব্য: ললিতা ও মানস
উপন্যাস: Rajmohon’s Wife (১৮৬২): ইংরেজি ভাষায় রচিত লেখকের প্রথম উপন্যাস।
দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫): লেখকের ও বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস।
কপালকুন্ডলা (১৮৬৬): বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক উপন্যাস।
রজনী (১৮৭৭): বাংলা সাহিত্যের প্রথম মনস্তাত্তি¡ক বিশ্লেষণমূলক গ্রন্থ।
কৃষ্ণকান্তের উইল ও বিষবৃক্ষ: সামাজিক উপন্যাস। ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ (১৮৭৮) তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরাণী ও সীতারাম: এয়ী উপন্যাস। ‘দেবী চৌধুরাণী’ উপন্যাসে তিনি তাঁর ‘বন্দে মাতরম’ সংগীতটি সংযোজন করেন। ‘আনন্দমঠ’ ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় রচিত দেশপ্রেমমূলক উপন্যাস।
মৃণালিনী: ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাঙালি ও তুর্কি আক্রমণের পটভূমিতে রচিত রাজনৈতিক উপন্যাস।
রাজসিংহ: ঐতিহাসিক উপন্যাস।
চন্দ্রশেখর: এতে মীর কাসিমের সাথে ইংরেজদের সংগ্রামের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
ইন্দিরা, রাধারানী, যুগলাঙ্গুরীয়।
মীর মশাররফ হোসেন (১৮৪৭-১৯১২)
ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি ১৮৪৭ সালে ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯১২ সালে ১৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম গদ্যলেখক। তিনি ‘গাজী মিয়া’ ছদ্মনামে লিখতেন। কাঙাল হরিনাথ তাঁর সাহিত্যগুরু ছিলেন।
কর্মজীবনে তিনি ‘সংবাদ প্রভাকর ও গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। তাঁর সম্পাদিত পত্রিকা ‘আজীজন নেহার’ (১৮৭৪), ‘হিতকরী’ (১৮৯০)। তিনি ‘গো-জীবন’ প্রবন্ধগ্রন্থ লেখার জন্য মামলায় জড়িয়ে পড়েন। ১৮৬৯ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘রত্নবতী’ প্রকাশিত হয়। তাঁর শ্রেষ্ট রচনা ও শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘বিষাদ সিন্ধু’ (১৮৮৫-১৮৯১)।
সাহিত্যকর্ম
উপন্যাস: রত্নবতী, বিষাদ সিন্ধু (কারবালার কাহিনী অবলম্বনে রচিত ৩ পর্বের উপন্যাস: মহরম পর্ব, উদ্ধার পর্ব ও এজিদ বধ পর্ব), উদাসীন পথিকের মনের কথা (নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনী অবলম্বনে রচিত আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস)
নাটক: বসন্তকুমারী (১৮৭৩, মুসলমান লেখক রচিত প্রথম নাটক), জমিদার দর্পণ (১৮৭৩), বেহুলা গীতাভিনয় (গদ্যে-পদ্যে রচিত)।
প্রহসন: এর উপায় কী? (১৮৭৫, মুসলমান লেখক রচিত প্রথম প্রহসন), ভাই ভাই এইতো চাই, টালা অভিনয়
প্রবন্ধগ্রন্থ: গো-জীবন (১৮৮৯)
আত্মজীবনী:গাজী মিয়ার বস্তানী (ব্যঙ্গ-রসাত্মক)
কাব্য: মোসলেম বীরত্ব (১৯০৭)
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী (১৮৫৩-১৯৩১)
গবেষক, শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ ও চর্যাপদের আবিষ্কর্তা। তিনি ১৮৫৩ সালে ৬ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার নৈহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৩১ সালে ১৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তার মূল নাম ‘হরপ্রসাদ ভট্টাচার্য’। ১৯০৭ সালে তিনি নেপালের রাজ গ্রন্থশালা (রয়েল লাইব্রেরি) থেকে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ উদ্ধার করেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণায় এটাই তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি।
তিনি ১৯২১ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৮৯৮ সালে তিনি ‘মহামহোপাধ্যায়’ উপাধি এবং ১৯২৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডি-লিট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯১৬ সালে কলকাতার ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’ থেকে ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে আবিষ্কৃত চর্যাপদের ৪টি পুঁথি সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন।
সাহিত্যকর্ম
উপন্যস: বেণের মেয়ে, কাঞ্চনমালা
প্রবন্ধগ্রন্থ: বাল্মীকির জয়, প্রাচীন বাংলার গৌরব ও বৌদ্ধধর্ম
সম্পাদিত গ্রন্থ: হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা
কায়কোবাদ (১৮৫৭-১৯৫১)
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বাঙালি মুসলমান কবি ও আধুনিক মহাকাব্য ধারার শেষ কবি। তিনি ১৮৫৭ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার আগলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৫১ সালে ২১ জুলাই ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম ‘কাজেম আল কোরেশী’। তিনি বাঙালি মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রথম মহাকাব্য ও সনেট রচয়িতা।
১৮৭০ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে তার প্রথম কাব্য ‘বিরহ বিলাপ’ প্রকাশিত হয়। ১৭৬১ সালে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের কাহিনী অবলম্বনে রচিত তাঁর বিখ্যাত মহাকাব্য ‘মহাশ্মশান’ (১৯০৪)। ১৯৩২ সালে তিনি ‘নিখিল ভারত সাহিত্য সংঘ’ কর্তৃক কাব্যভূষণ, বিদ্যাভূষণ ও সাহিত্যরত্ন উপাধি পান।
সাহিত্যকর্ম
গীতিকাব্য: অশ্রুমালা
মহাকাব্য: মহাশ্মশান (৩ খন্ড; ৬০ সর্গে বিভক্ত বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় মহাকাব্য)
কাব্য: বিরহ বিলাপ, কুসুমকানন, শিবমন্দির, অমিয়ধারা, শ্মশানভস্ম
নমুনা প্রশ্ন
১. ‘রাজবন্দীর জবানবন্দি’ কাজী নজরুলের কোন ধরনের রচনা?
ক) উপন্যাস
খ) ছোটগল্প
গ) নাটক
ঘ) প্রবন্ধ
উত্তর: ঘ
২. কাজী নজরুল ইসলাম আমৃত্যু নির্বাক হয়ে যান কত বছর বয়সে?
ক) ৪০ বছরে
খ) ৪২ বছরে
গ) ৪১ বছরে
ঘ) ৪৩ বছরে
উত্তর: ঘ
৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোন স্কুলটি নজরুলের সাথে যুক্ত?
ক) মনিপুর হাইস্কুল
খ) দরিরামপুর হাইস্কুল
গ) মনিরামপুর হাইস্কুল
ঘ) মির্জাপুর হাইস্কুল
উত্তর: খ
৪. কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত পত্রিকা কোনটি?
ক) নবযুগ
খ) শিখা
গ) সবুজপত্র
ঘ) কল্লোল
উত্তর: ক
৫. কাজী নজরুল ইসলাম কোন তারিখে মৃত্যুবরণ করেন?
ক) ২৫ মে
খ) ১৫ আগস্ট
গ) ২৯ আগস্ট
ঘ) ২২ সেপ্টেম্বর
উত্তর: গ
৬. কাজী নজরুল ইসলাম সম্বন্ধে কোনটি সঠিক?
ক) তিনি চিত্রশিল্পী
খ) মহাকাব্য রচয়িতা
গ) তিনি ক্রিড়াবিদ
ঘ) তিনি অভিনেতা
উত্তর: ঘ
৭. কখন থেকে কবি নজরুল ইসলাম সৃষ্টিশীল সত্তার অধিকারী হয়ে ওঠেন?
ক) গ্রামের মক্তবে পড়ার সময়
খ) লেটো গানের দলে যোগ দেয়ার সময়
গ) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময়
ঘ) বাঙালি পল্টনে যোগ দেওয়ার পর
উত্তর: খ
৮. বঙ্কিমচন্দ্র যে পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন –
ক) সবুজপত্র
খ) ভারতী
গ) বঙ্গদর্শন
ঘ) দিগদর্শন
উত্তর: গ
৯. বঙ্কিমচন্দ্র পেশায় কী ছিলেন?
ক) শিক্ষক
খ) সাংবাদিক
গ) ম্যাজিস্ট্রেট
ঘ) আইনজীবী
উত্তর: গ
১০. বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস কোনটি?
ক) কৃষ্ণকান্তের উইল
খ) বিষবৃক্ষ
গ) দুর্গেশনন্দিনী
ঘ) কপালকুন্ডলা
উত্তর: গ
১১. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম-মৃত্যু সাল কোনটি?
ক) ১৮৩৮-১৮৯৪
খ) ১৮৩৬-১৮৯৬
গ) ১৮২৮-১৮৯৫
ঘ) ১৮৫৮-১৮৯৮
উত্তর: ক
১২. সুফিয়া কামালের রচিত গ্রন্থ কোনটি?
ক) অর্কেস্ট্রা
খ) চোরাবালি
গ) বলাকা
ঘ) কেঁয়ার কাটা
উত্তর: ঘ
১৩. ‘ইতল বিতল’ সুফিয়া কামালের কী জাতীয় রচনা?
ক) স্মৃতিকথা
খ) শিশুতোষ
গ) ভ্রমণকাহিনী
ঘ) কল্পকাহিনী
উত্তর: খ
১৪. রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রচিত গ্রন্থ কোনটি?
ক) নন্দিত নরকে
খ) মায়াকাজল
গ) মতিচূর
ঘ) পারাপার
উত্তর: গ
১৫. “ধান্য তার বসুন্ধরা যার।” এ কথা কে বলেছেন?
ক) রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ) কাজী নজরুল ইসলাম
ঘ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তর: খ
১৬. জীবনানন্দ দাশ রচিত উপন্যাস কোনটি?
ক) কবিতার কথা
খ) মহাপৃথিবী
গ) ধূসর পান্ডুলিপি
ঘ) মাল্যবান
উত্তর: ঘ
১৭. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনানন্দ দাশকে কী বলে আখ্যায়িত করেছেন?
ক) নির্জনতার কবি
খ) চিত্ররূপময় কবি
গ) তিমির হননের কবি
ঘ) নির্বাক কবি
উত্তর: গ
১৮. জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ নয় কোনটি?
ক) সাতভাই চম্পা
খ) সাতটি তারার তিমির
গ) ধুসর পান্ডুলিপি
ঘ) বনলতা সেন
উত্তর: ক
১৯. বিভূতিভূষণ রচিত গ্রন্থ নয় কোনটি?
ক) পথের পাঁচালি
খ) মৌরিফুল
গ) পদ্মাবতী
ঘ) অপরাজিতা
উত্তর: গ
২০. বাংলা ভাষায় রচিত মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রথম গ্রন্থ –
ক) ক্যাপটিভ লেডি
খ) কৃষ্ণকুমারী
গ) পদ্মাবতী
ঘ) শর্মিষ্ঠা
উত্তর: ঘ
২১. মধুসূদনের কোন কাব্যে প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের সার্থক প্রয়োগ করা হয়?
ক) বীরাঙ্গনা
খ) মায়াকানন
গ) তিলোত্তমাসম্ভব
ঘ) মেঘনাদবধ
উত্তর: গ
২২. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
ক) প্যারিসে
খ) মাদ্রাজে
গ) কলকাতায়
ঘ) যশোরে
উত্তর: গ
২৩. সনেটের পর্ব সংখ্যা কতটি?
ক) ১ টি
খ) ২ টি
গ) ৩ টি
ঘ) ৪ টি
উত্তর: খ
২৪. বাল্মীকি-রামায়ণকে নব মূল্যায়নের মাধ্যমে মেঘনাদবধ কাব্যে মধুসূদন হীনরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন কোন চরিত্রগুলোকে?
ক) রাবণ-মেঘনাদকে
খ) রাম-ল²ণকে
গ) রাবণ-বিভীষণকে
ঘ) রাম-রাবণকে
উত্তর: খ
২৫. মোতাহের হোসেন চৌধুরী বিশেষভাবে স্বরণীয় কোন আন্দলনের জন্য?
ক) বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন
খ) স্বদেশী আন্দোলন
গ) ফরায়েজি আন্দোলন
ঘ) স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আন্দোলন
উত্তর: ক
২৬. নিচের কোনটি আহসান হাবীবের কাব্যগ্রন্থ নয়?
ক) মেঘ বলে চৈত্রে যাবো
খ) দুই হাতে দুই আদিম পাথর
গ) সারাদুপুর
ঘ) রানী খালের সাঁকো
উত্তর: ঘ
২৭. আহসান হাবীব একাধারে ছিলেন –
ক) সাংবাদিক ও সমালোচক
খ) সাংবাদিক ও শিক্ষক
গ) সাংবাদিক ও সমাজকর্মী
ঘ) সাংবাদিক ও কবি
উত্তর: ঘ
২৮. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম ছোটগল্প কোনটি?
ক) সরীসৃপ
খ) টিকটিকি
গ) নাতজামাই
ঘ) অতসী মামী
উত্তর: ঘ
২৯. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈত্রিক বাড়ি ঢাকার কোন জেলায়?
ক) মানিকগঞ্জে
খ) মুন্সিগঞ্জে
গ) নারায়ণগঞ্জে
ঘ) ময়মনসিংহে
উত্তর: খ
৩০. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতৃপ্রদত্ত নাম কী?
ক) সুবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
খ) বরুণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
গ) প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
ঘ) প্রবীণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তর: গ
৩১. সুকান্ত ভট্টাচার্য কত বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন?
ক) ১৯
খ) ২১
গ) ২৭
ঘ) ২২
উত্তর: খ
৩২. সুকান্ত ভট্টাচার্য কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ক) ঢাকায়
খ) কলকাতায়
গ) বরিশালে
ঘ) আসামে
উত্তর: খ
৩৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী লেখায় কে সবচেয়ে বেশি প্রেরণা দিয়েছেন?
ক) শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব
খ) শেখ নাসের
গ) শেখ হাসিনা
ঘ) শেখ জামাল
উত্তর: ক
৩৪. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘জুলিও কুরি’ পদকে ভূষিত হন –
ক) ১৯৭২ সালে
খ) ১৯৭৩ সালে
গ) ১৯৭৪ সালে
ঘ) ১৯৭৫ সালে
উত্তর: ক
৩৫. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম তারিখ কোনটি?
ক) ১৭ মে, ১৯২০
খ) ১৭ এপ্রিল, ১৯২০
গ) ১৭ মার্চ, ১৯২০
ঘ) ২৭ মার্চ, ১৯২০
উত্তর: গ
৩৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন?
ক) বাংলা
খ) ইতিহাস
গ) রাষ্ট্রবিজ্ঞান
ঘ) আইন
উত্তর: ঘ
৩৭. ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে কত সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জীবনী স্থান পেয়েছে?
ক) ১৯৫২
খ) ১৯৫৫
গ) ১৯৭১
ঘ) ১৯৬৯
উত্তর: খ
৩৮. শামসুর রাহমান কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ক) চট্টগ্রামে
খ) নরসিংদীতে
গ) বগুড়ায়
ঘ) ঢাকায়
উত্তর: ঘ
৩৯. শামসুর রাহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগের ছাত্র ছিলেন?
ক) বাংলা
খ) ইংরেজি
গ) আইন
ঘ) রসায়ন
উত্তর: খ
৪০. মুক্তিযুদ্ধকালে শামসুর রাহমান কোন ছদ্মনামে লিখতেন?
ক) নীললোহিত
খ) জরাসন্ধ
গ) ভানুসিংহ
ঘ) মজলুম আদিব
উত্তর: ঘ
৪১. শামসুর রাহমানের সম্পর্কে নিচের কোন উক্তিটি যথার্থ?
ক) তিনি রোমান্টিক কবি
খ) তিনি বিপ্লবী কবি
গ) তিনি পরিবেশ সচেতন কবি
ঘ) তিনি নাগরিক কবি
উত্তর: ঘ
৪২. মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত শামসুর রাহমানের কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে –
ক) ৫০ টি
খ) ৬০ টি
গ) ৫৫ টি
ঘ) ৬৫ টি
উত্তর: ঘ
৪৩. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন বঙ্গাব্দে মৃত্যুবরণ করেন?
ক) ১২৬৮
খ) ১৪৩৮
গ) ১৩৩৮
ঘ) ১৩৪৮
উত্তর: ঘ
৪৪. কোনটি রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস?
ক) বলাকা
খ) শেষের কবিতা
গ) ডাকঘর
ঘ) কালান্তর
উত্তর: খ
৪৫. বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ছোটগল্প কোনটি?
ক) হৈমন্তী
খ) ভিখারিনী
গ) দেনাপাওনা
ঘ) ল্যাবরেটরি
উত্তর: গ
৪৬. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কুষ্টিয়ার শিলাইদহে বসবাস করেছিলেন কেন?
ক) সাহিত্য সাধনার জন্য
খ) প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকার জন্য
গ) জমিদারি দেখাশোনার জন্য
ঘ) দেশবিভাগের জন্য
উত্তর: গ
৪৭. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা কোন মাসের কত তারিখে জন্মগ্রহণ করেন?
ক) ২৫ বৈশাখ
খ) ২২ শ্রাবণ
গ) ২৯ জ্যৈষ্ঠ
ঘ) ২৩ শ্রাবন
উত্তর: ক
৪৮. রবীন্দ্র কাব্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক) প্রকৃতির পটে জীবনকে স্থাপন
খ) ব্যক্তিস্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ
গ) ঈশ্বরের শক্তির প্রকাশ
ঘ) আধ্যাত্মবাদ উপস্থাপন
উত্তর: ক
৪৯. রবীন্দ্রনাথের জীবিতকালে প্রকাশিত সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ কোনটি?
ক) শেষ লেখা
খ) জন্মদিনে
গ) ক্ষণিকা
ঘ) বলাকা
উত্তর: খ
৫০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা নয় কোনটি?
ক) চার অধ্যায়
খ) রাজসিংহ
গ) চতুরঙ্গ
ঘ) নৌকাডুবি
উত্তর: খ
তথ্যসূত্র:
১. শামসুজ্জামান খান, সেলিনা হোসেন ও অন্যান্য, চরিতাভিধান (বাংলা একাডেমি, জুন ১৯৮৫)
২. হুমায়ূন আজাদ, লাল নীল দীপাবলী বা বাংলা সাহিত্যের জীবনী (১৯৭৬)
৩. মনিরুজ্জামান, বাংলা সাহিত্য : অতীত ও উত্তরকাল (বাংলা একাডেমি, মে ২০০৩)
৪. ক্ষেত্র গুপ্ত, বাংলা সাহিত্যের সমগ্র ইতিহাস (কলকাতা ২০০১)
৫. ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বাংলা সাহিত্য পরিচয় (কলকাতা ২০০৮)
৬. ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (অগ্নি পাবলিকেশন্স, এপ্রিল ২০০৪)
৭. ড. হায়াৎ মামুদ, ভাষাশিক্ষা : বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (২০০৪)