ধ্বনি পরিবর্তন, সন্ধি, নমুনা প্রশ্ন
ধ্বনির পরিবর্তন
ভাষা পরিবর্তনশীল। ভাষার পরিবর্তন ধ্বনির পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত। সাধারণত উচ্চারণে সহজলভ্যতা, আঞ্চলিকতা ও দ্রুত উচ্চারণের জন্য আমরা ধ্বনির পরিবর্তন করে থাকি। উচ্চারণের সময় সহজীকরণের প্রবণতায় শব্দের মূল ধ্বনির যেসব পরিবর্তন ঘটে তাকে ধ্বনির পরিবর্তন বলে। ধ্বনির মধ্যে প্রধানত চার ধরনের পরিবর্তন হয়। যেমন – লোপ (Deletion), আগম (Addition), রূপান্তর (Alteration) এবং বিপর্যাস (Transposition)। নিম্নে ধ্বনির পরিবর্তনের নিয়মগুলো বর্ণনা করা হলো।
স্বরধ্বনির পরিবর্তন
১. স্বরাগম: শব্দের আদি, অন্ত্য ও মধ্যবর্তী স্থানে স্বরধ্বনির আগমনকে স্বরাগম বলে। স্বরাগমকে তিনভাবে দেখানো যায়। যথা-
(ক) আদি স্বরাগম: শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনির আগমন।
যেমন – স্কুল > ইস্কুল, স্পৃহা> আস্পৃহা, স্ত্রী > ইস্ত্রী, স্তাবল > আস্তাবল, স্টেশন > ইস্টিশন, স্পর্ধা > আস্পর্ধা।
(খ) মধ্য স্বরাগম/বিপ্রকর্ষ/স্বরভক্তি: শব্দের মাঝখানে স্বরধ্বনির আগমন।
যেমন – রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম, প্রীতি > পিরীতি, মুক্তা > মুকুতা, গ্রাম > গেরাম, শ্লোক > শোলোক, মুরগ > মুরোগ> মোরগ।
(গ) অন্ত্য স্বরাগম: শব্দের শেষে স্বরধ্বনির আগমন।
যেমন – দিশ্> দিশা, সত্য > সত্যি, দুষ্ট > দুষ্টু, পোখত্> পোক্ত, বেঞ্চ > বেঞ্চি।
২. স্বরলোপ/সম্প্রকর্ষ: শব্দের আদি, অন্ত্য ও মধ্যবর্তী স্থানে স্বরধ্বনির লোপকে স্বরলোপ বলে। স্বরলোপ বস্তুত স্বরাগমের বিপরীত প্রক্রিয়া। স্বরলোপকে তিনভাগে দেখানো যায়। যথা –
(ক) আদি স্বরলোপ: শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনির লোপ।
যেমন – আছিল > ছিল, আনোনা > নোনা, উদ্ধার>উধার > ধার, অলাবু > লাবু> লাউ, এড়ণ্ড > রেড়ী।
(খ) মধ্য স্বরলোপ: শব্দের মাঝখানে স্বরধ্বনির লোপ।
যেমন – সুবর্ণ > স্বর্ণ, কলিকাতা > কলকাতা, অগুরু > অগ্রু।
(গ) অন্ত্য স্বরলোপ: শব্দের শেষে স্বরধ্বনি লোপ পাওয়া।
যেমন – রাশি > রাশ, চারি > চার, অগ্নি > আগুন, আশা > আশ।
৩. স্বরসঙ্গতি (Vowel Harmony): একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। সমীভবন প্রক্রিয়ার সাথে স্বরসঙ্গতির মিল রয়েছে। তবে স্বরসঙ্গতি স্বরের মধ্যে প্রযোজ্য আর সমীভবন ব্যঞ্জনে প্রয়োগ হয়ে থাকে। স্বরসঙ্গতি কয়েক ভাবে হয়ে থাকে। যথা –
(ক) প্রগত: আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বরের পরিবর্তন।
যেমন – শিকা > শিকে, তুলা > তুলো, বিকাল > বিকেল, উঠান > উঠোন, মুলা > মুলো।
(খ) পরাগত: অন্ত্যস্বরের কারণে আদিস্বরের পরিবর্তন।
যেমন – দেশি > দিশি, দেই > দিই, আসো > এসো, আখো > এখো।
(গ) মধ্যগত: আদিস্বর ও অন্ত্যস্বর কিংবা অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বরের পরিবর্তন।
যেমন – বিলাতি > বিলিতি, ভিখারি > ভিখিরি, জিলাপি > জিলিপি।
(ঘ) অন্যোন্য: আদি ও অন্ত্য দুই স্বরই পরস্পর প্রভাবিত হয়।
যেমন – মোজা > মুজো, খোকা > খুকু, ধোঁকা > ধুঁকো।
(ঙ) চলিত বাংলায় স্বরসঙ্গতি: গিলা > গেলা, মিঠা > মিঠে, ইচ্ছা > ইচ্ছে, মিলামিশা > মেলামেশা।
(চ) বিশেষ নিয়মে স্বরসঙ্গতি: উড়–নি > উড়নি, এখনি > এখুনি।
৪. অপিনিহিতি (Apenthesis): পরের ই-কার আগে উচ্চারিত হলে কিংবা যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির আগে ই-কার বা উ-কার উচ্চারিত হলে তাকে অপিনিহিতি বলে।
যেমন – আজি > আইজ, রাখিয়া > রাইখ্যা, চারি > চাইর, মারি > মাইর, সাধু > সাউধ, বাক্য > বাইক্য, সত্য > সইত্য।
৫. অসমীকরণ (Dissimilation): একই স্বরের পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝখানে যখন স্বরধ্বনি যুক্ত হয় তখন তাকে অসমীকরণ বলে।
যেমন – ধপ ধপ > ধপাধপ, টপ টপ > টপাটপ, খপ খপ > খপাখপ।
ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন
৬. সমীভবন/ব্যঞ্জনসঙ্গতি (Assimilation): শব্দমধ্যস্থ দুটি ভিন্ন ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে অল্পবিস্তর সমতা লাভ করাকে সমীভবন বলে। সমীভবন মূলত তিন প্রকার। যথা –
(ক) প্রগত: পূর্ববর্র্তী ধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ধ্বনির পরিবর্তন।
যেমন – পদ্ম > পদ্দ, চক্র > চক্ক, বিদ্যা > বিদ্দা, পক্ব > পক্ক, লগ্ন > লগ্গ।
(খ) পরাগত: পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন। বাংলায় সংস্কৃত সন্ধির বেশির ভাগই এ শ্রেণির।
যেমন – তৎ + জন্য > তজ্জন্য, উৎ + মুখ > উন্মুখ, তৎ + হিত = তদ্ধিত, ছিদ্ + ন > ছিন্ন, পাঁচ + শো > পাঁশ্শো, কাঁদ্ + না = কান্না।
(গ) অন্যোন্য: পরস্পরের প্রভাবে দুটো ধ্বনিই পরিবর্তিত হয়।
যেমন – সত্য > সচ্চ, বিদ্যা > বিজ্জা, উদ্শিষ্ট > উচ্ছিষ্ট।
৭. বিষমীভবন (Dissimilation): দুটি সমবর্ণের একটির পরিবর্তনকে বিষমীভবন বলে। এটি সমীভবনের বিপরীত প্রক্রিয়া।
যেমন – লাল > নাল, শরীর > শরীর, আরমারি > আলমারি, অভিভাবক > অবিভাবক, রবার > রবাট, ইসরার > ইসরাজ।
৮. ব্যঞ্জনচ্যুতি: পাশাপাশি সম উচ্চারণের দুটো ব্যঞ্জনধ্বনির একটি লোপ পাওয়াকে ব্যঞ্জনচ্যুতি/ধ্বনিচ্যুতি বলে।
যেমন – বউদিদি > বউদি, বড়দাদা > বড়দা, ছোটদাদা > ছোটদা।
৯. ব্যঞ্জনবিকৃতি: শব্দের মধ্যে ব্যঞ্জনধ্বনি পরিবর্তিত হয়ে নতুন ব্যঞ্জনধ্বনির আবির্ভাবকে ব্যঞ্জনবিকৃতি বলে।
যেমন – কবাট > কপাট, ধোবা > ধোপা, ধাইমা > দাইমা।
১০. অন্তর্হতি/ব্যঞ্জনলোপ: পদের মধ্যে ব্যঞ্জনধ্বনির লোপ পাওয়াকে অন্তর্হতি বলে।
যেমন – ফাল্গুন > ফাগুন, ফলাহার > ফলার, আলাহিদা > আলাদা, মজদুর > মজুর, কদম্ব > কদম, দাড়িম্ব > ডালিম, স্ফটিক > ফটিক।
১১. ধ্বনি বিপর্যয়/ধ্বনি বিপর্যাস (Metathesis): শব্দের মধ্যে দুটো ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।
যেমন – বাক্স > বাস্ক, রিক্সা > রিস্কা, লাফ > ফাল, পিশাচ > পিচাশ, তলোয়ার>তরোয়াল।
১২. দ্বিত্বব্যঞ্জন/ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা (Long consonent): কখনও কখনও জোর দেওয়ার জন্য শব্দের অন্তর্গত ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয় একে দ্বিত্বব্যঞ্জন বলে।
যেমন – পাকা > পাক্কা, সকাল > সক্কাল, চাকা > চাক্কা, ছোট > ছোট্ট, শাবাশ > শাব্বাশ।
১৩. নাসিক্যভবন (Nasalization): নাসিক্য ব্যঞ্জনধ্বনি লোপের ফলে পূর্ববর্তী স্বরধ্বনি অনুনাসিক হওয়াকে নাসিক্যভবন বলে।
যেমন – সন্ধ্যা > সাঁঝ, দন্ত > দাঁত, কণ্টক > কাঁটা, সিন্দুর > সিঁদুর, অঞ্চল > আঁচল, চন্দ্র > চাঁদ, বন্ধন > বাঁধন।
১৪. অভিশ্রুতি (Umlaut): অপিনিহিতি প্রক্রিয়ায় যে ই বা উ-ধ্বনি পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের আগে বসে; সেই ই বা উ-ধ্বনি যখন পাশাপাশি স্বরধ্বনিকে প্রভাবিত করে এবং নিজেও তার সাথে মিশে পরিবর্তিত হয়ে যায় তখন তাকে অভিশ্রুতি বলে। সকল সাধুভাষার ক্রিয়াপদ অভিশ্রুতির মাধ্যমে চলিত রূপ লাভ করে। অন্যভাবে বলা যায়, বিপর্যস্ত স্বরধ্বনি পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিলে গেলে এবং তদনুসারে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে তাকে অভিশ্রুতি বলে।
যেমন – বলিয়া >বইল্যা > বলে, হাঁটুয়া >হাঁউটা> হেঁটো, করিয়া >কইর্যা > করে, মাছুয়া >মাউছা> মেছো। এখানে মাঝেরগুলো অপিনিহিতি এবং পরেরগুলো অভিশ্রুতির উদাহরণ।
সন্ধি
সন্ধি শব্দের অর্থ সংযোগ বা মিলন। এর অপর নাম ধ্বনিসংযোগ। সন্নিহিত দুটো ধ্বনির মিলনের নামই সন্ধি। ইংরেজি Euphony কথাটির বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে সন্ধি। বর্তমানে ইংরেজিতে সন্ধির প্রতিশব্দ হিসেবে Assimilation-কেই বেশি ব্যবহার করা হয়।
সন্ধির উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য:
উচ্চারণে সহজপ্রবণতা ও ধ্বনিগত মাধুর্য সম্পাদনই সন্ধির মূল উদ্দেশ্য। সন্ধির সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
ক) পাশাপাশি উভয় বর্ণের মিলনে একটি নতুন বর্ণের সৃষ্টি হয়।
খ) একটি বর্ণ লোপ পায়।
গ) একটি বর্ণ বদলে যায়।
ঘ) দুটি বর্ণ মিলে একটি বর্ণে মিলিত হয়।
সন্ধির প্রকারভেদ:
বাংলা ভাষায় সন্ধি প্রধানত দুই রকমের। যথা:
ক) খাঁটি বাংলা শব্দের সন্ধি (স্বরসন্ধি ও ব্যঞ্জনসন্ধি)
খ) তৎসম (সংস্কৃত) শব্দের সন্ধি (স্বরসন্ধি, ব্যঞ্জনসন্ধি ও বিসর্গসন্ধি)
উল্লেখ্য, তৎসম শব্দের সন্ধিই মূলত বর্ণ সংযোগের নিয়ম।
স্বরসন্ধি
স্বরধ্বনির সাথে স্বরধ্বনি মিলে যে সন্ধি হয়, তাকে স্বরসন্ধি বলে।
স্বরধ্বনি চেনার উপায়:
১. অ/আ + অ/আ = আ ( া ) হয়।
যেমন – নর + অধম = নরাধম, হিম + আলয় = হিমালয়, যথা + অর্থ = যথার্থ, কারা + আগার = কারাগার।
২. অ/আ + ই/ঈ = এ ( ে) হয়।
যেমন – শুভ + ইচ্ছা = শুভেচ্ছা, যথা + ইষ্ট = যথেষ্ট, পরম + ঈশ = পরমেশ, মহা + ঈশ = মহেশ।
৩. অ/আ + উ/ঊ = ও ( ে া ) হয়।
যেমন – সূর্য + উদয় = সূর্যোদয়, যথা + উচিত = যথোচিত, গৃহ + ঊর্ধ্ব = গৃহোর্ধ্ব, গঙ্গা + ঊর্মি = গঙ্গোর্মি।
৪. অ/আ + এ/ঐ = ঐ ( ৈ) হয়।
যেমন – জন + এক = জনৈক, সদা + এব = সদৈব, মত + ঐক্য = মতৈক্য, মহা + ঐশ্বর্য = মহৈশ্বর্য।
৫. অ/আ + ও/ঔ = ঔ ( ৌ ) হয়।
যেমন – বন + ওষধি = বনৌষধি, মহা + ওষধি = মহৌষধি, পরম + ঔষধ = পরমৌষধ, মহা + ঔষধ = মহৌষধ।
৬. অ/আ + ঋ = ‘অর’ হয় এবং র রেফ (র্ ) রূপে পরবর্তী বর্ণের সাথে যুক্ত হয়।
যেমন – দেব + ঋষি = দেবর্ষি, মহা + ঋষি = মহর্ষি।
৭. অ/আ + ঋত = ‘আর’ হয় এবং র রেফ (র্ ) রূপে পরবর্তী বর্ণের সাথে যুক্ত হয়।
যেমন – শীত + ঋত = শীতার্ত, তৃষ্ণা + ঋত = তৃষ্ণার্ত।
৮. ই/ঈ + ই/ঈ = ঈ ( ী ) হয়।
যেমন – অতি + ইত = অতীত, পরি + ঈক্ষা = পরীক্ষা, সতী + ইন্দ্র = সতীন্দ্র, সতী + ঈশ = সতীশ।
৯. ই/ঈ + ই/ঈ ভিন্ন অন্য স্বর = (ই/ঈ) স্থলে য ( ্য ) হয়।
যেমন – অতি + অন্ত = অত্যন্ত, অতি + উক্তি = অত্যুক্তি, প্রতি + ঊষ = প্রত‚্যষ, মসি + আধার = মস্যাধার, প্রতি + এক = প্রত্যেক, নদী + অম্বু = নদ্যম্বু।
১০. উ/ঊ + উ/ঊ = ঊ ( ূ ) হয়।
যেমন – মরু + উদ্যান = মরূদ্যান, বহু + ঊর্ধ্ব = বহূর্ধ্ব, বধূ + উৎসব = বধূৎসব, ভ‚ + ঊর্ধ্ব = ভ‚র্ধ্ব
১১. উ/ঊ + উ/ঊ ভিন্ন অন্য স্বর = (উ/ঊ) স্থলে ব ( ব ) হয়।
যেমন – সু + অল্প = স্বল্প, অনু + ইত = অন্বিত, তনু + ঈ = তন্বী, অনু + এষণ = অন্বেষণ।
১২. ঋ + ঋ ভিন্ন অন্য স্বর = (ঋ) স্থলে ‘র’ হয়।
যেমন – পিতৃ + আলয় = পিত্রালয়, পিতৃ + আদেশ = পিত্রাদেশ।
১৩. এ/ঐ + এ/ঐ ভিন্ন অন্য স্বর = (এ) স্থানে ‘অয়’ এবং (ঐ) স্থানে ‘আয়’ হয়।
যেমন – নে + অন = নয়ন, শে + অন = শয়ন, নৈ + অক = নায়ক, গৈ + অক = গায়ক।
১৪. ও/ঔ + ও/ঔ ভিন্ন অন্য স্বর = (ও) স্থানে ‘অব’ এবং (ঔ) স্থানে ‘আব’ হয়।
যেমন – পো + অন = পবন, গো + এষণা = গবেষণা, পো + ইত্র = পবিত্র, পৌ + অক = পাবক, নৌ + ইক = নাবিক, ভৌ + উক = ভাবুক।
ব্যঞ্জনসন্ধি
স্বরে-ব্যঞ্জনে, ব্যঞ্জনে-স্বরে ও ব্যঞ্জনে-ব্যঞ্জনে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে। এ দিক থেকে ব্যঞ্জনসন্ধিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – ক. স্বরধ্বনি + ব্যঞ্জনধ্বনি। খ. ব্যঞ্জনধ্বনি + স্বরধ্বনি। গ. ব্যঞ্জনধ্বনি + ব্যঞ্জনধ্বনি।
ক. স্বরধ্বনি + ব্যঞ্জনধ্বনি:
১. স্বরধ্বনি + ছ = ‘চ্ছ’ হয়।
যেমন – এক + ছত্র = একচ্ছত্র, কথা + ছলে = কথাচ্ছলে, পরি + ছদ = পরিচ্ছদ।
খ. ব্যঞ্জনধ্বনি + স্বরধ্বনি:
১. ক্ চ্ ত্ ট্ প্ + স্বরধ্বনি = যথাক্রমে (গ্ জ্ ড্/ড়্ দ্ ব্) তথা বর্গীয় তৃতীয় ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়।
যেমন – দিক + অন্ত = দিগন্ত, ণিচ + অন্ত = ণিজন্ত, তৎ + অবধি = তদবধি, ষট + আনন = ষড়ানন, সুপ + অন্ত = সুবন্ত।
গ. ব্যঞ্জনধ্বনি + ব্যঞ্জনধ্বনি:
১. ত/দ + চ/ছ = ত/দ স্থানে ‘চ্’ হয়।
যেমন – শরৎ + চন্দ্র = শরচ্চন্দ্র, উৎ + ছেদ = উচ্ছেদ।
২. ত/দ + জ/ঝ = ত/দ স্থানে ‘জ্’ হয়।
যেমন – বিপদ + জাল = বিপজ্জাল, সৎ + জন = সজ্জন, কুৎ + ঝটিকা = কুজ্ঝটিকা।
৩. ত/দ + ট/ঠ = ত/দ স্থানে ‘ট্’ হয়।
যেমন – বৃহৎ + টীকা = বৃহট্টীকা, তৎ + টীকা = তট্টীকা।
৪. ত/দ + ড/ঢ = ত/দ স্থানে ‘ড্’ হয়।
যেমন – উৎ + ডীন = উড্ডীন, উৎ + ডয়ন = উড্ডয়ন, বৃহৎ + ঢক্কা = বৃহড্ঢক্কা।
৫. ত/দ + ন/ম = ত/দ স্থানে ‘ন’ হয়।
যেমন – জগৎ + নাথ = জগন্নাথ, তদ + মধ্যে = তন্মধ্যে, মৃৎ + ময় = মৃন্ময়।
৬. ত/দ + ল = ত/দ স্থানে ‘ল্’ হয়।
যেমন – উৎ + লাস = উল্লাস, উৎ + লেখ = উল্লেখ।
৭. ত/দ + শ = ত/দ স্থানে ‘চ্’ এবং শ এর স্থানে ‘ছ্’ হয়, অর্থাৎ (চ্ছ) হয়।
যেমন – উৎ + শ্বাস = উচ্ছ্বাস, তদ + শক্তি = তচ্ছক্তি।
৮. ত/দ + হ = ত/দ স্থানে ‘দ্’ এবং হ স্থানে ‘ধ্’ হয়, অর্থাৎ (দ্ধ) হয়।
যেমন – উৎ + হার = উদ্ধার, পদ + হতি = পদ্ধতি।
৯. দ/ধ + ক/প/স = দ/ধ স্থানে ‘ৎ’ হয়।
যেমন – হৃদ + পিণ্ড = হৃৎপিণ্ড, ক্ষুধ + পিপাসা = ক্ষুৎপিপাসা, তদ + সম = তৎসম।
১০. চ/জ + ন = ‘ন’ স্থানে ‘ঞ’ হয়।
যেমন – যাচ + না = যাচ্ঞা, যজ + ন = যজ্ঞ, রাজ + নী = রাজ্ঞী।
১১. বর্গের প্রথম ধ্বনি ( ক চ ট ত প) + বর্গের তৃতীয় (গ জ ড দ ব) ও চতুর্থ (ঘ ঝ ঢ ধ ভ) ধ্বনি এবং (য র ল ব হ) বর্ণ = বর্গের প্রথম ধ্বনি তৃতীয় ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়।
যেমন – বাক + দান = বাগদান, উৎ + যোগ = উদ্যোগ, তৎ + রূপ = তদ্রুপ, দিক + গজ = দিগগজ, ষট + যন্ত্র = ষড়যন্ত্র।
১২. বর্গের প্রথম ধ্বনি ( ক চ ত ট প) + ন/ম = বর্গের প্রথম ধ্বনি পঞ্চম ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়।
যেমন – দিক + নির্ণয় = দিঙ্নির্ণয়, তৎ + মধ্যে = তন্মধ্যে, চিৎ + ময় = চিন্ময়।
১৩. ম + যে কোন বর্গীয় ধ্বনি = ‘ম’ এর স্থানে সে বর্গের পঞ্চম বর্ণ।
যেমন – সম + তাপ = সন্তাপ, সম + ন্যাস = সন্ন্যাস, শম + কা = শঙ্কা। কিন্তু আধুনিক বাংলায় ‘ম’ এর পরে কণ্ঠ বর্গীয় ধ্বনি থাকলে ‘ম’ এর স্থানে প্রায়ই ‘ঙ’ না হয়ে অনুস্বার ( ং ) হয়।
যেমন – সম + গত = সংগত, অহম + কার = অহংকার, সম + খ্যা = সংখ্যা।
১৪. ম + অন্তস্থ ( য র ল ব)/উষ্ণ (শ ষ স হ) বর্ণ = ‘ম’ এর স্থানে অনুস্বার ( ং ) হয়।
যেমন – সম + রক্ষণ = সংরক্ষণ, সম + লাপ = সংলাপ, সম + হার = সংহার, সম + শয় = সংশয় (ব্যতিক্রম – সম + রাট = সম্রাট)।
১৫. ষ + ত/থ = ত/থ স্থানে যথাক্রমে ট/ঠ হয়।
যেমন – বৃষ + তি = বৃষ্টি, ষষ + থ = ষষ্ঠ, আকৃষ + ত = আকৃষ্ট।
১৬. বিশেষ নিয়মে সাধিত কতগুলো ব্যঞ্জনসন্ধি।
যেমন – উৎ + স্থান = উত্থান, উৎ + স্থাপন = উত্থাপন, সম + কৃত = সংস্কৃত (সংস্কৃতি), সম + কার = সংস্কার, পরি + কার = পরিষ্কার (পরিষ্কৃত)।
বিসর্গসন্ধি
পূর্বপদের বিসর্গের সাথে পরপদের স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জনধ্বনির সন্ধিকে বিসর্গ সন্ধি বলে। ব্যঞ্জনবর্ণ ‘র’ এবং ‘স’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো বিসর্গ ( ঃ )। বিসর্গ সন্ধিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা –
ক) র- জাত বিসর্গ (র- এর পরিবর্তে বিসর্গ)। যেমন – অন্তর…অন্তঃ, প্রাতর…প্রাতঃ, পুনর…পুনঃ, অহর…অহঃ।
খ) স- জাত বিসর্গ (স- এর পরিবর্তে বিসর্গ)। যেমন – নমস…নমঃ, পুরস…পুরঃ, শিরস…শিরঃ, মনস…মনঃ, তিরস…তিরঃ, তপস…তপঃ।
বিসর্গসন্ধি + স্বরসন্ধি:
১. ‘অ’ ধ্বনি + বিসর্গ ( ঃ ) + ‘অ’ ধ্বনি = তিনটি মিলে ও-কার ( ো ) হয়।
যেমন – ততঃ + অধিক = ততোধিক, শতঃ + অধিক = শতোধিক, মনঃ + অভিলাষ = মনোভিলাষ।
বিসর্গসন্ধি + ব্যঞ্জনসন্ধি:
১. অ-কারের পরস্থিত স-জাত বিসর্গ + বর্গীয় তৃতীয়/চতুর্থ/পঞ্চম বর্ণ অথবা (হ য ব র ল) = অ-কার ও স-জাত বিসর্গের পরিবর্তে ও-কার হয়।
যেমন – তিরঃ + ধান = তিরোধান, মনঃ + হর = মনোহর, মনঃ + জগৎ = মনোজগৎ।
২. অ-কারের পরস্থিত র-জাত বিসর্গ + বর্গীয় তৃতীয়/চতুর্থ/পঞ্চম বর্ণ অথবা ‘হ য ব র ল’ অথবা স্বরধ্বনি = বিসর্গের স্থানে র্‘’ হয়।
যেমন – অন্তঃ + ধান = অন্তর্ধান, অহঃ + অহ = অহরহ, অন্তঃ + গত = অন্তর্গত, পুনঃ + উক্ত = পুনরুক্ত, পুনঃ + আয় = পুনরায়।
৩. অ/আ ভিন্ন অন্য স্বরের পরে বিসর্গ + বর্গীয় তৃতীয়/চতুর্থ/পঞ্চম বর্ণ অথবা ‘হ য ব র ল’ অথবা অ/আ = বিসর্গের স্থানে র্‘’ হয়।
যেমন – নিঃ + আকার = নিরাকার, আশীঃ + বাদ = আশীর্বাদ, দুঃ + যোগ = দুর্যোগ।
ব্যতিক্রম – ই/উ স্বরের পরে বিসর্গ + র = বিসর্গ লোপ পায় এবং বিসর্গের পূর্ববর্তী হ্রস্ব স্বর দীর্ঘ হয়।
যেমন – নিঃ + রব = নীরব, নিঃ + রস = নীরস, এরূপ – নীরোগ, নীরত, নীরক্ত।
৪. অ/আ ভিন্ন অন্য স্বরের পরে বিসর্গ + ক খ প ফ = বিসর্গের স্থানে ‘ষ’ হয়।
যেমন – নিঃ + কাম = নিষ্কাম, দুঃ + কর = দুষ্কর, বহিঃ + কার = বহিষ্কার, আবিঃ + কার = আবিষ্কার, চতুঃ + পদ = চতুষ্পদ।
৫. অ/আ ধ্বনির পরে বিসর্গ + ক খ প ফ = বিসর্গের স্থানে ‘স’ হয়।
যেমন – নমঃ + কার = নমস্কার, পুরঃ + কার = পুরস্কার, তিরঃ + কার = তিরস্কার, পদঃ + খলন = পদস্খলন।
৬. বিসর্গ ( ঃ ) + চ/ছ = বিসর্গের স্থানে ‘শ’ হয়।
যেমন – নিঃ + চয় = নিশ্চয়, শিরঃ + ছেদ = শিরশ্ছেদ।
৭. বিসর্গ ( ঃ ) + ট/ঠ = বিসর্গের স্থানে ‘ষ’ হয়।
যেমন – নিঃ + ঠুর = নিষ্ঠুর, ধনুঃ + টঙ্কার = ধনুষ্টঙ্কার।
৮. বিসর্গ ( ঃ ) + ত/থ = বিসর্গের স্থানে ‘স’ হয়।
যেমন – দুঃ + তর = দুস্তর।
৯. বিসর্গ ( ঃ ) + যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি (স্ত, স্থ, স্প) = বিসর্গ লোপ পায়।
যেমন – নিঃ + স্তব্ধ = নিস্তব্ধ, দুঃ + স্থ = দুস্থ, নিঃ + স্পন্দ = নিস্পন্দ।
১০. কতিপয় সন্ধির বিসর্গ লোপ পায় না।
যেমন – অধঃপাত = অধঃ + পাত, অধঃপতন = অধঃ + পতন, দুঃখ = দুঃ + খ, অন্তঃকরণ = অন্তঃ + করণ, প্রাতঃকাল = প্রাতঃ + কাল, মনঃকষ্ট = মনঃ + কষ্ট, শিরঃপীড়া = শিরঃ + পীড়া, অতঃপর = অতঃ + পর, নিঃসংশয় = নিঃ + সংশয়, দুঃশাসন = দুঃ + শাসন।
নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি
সন্ধির প্রচলিত নিয়ম না মেনে যে সন্ধি হয় তাকে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি বলে। যে শব্দগুলো বাংলা নিয়মে ব্যাখ্যা করা যায় না অর্থাৎ যে শব্দগুলোর সংস্কৃত নিয়মই বাংলা ভাষায় প্রযোজ্য; ব্যাকরণের ভাষায় তা-ই নিপাতনে সিদ্ধ।
স্বরসন্ধি
ব্যঞ্জনসন্ধি
বিসর্গসন্ধি
নমুনা প্রশ্ন
১. স্নান > সিনান কোন নিয়মে হয়েছে –
ক) অন্তর্হতি
খ) সম্প্রকর্ষ
গ) স্বরাগম
ঘ) অভিশ্রুতি
উত্তর: গ
২. অন্তর্হতির অপর নাম কি?
ক) ব্যঞ্জনচ্যুতি
খ) ব্যঞ্জনলোপ
গ) ব্যঞ্জনবিকৃতি
ঘ) সমীকরণ
উত্তর: খ
৩. নিচের কোনটি সমীভবনের উদাহরণ?
ক) মোজা > মুজো
খ) সত্য > সচ্চ
গ) সত্য > সইত্য
ঘ) চাকা > চাক্কা
উত্তর: খ
৪. ধ্বনি বিপর্যয়ের উদাহরণ –
ক) পিশাচ> পিচাশ
খ) মজদুর > মজুর
গ) ইসরার > ইসরাজ
ঘ) ধাইমা > দাইমা
উত্তর: ক
৫. একই স্বরের পুনরাবৃত্তি না করে মাঝখানে স্বরধ্বনি যুক্ত করাকে কী বলে?
ক) অপিনিহিতি
খ) সমীভবন
গ) সম্প্রকর্ষ
ঘ) অসমীকরণ
উত্তর: ঘ
৬. কোনটি স্বরভক্তি?
ক) স্ত্রী > ইস্ত্রী
খ) ধর্ম > ধরম
গ) আজি > আইজ
ঘ) দেশি > দিশি
উত্তর: খ
৭. পদের মাঝে কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে কি বলে?
ক) ব্যঞ্জনবিকৃতি
খ) ব্যঞ্জনচ্যুতি
গ) অন্তর্হতি
ঘ) অভিশ্রুতি
উত্তর: গ
৮. Long consonant এর ইংরেজি পরিভাষা –
ক) যৌগিক স্বর
খ) ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা
গ) যুক্ত ব্যঞ্জন
ঘ) ব্যঞ্জনসঙ্গতি
উত্তর: খ
৯. নিম্নের কোনটিতে স্বরধ্বনির পরিবর্তন হয়?
ক) সমীভবন
খ) সম্প্রকর্ষ
গ) ধ্বনি বিপর্যয়
ঘ) বিষমীভবন
উত্তর: খ
১০. কোনটি ধ্বনি পরিবর্তন?
ক) চাচা > চাচী
খ) স্ত্রী > ইস্ত্রি
গ) চুলা > চুলো
ঘ) নাক > কান
উত্তর: গ
১১. “স্বপ্নালু চোখে স্বপ্ন নাবতো তার।” বাক্যে ‘নাবতো’ ধ্বনি পরিবর্তনের কোন নিয়মে হয়েছে?
ক) সমীভবন
খ) ব্যঞ্জনবিকৃতি
গ) ধ্বনি বিপর্যয়
ঘ) অভিশ্রুতি
উত্তর: খ
১২. ‘ধরনা > ধন্না’ এটি কী ধরনের ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ?
ক) স্বরসঙ্গতি
খ) অপিনিহিতি
গ) স্বরভক্তি
ঘ) সমীভবন
উত্তর: ঘ
১৩. নিচের কোনটি স্বরসঙ্গতির উদাহরণ?
ক) জন্ম > জনম
খ) হিসাব > হিসেব
গ) মুক্তা> মুকুতা
ঘ) কন্যা > কইন্যা
উত্তর: খ
১৪. ‘অলাবু থেকে লাবু’ হওয়ার কারণ –
ক) বর্ণাগম
খ) বর্ণলোপ
গ) বর্ণ বিপর্যয়
ঘ) অন্তর্হতি
উত্তর: খ
১৫. ‘উৎ + মুখ > উন্মুখ’ ধ্বনি পরিবর্তনের কোন নিয়মে –
ক) সমীভবন
খ) অসমীকরণ
গ) অভিশ্রুতি
ঘ) স্বরভক্তি
উত্তর: ক
১৬. ভুল সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?
ক) আ + চর্য = আশ্চর্য
খ) দিব + লোক = দ্যুলোক
গ) উৎ + ধার = উদ্ধার
ঘ) শিরঃ + ছেদ = শিরশ্ছেদ
উত্তর: গ
১৭. ‘অহরহ’ এর সঠিক বিচ্ছেদ কোনটি?
ক) অহঃ + অহ
খ) অহঃ + রহ
গ) অহ + অহ
ঘ) অহঃ + অহঃ
উত্তর: ক
১৮. ‘ব্যুৎপত্তি’ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?
ক) বি + পত্তি
খ) বি + উৎপত্তি
গ) বুদ + পত্তি
ঘ) বুৎ + উৎপত্তি
উত্তর: খ
১৯. ‘সদ্যোজাত’ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) সদ্য + জাত
খ) সদ্যঃ + জাত
গ) সদ্যা + জাত
ঘ) সদাঃ + জাত
উত্তর: খ
২০. ‘অকুতোভয়’ এর সন্ধি বিচ্ছেদ কী?
ক) অকুত + ভয়
খ) অকুতো + ভয়
গ) অকুতঃ + ভয়
ঘ) অকুতঃ + অভয়
উত্তর: গ
২১. ‘অভীষ্ট’ এর সন্ধি বিচ্ছেদ কী?
ক) অভি + ইষ্ট
খ) অভী + ঈষ্ট
গ) অভী + ইষ্ট
ঘ) অভি + বিষ্ট
উত্তর: ক
২২. ‘গো + অক্ষ = গবাক্ষ’ কোন প্রকারের সন্ধি?
ক) স্বরসন্ধি
খ) বিসর্গসন্ধি
গ) নিপাতনে সিদ্ধ
ঘ) ব্যঞ্জনসন্ধি
উত্তর: গ
২৩. ‘ষড়ঋতু’ এর সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?
ক) ষড় + ঋতু
খ) ষট + ঋতু
গ) ষড়– + ঋতু
ঘ) ষট্ + ঋতু
উত্তর: ঘ
২৪. ‘সংশপ্তক’ এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) সম + শপ্তক
খ) সং + শপ্তক
গ) সম + সপ্তক
ঘ) সমশ + অপ্তক
উত্তর: ক
২৫. ‘ততোধিক’ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?
ক) তত + ধিক
খ) তত + অধিক
গ) ততঃ + অধিক
ঘ) ততঃ + ধিক
উত্তর: গ
২৬. নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি কোনটি?
ক) বাক + দান = বাগদান
খ) উৎ + ছেদ = উচ্ছেদ
গ) পর + পর = পরস্পর
ঘ) সম + সার = সংসার
উত্তর: গ
২৭. পর্যালোচনা শব্দাটির সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) পর্যা + আলোচনা
খ) পরি + আলোচনা
গ) পর + আলোচনা
ঘ) পর্য + আলোচনা
উত্তর: খ
২৮. স্বাগত এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) স্বা + গত
খ) সু + গত
গ) সু + আগত
ঘ) স্ব + আগত
উত্তর: গ
২৯. নাবিক এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) নো + ইক
খ) নৌ + ইক
গ) নবো + ইক
ঘ) নো + ইক
উত্তর: খ
৩০. পদ্ধতি এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) পদ + ধতি
খ) পদ + হতি
গ) পৎ + হতি
ঘ) পথ + ধতি
উত্তর: খ
৩১. সংবিধান এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) সং + বিধান
খ) সং + অবিধান
গ) সম + বিধান
ঘ) সন + বিধান
উত্তর: গ
৩২. মনোযোগ এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) মন + যোগ
খ) মনঃ + যোগ
গ) মনোঃ + যোগ
ঘ) মন + উৎযোগ
উত্তর: খ
৩৩. দ্যুলোক এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) দিব + লোক
খ) দিবা + লোক
গ) দ্বি + লোক
ঘ) দ্বিব + লোক
উত্তর: ক
৩৪. বিশেষ নিয়মে সাধিত সন্ধি –
ক) পরিষ্কৃত
খ) পতঞ্জলি
গ) নীরব
ঘ) পুরস্কার
উত্তর: ক
৩৫. শয়ন শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) শো + অন
খ) শে + অন
গ) শৈ + অন
ঘ) শে + য়ন
উত্তর: খ
৩৬. কোনটি নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি?
ক) উত্থাপন
খ) পরিষ্কার
গ) কুলটা
ঘ) একাদশ
উত্তর: ঘ
৩৭. ততোধিক কোন প্রকারের সন্ধি?
ক) বাংলা স্বরসন্ধি
খ) ব্যঞ্জনসন্ধি
গ) বিসর্গ সন্ধি
ঘ) তৎসম স্বরসন্ধি
উত্তর: গ
৩৮. দুর্দশা এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) দুর + দশা
খ) দুর্দ + শা
গ) দুঃ + দশা
ঘ) দুরঃ + দশা
উত্তর: গ
৩৯. ‘স্বয়ংবরা’ শব্দের সন্ধিবিচ্ছেদ হলো –
ক) স্বয়ং + বরা
খ) স্বয়ম্ + বরা
গ) স্বয় + বরা
ঘ) স্বয়ন্ + বরা
উত্তর: খ
৪০. ‘পর্যবেক্ষণ’ এর সন্ধিবিচ্ছেদ –
ক) পরি + বেক্ষণ
খ) পর + অবেক্ষণ
গ) পর্য + বেক্ষণ
ঘ) পরি + অবেক্ষণ
উত্তর: ঘ
৪১. কোনটি নিপাতনে সিদ্ধ বিসর্গসন্ধি নয় –
ক) অহরহ
খ) গীর্পতি
গ) অহর্নিশ
ঘ) অহর্পতি
উত্তর: ক
৪২. দুরন্ত শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) দুঃ + রন্ত
খ) দু + অন্ত
গ) দুঃ + অন্ত
ঘ) দুর + অন্ত
উত্তর: গ
৪৩. আবির্ভাব শব্দটি গঠিত হয়েছে –
ক) সমাস দ্বারা
খ) প্রত্যয় দ্বারা
গ) উপসর্গ দ্বারা
ঘ) সন্ধি দ্বারা
উত্তর: ঘ
৪৪. কোনটি বিশেষ নিয়মে সাধিত সন্ধি নয়?
ক) পুরস্কার
খ) সংস্কার
গ) পরিষ্কৃত
ঘ) সংস্কৃতি
উত্তর: ক
৪৫. নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধির উদাহরণ কোনটি?
ক) আ + চর্য = আশ্চর্য
খ) চতুঃ + পদ = চতুষ্পদ
গ) উৎ + লাস = উল্লাস
ঘ) নিঃ + রত = নীরত
উত্তর: ক
৪৬. উত্তমর্ণ এর সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) উত্তম + অর্ণ
খ) উত্তম + ঋণ
গ) উত্তম + ঋত
ঘ) উত্তম + রণ
উত্তর: খ
৪৭. সন্ধিতে কোনটির মিলন ঘটে?
ক) শব্দের
খ) অর্থের
গ) ধ্বনির
ঘ) কোনোটাই না
উত্তর: গ
৪৮. বিবিয়ানি শব্দটি ব্যাকরণের কোন নিয়ম থেকে আসছে?
ক) সন্ধি
খ) সমাস
গ) প্রত্যয়
ঘ) লিঙ্গ
উত্তর: গ
৪৯. বহ্ন্যুৎসব শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ –
ক) বহ্ন্যু + উৎসব
খ) বহ্নি + উৎসব
গ) বহ্ন্যু + উৎসব
ঘ) বহ্ন্যুৎ + সব
উত্তর: খ
৫০. কোনটি ভুল?
ক) ণিচ + অন্ত = ণিজন্ত
খ) গো + আদি = গবাদি
গ) সম + চয় = সঞ্চয়
ঘ) অন্ত + গত = অন্তর্গত
উত্তর: ঘ
তথ্যসূত্র:
১. রফিকুল ইসলাম, পবিত্র সরকার ও মাহবুবুল হক, প্রমিত বাংলা ব্যবহারিক ব্যাকরণ (বাংলা একাডেমি, জানুয়ারি ২০১৪)
২. রফিকুল ইসলাম ও পবিত্র সরকার, প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, প্রথম খন্ড (বাংলা একাডেমি, ডিসেম্বর ২০১১)
৩. মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ (ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩)
৪. নির্মল দাশ, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও তার ক্রমবিকাশ (বিশ্বভারতী ২০০০)
৫. কাজী দীন মুহম্মদ ও সুকুমার সেন, অভিনব ব্যাকরণ (ঢাকা ১৯৪৮)
৬. মুহম্মদ আবদুল হাই, ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব (১৯৬৪)
৭. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত (১৯৬৮)
৮. ড. হায়াৎ মামুদ, ভাষাশিক্ষা : বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (২০০৪)
৯. ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ভাষাবিধি : বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও প্রবন্ধ রচনা (আদিল ব্রাদার্স, জানুয়ারি ২০০৯)
১০. ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (অগ্নি পাবলিকেশন্স, এপ্রিল ২০০৪)
১১. ড. মুহম্মদ এনামুল হক ও শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (বাংলা একাডেমি, স্বরবর্ণ অংশ: ডিসেম্বর ১৯৭৪ ও ব্যঞ্জনবর্ণ অংশ: জুন ১৯৮৪)
diclofenac 75mg dr tab diclofenac prescription diclofenac 50 mg cost in india
synthroid 150 mcg price
where can you buy elimite cream
how to get accutane