BCS Geography Lecture – 02

পরিবেশ ও দূষণ, গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন :

বাংলাদেশ ও বর্তমানবিশ্ব,পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলন, সংস্থা, চুক্তি, দিবস,

নীতিমালা ও আইন, নমুনা প্রশ্ন

 


পরিবেশ


পরিবেশ বলতে কোনো ব্যবস্থার উপর কার্যকর বাহ্যিক প্রভাবকসমূহের সমষ্টিকে বোঝায়। যেমন: চারপাশের ভৌত অবস্থা, জলবায়ু ও প্রভাব বিস্তারকারী অন্যান্য জীব ও জৈব উপাদান ইত্যাদির সামষ্টিক রূপই হলো পরিবেশ। পরিবেশের প্রতিটি উপাদানের দ্বারাই একজন ব্যক্তি, প্রাণী, জীব এমনকি উদ্ভিদ প্রভাবিত হয়ে থাকে। এই প্রভাবকসমূহের মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক বা কৃত্রিম পারিপার্শ্বিক উপাদানসমূহ। মূলত একটি জীবের অস্তিত্ব বা বিকাশের উপর ক্রিয়াশীল সামগ্রিক অবস্থাকে পরিবেশ (Environment)বলে। আমাদের চারপাশের সকল কিছুই পরিবেশের অংশ।পরিবেশের উপাদান দুইটি। যথা:

      ১. জড় উপাদান

      ২. জীব উপাদান

 

  • পরিবেশের প্রকারভেদ: পরিবেশ প্রধানত ২ প্রকার। যথা:

১. ভৌত বা প্রাকৃতিক পরিবেশ: প্রাকৃতিক পরিবেশ হচ্ছে সেই পরিবেশ যা প্রকৃতি নিজে নিজে তৈরি করে। এগুলো হচ্ছে: গাছ,পাহড়-পর্বত,ঝর্ণা,নদী ইত্যাদি। এগুলো মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। এগুলো প্রাকৃতিক ভবেই সৃষ্টি হয়।

 

২. সামাজিক পরিবেশ: এটি মানবসৃষ্ট পরিবেশ। মানুষের তৈরি পরিবেশ হচ্ছে: দালান-কোঠা,নগরায়ন,বন্দর ইত্যাদি। এগুলো মানুষ নিজের প্রয়োজনের তাগিদে তৈরি করে।

 

  • পরিবেশের যে উপাদানগুলো জীবের অস্তিত্ব বজায় রাখার অনুকূলে পরিবেশ সৃষ্টি করে তাকে পরিবেশের ভারসাম্য (Ecological Balance) বলে।
  • পরিবেশবিজ্ঞানীআর্নেস্ট হেকেল সর্বপ্রথম Ecology শব্দটি ব্যবহার করেন। Ecology শব্দটিগ্রিক শব্দ। এরঅর্থ বাস্তুবিদ্যা, বাস্তুসংস্থান।পরিবেশের সাথে প্রাণিজগতের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে যে বিদ্যা তাকে বাস্তুবিদ্যা বা Ecology বলে।
  • পরিবেশ আন্দোলনের সূচনা করেন ডেভিড থ্যারো।
  • প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান নিয়ামক তিনটি। যথা:

          ক. বায়ু

          খ. পানি         

          গ. গাছপালা

 


পরিবেশ দূষণ


পরিবেশের প্রতিটা উপাদানের সুসমন্বিত রূপই হলো সুস্থ পরিবেশ। এই সুসমন্বিত রূপের ব্যতয়ই পরিবেশের দূষণ ঘটায় এবং পরিবেশের স্বাভাবিক মাত্রার অবক্ষয় দেখা দেয়। পরিবেশ বিভিন্ন কারণে দূষিত হতে পারে। প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট কারণও এর সাথে দায়ী। পরিবেশ দূষণের জন্য বিশেষভাবে দায়ী ১২টি মারাত্মক রাসায়নিক দ্রব্যকে একত্রে ‘ডার্টি ডজন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পরিবেশবিভিন্নভাবে দূষিত হয়। যেমন:

  1. Water Pollution (পানি দূষণ)
  2. Air Pollution (বায়ু দূষণ)
  3. Sound Pollution (শব্দ দূষণ)
  4. Soil Pollution (মাটি দূষণ)
  5. Odour Pollution (গন্ধ দূষণ)
  6. Industrial Pollution (শিল্প দূষণ)
  7. Radiation Pollution (তেজস্ক্রিয় দূষণ)

 

  • Water Pollution:পানি দূষণ বলতে পানিতে কোনো বিষাক্ত দ্রব্য অথবা দূষিত বর্জ্য পদার্থ মিশ্রণের ফলে মানব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় এই দূষণে। পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি পানি দূষণের অন্যতম কারণ। WHO এর মতে, Arsenic এর নিরপদ মাত্রা ০.০১ মিলিগ্রাম। বাংলাদেশের পানিতে এর মাত্রা ০.০৫ মিলিগ্রাম (সর্বোচ্চ)।

আর্সেনিক দূষণের কারণ হলো ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত উত্তোলন। এছাড়াও, অতিরিক্ত সাবান বা সাবান জাতীয় পদার্থ পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে। সাবানের উপাদান হলো সোডিয়াম স্টিয়ারেট।

  • Air Pollution:বায়ু দূষণবলতে বোঝায় যখন বায়ুতে বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থের কণা ও ক্ষুদ্র অণু অধিক অনুপাতে বায়ুতে মিশে যায়। তখন এটি বিভিন্ন রোগএমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বায়ুদূষণের ক্ষতিকারক উপাদানসমূহ:
  • কার্বন মনোক্সাইড:এই গ্যাস যানবাহনের কালো ধোঁয়া থেকে নির্গত হয়।
  • সালফার-ডাই-অক্সাইড: ডিজেল পোড়ালে বাতাসে এই গ্যাসের মিশ্রণ ঘটে। শিল্প কারখানার দূষিত গ্যাস এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী। এই বৃষ্টিতে সালফার-ডাই-অক্সাইড এর আধিক্য থাকে।
  • কার্বন-ডাই-অক্সাইড: জীবাশ্ম জ্বালানী দহনের ফলে বায়ুমন্ডলে এই গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড ওজন স্তরের ক্ষতির জন্য প্রধানত দায়ী।
  • হাইড্রোজেন সায়ানাইড: প্লাস্টিক দহনের ফলে এই গ্যাস সৃষ্টি হয়।

 

  • SMOG (Smoke+Fog) এর অর্থ ধোঁয়াশা যা এক ধরনের দূষিত বাতাস। ঢাকা শহরের বায়ুতে মাত্রাতিরিক্তসীসা পাওয়া যায়। তাই এটা দূষিত বাতাস। পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত শহর হলো মেক্সিকো।
  • বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০০৩ সালে ১ জানুয়ারি ঢাকা শহর থেকে২ স্ট্রোক বিশিষ্ট যানবাহন নিষিদ্ধ করা হয়।

 

  • Sound Pollution:শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দসৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়।  মানুষ সাধারণত ২০ থেকে ২০,০০০ হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না। তাই মানুষের জন্য শব্দদূষণ প্রকৃতপক্ষে এই সীমার মধ্যেই তীব্রতর শব্দ দ্বারাই হয়ে থাকে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক অস্থিরতা হতে পারে। শব্দের স্বাভাবিক সহনীয় মাত্রা ৬০ ডেসিবল। জাতিসংঘের মতে ৪৫ ডেসিবল। শব্দের মাত্রা পরিমাপের একক ডেসিবল। ১০৫ ডেসিবলের বেশি শব্দদূষণে মানুষ বধির হতে পারে। বাংলাদেশে শব্দের স্বাভাবিক সহনীয় মাত্রা ৮০ ডেসিবলহলে শব্দদূষণ ধরা হয়। শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্রের তরঙ্গ দ্বারা সৃষ্ট শব্দ হলো সনিক বুম।

পরিবেশ অধিদপ্তরের জরিপ অনুসারে বাংলাদেশের জন্য শব্দ দূষণের ৫টি মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যথা:

ক. নীরব এলাকা: ৪৫ ডেসিবল

খ. আবাসিক এলাকা: ৫০ সেডিবল

গ. মিশ্র এলাকা: ৬০ ডেসিবল

ঘ. বাণিজ্যিক এলাকা: ৭০ ডেসিবল

ঙ. শিল্প এলাকা: ৭৫ ডেসিবল

  • Soil Pollution: মাটি দূষণ বলতে রাসায়নিক বর্জ্যের নিক্ষেপ কিংবা ভূ-গর্ভস্থ ফাটলের কারণে নিঃসৃত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়াকে বুঝায়।মাটি দূষণের প্রধান কারণ পলিথিন তথা প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ। ঢাকা শহরে ১ জানুয়ারি ২০০২ সালে এবং সারাদেশে ১ মার্চ ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়।

 

  • Odour Pollution:এটি গন্ধদূষণ।এ দূষণের ফলে মস্তিষ্কের অস্বস্তি দেখা দেয়। প্রাণির মলমূত্র বা মরদেহ পঁচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়ানোর ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের যে অস্বস্তিকর অবস্থা বা ভারসাম্যহীন অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে গন্ধ দূষণ বলে।

 

  • Industrial Pollution:এটি শিল্পদূষণ।কারখানা ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত দ্রব্য বা বিষাক্ত বর্জ্য থেকে পরিবেশের যে অবক্ষয় ঘটে তাকে শিল্পদূষণ বলে।বাংলাদেশের ৬টি দূষিত শিল্প এলাকা হলো:ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়া।

 

  • Radiation Pollution:এটি তেজস্ক্রিয় দূষণ।তেজস্ক্রিয়তা হলো কোনো কোনো ভারী মৌলিক পদার্থের একটি গুণ যেগুলোর নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবিরত আলফাবিটাও গামারশ্মির বিকিরণ ঘটে।মূলত পারমাণবিক চুল্লি থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ও আলফা, গামা, বিটা ও অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ এর মূল উৎস। এটি মূলত অদৃশ্য দূষণ।

 


গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন


Greenhouse Effect:বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া। গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া (Greenhouse Effect)এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা ভূপৃষ্ঠ হতে বিকীর্ণ তাপবায়ুমণ্ডলীগ্রিনহাউজ গ্যাসসমূহ দ্বারা শোষিত হয়ে পুনরায় বায়ুমণ্ডলের অভ্যন্তরে বিকিরিত হয়। এই বিকীর্ণ তাপ বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে ফিরে এসে ভূপৃষ্ঠের তথা বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবী দিন দিন উষ্ণ হচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তিত হয়ে বিরূপ আকার ধারণ করছে।

১৮৯৬ সালে সুইডিশ পরিবেশ বিজ্ঞানী সোভনটে আরহেনিয়াস সর্বপ্রথম GreenhouseEffect কথাটি ব্যবহার করেন।বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার প্রতিক্রিয়াকে গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া বলে। মূলত এটি হলো তাপ আকে পড়ে সার্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির একটি প্রক্রিয়া।

 

  • GreenhouseGas: যে গ্যাস বায়ুমন্ডলে সূর্যের বিকিরিতরশ্মি শোষণ বা নির্গত করে একে Greenhouse Gas বলে। গ্রিনহাউজ গ্যাসসমূহ হলো:
  • কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2)
  • ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (CFC); এর বাণিজ্যিক নাম ফ্রেয়ন
  • মিথেন (CH4); প্রাকৃতিক গ্যাসের অপর নাম মিথেন।
  • নাইট্রাস অক্সাইড (N2O)
  • হাইড্রোফ্লোরোকার্বন (HFC)
  • জলীয় বাষ্প (H2O)
  • ওজন (O3)

 

  • Global Warming:Greenhouse Gas এর প্রভাবে বায়ুমন্ডলের সার্বিক উষ্ণতা বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াকে Global Warming (বৈশ্বিক উষ্ণতা) বা Northern Hemisphere Warming (উত্তর গোলার্ধ উষ্ণায়ন) বলে।এর ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

 

n   Impact of Greenhouse Gas:

  • বৈশ্বিক উষ্ণতা বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি
  • মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া
  • সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া
  • ওজনস্তরের অবক্ষয়
  • ভূপৃষ্ঠে তেজস্ক্রিয় রশ্মির আগমন ও নানা রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব।

 

n   Causes of Greenhouse Gas:

  • জীবাশ্ম জ্বালানী দহন অর্থাৎ কয়লা, ডিজেল, খনিজ তেল, গ্যাস ইত্যাদি পোড়ানোর ফলে বায়ুমণ্ডেলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি।
  • অবাধে বৃক্ষনিধন
  • রেফ্রিজারেটর, এয়ার-কন্ডিশন, ইনহেলার, এরোসল ইত্যাদিতে এবং প্লাস্টিক কারখানায় CFC গ্যাসের ব্যবহার।
  • ওজোনস্তর অবক্ষয় (OzoneLayer Depletion): ওজোন অক্সিজেনের একটি রূপভেদ। এর রং গাঢ় নীল। গন্ধমাছের আঁশের মতো। ভূ-পৃষ্ঠের ৬৫ মাইল উপরে স্ট্রাটোমন্ডলে ওজোনস্তর অবস্থিত। ১৯৭০ সালে বিজ্ঞানী জোনাথন শাকলিন সর্বপ্রথম ওজোনস্তরের ফাটল লক্ষ্য করেন। ওজোনস্তর অবক্ষয়ের জন্য দায়ী গ্যাসসমূহ:
  • ক্লোরিন (এটি ওজোনস্তরের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে)
  • ক্লোরোফ্লোরোকার্বন CFC (সিএফসি)
  • মিথাইল
  • ক্লোরোফর্ম
  • ফ্লোরিন
  • CFC গ্যাস ১৯২০ সালে টমাস মিডগ্লাই আবিষ্কার করেন। যে ফ্রিজ ক্ষতিকারক CFC গ্যাস ছড়ায় না তাকে পরিবেশ-বান্ধব ফ্রিজ বলে। এই ফ্রিজে ফ্রেয়নের পরিবর্তে গ্যাজোলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়।

 


জলবায়ু পরিবর্তন : বাংলাদেশ ও বর্তমান বিশ্ব


কোনোস্থানের গড় জলবায়ুর দীর্ঘমেয়াদী ও অর্থপূর্ণ পরিবর্তন যার ব্যাপ্তি কয়েক যুগ থেকে কয়েক লক্ষ বছর পর্যন্ত হতে পারেতাকে জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change) বলে। জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন নিয়ামকের উপর নির্ভরশীল। যেমন: জৈব প্রক্রিয়াসমূহ, পৃথিবী কর্তৃক গৃহীত সৌর বিকিরণের পরিবর্তন, ভূত্বক গঠনের পাততত্ত্ব (Tectonic Plate),আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি। তবে, বর্তমানে সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন বললে সারা পৃথিবীর মানবিক কার্যকর্মের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন বোঝায় যা ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি নামে বেশি পরিচিত। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা, বায়ু চাপ ও তাপের বিরূপ পরিস্থিতি কারণেজলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে।

 

  • জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশ: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনাকে বাংলাদেশ সরকারেরবন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নব্বইয়ের দশকে প্রণীত National Environment Management Action Plan (NEMAP)-এ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় গত দুই দশক যাবৎ বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যেই রয়ে গেছে। ১৯ বছর ধরে দুর্যোগের সংখ্যা, মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির মোট হিসাবের ভিত্তিতে তৈরি ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে গত কয়েক বছরের মত ষষ্ঠ অবস্থানেই রয়ে গেছে বাংলাদেশ। শীর্ষে রয়েছে কাতার এবং সর্বনিম্ন অবস্থানে ভানুয়াতু। কোনো দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সত্যিই পড়ছে কি-না, তা চারটি মানদণ্ডে বিবেচনা করা হয়। যেমন:

 

১. জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ।

২. কোথায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হচ্ছে।

৩. সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কোথায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

৪. ক্ষতিগ্রস্থ দেশটি ক্ষতি মোকাবিলায় বা অভিযোজনের জন্য এর মধ্যে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে।

 

বাংলাদেশে একাধারে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা সমস্যা, হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন, বন্যা ইত্যাদি সবগুলো দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই চারটি মানদন্ডেই বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় শীর্ষে।বাংলাদেশ সরকার বন্যা, ঘুর্ণিঝড়, খরা, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, ভূমিকম্প, নদী ভাঙন, জলাবদ্ধতা, পানি বৃদ্ধি ও মাটির লবণাক্ততাকে প্রধান প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বসবাসের এলাকাগুলো এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে বার্ষিক বরাদ্দের ৬ থেকে ৭ শতাংশ ব্যয় করছে এবং বছরে এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি ডলার।

 


পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন:


প্রথম সম্মেলন:১৯৭২ সালের ৫-১৬ জুন সুইডেনের স্টকহোমে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণের প্রতিবাদে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর নাম United Nations Conference on the Human Environment বা Stockholm Conference.এই সম্মেলনে পরিবেশ রক্ষায় UNEP (United Nation Environment Program) গঠনের সিদ্ধান্ত হয় এবং ১৯৭২ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে (সদর দপ্তর) UNEP প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনেই ৫ জুনকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

 

*    দ্বিতীয় সম্মেলন:১৯৯২ সালের ৩-১৪ জুন ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনেরিও শহরে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক প্রথম সম্মেলন হয়। এটি প্রথম ধরিত্রী সম্মেলন যা United Nations Conference on Environment and Development বা Rio Summit বা Earth Summit নামে পরিচিত। উক্ত সম্মেলনে ১৭২টি দেশ অংশগ্রহণ করে। ধরিত্রী সম্মেলন প্রচলিত উন্নয়নের ধারণার বিপরীতে টেকসই উন্নয়নের(Sustainable Development) ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে।

সম্মেলনে গৃহীত নীতিমালাসমূহ:

সম্মেলনে স্বাক্ষরিত চুক্তিসমূহ:

 

*    তৃতীয় সম্মেলন: ২০০২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর অপর নাম Rio+10 Summit বা World Summit on Sustainable Development (WSSD). টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে এটিই প্রথম সম্মেলন।

 

*    চতুর্থসম্মেলন: ২০১২ সালে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনেরিও শহরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর অপর নাম United Nations Conference on Sustainable Development (UNCSD) বা Rio+20 Summit. এই সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তথা Sustainable Development Goal (SDG) তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয় এবংসবুজ অর্থনীতি (Green Economy) গড়ে তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

  • জতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন:

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কার্বন নির্গমন কমানো ও পরিবেশ রক্ষায় United Nation Framework Convention on Climate Change (UNFCCC) এর উদ্যোগে প্রতিবছর জাতিসংঘজলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এটি Conference of the Parties (COP) নামে পরিচিত।১৯৯৫ সালে জার্মানির বার্লিনে প্রথম COP-1 অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে পোল্যান্ডের ক্যাটুইয়েসে সর্বশেষ এই সম্মেলন COP-24 অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালে চিলির সান্টিয়াগো শহরে পরবর্তী জলবায়ু সম্মেলন (COP-25) অনুষ্ঠিত হবে।

 


পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা:


  1. UNEP:UNEP (United Nation Environment Program)৫ জুন ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর কেনিয়ার নাইরোবিতে অবস্থিত। এটি জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা। এর কাজ পরিবেশগত কর্মকাণ্ডের সমন্বয় করা, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পরিবেশগতভাবে স্বীকৃত নীতি ও অভ্যাস বাস্তবায়নে সহায়তা করা।

 

  1. WMO:WMO (World Meteorological Organization) ২৩ মার্চ ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত। এর কাজ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জনজীবনে আবহাওয়ার প্রভাব সম্পর্কে অবহিত করা এবং আগাম সতর্কবার্তা প্রেরণ করা। ১৯৫১ সাল থেকে এ সংস্থার উদ্যোগে সারাবিশ্বে ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালিত হয়ে আসছে।

 

  1. IPCC:IPCC (Intergovernmental Panel on Climate Change) ১৯৮৮ সালে UNEP (United Nations Environment Program)ও WMO (World Meteorological Organization) এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত।এটি জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন। এর কাজ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা হ্রাসকরণে বৈজ্ঞানিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা ও প্রতিবেদন প্রণয়ন করা।

 

  1. UNFCCC: UNFCCC (United Nation Framework Convention on Climate Change) ১৯৯২ সালে প্রথম ধরিত্রী সম্মেলনের মাধ্যমে তৈরি হয় এবং ১৯৯৪ সালে কার্যকর হয়। এটি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘের একটি রূপরেখা।

 

  1. Green Climate Fund:এটিUNFCCCএর উদ্যোগে ২০১০ সালে Green Climate Fund গঠিত হয়। এর সদরদপ্তর দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে অবস্থিত। এর কাজ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।

 

  1. Green Peace:Green Peace ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর নেদারল্যান্ডের আমষ্টারডামে অবস্থিত।এটি একটি বেসরকারি আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংস্থা। এর মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীনামক গ্রহের সব ধরনের জীববৈচিত্রের প্রতিপালনের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা।

 

  1. IUCN:IUCN (International Union for Conservation of Nature) ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের গ্লান্ড শহরে অবস্থিত। এর কাজ প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করা।

 

  1. WWI:WWI (World Watch Institute) ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে এর সদর দপ্তর অবস্থিত। এর কাজ পরিবেশ সংরক্ষণ করা এবং পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা।

 

  1. WRI:WRI(World Resource Institute) ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত। এর কাজ বন পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণ করা।

 

 

 


পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি:


  1. ভিয়েনা কনভেনশন:এটি ওজোনস্তর সুরক্ষা ও সংরক্ষণের বিষয়ে ১৯৮৫ সালে অস্ট্রিয়ায় রাজধানী ভিয়েনায় গৃহীত হয় এবং ১৯৮৮ সালে কার্যকর হয়।

 

  1. মন্ট্রিল প্রটোকল:এটি কানাডার মন্ট্রিলে শহরে ওজোনস্তর বিনষ্টকারী দূষিত রাসায়নিক পর্দাথের নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে ১৯৮৭ সালে গৃহীত হয় এবং ১৯৮৯ সালে কার্যকর হয়।এ প্রটোকলটি কার্যকর হওয়ার পরএই পর্যন্ত মোট ৪ বার সংশোধিত হয়েছে। যথা:লন্ডনে ১৯৯০ সালে, কোপেনহেগেনে ১৯৯২ সালে, মন্ট্রিলে ১৯৯৭ সালে এবং বেইজিংয়ে ১৯৯৯ সালে।

 

  1. বাসেল কনভেনশন:এটি ১৯৮৯ সালে সুইজারল্যান্ডে গৃহীত হয় এবং ১৯৯২ সালে কার্যকর হয়।এর উদ্দেশ্য বিপদজনক বর্জ্য দেশের সীমান্তের বাহিরে চলাচল ও নিয়ন্ত্রণ করা।

 

  1. জীববৈচিত্র্যসংক্রান্ত কনভেনশন: এটি ১৯৯২ সালে প্রথম ধরিত্রী সম্মেলনের মাধ্যমে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনিরিও শহরে গৃহীত হয় এবং ১৯৯৩ সালে কার্যকর হয়। এর উদ্দেশ্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা।

 

  1. কিয়োটো প্রঢৌকল:১৯৯৭ সালে জাপানের কিয়েটোতে বিশ্বের উষ্ণতা রোধ বিষয়ে এ প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয় এবং ২০০৫ সালে কার্যকর হয়।প্রটোকলটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালে। অনুমোদনকারী মোট দেশ ১৯১টি। যুক্তরাষ্ট্র এতে স্বাক্ষর করেছে কিন্তু অনুমোদন করেনি। এই প্রটোকল প্রত্যাহারকারী একমাত্র দেশ কানাডা।

 

  1. কার্টাগেনাপ্রটোকল: এটি ২০০০ সালে কানাডার মন্ট্রিলে গৃহীত হয় এবং ২০০৩ সালে কার্যকর হয়। এটি জাতিসংঘের জৈব নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি। উল্লেখ্য, কার্টাগেনা কলম্বিয়ার একটি শহর।

 


পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক দিবস:


  • ২১ মার্চ – বিশ্ব বন দিবস
  • ২২ মার্চ – বিশ্ব পানি দিবস
  • ২৩ মার্চ – বিশ্ব আবহাওয়া দিবস
  • ২২ এপ্রিল – বিশ্ব ধরিত্রী দিবস
  • ২২ মে – আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস
  • ৫ জুন- বিশ্ব পরিবেশ দিবস
  • ১৭ জুন – বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধ দিবস
  • ২৯ জুলাই – বিশ্ব বাঘ দিবস
  • ১৬ সেপ্টেম্বর – আন্তর্জাতিক ওজোনস্তর সংরক্ষণ দিবস
  • ৪ অক্টোবর – বিশ্ব প্রাণী দিবস
  • ১৩ অক্টোবর – আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস

 


জাতীয় পরিবেশ নীতিমালা ও আইন:


পরিবেশ নীতিমালা ও আইনে পরিবেশ বলতে বোঝানো হয়েছে পানি, বাতাস, ভূমি ও অন্যান্য ভৌত সম্পদ; এদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মানুষ, অন্যান্য প্রাণী, গাছপালা ও অণুজীবসমূহের মধ্যকার সম্পর্ক।উনিশ শতকের শুরুতে দেশে পরিবেশ সংক্রান্ত অনেক আইন ও বিধিমালা প্রণীত হয়।

  • পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলো তদারকির জন্য ১৯৮৯ সালে ‘বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়’ গঠিত হয়।
  • বাংলাদেশে ১৯৯০ সালকে পরিবেশ বর্ষ ও ১৯৯০-৯১ সালকে পরিবেশ দশক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
  • ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের প্রথম ‘জাতীয় পরিবেশ নীতি’ গৃহীত হয়। যেখানে ১৫টি কর্মকৌশল ছিল।
  • ১৯৯২ সালে Bangladesh Environment Layers Association (BELA) অর্থাৎ ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি’ গঠিত হয়।
  • ১৯৯৫ সালে‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন’ প্রণীত হয়।
  • ১৯৯৭ সালে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ নিরাপত্তা বিধিমালা’ প্রণীত হয়।
  • ২০০০ সালে Bangladesh Poribesh Andolon (BAPA)/বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) গঠিত হয়।
  • ২০০১ সালে‘বাংলাদেশ পরিবেশ আদালত’ গঠিত হয়। পরিবেশ আদালত ৩টি। যথা: ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট।
  • ২০১৮ সালে ‘জাতীয় পরিবেশ নীতি’ গৃহীত হয়।

 


নমুনা প্রশ্ন


১. গাড়ী থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার যে বিষাক্ত গ্যাস থাকে – 

ক) ইথিলিন

খ) পিরিডন

গ) কার্বন মনোক্সাইড

ঘ) মিথেন

উত্তরঃ গ


২. যে দূষণ প্রক্রিয়ায় মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় – 

ক) পানি দূষণ

খ) বায়ু দূষণ

গ) গন্ধ দূষণ

ঘ) শব্দ দূষণ

উত্তরঃ ক


৩. জাতিসংঘের মতে, শব্দ দূষণের স্বাভাবিক ও সহনীয় মাত্রা কত?

ক) ৬০ ডেসিবল

খ) ৪৫ ডেসিবল

গ) ৫০ ডেসিবল

ঘ) ৮০ ডেসিবল

উত্তরঃ খ


৪. জীবাশ্ম জ্বালানী দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে যে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ সবচেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে – 

ক) জলীয় বাষ্প

খ) সিএফসি

গ) কার্বন ডাই অক্সাইড

ঘ) মিথেন

উত্তরঃ গ


৫. প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান নিয়ামক কোনটি?

ক) মানুষ

খ) গাছপালা

গ) আবহাওয়া

ঘ) মাটি

উত্তরঃ খ


৬. এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী গ্যাস কোনটি?

ক) কার্বন-ডাই-অক্সাইড

খ) কার্বন-মনোক্সাইড

গ) সালফার-ডাই-অক্সাইড

ঘ) হাইড্রোজেন সায়ানাইড

উত্তরঃ গ


৭. বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হয় কত সালে?

ক) ১ জানুয়ারি ২০০২

খ) ১ মার্চ ২০০২

গ) ১ জানুয়ারি ২০০৩

ঘ) ১ মার্চ ২০০৩

উত্তরঃ খ


৮. ‘জিঙ্ক সালফেট’ ব্যবহার করা হয় – 

ক) কাগজ শিল্পে

খ) কৃষিকাজে

গ) প্লাস্টিক শিল্পে

ঘ) চামড়া শিল্পে

উত্তরঃ ঘ


৯. গ্রিনহাউজ ইফেক্ট সৃষ্টিকারী গ্যাস নয় কোনটি?

ক) N2O

খ) N2O

গ) CH4

ঘ) D2O

উত্তরঃ ঘ


১০. ‘গ্রিন হাউস’ কথাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন কে?

ক) আর্নেস্ট হেকেল

খ) ডেভিট থ্যারো

গ) সোভনটে আরহেনিয়াস

ঘ) টমাস মিডগ্লাই

উত্তরঃ গ


১১. ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন’ কথাটি কোন অঞ্চলের সাথে সম্পর্কিত?

ক) নিরক্ষীয়মÐল

খ) আর্কটিক অঞ্চল

গ) কুমেরু অঞ্চল

ঘ) উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চল

উত্তরঃ খ


১২. ওজোনস্তর অবক্ষয়ের ফলে – 

ক) ভূপৃষ্ঠে তেজস্ক্রিয় রশ্মির আগমন ঘটে

খ) মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যায়

গ) সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যায়

ঘ) ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে

উত্তরঃ ক


১৩. CFC গ্যাসের বাণিজ্যিক নাম কী?

ক) মিথেন

খ) ক্লোরিন

গ) ফ্রেয়ন

ঘ) হ্যালন

উত্তরঃ গ


১৪. কত সালে জাতীয় পরিবেশ নীতি প্রণীত হয়?

ক) ১৯৮৯ সালে

খ) ১৯৯২ সালে

গ) ২০০১ সালে

ঘ) ১৯৯৫ সালে

উত্তরঃ খ


১৫. প্রথম আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলন কোন শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

ক) জোহান্সবার্গ

খ) স্টকহোম

গ) রিও ডি জেনেরিও

ঘ) প্যারিস

উত্তরঃ খ


১৬. জাতিসংঘ পরিবেশ বিষয়ক সংস্থার সদর দপ্তর কোথায়?

ক) স্টকহোম

খ) নাইরোবি

গ) ডারবান

খ) জেনেভা

উত্তরঃ খ


১৭. তৃতীয় বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলন (Rio + 20 Summit) অনুষ্ঠিত হয় –

ক) ২০০২ সালে

খ) ১৯৯২ সালে

গ) ২০১২ সালে

ঘ) ২০০৮ সালে

উত্তরঃ গ


১৮. জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (COP) প্রথম কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

ক) প্যারিস, ১৯৯০

খ) বার্লিন, ১৯৯৫

গ) কার্টাগেনা, ১৯৮৫

ঘ) মন্ট্রিল, ১৯৯৫

উত্তরঃ খ


১৯. পরিবেশ বিজ্ঞানের ভাষায় ঝসড়ম হচ্ছে – 

ক) সিগারেটের ধোঁয়া

খ) কুয়াশা

গ) যানবাহনের ধোঁয়া

ঘ) দূষিত বাতাস

উত্তরঃ ঘ


২০. ‘Blue Economy’ কথাটি কীসের সাথে সম্পৃক্ত?

ক) পরিবেশ

খ) অর্থনীতি

গ) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ঘ) সমুদ্র

উত্তরঃ ঘ


২১. জাতিসংঘ ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি কোনটি?

ক) ভিয়েনা কনভেনশন (১৯৮৫)

খ) মন্ট্রিল প্রটোকল (১৯৮৭)

গ) কিয়োটো প্রটোকল (১৯৯৭)

ঘ) বাসেল কনভেনশন (১৯৮৯)

উত্তরঃ গ


২২. আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস – 

ক) ১৬ সেপ্টেম্বর

খ) ৫ জুন

গ) ২২ এপ্রিল

ঘ) ২২ মে

উত্তরঃ ঘ


২৩. পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা নয় কোনটি?

ক) WRI

খ) WWI

গ) IUCN

ঘ) WHO

উত্তরঃ ঘ


২৪. কত সালে বন ও পরবিশে মন্ত্রণালয় গঠতি হয়?

ক) ১৯৮৯ সালে

খ) ১৯৮৮ সালে

গ) ১৯৯২ সালে

ঘ) ১৯৭৯ সালে

উত্তরঃ ক


২৫. আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-

ক) ২৯ জুলাই

খ) ১৬ সেপ্টেম্বর

গ) ৪ অক্টোবর

ঘ) ১৩ অক্টোবর

উত্তরঃ ঘ

 


গ্রন্থপঞ্জি:


১. রওশন আরা বেগম, আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ, ‘মাধ্যমিক সামাজিক বিজ্ঞান’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, মার্চ ১৯৯৬)

২. সেলিনা শাহজাহান, ড. শেখ মো. রেজাউল করিম প্রমুখ, ‘ভূগোল ও পরিবেশ’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, অক্টোবর ২০১২)

৩. কে. আশরাফুল আলম, ‘বৈশ্বিক পরিবেশের প্রাকৃতিক ভূগোল (পারফেক্ট পাবলিকেশন্স, ঢাকা, ২০১৪)

৪. এস রিজওয়ানা হাসান, ‘পরিবেশ দূষণ বাংলাপিডিয়া (বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৯)

৫. এস. এম. হুমায়ূন কবির, ‘ডার্টি ডজন বাংলাপিডিয়া (বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৯)

৬. রফিক আহমেদ, ‘আবহাওয়া ও জলবায়ুবিজ্ঞান’ (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৭)

 

 

45 thoughts to “BCS Geography Lecture – 02”

  1. Greetings from Florida! I’m bored at work so I decided to
    browse your blog on my iphone during lunch break. I love the information you present here and
    can’t wait to take a look when I get home. I’m amazed
    at how quick your blog loaded on my cell phone .. I’m not even using WIFI, just 3G
    .. Anyways, superb site!

  2. Hello just wanted to give you a quick heads up. The words in your article seem to be running off the screen in Safari.

    I’m not sure if this is a formatting issue or something to do with
    web browser compatibility but I figured I’d post to let you
    know. The design look great though! Hope you get the problem fixed soon. Cheers

  3. I have been surfing on-line greater than three hours today, yet I by no means found any interesting article like yours.
    It is beautiful worth sufficient for me. In my view, if all web owners
    and bloggers made just right content material as you probably did,
    the net shall be a lot more helpful than ever before.

  4. Write more, thats all I have to say. Literally, it
    seems as though you relied on the video to make your point.
    You obviously know what youre talking about, why throw away your intelligence on just posting videos
    to your site when you could be giving us something enlightening to
    read?

  5. Thanks for your write-up on the traveling industry. We would also like to include that if you are a senior considering traveling, it’s absolutely important to buy travel insurance for older persons. When traveling, seniors are at greatest risk of having a professional medical emergency. Getting the right insurance policies package in your age group can look after your health and provide peace of mind.

  6. I have been browsing online more than three hours these days,
    yet I by no means found any fascinating article like yours.
    It is lovely price enough for me. In my opinion, if all site owners
    and bloggers made excellent content material as you probably did, the internet can be a
    lot more useful than ever before.

  7. Hey there just wanted to give you a quick heads up.
    The words in your article seem to be running off
    the screen in Ie. I’m not sure if this is a formatting issue or something
    to do with web browser compatibility but I thought I’d
    post to let you know. The layout look great though!
    Hope you get the problem resolved soon. Many thanks

  8. I have been surfing online more than 3 hours lately, but I never discovered any attention-grabbing article like yours.
    It is pretty value enough for me. Personally, if all web owners
    and bloggers made just right content as you probably did, the web can be a lot more helpful than ever before.

  9. It’s perfect time to make some plans for the future and it’s time to be happy.
    I’ve read this post and if I could I want to suggest you few
    interesting things or tips. Perhaps you could write next articles
    referring to this article. I wish to read more things about it!

  10. I really like what you guys are up too. This sort of clever work and coverage!
    Keep up the wonderful works guys I’ve incorporated you guys to my personal blogroll.

  11. I will right away grasp your rss as I can’t find your email subscription hyperlink or e-newsletter service.
    Do you have any? Kindly allow me recognize in order that I may subscribe.

    Thanks.

  12. I will immediately take hold of your rss feed
    as I can’t in finding your email subscription link or newsletter service.

    Do you’ve any? Please let me know so that I may just subscribe.
    Thanks.

  13. It iss appropriate time tto make some plans ffor thee fyture andd iit iis tiime to be happy.
    I’ve rwad thbis post annd iff I coul I waznt tto suggeset
    yyou ssome interesting thinngs or tips. Perehaps yyou cann wriite next articles refering tto ths article.
    I wish tto readd morde things abouit it!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *