BCS Geography Lecture – 03

বারিমণ্ডল, দুর্যোগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও বাংলাদেশ, নমুনা প্রশ্ন

 


বারিমণ্ডল


পৃথিবীর পৃষ্ঠে ভূত্বকের নিচু অংশগুলো জলে পরিপূর্ণ আছে এগুলোকে বারিমণ্ডল(Hydrosphere) বলে। পৃথিবীতে জলভাগের সীমানা৭০.৮% এবং স্থলভাগের সীমানা ২৯.২%। পৃথিবীতে পানি দুই রকম। যথা:

    • লবণাক্ত পানি: এর উৎস সমুদ্র ও হ্রদ (৯৭%)
    • মিঠাপানি: এর উৎস নদ-নদী, পুকুর, খাল-বিল ইত্যাদি (৩%)

  • বারিমণ্ডল নিম্নোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে। যেমন:
    1. নদ-নদী, সাগর, মহাসাগর, উপসাগর, হ্রদ, হাওড়-বাওড়, বিল-ঝিল
    2. সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপ
    3. সমুদ্রস্রোত
    4. জোয়ার-ভাটা

 মহাসাগর:উন্মুখ বিস্তীর্ণ জলরাশিকে মহাসাগর (Ocean) বলে। পৃথিবীতে ৫টি মহাসাগর আছে। যথা:

    • প্রশান্ত মহাসাগর: এটি সবচেয়ে বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগর।এর গভীরতম স্থানফিলিপাইনের নিকট মারিয়ানা ট্রেঞ্চ (গভীরতা ১১৩৩ মিটার) ।
    • আটলান্টিক মহাসাগর: দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর।
    • ভারত মহাসাগর
    • আর্কটিক মহাসাগর/উত্তর মহাসাগর
    • এন্টার্কটিক মহাসাগর/দক্ষিণ মহাসাগর: সবচেয়ে ছোট মহাসাগর।

 

সাগর: মহাসাগরের চেয়ে আয়তনে ছোট পানিরাশিকে সাগর (Sea) বলে।স্রোতহীন যে পানিতে ভাসমান আগাছা ও শৈবাল সঞ্চিত হয় তাকে শৈবাল সাগর বলে। এটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত।

  • বৃহত্তম সাগর: দক্ষিণ চীন সাগর
  • ক্ষুদ্রতম সাগর: বাল্টিক সাগর
  • ব্যস্ততম সাগর: ভূমধ্যসাগর

উপসাগর: তিন দিকে স্থল দ্বারা বেষ্টিত জলরাশিকে উপসাগর (Bay) বলে। প্রায় চারদিকে স্থল দ্বারা বেষ্টিত জলরাশিকে (Gulf) উপসাগর বলে। সবচেয়ে বড় উপসাগর মেক্সিকো উপসাগর। বঙ্গোপসাগর (Bay of Bengal) একটি উপসাগর। এর গভীরতম খাদের নাম ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড’ (গভীরতা ১১৩০মিটার) ।


হ্রদ: চারদিকে সম্পূর্ণভাবে স্থল দ্বারা বেষ্টিত জলরাশিকে হ্রদ (Lake) বলে। এটি লবণাক্ত ও মিঠাপানি উভয়ই হতে পারে। পৃথিবীর বৃহত্তম লবণাক্ত পানির হ্রদ কাস্পিয়ান সাগর (মধ্য এশিয়া) এবং মিঠাপানির হ্রদ সুপিরিয়র (যুক্তরাষ্ট্র)। ইসরাঈল ও জর্ডানের মাঝখানে অবস্থিত একটি হ্রদের নাম মৃত সাগর(Dead Sea) । এটি সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ৩৯৩ মিটার নিচে অবস্থিত। অতিরিক্ত লবণাক্ততার ফলে এ সাগরে মানুষ ডোবে না।


হাওড় ও বাওড়:হাওড় হলো বিশাল গামলা আকৃতির জলাশয়। যেখানে অনেক পানি জমে। যা ভূআলোড়নের ফলে সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওড়: হাকালুকি হাওড় (মৌলভীবাজার)। অন্যদিকে, বাওড় হলো পুরাতন নদীর গতিপথ পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট জলাশয়।


বিল ও ঝিল:পুরতান নদীর গতিপথের ধার ঘেঁষে বিল সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের বৃহত্তম বিল: চলনবিল (পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ) ।ঝিল হলো নদীর পরিত্যক্ত খাত বা বিল অপেক্ষা গভীর জলাশয়। সাধারণত ঝিলকে অশ্বখুরাকৃতির হ্রদ হিসেবে নির্দেশ করা হয়।


নদ ও নদী:নদ ও নদী সাধারণত মিষ্টি জলের একটি প্রাকৃতিক জলধারা যা ঝরনাধারা, বরফগলিত স্রোত অথবা প্রাকৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট হয়ে প্রবাহ শেষে সাগরমহাসাগরহ্রদ বা অন্য কোনো নদী বা জলাশয়ে পতিত হয়।

  • নদ ও নদীর পার্থক্য: প্রচলিত তথ্য মতে, নদীর শাখা থাকে, নদের শাখা থাকে না।প্রকৃতপক্ষে নদ ও নদীর সঙ্গে শাখা থাকা না থাকার কোনো সম্পর্ক নেই। এই দুয়ের মাঝে যা পার্থক্য আছে তা হলো ব্যাকরণগত।বাংলা, হিন্দি ও ফারসি ইত্যাদি ভাষার ক্ষেত্রে, পুরুষবাচক শব্দ সাধারণত অ-কারান্ত এবং নারীবাচক শব্দ আ-কারান্ত বা ই, ঈ-কারান্ত হয়। যেমন; পদ্মজ (অ-কারান্ত), পদ্মজা (আ-কারান্ত, নামের শেষে আ আছে), রজক (অ-কারান্ত) -রজকী (ঈ-কারান্ত, নামের শেষে ঈ আছে)।

তাই যে সকল নদীর নাম পুরুষবাচক অর্থাৎ অ-কারান্ত তারা নদ আর যে সকল নদীর নাম নারীবাচক অর্থাৎ আ-কারান্ত বা ঈ, ই-কারান্ত তারা নদী। যেমন: নীল নদ, কপোতাক্ষ নদ, আমাজন নদ ইত্যাদি। পদ্মা নদী, আড়িয়াল খাঁ নদী, সুরমা নদী, গোমতী নদী ইত্যাদি।

  • প্রধান নদী: এটি প্রাকৃতিক উৎস থেকে সৃষ্টি অর্থাৎ অন্য কোনো নদী থেকে সৃষ্ট হয়নি।
  • উপনদী: কোনো ক্ষুদ্র জলধারা, পর্বত বা হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রধান নদীর সাথে মিলিত হলে তাকে উপনদী বলে।
  • শাখানদী: কোনো বৃহৎ নদী থেকে কোনো জলধারা বের হয়ে অন্য কোনো সাগর বা হ্রদে পতিত হলে তাকে শাখা নদী বলে।
  • আন্তঃসীমান্ত নদী/অভিন্ন নদী: যে নদী এক বা একাধিক দেশের রাজনৈতিক সীমা অতিক্রম করে তাকে আন্তঃসীমান্ত নদী/অভিন্ন নদী বলে।
  • উপত্যকা: যে খাদ বা নদীপথ দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় সেই খাদকে উক্ত নদীর উপত্যকা বলে।
  • নদীগর্ভ: উপত্যকার তলদেশকে নদীগর্ভ বলে।
  • মোহনা: নদী যখন কোনো সাগর বা হ্রদে এসে মিলিত হয়, ঐ মিলিত হওয়ার স্থানকে মোহনা বলে।
  • নদীসঙ্গম: একাধিক নদীর মিলনস্থলকে নদীসঙ্গম বলে।
  • খাঁড়ি: নদীর অধিকবিস্তৃত মোহনাকে খাঁড়ি বলে।
  • অববাহিকা: নদীর উৎপত্তি স্থান থেকে যে বিস্তৃত অঞ্চল দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে প্রবাহিত হয় সে অঞ্চলকে অববাহিকা (Basin) বলে।
  • দোয়াব: দুই নদীর মধ্যবর্তী উর্বর শস্যাঞ্চলকে দোয়াব বলে।

2.সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপ: সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপকে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা:

  • মহীসোপান (Continental Shelf): মহাদেশসমূহের চারদিকে স্থলভাগের কিছু অংশ অল্প ঢালু হয়ে সমুদ্রের পানির মধ্যে নেমে গেছে। সমুদ্রের উপকূলরেখা থেকে তলদেশের নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে।এটি হালকা খাঁড়া ও অধিক প্রশস্ত হয়। মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ২০০ মিটার। ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমে পৃথিবীর বৃহত্তম মহীসোপান অবস্থিত। ১৯৮২ সালে সমুদ্র আইন সংক্রান্ত কনভেনশন অনুযায়ী উপকূলীয় রাষ্ট্রের মহীসোপানের সীমা হবে ভিত্তিরেখা হতে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল। মহীসোপানের সবচেয়ে উপরের অংশকে উপকূলীয় ঢাল(Coastal Slop) বলে।

 

  • মহীঢাল (Continental Slop): মহীসোপানের শেষসীমা থেকে ভূভাগ হঠাৎ খাঁড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশের সঙ্গে মিশে যায়। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে। এটি একদম খাঁড়া ও কম প্রশস্ত হয়। মহীঢালের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ২০০ মিটার থেকে ৩,০০০ মিটার।

 

  • গভীর সমুদ্রের সমভূমি (Oceanic Plain): মহীঢাল শেষ হওয়ার পর থেকে সমুদ্র তলদেশে যে বিস্তৃত সমভূমি দেখা যায় তাকে গভীর সমুদ্রের সমভূমি বলে। এর গভীরতা ৫,০০০ মিটার। এ অঞ্চলটি সমভূমি নামে খ্যাত হলেও প্রকৃতপক্ষে তা বন্ধুর।

 

  • নিমজ্জিত শৈলশিলা (Oceanic Ridge): সমুদ্রতলদেশ থেকে আগ্নেয়গিরির লাভা উদগিরণের ফলে সমুদ্রগর্ভে শৈলশিরার ন্যায় ভূমিরূপ গঠিতহয়েছে। এগুলো নিমজ্জিত শৈলশিরা নামে পরিচিত। এর মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগরের শৈলশিরা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।

 

  • গভীর সমুদ্রখাত (Oceanic Trench):গভীর সমুদ্রের সমভূমি অঞ্চলে মাঝে মাঝে গভীর খাত দেখা যায়। এ সকল খাতকে গভীর সমুদ্রখাত বলে। এগুলো অধিক প্রশস্ত না হলেও খাঁড়া ঢালবিশিষ্ট। এর গভীরতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫,৪০০ মিটারের অধিক। প্রশান্ত মহাসাগরে এসব খাতের সংখ্যা বেশি। প্রশান্ত মহাসাগরের ‘মারিয়ানা ট্রেঞ্চ’ পৃথিবীর গভীরতম সমুদ্রখাত। আটলান্টিক মহাসাগরের ‘পোর্টোরিকো’ দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র খাত।

  1. সমুদ্রস্রোত: বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রের উপরিভাগে স্রোত তৈরি করে নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে মেরু অঞ্চলে যায়। সমুদ্রস্রোত মূলতউষ্ণতার তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের কারণে হয়।বিভিন্ন কারণে সমুদ্রস্রোত হয়। যেমন:

→উষ্ণতার তারতম্য

→ বায়ুপ্রবাহ

→ লবণাক্ততার তারতম্য

→ বাষ্পীভবনের তারতম্য

→ গভীরতার তারতম্য

→ পৃথিবীর আবর্তন

→ স্থলভাগের অবস্থান

→ আহ্নিক গতি

→ মেরু অঞ্চলের বরফগলন।

সমুদ্রস্রোত প্রধাণত ২ প্রকার। যথা:

ক. উষ্ণস্রোত: নিরক্ষীয় বা বিষুবীয় অঞ্চলের তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে পানি উষ্ণ ও হালকা হয়। ফলে, এখানে উষ্ণস্রোত দেখা যায়।

খ. শীতলস্রোত: মেরু অঞ্চলের তাপমাত্রা কম হওয়ার কারণে পানি শীতল ও ভারী হয়। ফলে, এখানে শীতলস্রোত দেখা যায়। শীতল স্রোতের গতিপথে জাহাজ চালানো বিপজ্জনক। কারণ এখানে বড় বড় হিমপ্রাচীর থাকে। মূলত, উষ্ণস্রোত ও শীতলস্রোতের মিলনস্থলে কুয়াশা ও ঝড় হয়। উল্লেখ্য, আটলান্টিক মহাসাগরের ক্রান্তীয় শান্ত বলয়কে অশ্ব-অক্ষাংশ বলে।


  1. জোয়ার-ভাটা

পৃথিবীর উপর চন্দ্রের আকর্ষণ ও মহাকর্ষ শক্তি জোয়ার-ভাটার (High Tide&Low Tide)মূল কারণ। দূরত্বের কারণে সূর্যের চেয়ে জোয়ার-ভাটার উপর চাঁদের আকর্ষণ বেশি হয়।সূর্য অপেক্ষা চন্দ্রের আকর্ষণ পৃথিবীর উপর দ্বিগুণ।উপকূলের কোনো স্থানে পরপর দুটি জোয়ারের মধ্যে ব্যবধান ১২ ঘন্টা। জোয়ার সৃষ্টির ৬ ঘন্টা ১৩ মিনিট পর ভাটার সৃষ্টি হয়। জোয়ার-ভাটার কারণ ২টি। যথা:

ক. চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব

খ. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি।

 

  • জোয়ার-ভাটা প্রধাণত ৪ প্রকার। যথা:

(ক) মুখ্য জোয়ার: পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের নিকটবর্তী হয় সে অংশে চাঁদের আকর্ষণে পানি ফুলে উঠে। একে মুখ্য জোয়ার বা প্রত্যক্ষ জোয়ার বলে।

 

(খ) গৌণ জোয়ার: চাঁদের বিপরীত দিকে যে জোয়ার হয়তাকে গৌণ জোয়ার বা পরোক্ষ জোয়ার বলে।

 

(গ) তেজকটাল/ভরাকটাল: পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে চন্দ্র, সূর্য ও পৃথিবী একপাশে একই সরলরেখায় অবস্থান করে। এদের মিলিত আকর্ষণে যে জোয়ার হয় তাকে তেজকটাল বা ভরাকটাল বলে।

 

(ঘ) মরাকটাল: অষ্টমী তিথিতে চন্দ্র ও সূর্য একই সমকোণে অবস্থান করে পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। চন্দ্রের আকর্ষণেযে জোয়ার হয় সূর্যের আকর্ষণে তা কমে যায়। এ সময় জোয়ারের বেগ প্রবল হয় না। এই জোয়ারকে মরাকটাল বলে। প্রতি মাসে ২ বার ভরাকটাল ও মরাকটাল হয়।

 


দুর্যোগ


জীবন, সমাজ ও পরিবেশে সৃষ্ট অস্বাভাবিক অবস্থা যা মানুষের ক্ষতি সাধন করে তাকে দুর্যোগ(Disaster) বলে।এর ফলে বাহ্যিক ক্ষতিসাধন, জীবনহানি কিংবা পরিবেশগত ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়।দুর্যোগ প্রধানত ২ প্রকার। যথা:প্রাকৃতিক দুর্যোগ ওমানবসৃষ্ট দুর্যোগ।

 

  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ ৩ ভাবে সৃষ্টি হতে পারে। যথা:

(ক) বায়ুমণ্ডলীয় সৃষ্ট দুর্যোগ: বায়ুমণ্ডল তথা পৃথিবী থেকে উপরিভাগের আবহাওয়াজনিত পরিবর্তনের কারণে নিম্নোক্ত দুর্যোগসমূহ সৃষ্টি হয়। যেমন:

  • ঘূর্ণিঝড় (Cyclone): Cyclone শব্দটি গ্রিক শব্দ। এর অর্থ কুণ্ডলী পাকানো সর্প। ঘূর্ণিঝড় হলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় (Tropical Cyclone). পৃথিবীর ৩০ উত্তর ও ৩০ দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়কে আমেরিকায় ‘হারিকেন’; দূরপ্রাচ্যে ‘টাইফুন’ এবং উপমহাদেশে ‘সাইক্লোন’ বলে। ঘূর্ণিঝড়ে সবসময় বাতাসের গতিবেগ থাকে ঘন্টায় ১১৮ কি.মি. এর বেশি।ঘূর্ণিঝড় নিম্নচাপ থেকে সৃষ্টি হয়ে শক্তিশালী নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। এর ফলে প্রবল বাতাস, ভারীবর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়।

 

  • জলোচ্ছ্বাস (Tidal Bore): ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল ঝড়ো বাতাস সমুদ্রপৃষ্ঠে আকস্মিক তরঙ্গ ও জলস্ফীতির সৃষ্টি করে যা জলোচ্ছ্বাস হিসেবে পরিচিত।এটি ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্টি হয়। জলোচ্ছ্বাস হলো ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক উপাদান। এর ফলে পানির স্বাভাবিক উচ্চতা থাকে ১৩ থেকে ১৫ মিটার।

 

  • ঝড় ও অতিবৃষ্টি (Strom& Downpour): ঝড় বায়ুমণ্ডলের একটি ভয়াবহ দুর্যোগ। এর ফলে তীব্র বাতাস সৃষ্টি, ভারী বৃষ্টিপাত, বজ্রবিদ্যুৎ উৎপন্ন এবং সমুদ্র ফুসে উঠে উঁচু ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়।পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘেরসৃষ্টি করে। এই ঘনীভূত মেঘ থেকে ভারী বৃষ্টিপাত দেখা দেয়।

 

  • বজ্রঝড়ও বজ্রপাত (Thunderstorm&Thunderclap): বজ্রঝড় এক প্রকার ক্রান্তীয় ঝড়। বজ্রপাত বিদ্যুৎ চমকানো সহযোগে সংঘটিত ভারীবর্ষণ অথবা শিলাবৃষ্টি। গ্রীষ্মের উষ্ণ ও আর্দ্র দিনে উত্তপ্ত বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠতে থাকে এবং দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে গাঢ় কৃষ্ণবর্ণের বজ্রমেঘ উৎপন্ন করে। বাংলাদেশে এই ঝড়ের নাম ‘কালবৈশাখী’। কালবৈশাখী এক ধরনের বজ্রঝড়। এ ঝড়েশিলাবৃষ্টি হয়।

 

  • টর্নেডো (Tornado): Tornado শব্দটি স্প্যানিশ শব্দ। এর অর্থ ঘুরে আসা। টর্নেডো ঘূর্ণিঝড় অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী ছোট আকারের বজ্রঝড়। স্থলভাগে নিম্নচাপের ফলে এর উৎপত্তি হয়। এতে বাতাসে ঘূর্ণনের বেগ থাকে ঘন্টায় ৩০০ থেকে ৪৮০ কি.মি. পর্যন্ত।

 

  • খরা ও মহামারী (Drought & Epidemic):এটি সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী দুর্যোগ যা বিরূপ আবহাওয়ার ফলে হয়। এর ফলে প্রচণ্ড দাবদাহে জমি অনুর্বর হয়ে পড়ে।দীর্ঘকালীন শুষ্ক আবহাওয়া ও অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতেরকারণে মূলত খরা ও মহামারী দেখা দেয়।

 

  • মরুকরণ (Desertification): শুষ্ক, শুষ্কপ্রায় এবং শুষ্ক আর্দ্রপ্রায় এলাকাতে ভূমি অবনয়নের (Land Degradation) বিস্তৃতি হলো মরুকরণ, যা মরু এলাকার বহির্মুখী প্রসারণ ঘটায়। জলবায়ুগত পার্থক্য ও মানুষের অবাধ বৃক্ষনিধন মরুকরণের অন্যতম কারণ।এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী দুর্যোগ যা খরার কারণে ঘটে থাকে।

 

  • শৈত্যপ্রবাহ (Cold Wave):শৈত্যপ্রবাহ কোনো স্থানের বায়ুর তাপমাত্রার নিম্নগামীতাকে নির্দেশ করে। বাতাসের তাপমাত্রা দ্রুততার সাথে নেমে যাওয়াকে শৈত্যপ্রবাহ বলে। এর ফলে কুয়াশার প্রকোপ বেড়ে যায় এবয় শস্য উৎপাদন ব্যাহত হয়।শীতপ্রধান অঞ্চল তথা ইউরোপে শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়।

 

  • হিমবাহ (Glacier): হিমবাহ হলো বরফের বিরাট চলমান স্তুপ বা নদী। সাধারণত পার্বত্য অঞ্চলে শীতকালে তুষার পড়ার হার গ্রীষ্মে গলনের হারের চেয়ে বেশি হলে পাহাড়ের উপরে তুষার জমতে শুরু করে এবং জমে শক্ত বরফে পরিণত হয়। এই বরফজমা এলাকাটিকে বরফক্ষেত্র (Icefield) বলে। যখন এই জমা বরফ নিজের ওজনের ভারে এবং মাধ্যাকর্ষণের টানে ধীরগতিতে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নামতে শুরু করে, তখন তাকে হিমবাহ বলে।

(খ) ভূপৃষ্ঠের প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট দুর্যোগ:এ ধরনের দুর্যোগ স্থলভাগের আবহাওয়া ও জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের কারণে ঘটে থাকে। যেমন:

  • বন্যা (Flood): বন্যাপ্রচুর বৃষ্টি ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে ঘটে থাকে। সাধারণত ভারী বৃষ্টিপাত, বরফ, তুষারগলা পানিঅথবা এদের মিলিত পানি নদীপ্রণালির ধারণক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেলে বন্যা সংঘটিত হয়।

 

  • নদীভাঙন (Riverbank Erosion):নদীর সমুদ্রে গিয়ে পড়ার সময় সাধারণত সমুদ্রের কাছাকাছি হলে তীব্র গতিপ্রাপ্ত হয়। তখন পানির তীব্র তোড়ে নদীর পাড় ভাঙতে থাকে। নদীর পানির স্রোতে নদীর পাড় ভাঙার এই অবস্থাকে নদীভাঙন বলে।এটি পুনঃসংঘটিত প্রাকৃতিক দূর্যোগ।

 

  • উপকূলীয় ভাঙন (Coastal Erosion):জোয়ার-ভাটা ও সামুদ্রিক তরঙ্গ ক্রিয়ার ফলে উপকূলীয় ভূমি দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে উপকূলীয় ভাঙন দেখা দেয়।

 

  • মাটিক্ষয় (Soil Erosion): মাটিতে প্রবাহিত পানি, বাতাসের বেগ ও অভিকর্ষীয় টানের কারণে মাটি ক্ষয় হয়। মাটিক্ষয় মূলত পৃষ্ঠমৃত্তিকার ভৌত অপসারণ। ভূতাত্ত্বিক ক্ষয় একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা মানুষের প্রভাব ব্যতীত প্রাকৃতিক পরিবেশে ভূমির ক্ষয়সাধন করে। এটি একটি ধীর গতিসম্পন্ন ও গঠনমূলক প্রক্রিয়া।

 

  • ভূমিধস(Landslide):ভূমিধস বলতে পাহাড়-পর্বতের গা থেকে মাটির চাকা বা পাথরের খণ্ড বিরাট আকারে খসে নীচে পড়ার ঘটনাকে বোঝায়।এটি পাহাড় কর্তন, জুম চাষ ও পাহাড়ে বৃষ্টির পানি জমার ফলে ঘটে থাকে। পাহাড় কর্তন মূলত ভূমিধসের প্রধান কারণ।

 

  • লবণাক্ততা (Saltiness): লবণাক্ততা বলতে লবণ দ্বারা প্রভাবিত এক প্রকার মৃত্তিকা বা পানি বুঝায় যাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রবণীয় লবণ, বিশেষ করে সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকে।বৈশ্বিক সমুদ্রের জলের গড় লবণাক্ততা প্রায় ৩.৫%। এর ফলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়। উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজন বেশি লবণাক্ততার শিকার হয়।

(গ) ভূ-অভ্যন্তরে সৃষ্ট দুর্যোগ:এ ধরনের দুর্যোগ পৃথিবীর অভ্যন্তরে অর্থাৎ মাটির নিচে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের কারণে ঘটে থাকে। যেমন:

  • ভূমিকম্প (Earthquake):ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এরূপ আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে।পৃথিবীর অভ্যন্তরে যেখান থেকে ভূকম্প-তরঙ্গ উৎপন্ন হয়,তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে। সাধারণত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৬ কি.মি. এর মধ্যে এই কেন্দ্র অবস্থান করে। তবে ৭০০ কি.মি. গভীরে গুরুমণ্ডল থেকেও ভূ-কম্পন উত্থিত হতে পারে।ভূমিকম্প পূর্বসতর্কতা ছাড়াই সংঘটিত হয়। কেন্দ্রের গভীরতার ভিত্তিতে ভূমিকম্পকে অগভীর কেন্দ্র (০ থেকে ৭০ কি.মি.), মাঝারি কেন্দ্র (৭০ থেকে ৩০০ কি.মি.) ও গভীর কেন্দ্র (৩০০ থেকে ৭০০ কি.মি.) সংজ্ঞায় অভিহিত করা হয়।

ভূমিকম্পের তরঙ্গ সিসমোগ্রাফ যন্ত্রের মাধ্যমে রেকর্ড করা হয়। রিখটার স্কেল ভূকম্পন তীব্রতা/শক্তি পরিমাপের একটি গাণিতিক স্কেল। এ স্কেলে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত ভূমিকম্পের তীব্রতা ধরা হয়। ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী সি. এফ. রিখটার এটি আবিষ্কার করেন।১৮৯৭ সালে ভারতের শিলং মালভূমিতে ৮.৭ রিখটার স্কেল মাত্রায় সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটে। ২০১৫ সালে নেপালে ৭.৮ রিখটার স্কেল মাত্রায় ভূমিকম্প ঘটে।

ভূ-ত্বকীয়পাত (TectonicsPlate): ভূত্বকীয় পাত হলোএকটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব যার দ্বারা পৃথিবীর অশ্বমণ্ডল অর্থাৎএকে অপরের দিকে চলাচল করতে সক্ষম কিছু পাতলা, অনমনীয় খণ্ডের সমন্বয়ে তৈরি ভূত্বক বা পৃথিবীর উপরিতলের বর্ণনা দেওয়া হয়। সর্বপ্রথম ১৯১২ সালে জার্মান আবহাওয়াবিদ আলফ্রেড ওয়েগেনারের মহীসঞ্চারণ তত্ত্ব (Continental Drift) থেকেই এই ধারণাটির জন্ম হয়।

ভূত্বক গঠনের পাততত্ত্ব (Plate Tectonics) বিজ্ঞানের আধুনিকতম আবিষ্কার ও গবেষণার দৌলতে এটি বিজ্ঞানসম্মত একটি ঘটনা, যা পৃথিবীতে সংঘটিত ভূমিকম্পের জন্য দায়ী বলে ভূবিজ্ঞানীরা গ্রহণ করেছেন। বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বটিকে ব্যবহার করে ভূমিকম্প ছাড়াও আগ্নেয়গিরির উদগীরণ, পর্বত সৃষ্টি এবং মহাসাগর ও মহাদেশ সৃষ্টির ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন।

 

  • সুনামি (Tsunami):Tsunami শব্দটি জাপানি শব্দ। এর অর্থ পোতাশ্রয়ের ঢেউ।সমুদ্র তলদেশে (২০-৩০ কি.মি. গভীরে) প্রচণ্ড মাত্রার ভূকম্পন, অগ্ন্যুৎপাত, টেকটনিক প্লেটের উত্থান-পতন কিংবা অন্য কোনো কারণে ভূ-আলোড়নের সৃষ্টি হলে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে যে প্রবল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয় তা সুনামি নামে পরিচিত। সুনামি উপকূলীয় শহর ও অন্যান্য লোকালয়ে আকস্মিক ও ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করে।গভীর জলে সুনামি ঘন্টায় ১,০০০ কি.মি. গতির হতে পারে। প্রশান্ত মহাসাগর অংশে সুনামি হওয়ার সম্ভাবনা সর্বাধিক। ২০০৪ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ সুনামির গতি ছিল ঘণ্টায় ৭০০-৮০০ কি.মি.। ২০১১ সালে জাপানে ৯.০০ রিখটার স্কেল মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয় এবং এর ফলে উচ্চতর সুনামি আঘাত হানে। এর ফলে ৩টি পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হাইড্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে প্লান্টটি গরম হয়ে যাওয়ায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।

 

  • আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত (Volcanic Eruption):ভূপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ বেশি হলে সেখানে গর্ত বা ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং সেই ফাটলের মধ্য দিয়ে ভূগর্ভস্থ বিভিন্ন পদার্থ নির্গত হয় তাকে আগ্নেয়গিরি (Volcano) বলে। আগ্নেয়গিরির উদগিরিত পদার্থকে লাভা বলে। লাভার উর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হওয়াকে (Eruption) অগ্ন্যুৎপাত বলে। বাংলাদেশে এই দুর্যোগ ঘটার সম্ভাবনা নেই।

 

  • আর্সেনিক দূষণ (Arsenic Polution): আর্সেনিকধূসর আভাযুক্ত সাদা রং বিশিষ্ট ভঙ্গুর প্রকৃতির একটি অর্ধধাতু বা উপধাতু। প্রকৃতিতে আর্সেনিক বিভিন্ন যৌগ আকারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।মানবদেহে যখন আর্সেনিকের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় তখন সে অবস্থাকে আর্সেনিক বিষক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দীর্ঘসময় ধরে আর্সেনিকযুক্ত পানি খেলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব শরীরে দেখা যায়।আর্সেনিক দূষণ বা ভূ-গর্ভস্থ পানি দূষণ বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য একটি মারাত্মক দুর্যোগ।আর্সেনিক বিষাক্ততার কারণে সৃষ্ট রোগাক্রান্ত অবস্থাকে আর্সেনিকোসিস (Arsenicosis) বলে।

 

  • এল নিনো ও লা নিনো: ‘এল নিনো ও লা নিনো’ শব্দ দুটি স্প্যানিশ শব্দ। এল নিনো অর্থ বালক এবং লা নিনো অর্থ বালিকা। এটি জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সম্পৃক্ত। এল নিনোর প্রভাবে সাগরে উষ্ণ পানির স্রোত প্রবাহিত হয় এবং লা নিনোরপ্রভাবে পানির উষ্ণতা কমে আসে। লা নিনো’র কারণে অতিবৃষ্টি ও বন্যা হয়।

 

  • মানবসৃষ্ট দুর্যোগ:মানুষের অজ্ঞতা, আধিপত্য বিস্তার, পারস্পরিক প্রতিযোগিতা প্রভৃতি কারণে প্রাকৃতির পরিবেশের ভারসাম্যহানি ঘটে। মানুষ তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। একে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ বলে। মানবসৃষ্ট যে দুর্যোগ বর্তমানে সবার চিন্তা ও গবেষণার বিষয়, তা হচ্ছে গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া।মানুষ কর্তৃক নিম্নোক্ত কাজের কারণে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ঘটে থাকে। যেমন:

→ শিল্পায়ন

→ অপরিকল্পিত নগরায়ন

→ বনাঞ্চল নিধন

→ যুদ্ধ ও রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার

→ পরিবেশ দূষণ

→ গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া

→ অবকাঠামোগত বিপর্যয়


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (Disaster Management) একটি ব্যবহারিক বিজ্ঞান। দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য গৃহীত বিভিন্ন কৌশল বা পদেক্ষেপকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রথমে ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ করতে হবে। অর্থাৎ যে সকল এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ তা চিহ্নিত করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থাকে দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতি বলে।

দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতিকে দুর্যোগ প্রশমন বলে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে Community Level থেকে ব্যবস্থাগ্রহণ করা সবচেয়ে ফলপ্রসূ। দুর্যোগের পরপরই সাড়াদানের প্রয়োজন হয়। অতীতে সাড়াদানকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলে ধরে নেওয়া হতো। দুর্যোগে সম্পদ ও পরিবেশের যে ক্ষতিসাধন ঘটে তা পুনর্নিমাণের মাধ্যমে দুর্যোগপূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনাকে পুনরুদ্ধার বলে।

 

  • দুর্যোগ মোকাবিলায় ৪ ‍টি পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন:
  1. দুর্যোগ পূর্বকালীন ব্যবস্থা (Preparation)
  2. দুর্যোগকালীন ব্যবস্থা (Adaption)
  3. দুর্যোগ পরবর্তী ব্যবস্থা (Mitigation)
  4. দুর্যোগের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা (Development)

 


বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ


বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বদ্বীপ ও অন্যান্য ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে এ দেশে নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ভূগর্ভস্থ দুর্যোগের ঝুঁকি তুলানামূলক কম। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেঘূর্ণিঝড়,বন্যা, নদীভাঙন, ভূমিধস, আর্সেনিক দূষণ বা ভূগর্ভস্থ পানি দূষণ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

ঘূর্ণিঝড়: বাংলাদেশে প্রাক-বর্ষা মৌসুম (এপ্রিল-মে-জুন) এবং বর্ষা-পরবর্তী মৌসুম (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেম্বর) মাসে ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হয়। গ্রীষ্মকালে এপ্রিল-মে মাসে বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া উত্তর-পশ্চিম অভিমুখী প্রচণ্ড ঝড়ের স্থানীয় নাম ‘কালবৈশাখী’। এ ঝড় সাধারণত শেষ বিকেলে বা সন্ধ্যার পরে সংঘটিত হয়। কালবৈশাখী ঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ৪০-৬০ কি.মি.।


বাংলাদেশে ইতিহাসেঘটে যাওয়া কতিপয় ঘূর্ণিঝড় হলো:


 

  • ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ২২২ কি.মি.। জলোচ্ছ্বাসের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১০.৬ মিটার। সরকারি হিসাব মোতাবেক এ ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের প্রাণহাণি ঘটেছিল।

  • ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়কেও প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় নামে চিহ্নিত করা হয়। এতে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই ঘূর্ণিঝড়ের সময় ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনী ‘অপারেশন মান্না’ নামে ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা করে। এ সময় বাংলাদেশে আসা মার্কিন টাস্কফোর্সের নাম ছিল ‘অপারেশন সি-এঞ্জেল’।

  • ১৫ নভেম্বর ২০০৭ সালে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল ‘সিডর’। সিডর সিংহলি শব্দ। এর অর্থ চোখ। এতে প্রায় ছয় সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ সময় মার্কিন সেনাবাহিনী পরিচালিত টাস্কফোর্সের নাম ছিল ‘অপারেশন সি-এঞ্জেল-২’।

  • এছাড়াও, ২০০৮ সালের নার্গিস ও রেশমি, ২০০৯ সালের বিজলি ও আইলা, ২০১৩ সালের মহাসেন, ২০১৫ সালের কোমেন, ২০১৬ সালের রোয়ানু এবং ২০১৭ সালের মোরা ঘূর্ণিঝড়সমূহ বাংলাদেশের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য।

বন্যা: প্রতি বছর মৌসুমী ঋতুতে বাংলাদেশের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূভাগ বন্যায় প্লাবিত হয়। সাধারণত মে মাস থেকেই এদেশে বন্যা শুরু হয় এবং নভেম্বর মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বন্যা বাংলাদেশে একটি পুনঃপুনঃ সংঘটিত ঘটনা। ১৭৮৭ সাল থেকে ১৮৩০ সাল পর্যন্ত সংঘটিত পুনরাবৃত্ত বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের পুরোনো গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়। বাংলাদেশের সংঘটিত বন্যাকে তিনটি শেণিতে বিভক্ত করা যায়। যেমন:

(ক) মৌসুমী বন্যা

(খ) আকস্মিক বন্যা

(গ) জোয়ারসৃষ্ট বন্যা

বাংলাদেশে ইতিহাসে ঘটে যাওয়া কতিপয় প্রলয়ংকারী বন্যার মধ্যে ১৯৭৪ সাল, ১৯৮৭ সাল, ১৯৮৮ সাল ও ১৯৯৮ সালের বন্যাউল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ১৯৮৮ সালের বন্যা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এ বন্যায় রাজধানী ঢাকাসহ সমগ্র দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়।


নদীভাঙন:বাংলাদেশের পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর তীরে ব্যাপক ভাঙন সংঘটিত হয়। বন্যা মৌসুমে দেশের প্রধান নদী পাড়ের ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করে। বাংলাদেশের সর্বমোট প্লাবনভূমির প্রায় ৫% ভূমি প্রত্যক্ষভাবে নদীভাঙনের কবলে পড়ছে। এটি বাংলাদেশের একটি স্থানীয় ও পুনঃসংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ।


ভূমিধস: ভূমিধস বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় একটি সাধারণ ঘটনা। বিশেষত পার্বত্য জেলা তথা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভূমিধস দেখা দেয়। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট উভয় কারণে ভূমিধস হয়ে থাকে। খাঁড়া পাহাড়ি ঢালে ঝুম চাষ, বৃষ্টির পানি জমা, পাহাড় কর্তন প্রভৃতি ভূমিধস সংঘটনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


আর্সেনিক দূষণ: আর্সেনিক দূষণ বা ভূগর্ভস্থ পানি দূষণবর্তমানে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক দুর্যোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী প্রতিলিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা ০.০১ মিলিগ্রাম। বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত প্রতিলিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা ০.০৫ মিলিগ্রাম অর্থাৎ ০.০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে সে পানি পান করা কিংবা রান্নার কাজে ব্যবহার করা যাবে না। পার্বত্য অঞ্চল বাদে বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলার পানিতে কম-বেশি আর্সেনিক বিদ্যমান। বাংলাদেশের সবচেয়ে আর্সেনিক আক্রান্ত জেলা চাঁদপুর।

 


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও বাংলাদেশ


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক, পরিবেশগত ও মনুষ্যসৃষ্ট আপদসমূহের ক্ষেত্রে জনগণের, বিশেষ করে দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিতদের ঝুঁকি, মানবিক ও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নামিয়ে আনা এবং বড় মাপের দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম ও কার্যকর জরুরি সাড়াপ্রদান পদ্ধতি প্রস্তুত রাখা।

দুর্যোগের কারণে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসসহ দুর্যোগ উত্তরকালে জাতীয় সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করাই বাংলাদেশে সরকারের মূল লক্ষ্য।

সরকারের প্রধান কার্যাবলী হলো: দুর্যোগপ্রবণ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রণয়ন; গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মপরিকল্পনা কর্মসূচি অব্যাহত রাখা; সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকান্ডের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা; দুর্যোগ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও তথ্য ভান্ডার গড়ে তোলা ইত্যাদি।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত আইন, নীতিমালা ও প্রয়োজনীয়পদক্ষেপসমূহ নিম্নরূপ:

  • ১৯৭১ সালে ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর’ গঠিত হয়। এটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে।

  • ১৯৭২ সালে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়’ গঠিত হয়। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে‘জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল’ রয়েছে। এর প্রধান হলো প্রধানমন্ত্রী। এই কাউন্সিলের অধীনে কিছু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি রয়েছে। এইসব কমিটির প্রধান মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী।

  • ১৯৭২ সালে ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ‘বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র’ এ বোর্ডের আওতাধীন।

  • ১৯৮০ সালে ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগে বাংলাদেশের একমাত্র পূর্বাভাস কেন্দ্র Space Research and Remote Sensing Organisation (SPARRSO) গঠিত হয়। এর নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এটি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। SPARRSO গত ১০০ বছরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়সমূহের জলবায়ুগত দিক পর্যালোচনা করে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে পূর্বাভাসের জন্য টাইয়ান (Tyan) নামে একটি মডেল প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে ঘূর্ণিঝড় ভূপৃষ্ঠে আঘাত হানার ২৪ ঘন্টা পূর্বে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে।

  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৯৩ সালে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংস্থার প্রধানের পদবি মহাপরিচালক।

  • ২০১২ সালে দুর্যোগ প্রতিরোধে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন’ প্রণীত হয়।

  • ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ সালে ‘জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ গ্রহীত হয়।

  • ঘূর্ণিঝড়ের প্রচণ্ডতাকে প্রশমনের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি এর যৌথ উদ্যোগে Cyclone Preparedness Programme (CPP) নামে একটি কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।

  • ১৯৮৭ ও ১৯৮৮ সালে দেশে ভয়াবহ বন্যা সংঘটিত হওয়ার পর ১৯৮৯ সালে বহুমাত্রিক বন্যা সমীক্ষা কার্যক্রম অর্থাৎ Flood Action Plan (FAP) গ্রহণ করা হয়; যা ছিল UNDP পরিচালিত Flood Policy Study এর ধারাবাহিক একটি সমীক্ষা। বিগত ১০০ বছরের তুলনায় ১৯৮৮ সালের বন্যার মাত্রা অধিকতর হওয়ায় FAP কার্যক্রম দাতাদের ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়।

  • ১৯৫৪ সালে বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগ চট্টগ্রাম শহরে বাংলাদেশের একমাত্র ভূমিকম্প রেকর্ড কেন্দ্র বা ভূমিকম্প মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করে।

  • ১৯৮৩ সালে ‘মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এ প্রতিষ্ঠানটি Geographical Information Systems (GIS) পদ্ধতি ব্যবহার করে পার্বত্য এলাকার ভূমিধসপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে। বান্দরবনে অবস্থিত ‘মৃত্তিকা সংরক্ষণ ও জল ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র’ এ প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন।

  • সরকারি প্রচেষ্টার পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাসমূহ হলো: অক্সফাম, কেয়ার বাংলাদেশ, প্রশিকা, ডিজ্যাস্টার ফোরাম, বিডিপিসি (বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রস্তুতি কেন্দ্র) ইত্যাদি।

  • বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বেতার ও টেলিভিশনে নদীবন্দরের জন্য১ থেকে ৪ নম্বর এবং সমুদ্রবন্দরের জন্য১ থেকে ১১ নম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সংকেত প্রচার করা হয়। নিম্নে সংকেত নম্বর ও এর অর্থসমূহ উল্লেখ করা হলো:

দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত-১ : দূর সমুদ্রে প্রবাহিত বাতাস ঝড়ে পরিণত হতে পারে।


দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত-২ : দূর সমুদ্রে ঝড় উঠেছে।


স্থানীয় সতর্ক সংকেত-৩ : বন্দরে দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা আছে।


স্থানীয় সতর্ক সংকেত-৪ : বন্দরে ঝড় আঘাত হানার সম্ভাবনা আছে।


বিপদ সংকেত – ৫ : ছোট বা মাঝারি ঝড়ের কারণে বন্দরে তীব্র আবহাওয়া বিরাজ করবে। এ ঝড় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরের     দক্ষিণ উপকূল এবং মংলা বন্দরের পূর্ব উপকূল দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।


বিপদ সংকেত – ৬ : ছোট বা মাঝারি ঝড়ের কারণে বন্দরে তীব্র আবহাওয়া বিরাজ করবে। এ ঝড় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরে     উত্তর উপকূল এবং মংলা বন্দরের পশ্চিম উপকূল দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।


মহাবিপদ সংকেত – ৭ : বন্দরের উপর দিয়ে ছোট বা মাঝারি গতিসম্পন্ন ঝড়ের কারণে ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করবে।


মহাবিপদ সংকেত – ৮ : বন্দরের উপর দিয়ে ছোট বা মাঝারি গতিসম্পন্ন ঝড়ের কারণে তীব্র ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করবে। এ ঝড় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরের দক্ষিণ উপকূল এবং মংলা বন্দরের পূর্ব উপকূল দিয়ে অতিক্রম করার  আশঙ্কা রয়েছে।


মহাবিপদ সংকেত – ৯ : বন্দরের উপর দিয়ে প্রবল গতিসম্পন্ন ঝড়ের কারণে তীব্র ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করবে। এ ঝড় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরের উত্তর উপকূল এবং মংলা বন্দরের পশ্চিম উপকূল দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।


মহাবিপদ সংকেত – ১০ : বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে অতিক্রমকারী তীব্র গতিসম্পন্ন ঝড়ের কারণে বন্দরে তীব্র ঝড়ো   আবহাওয়া বিরাজ করবে।


মহাবিপদ সংকেত – ১১ : আবহাওয়া সতর্ক কেন্দ্রের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এ অবস্থায় প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে                                         উদ্যত।


নমুনা প্রশ্ন


১. বঙ্গোপসাগরের গভীরতম স্থান ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে’র গভীরতা কত – 

ক) ১১,০৩৩ মিটার

খ) ১০,০৩৩ মিটার

গ) ৮,৮৫০ মিটার

ঘ) ১১,০৩০ মিটার

উত্তরঃ ঘ


২. সবচেয়ে ব্যস্ততম সাগর কোনটি?

ক) বাল্টিক সাগর

খ) দক্ষিণ চীন সাগর

গ) কাস্পিয়ান সাগর

ঘ) ভূমধ্যসাগর

উত্তরঃ ঘ


৩. চন্দ্র, সূর্য ও পৃথিবী একই সমকোণে অবস্থান করলে যে জোয়ার হয় তাকে বলে- 

ক) মরা কটাল

খ) মুখ্য জোয়ার

গ) তেজ কটাল

ঘ) গৌণ জোয়ার

উত্তরঃ ক


৪. সংক্ষিপ্ত পথে চলতে গেলে নাবিককে অনুসরণ করতে হয় – 

ক) বায়ুপ্রবাহ

খ) সমুদ্রস্রোত

গ) স্থলভাগের অবস্থান

ঘ) পৃথিবীর আবর্তন

উত্তরঃ খ


৫. সমুদ্রে উষ্ণস্রোত ও শীতলস্রোতের মিলনস্থলে কী ঘটে?

ক) পানিপ্রবাহ থেমে যায়

খ) কুয়াশা ও ঝড় হয়

গ) সমুদ্রের পানিস্তর বেড়ে যায়

ঘ) পানি বরফে পরিণত হয়

উত্তরঃ খ


৬. তিনদিকে স্থলবেষ্টিত বিশাল পানিরাশিকে বলে – 

ক) মহাসাগর

খ) হ্রদ

গ) উপসাগর

ঘ) সাগর

উত্তরঃ গ


৭. জোয়ার সৃষ্টির কত ঘণ্টা পরে ভাটার সৃষ্টি হয়?

ক) ৬ ঘণ্টা

খ) ১২ ঘণ্টা

গ) ৬ ঘণ্টা ১৩ মি.

ঘ) ১১ ঘণ্টা

উত্তরঃ গ


৮. সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ কোনটি?

ক) গভীরতার তারতম্য

খ) উষ্ণতার তারতম্য

গ) লবণাক্ততার তারতম্য

ঘ) বাষ্পীভবনের তারতম্য

উত্তরঃ খ


৯. যুক্তরাষ্ট্রের ‘গ্রান্ড ক্যানিয়ন’ একটি – 

ক) গিরিপথ

খ) জলপ্রপাত

গ) গিরিখাত

ঘ) মালভূমি

উত্তরঃ গ


১০. দুই নদীর মধ্যবর্তী উর্বর অঞ্চলকে বলে – 

ক) মোহনা

খ) দোআব

গ) সাভানা

ঘ) মহীঢাল

উত্তরঃ খ


১১. বাংলাদেশের একমাত্র ‘ভূমিকম্প রেকর্ড কেন্দ্র’ কোন জেলায় অবস্থিত?

ক) বান্দরবন

খ) সিলেট

গ) রাঙামাটি

ঘ) চট্টগ্রাম

উত্তরঃ ঘ


১২. ‘দুর্যোগ প্রশমন’ বলতে কী বোঝায়?

ক) দুর্যোগপূর্ব ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ

খ) দুর্যোগপরবর্তী সাড়াদান

গ) দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতি

ঘ) দুর্যোগপূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনা

উত্তরঃ গ


১৩. ‘বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র’ সংস্থাটি কিসের অধীনে?

ক) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর

খ) পানি উন্নয়ন বোর্ড

গ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো

ঘ) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়

উত্তরঃ খ


১৪. ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন’ প্রণীত হয় কত সালে?

ক) ২০০১

খ) ২০১৫

গ) ২০১২

ঘ) ২০০৪

উত্তরঃ গ


১৫. ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’ একটি – 

ক) গার্হস্থ্যবিদ্যা

খ) ব্যবহারিকবিদ্যা

গ) আবহবিদ্যা

ঘ) বাস্তুবিদ্যা

উত্তরঃ খ


১৬. ‘টাইফুন’ কোন ভাষার শব্দ?

ক) স্প্যানিশ

খ) গ্রিক

গ) আরবি

ঘ) চীনা

উত্তরঃ গ


১৭. ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় – 

ক) ১১০ কি. মি.

খ) ২২২ কি. মি.

গ) ১১৮ কি. মি.

গ) ৩২০ কি. মি.

উত্তরঃ গ


১৮. বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রলয়ংকারী বন্যা হয় – 

ক) ১৯৭০ সালে

খ) ১৯৯৮ সালে

গ) ১৯৮৮ সালে

ঘ) ১৯৯১ সালে

উত্তরঃ গ


১৯. পুনঃসঙ্ঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনটি?

ক) ভূমিধ্বস

খ) বৃষ্টিপাত

গ) মাটিক্ষয়

ঘ) নদীভাঙন

উত্তরঃ ঘ


২০. ভূমিধ্বস সঙ্ঘটিত হয় না কোনটির কারণে?

ক) পাহাড় কর্তন

খ) অভিকর্ষীয় টান

গ) বৃষ্টির পানি জমা

ঘ) পাহাড়ে জুম চাষ

উত্তরঃ খ


২১. বায়ুমণ্ডলীয় দুর্যোগের অন্তর্ভুক্ত নয় – 

ক) খরা

খ) ঝড়

গ) বন্যা

ঘ) বজ্র

উত্তরঃ গ


২২. আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম কী?

ক) উইলি উইলি

খ) টাইফুন

গ) জোয়ান

ঘ) হ্যারিকেন

উত্তরঃ ঘ


২৩. বাংলাদেশে কালবৈশাখী ঝড় হয় – 

ক) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে

খ) এপ্রিল-মে মাসে

গ) নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে

ঘ) জুন-জুলাই মাসে

উত্তরঃ খ


২৪. SPARRSO কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে?

ক) প্রতিরক্ষা

খ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

গ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ

ঘ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

উত্তরঃ ক


২৫. বর্তমানে বাংলাদেশের জন্যে সবচেয়ে মারাত্মক দুর্যোগ – 

ক) খরা ও মহামারী

খ) বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস

গ) ভূ-গর্ভস্থ পানি দূষণ

ঘ) মাটিক্ষয় ও ভূমিধ্বস

উত্তরঃ গ


২৬. বাংলাদেশে কোন দুর্যোগ ঘটার সম্ভাবনা নেই?

ক) ভূমিকম্প

খ) টর্নেডো

গ) সুনামি

ঘ) অগ্ন্যুৎপাত

উত্তরঃ ঘ


২৭. কত সালে ঘূণিঝড় সিডর উপকূলে আঘাত হানে?

ক) ২০০৬ সালে

খ) ২০০৭ সালে

গ) ২০০৮ সালে

ঘ) ২০০৯ সালে

উত্তরঃ খ


২৮. বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সর্বোচ্চ কত নম্বর পর্যন্ত সতর্কসংকেত প্রচার করা হয়?

ক) ৪ নং

খ) ১০ নং

গ) ১১ নং

ঘ) ১২ নং

উত্তরঃ গ


২৯. ‘দূর্যেোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর’ কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

ক) ১৯৯২ সালে

খ) ১৯৯৩ সালে

গ) ১৯৯৪ সালে

ঘ) ১৯৯১ সালে

উত্তরঃ খ


৩০. SPARRSO কোথায় অবস্থতি?

ক) মোহাম্মদপুর

খ)  সেগুনবাগিচা

গ) শেরেবাংলা নগর

ঘ) আগারগাঁও

উত্তরঃ ঘ


গ্রন্থপঞ্জি:


১. রওশন আরা বেগম, আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ, ‘মাধ্যমিক সামাজিক বিজ্ঞান’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, মার্চ ১৯৯৬)

২. মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, শওকত আরা বেগম প্রমুখ ‘বাংলাদেশে ও বিশ্বপরিচয়’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, অক্টোবর ২০১৩)

৩. সেলিনা শাহজাহান, ড. শেখ মো. রেজাউল করিম প্রমুখ, ‘ভূগোল ও পরিবেশ’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, অক্টোবর ২০১২)

৪. কে. আশরাফুল আলম, ‘বৈশ্বিক পরিবেশের প্রাকৃতিক ভূগোল (পারফেক্ট পাবলিকেশন্স, ঢাকা, ২০১৪)

৫. সংকলিত, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাপিডিয়া (বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত, প্রকাশকাল: জুন ২০১১)

৬. রফিক আহমেদ, ‘আবহাওয়া ও জলবায়ুবিজ্ঞান’ (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৭)

BCS Geography Lecture – 02

পরিবেশ ও দূষণ, গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন :

বাংলাদেশ ও বর্তমানবিশ্ব,পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলন, সংস্থা, চুক্তি, দিবস,

নীতিমালা ও আইন, নমুনা প্রশ্ন

 


পরিবেশ


পরিবেশ বলতে কোনো ব্যবস্থার উপর কার্যকর বাহ্যিক প্রভাবকসমূহের সমষ্টিকে বোঝায়। যেমন: চারপাশের ভৌত অবস্থা, জলবায়ু ও প্রভাব বিস্তারকারী অন্যান্য জীব ও জৈব উপাদান ইত্যাদির সামষ্টিক রূপই হলো পরিবেশ। পরিবেশের প্রতিটি উপাদানের দ্বারাই একজন ব্যক্তি, প্রাণী, জীব এমনকি উদ্ভিদ প্রভাবিত হয়ে থাকে। এই প্রভাবকসমূহের মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক বা কৃত্রিম পারিপার্শ্বিক উপাদানসমূহ। মূলত একটি জীবের অস্তিত্ব বা বিকাশের উপর ক্রিয়াশীল সামগ্রিক অবস্থাকে পরিবেশ (Environment)বলে। আমাদের চারপাশের সকল কিছুই পরিবেশের অংশ।পরিবেশের উপাদান দুইটি। যথা:

      ১. জড় উপাদান

      ২. জীব উপাদান

 

  • পরিবেশের প্রকারভেদ: পরিবেশ প্রধানত ২ প্রকার। যথা:

১. ভৌত বা প্রাকৃতিক পরিবেশ: প্রাকৃতিক পরিবেশ হচ্ছে সেই পরিবেশ যা প্রকৃতি নিজে নিজে তৈরি করে। এগুলো হচ্ছে: গাছ,পাহড়-পর্বত,ঝর্ণা,নদী ইত্যাদি। এগুলো মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। এগুলো প্রাকৃতিক ভবেই সৃষ্টি হয়।

 

২. সামাজিক পরিবেশ: এটি মানবসৃষ্ট পরিবেশ। মানুষের তৈরি পরিবেশ হচ্ছে: দালান-কোঠা,নগরায়ন,বন্দর ইত্যাদি। এগুলো মানুষ নিজের প্রয়োজনের তাগিদে তৈরি করে।

 

  • পরিবেশের যে উপাদানগুলো জীবের অস্তিত্ব বজায় রাখার অনুকূলে পরিবেশ সৃষ্টি করে তাকে পরিবেশের ভারসাম্য (Ecological Balance) বলে।
  • পরিবেশবিজ্ঞানীআর্নেস্ট হেকেল সর্বপ্রথম Ecology শব্দটি ব্যবহার করেন। Ecology শব্দটিগ্রিক শব্দ। এরঅর্থ বাস্তুবিদ্যা, বাস্তুসংস্থান।পরিবেশের সাথে প্রাণিজগতের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে যে বিদ্যা তাকে বাস্তুবিদ্যা বা Ecology বলে।
  • পরিবেশ আন্দোলনের সূচনা করেন ডেভিড থ্যারো।
  • প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান নিয়ামক তিনটি। যথা:

          ক. বায়ু

          খ. পানি         

          গ. গাছপালা

 


পরিবেশ দূষণ


পরিবেশের প্রতিটা উপাদানের সুসমন্বিত রূপই হলো সুস্থ পরিবেশ। এই সুসমন্বিত রূপের ব্যতয়ই পরিবেশের দূষণ ঘটায় এবং পরিবেশের স্বাভাবিক মাত্রার অবক্ষয় দেখা দেয়। পরিবেশ বিভিন্ন কারণে দূষিত হতে পারে। প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট কারণও এর সাথে দায়ী। পরিবেশ দূষণের জন্য বিশেষভাবে দায়ী ১২টি মারাত্মক রাসায়নিক দ্রব্যকে একত্রে ‘ডার্টি ডজন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পরিবেশবিভিন্নভাবে দূষিত হয়। যেমন:

  1. Water Pollution (পানি দূষণ)
  2. Air Pollution (বায়ু দূষণ)
  3. Sound Pollution (শব্দ দূষণ)
  4. Soil Pollution (মাটি দূষণ)
  5. Odour Pollution (গন্ধ দূষণ)
  6. Industrial Pollution (শিল্প দূষণ)
  7. Radiation Pollution (তেজস্ক্রিয় দূষণ)

 

  • Water Pollution:পানি দূষণ বলতে পানিতে কোনো বিষাক্ত দ্রব্য অথবা দূষিত বর্জ্য পদার্থ মিশ্রণের ফলে মানব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় এই দূষণে। পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি পানি দূষণের অন্যতম কারণ। WHO এর মতে, Arsenic এর নিরপদ মাত্রা ০.০১ মিলিগ্রাম। বাংলাদেশের পানিতে এর মাত্রা ০.০৫ মিলিগ্রাম (সর্বোচ্চ)।

আর্সেনিক দূষণের কারণ হলো ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত উত্তোলন। এছাড়াও, অতিরিক্ত সাবান বা সাবান জাতীয় পদার্থ পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে। সাবানের উপাদান হলো সোডিয়াম স্টিয়ারেট।

  • Air Pollution:বায়ু দূষণবলতে বোঝায় যখন বায়ুতে বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থের কণা ও ক্ষুদ্র অণু অধিক অনুপাতে বায়ুতে মিশে যায়। তখন এটি বিভিন্ন রোগএমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বায়ুদূষণের ক্ষতিকারক উপাদানসমূহ:
  • কার্বন মনোক্সাইড:এই গ্যাস যানবাহনের কালো ধোঁয়া থেকে নির্গত হয়।
  • সালফার-ডাই-অক্সাইড: ডিজেল পোড়ালে বাতাসে এই গ্যাসের মিশ্রণ ঘটে। শিল্প কারখানার দূষিত গ্যাস এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী। এই বৃষ্টিতে সালফার-ডাই-অক্সাইড এর আধিক্য থাকে।
  • কার্বন-ডাই-অক্সাইড: জীবাশ্ম জ্বালানী দহনের ফলে বায়ুমন্ডলে এই গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড ওজন স্তরের ক্ষতির জন্য প্রধানত দায়ী।
  • হাইড্রোজেন সায়ানাইড: প্লাস্টিক দহনের ফলে এই গ্যাস সৃষ্টি হয়।

 

  • SMOG (Smoke+Fog) এর অর্থ ধোঁয়াশা যা এক ধরনের দূষিত বাতাস। ঢাকা শহরের বায়ুতে মাত্রাতিরিক্তসীসা পাওয়া যায়। তাই এটা দূষিত বাতাস। পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত শহর হলো মেক্সিকো।
  • বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০০৩ সালে ১ জানুয়ারি ঢাকা শহর থেকে২ স্ট্রোক বিশিষ্ট যানবাহন নিষিদ্ধ করা হয়।

 

  • Sound Pollution:শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দসৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়।  মানুষ সাধারণত ২০ থেকে ২০,০০০ হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না। তাই মানুষের জন্য শব্দদূষণ প্রকৃতপক্ষে এই সীমার মধ্যেই তীব্রতর শব্দ দ্বারাই হয়ে থাকে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক অস্থিরতা হতে পারে। শব্দের স্বাভাবিক সহনীয় মাত্রা ৬০ ডেসিবল। জাতিসংঘের মতে ৪৫ ডেসিবল। শব্দের মাত্রা পরিমাপের একক ডেসিবল। ১০৫ ডেসিবলের বেশি শব্দদূষণে মানুষ বধির হতে পারে। বাংলাদেশে শব্দের স্বাভাবিক সহনীয় মাত্রা ৮০ ডেসিবলহলে শব্দদূষণ ধরা হয়। শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্রের তরঙ্গ দ্বারা সৃষ্ট শব্দ হলো সনিক বুম।

পরিবেশ অধিদপ্তরের জরিপ অনুসারে বাংলাদেশের জন্য শব্দ দূষণের ৫টি মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যথা:

ক. নীরব এলাকা: ৪৫ ডেসিবল

খ. আবাসিক এলাকা: ৫০ সেডিবল

গ. মিশ্র এলাকা: ৬০ ডেসিবল

ঘ. বাণিজ্যিক এলাকা: ৭০ ডেসিবল

ঙ. শিল্প এলাকা: ৭৫ ডেসিবল

  • Soil Pollution: মাটি দূষণ বলতে রাসায়নিক বর্জ্যের নিক্ষেপ কিংবা ভূ-গর্ভস্থ ফাটলের কারণে নিঃসৃত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়াকে বুঝায়।মাটি দূষণের প্রধান কারণ পলিথিন তথা প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ। ঢাকা শহরে ১ জানুয়ারি ২০০২ সালে এবং সারাদেশে ১ মার্চ ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়।

 

  • Odour Pollution:এটি গন্ধদূষণ।এ দূষণের ফলে মস্তিষ্কের অস্বস্তি দেখা দেয়। প্রাণির মলমূত্র বা মরদেহ পঁচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়ানোর ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের যে অস্বস্তিকর অবস্থা বা ভারসাম্যহীন অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে গন্ধ দূষণ বলে।

 

  • Industrial Pollution:এটি শিল্পদূষণ।কারখানা ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত দ্রব্য বা বিষাক্ত বর্জ্য থেকে পরিবেশের যে অবক্ষয় ঘটে তাকে শিল্পদূষণ বলে।বাংলাদেশের ৬টি দূষিত শিল্প এলাকা হলো:ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়া।

 

  • Radiation Pollution:এটি তেজস্ক্রিয় দূষণ।তেজস্ক্রিয়তা হলো কোনো কোনো ভারী মৌলিক পদার্থের একটি গুণ যেগুলোর নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবিরত আলফাবিটাও গামারশ্মির বিকিরণ ঘটে।মূলত পারমাণবিক চুল্লি থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ও আলফা, গামা, বিটা ও অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ এর মূল উৎস। এটি মূলত অদৃশ্য দূষণ।

 


গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন


Greenhouse Effect:বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া। গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া (Greenhouse Effect)এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা ভূপৃষ্ঠ হতে বিকীর্ণ তাপবায়ুমণ্ডলীগ্রিনহাউজ গ্যাসসমূহ দ্বারা শোষিত হয়ে পুনরায় বায়ুমণ্ডলের অভ্যন্তরে বিকিরিত হয়। এই বিকীর্ণ তাপ বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে ফিরে এসে ভূপৃষ্ঠের তথা বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবী দিন দিন উষ্ণ হচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তিত হয়ে বিরূপ আকার ধারণ করছে।

১৮৯৬ সালে সুইডিশ পরিবেশ বিজ্ঞানী সোভনটে আরহেনিয়াস সর্বপ্রথম GreenhouseEffect কথাটি ব্যবহার করেন।বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার প্রতিক্রিয়াকে গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া বলে। মূলত এটি হলো তাপ আকে পড়ে সার্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির একটি প্রক্রিয়া।

 

  • GreenhouseGas: যে গ্যাস বায়ুমন্ডলে সূর্যের বিকিরিতরশ্মি শোষণ বা নির্গত করে একে Greenhouse Gas বলে। গ্রিনহাউজ গ্যাসসমূহ হলো:
  • কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2)
  • ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (CFC); এর বাণিজ্যিক নাম ফ্রেয়ন
  • মিথেন (CH4); প্রাকৃতিক গ্যাসের অপর নাম মিথেন।
  • নাইট্রাস অক্সাইড (N2O)
  • হাইড্রোফ্লোরোকার্বন (HFC)
  • জলীয় বাষ্প (H2O)
  • ওজন (O3)

 

  • Global Warming:Greenhouse Gas এর প্রভাবে বায়ুমন্ডলের সার্বিক উষ্ণতা বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াকে Global Warming (বৈশ্বিক উষ্ণতা) বা Northern Hemisphere Warming (উত্তর গোলার্ধ উষ্ণায়ন) বলে।এর ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

 

n   Impact of Greenhouse Gas:

  • বৈশ্বিক উষ্ণতা বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি
  • মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া
  • সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া
  • ওজনস্তরের অবক্ষয়
  • ভূপৃষ্ঠে তেজস্ক্রিয় রশ্মির আগমন ও নানা রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব।

 

n   Causes of Greenhouse Gas:

  • জীবাশ্ম জ্বালানী দহন অর্থাৎ কয়লা, ডিজেল, খনিজ তেল, গ্যাস ইত্যাদি পোড়ানোর ফলে বায়ুমণ্ডেলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি।
  • অবাধে বৃক্ষনিধন
  • রেফ্রিজারেটর, এয়ার-কন্ডিশন, ইনহেলার, এরোসল ইত্যাদিতে এবং প্লাস্টিক কারখানায় CFC গ্যাসের ব্যবহার।
  • ওজোনস্তর অবক্ষয় (OzoneLayer Depletion): ওজোন অক্সিজেনের একটি রূপভেদ। এর রং গাঢ় নীল। গন্ধমাছের আঁশের মতো। ভূ-পৃষ্ঠের ৬৫ মাইল উপরে স্ট্রাটোমন্ডলে ওজোনস্তর অবস্থিত। ১৯৭০ সালে বিজ্ঞানী জোনাথন শাকলিন সর্বপ্রথম ওজোনস্তরের ফাটল লক্ষ্য করেন। ওজোনস্তর অবক্ষয়ের জন্য দায়ী গ্যাসসমূহ:
  • ক্লোরিন (এটি ওজোনস্তরের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে)
  • ক্লোরোফ্লোরোকার্বন CFC (সিএফসি)
  • মিথাইল
  • ক্লোরোফর্ম
  • ফ্লোরিন
  • CFC গ্যাস ১৯২০ সালে টমাস মিডগ্লাই আবিষ্কার করেন। যে ফ্রিজ ক্ষতিকারক CFC গ্যাস ছড়ায় না তাকে পরিবেশ-বান্ধব ফ্রিজ বলে। এই ফ্রিজে ফ্রেয়নের পরিবর্তে গ্যাজোলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়।

 


জলবায়ু পরিবর্তন : বাংলাদেশ ও বর্তমান বিশ্ব


কোনোস্থানের গড় জলবায়ুর দীর্ঘমেয়াদী ও অর্থপূর্ণ পরিবর্তন যার ব্যাপ্তি কয়েক যুগ থেকে কয়েক লক্ষ বছর পর্যন্ত হতে পারেতাকে জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change) বলে। জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন নিয়ামকের উপর নির্ভরশীল। যেমন: জৈব প্রক্রিয়াসমূহ, পৃথিবী কর্তৃক গৃহীত সৌর বিকিরণের পরিবর্তন, ভূত্বক গঠনের পাততত্ত্ব (Tectonic Plate),আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি। তবে, বর্তমানে সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন বললে সারা পৃথিবীর মানবিক কার্যকর্মের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন বোঝায় যা ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি নামে বেশি পরিচিত। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা, বায়ু চাপ ও তাপের বিরূপ পরিস্থিতি কারণেজলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে।

 

  • জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশ: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনাকে বাংলাদেশ সরকারেরবন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নব্বইয়ের দশকে প্রণীত National Environment Management Action Plan (NEMAP)-এ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় গত দুই দশক যাবৎ বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যেই রয়ে গেছে। ১৯ বছর ধরে দুর্যোগের সংখ্যা, মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির মোট হিসাবের ভিত্তিতে তৈরি ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে গত কয়েক বছরের মত ষষ্ঠ অবস্থানেই রয়ে গেছে বাংলাদেশ। শীর্ষে রয়েছে কাতার এবং সর্বনিম্ন অবস্থানে ভানুয়াতু। কোনো দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সত্যিই পড়ছে কি-না, তা চারটি মানদণ্ডে বিবেচনা করা হয়। যেমন:

 

১. জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ।

২. কোথায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হচ্ছে।

৩. সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কোথায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

৪. ক্ষতিগ্রস্থ দেশটি ক্ষতি মোকাবিলায় বা অভিযোজনের জন্য এর মধ্যে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে।

 

বাংলাদেশে একাধারে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা সমস্যা, হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন, বন্যা ইত্যাদি সবগুলো দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই চারটি মানদন্ডেই বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় শীর্ষে।বাংলাদেশ সরকার বন্যা, ঘুর্ণিঝড়, খরা, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, ভূমিকম্প, নদী ভাঙন, জলাবদ্ধতা, পানি বৃদ্ধি ও মাটির লবণাক্ততাকে প্রধান প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বসবাসের এলাকাগুলো এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে বার্ষিক বরাদ্দের ৬ থেকে ৭ শতাংশ ব্যয় করছে এবং বছরে এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি ডলার।

 


পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন:


প্রথম সম্মেলন:১৯৭২ সালের ৫-১৬ জুন সুইডেনের স্টকহোমে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণের প্রতিবাদে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর নাম United Nations Conference on the Human Environment বা Stockholm Conference.এই সম্মেলনে পরিবেশ রক্ষায় UNEP (United Nation Environment Program) গঠনের সিদ্ধান্ত হয় এবং ১৯৭২ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে (সদর দপ্তর) UNEP প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনেই ৫ জুনকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

 

*    দ্বিতীয় সম্মেলন:১৯৯২ সালের ৩-১৪ জুন ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনেরিও শহরে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক প্রথম সম্মেলন হয়। এটি প্রথম ধরিত্রী সম্মেলন যা United Nations Conference on Environment and Development বা Rio Summit বা Earth Summit নামে পরিচিত। উক্ত সম্মেলনে ১৭২টি দেশ অংশগ্রহণ করে। ধরিত্রী সম্মেলন প্রচলিত উন্নয়নের ধারণার বিপরীতে টেকসই উন্নয়নের(Sustainable Development) ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে।

সম্মেলনে গৃহীত নীতিমালাসমূহ:

সম্মেলনে স্বাক্ষরিত চুক্তিসমূহ:

 

*    তৃতীয় সম্মেলন: ২০০২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর অপর নাম Rio+10 Summit বা World Summit on Sustainable Development (WSSD). টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে এটিই প্রথম সম্মেলন।

 

*    চতুর্থসম্মেলন: ২০১২ সালে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনেরিও শহরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর অপর নাম United Nations Conference on Sustainable Development (UNCSD) বা Rio+20 Summit. এই সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তথা Sustainable Development Goal (SDG) তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয় এবংসবুজ অর্থনীতি (Green Economy) গড়ে তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

  • জতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন:

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কার্বন নির্গমন কমানো ও পরিবেশ রক্ষায় United Nation Framework Convention on Climate Change (UNFCCC) এর উদ্যোগে প্রতিবছর জাতিসংঘজলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এটি Conference of the Parties (COP) নামে পরিচিত।১৯৯৫ সালে জার্মানির বার্লিনে প্রথম COP-1 অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে পোল্যান্ডের ক্যাটুইয়েসে সর্বশেষ এই সম্মেলন COP-24 অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালে চিলির সান্টিয়াগো শহরে পরবর্তী জলবায়ু সম্মেলন (COP-25) অনুষ্ঠিত হবে।

 


পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা:


  1. UNEP:UNEP (United Nation Environment Program)৫ জুন ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর কেনিয়ার নাইরোবিতে অবস্থিত। এটি জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা। এর কাজ পরিবেশগত কর্মকাণ্ডের সমন্বয় করা, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পরিবেশগতভাবে স্বীকৃত নীতি ও অভ্যাস বাস্তবায়নে সহায়তা করা।

 

  1. WMO:WMO (World Meteorological Organization) ২৩ মার্চ ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত। এর কাজ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জনজীবনে আবহাওয়ার প্রভাব সম্পর্কে অবহিত করা এবং আগাম সতর্কবার্তা প্রেরণ করা। ১৯৫১ সাল থেকে এ সংস্থার উদ্যোগে সারাবিশ্বে ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালিত হয়ে আসছে।

 

  1. IPCC:IPCC (Intergovernmental Panel on Climate Change) ১৯৮৮ সালে UNEP (United Nations Environment Program)ও WMO (World Meteorological Organization) এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত।এটি জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন। এর কাজ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা হ্রাসকরণে বৈজ্ঞানিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা ও প্রতিবেদন প্রণয়ন করা।

 

  1. UNFCCC: UNFCCC (United Nation Framework Convention on Climate Change) ১৯৯২ সালে প্রথম ধরিত্রী সম্মেলনের মাধ্যমে তৈরি হয় এবং ১৯৯৪ সালে কার্যকর হয়। এটি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘের একটি রূপরেখা।

 

  1. Green Climate Fund:এটিUNFCCCএর উদ্যোগে ২০১০ সালে Green Climate Fund গঠিত হয়। এর সদরদপ্তর দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে অবস্থিত। এর কাজ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।

 

  1. Green Peace:Green Peace ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর নেদারল্যান্ডের আমষ্টারডামে অবস্থিত।এটি একটি বেসরকারি আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংস্থা। এর মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীনামক গ্রহের সব ধরনের জীববৈচিত্রের প্রতিপালনের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা।

 

  1. IUCN:IUCN (International Union for Conservation of Nature) ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের গ্লান্ড শহরে অবস্থিত। এর কাজ প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করা।

 

  1. WWI:WWI (World Watch Institute) ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে এর সদর দপ্তর অবস্থিত। এর কাজ পরিবেশ সংরক্ষণ করা এবং পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা।

 

  1. WRI:WRI(World Resource Institute) ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত। এর কাজ বন পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণ করা।

 

 

 


পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি:


  1. ভিয়েনা কনভেনশন:এটি ওজোনস্তর সুরক্ষা ও সংরক্ষণের বিষয়ে ১৯৮৫ সালে অস্ট্রিয়ায় রাজধানী ভিয়েনায় গৃহীত হয় এবং ১৯৮৮ সালে কার্যকর হয়।

 

  1. মন্ট্রিল প্রটোকল:এটি কানাডার মন্ট্রিলে শহরে ওজোনস্তর বিনষ্টকারী দূষিত রাসায়নিক পর্দাথের নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে ১৯৮৭ সালে গৃহীত হয় এবং ১৯৮৯ সালে কার্যকর হয়।এ প্রটোকলটি কার্যকর হওয়ার পরএই পর্যন্ত মোট ৪ বার সংশোধিত হয়েছে। যথা:লন্ডনে ১৯৯০ সালে, কোপেনহেগেনে ১৯৯২ সালে, মন্ট্রিলে ১৯৯৭ সালে এবং বেইজিংয়ে ১৯৯৯ সালে।

 

  1. বাসেল কনভেনশন:এটি ১৯৮৯ সালে সুইজারল্যান্ডে গৃহীত হয় এবং ১৯৯২ সালে কার্যকর হয়।এর উদ্দেশ্য বিপদজনক বর্জ্য দেশের সীমান্তের বাহিরে চলাচল ও নিয়ন্ত্রণ করা।

 

  1. জীববৈচিত্র্যসংক্রান্ত কনভেনশন: এটি ১৯৯২ সালে প্রথম ধরিত্রী সম্মেলনের মাধ্যমে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনিরিও শহরে গৃহীত হয় এবং ১৯৯৩ সালে কার্যকর হয়। এর উদ্দেশ্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা।

 

  1. কিয়োটো প্রঢৌকল:১৯৯৭ সালে জাপানের কিয়েটোতে বিশ্বের উষ্ণতা রোধ বিষয়ে এ প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয় এবং ২০০৫ সালে কার্যকর হয়।প্রটোকলটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালে। অনুমোদনকারী মোট দেশ ১৯১টি। যুক্তরাষ্ট্র এতে স্বাক্ষর করেছে কিন্তু অনুমোদন করেনি। এই প্রটোকল প্রত্যাহারকারী একমাত্র দেশ কানাডা।

 

  1. কার্টাগেনাপ্রটোকল: এটি ২০০০ সালে কানাডার মন্ট্রিলে গৃহীত হয় এবং ২০০৩ সালে কার্যকর হয়। এটি জাতিসংঘের জৈব নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি। উল্লেখ্য, কার্টাগেনা কলম্বিয়ার একটি শহর।

 


পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক দিবস:


  • ২১ মার্চ – বিশ্ব বন দিবস
  • ২২ মার্চ – বিশ্ব পানি দিবস
  • ২৩ মার্চ – বিশ্ব আবহাওয়া দিবস
  • ২২ এপ্রিল – বিশ্ব ধরিত্রী দিবস
  • ২২ মে – আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস
  • ৫ জুন- বিশ্ব পরিবেশ দিবস
  • ১৭ জুন – বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধ দিবস
  • ২৯ জুলাই – বিশ্ব বাঘ দিবস
  • ১৬ সেপ্টেম্বর – আন্তর্জাতিক ওজোনস্তর সংরক্ষণ দিবস
  • ৪ অক্টোবর – বিশ্ব প্রাণী দিবস
  • ১৩ অক্টোবর – আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস

 


জাতীয় পরিবেশ নীতিমালা ও আইন:


পরিবেশ নীতিমালা ও আইনে পরিবেশ বলতে বোঝানো হয়েছে পানি, বাতাস, ভূমি ও অন্যান্য ভৌত সম্পদ; এদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মানুষ, অন্যান্য প্রাণী, গাছপালা ও অণুজীবসমূহের মধ্যকার সম্পর্ক।উনিশ শতকের শুরুতে দেশে পরিবেশ সংক্রান্ত অনেক আইন ও বিধিমালা প্রণীত হয়।

  • পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলো তদারকির জন্য ১৯৮৯ সালে ‘বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়’ গঠিত হয়।
  • বাংলাদেশে ১৯৯০ সালকে পরিবেশ বর্ষ ও ১৯৯০-৯১ সালকে পরিবেশ দশক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
  • ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের প্রথম ‘জাতীয় পরিবেশ নীতি’ গৃহীত হয়। যেখানে ১৫টি কর্মকৌশল ছিল।
  • ১৯৯২ সালে Bangladesh Environment Layers Association (BELA) অর্থাৎ ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি’ গঠিত হয়।
  • ১৯৯৫ সালে‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন’ প্রণীত হয়।
  • ১৯৯৭ সালে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ নিরাপত্তা বিধিমালা’ প্রণীত হয়।
  • ২০০০ সালে Bangladesh Poribesh Andolon (BAPA)/বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) গঠিত হয়।
  • ২০০১ সালে‘বাংলাদেশ পরিবেশ আদালত’ গঠিত হয়। পরিবেশ আদালত ৩টি। যথা: ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট।
  • ২০১৮ সালে ‘জাতীয় পরিবেশ নীতি’ গৃহীত হয়।

 


নমুনা প্রশ্ন


১. গাড়ী থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার যে বিষাক্ত গ্যাস থাকে – 

ক) ইথিলিন

খ) পিরিডন

গ) কার্বন মনোক্সাইড

ঘ) মিথেন

উত্তরঃ গ


২. যে দূষণ প্রক্রিয়ায় মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় – 

ক) পানি দূষণ

খ) বায়ু দূষণ

গ) গন্ধ দূষণ

ঘ) শব্দ দূষণ

উত্তরঃ ক


৩. জাতিসংঘের মতে, শব্দ দূষণের স্বাভাবিক ও সহনীয় মাত্রা কত?

ক) ৬০ ডেসিবল

খ) ৪৫ ডেসিবল

গ) ৫০ ডেসিবল

ঘ) ৮০ ডেসিবল

উত্তরঃ খ


৪. জীবাশ্ম জ্বালানী দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে যে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ সবচেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে – 

ক) জলীয় বাষ্প

খ) সিএফসি

গ) কার্বন ডাই অক্সাইড

ঘ) মিথেন

উত্তরঃ গ


৫. প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান নিয়ামক কোনটি?

ক) মানুষ

খ) গাছপালা

গ) আবহাওয়া

ঘ) মাটি

উত্তরঃ খ


৬. এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী গ্যাস কোনটি?

ক) কার্বন-ডাই-অক্সাইড

খ) কার্বন-মনোক্সাইড

গ) সালফার-ডাই-অক্সাইড

ঘ) হাইড্রোজেন সায়ানাইড

উত্তরঃ গ


৭. বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হয় কত সালে?

ক) ১ জানুয়ারি ২০০২

খ) ১ মার্চ ২০০২

গ) ১ জানুয়ারি ২০০৩

ঘ) ১ মার্চ ২০০৩

উত্তরঃ খ


৮. ‘জিঙ্ক সালফেট’ ব্যবহার করা হয় – 

ক) কাগজ শিল্পে

খ) কৃষিকাজে

গ) প্লাস্টিক শিল্পে

ঘ) চামড়া শিল্পে

উত্তরঃ ঘ


৯. গ্রিনহাউজ ইফেক্ট সৃষ্টিকারী গ্যাস নয় কোনটি?

ক) N2O

খ) N2O

গ) CH4

ঘ) D2O

উত্তরঃ ঘ


১০. ‘গ্রিন হাউস’ কথাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন কে?

ক) আর্নেস্ট হেকেল

খ) ডেভিট থ্যারো

গ) সোভনটে আরহেনিয়াস

ঘ) টমাস মিডগ্লাই

উত্তরঃ গ


১১. ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন’ কথাটি কোন অঞ্চলের সাথে সম্পর্কিত?

ক) নিরক্ষীয়মÐল

খ) আর্কটিক অঞ্চল

গ) কুমেরু অঞ্চল

ঘ) উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চল

উত্তরঃ খ


১২. ওজোনস্তর অবক্ষয়ের ফলে – 

ক) ভূপৃষ্ঠে তেজস্ক্রিয় রশ্মির আগমন ঘটে

খ) মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যায়

গ) সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যায়

ঘ) ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে

উত্তরঃ ক


১৩. CFC গ্যাসের বাণিজ্যিক নাম কী?

ক) মিথেন

খ) ক্লোরিন

গ) ফ্রেয়ন

ঘ) হ্যালন

উত্তরঃ গ


১৪. কত সালে জাতীয় পরিবেশ নীতি প্রণীত হয়?

ক) ১৯৮৯ সালে

খ) ১৯৯২ সালে

গ) ২০০১ সালে

ঘ) ১৯৯৫ সালে

উত্তরঃ খ


১৫. প্রথম আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলন কোন শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

ক) জোহান্সবার্গ

খ) স্টকহোম

গ) রিও ডি জেনেরিও

ঘ) প্যারিস

উত্তরঃ খ


১৬. জাতিসংঘ পরিবেশ বিষয়ক সংস্থার সদর দপ্তর কোথায়?

ক) স্টকহোম

খ) নাইরোবি

গ) ডারবান

খ) জেনেভা

উত্তরঃ খ


১৭. তৃতীয় বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলন (Rio + 20 Summit) অনুষ্ঠিত হয় –

ক) ২০০২ সালে

খ) ১৯৯২ সালে

গ) ২০১২ সালে

ঘ) ২০০৮ সালে

উত্তরঃ গ


১৮. জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (COP) প্রথম কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

ক) প্যারিস, ১৯৯০

খ) বার্লিন, ১৯৯৫

গ) কার্টাগেনা, ১৯৮৫

ঘ) মন্ট্রিল, ১৯৯৫

উত্তরঃ খ


১৯. পরিবেশ বিজ্ঞানের ভাষায় ঝসড়ম হচ্ছে – 

ক) সিগারেটের ধোঁয়া

খ) কুয়াশা

গ) যানবাহনের ধোঁয়া

ঘ) দূষিত বাতাস

উত্তরঃ ঘ


২০. ‘Blue Economy’ কথাটি কীসের সাথে সম্পৃক্ত?

ক) পরিবেশ

খ) অর্থনীতি

গ) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ঘ) সমুদ্র

উত্তরঃ ঘ


২১. জাতিসংঘ ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি কোনটি?

ক) ভিয়েনা কনভেনশন (১৯৮৫)

খ) মন্ট্রিল প্রটোকল (১৯৮৭)

গ) কিয়োটো প্রটোকল (১৯৯৭)

ঘ) বাসেল কনভেনশন (১৯৮৯)

উত্তরঃ গ


২২. আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস – 

ক) ১৬ সেপ্টেম্বর

খ) ৫ জুন

গ) ২২ এপ্রিল

ঘ) ২২ মে

উত্তরঃ ঘ


২৩. পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা নয় কোনটি?

ক) WRI

খ) WWI

গ) IUCN

ঘ) WHO

উত্তরঃ ঘ


২৪. কত সালে বন ও পরবিশে মন্ত্রণালয় গঠতি হয়?

ক) ১৯৮৯ সালে

খ) ১৯৮৮ সালে

গ) ১৯৯২ সালে

ঘ) ১৯৭৯ সালে

উত্তরঃ ক


২৫. আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-

ক) ২৯ জুলাই

খ) ১৬ সেপ্টেম্বর

গ) ৪ অক্টোবর

ঘ) ১৩ অক্টোবর

উত্তরঃ ঘ

 


গ্রন্থপঞ্জি:


১. রওশন আরা বেগম, আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ, ‘মাধ্যমিক সামাজিক বিজ্ঞান’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, মার্চ ১৯৯৬)

২. সেলিনা শাহজাহান, ড. শেখ মো. রেজাউল করিম প্রমুখ, ‘ভূগোল ও পরিবেশ’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, অক্টোবর ২০১২)

৩. কে. আশরাফুল আলম, ‘বৈশ্বিক পরিবেশের প্রাকৃতিক ভূগোল (পারফেক্ট পাবলিকেশন্স, ঢাকা, ২০১৪)

৪. এস রিজওয়ানা হাসান, ‘পরিবেশ দূষণ বাংলাপিডিয়া (বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৯)

৫. এস. এম. হুমায়ূন কবির, ‘ডার্টি ডজন বাংলাপিডিয়া (বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৯)

৬. রফিক আহমেদ, ‘আবহাওয়া ও জলবায়ুবিজ্ঞান’ (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৭)

 

 

BCS Geography Lecture – 01

বায়ুমণ্ডল, আবহাওয়া ও জলবায়ু, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন, শিলা ও খনিজ, ভূমরিূপ, ভূপৃষ্ঠরে পরর্বিতন, নমুনা প্রশ্ন

 


বায়ুমণ্ডল


পৃথিবীর চারদিকে বেষ্টন করে বায়ুর যে আস্তরণ আছে তাকে বায়ুমন্ডল (Atmosphere) বলে। এর গড় গভীরতা ১০,০০০ (দশ হাজার) কি.মি.। বায়ুমন্ডলের ৯৭% স্তর ভূপৃষ্ঠের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বায়ুমন্ডলের ভূপৃষ্ঠের সাথে লেপ্টে থাকে মধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে।

উপাদান ও রাসায়নিক গঠন অনুযায়ী বায়ুমন্ডলের ২টি স্তর। যথা:

  1. Homosphere (সমমন্ডল): এই স্তর প্রাণীদের বসবাসযোগ্য এবং এখানে বাতাসে বিভিন্ন উপাদান সমানভাবে থাকে।
  2. Heterosphere (বিষমমন্ডল):এ স্তরে বাতাসে বিভিন্ন উপাদান সমানভাবে থাকে না। এটি সমমণ্ডলের বিপরীত।

উষ্ণতা ও বায়ুচাপের তারতম্য অনুযায়ী বায়ুমন্ডলের ৬টি স্তর। যথা:

  1. Troposphere (ট্রপোমন্ডল)
  2. Stratosphere (স্ট্রাটোমন্ডল)
  3. Mesosphere (মেসোমন্ডল)
  4. Thermosphere (থার্মোমন্ডল)
  5. Exosphere (এক্সোমন্ডল)
  6. Magnetosphere (ম্যাগনিটোমন্ডল)

(মনে রাখার কৌশল: ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে মেসো থাকে একলা মনে।)

  1. Troposphere (ট্রপোমণ্ডল):এটি ভূপৃষ্ঠের নিকটবর্তী বায়ুমণ্ডলের প্রথম স্তর। এর গড় গভীরতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২.৮৭ কি.মি. পর্যন্ত। আবহাওয়া ও জলবায়ুজনিত যাবতীয় প্রতিক্রিয়ার (ঝড়, বৃষ্টি, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি) অধিকাংশ এ স্তরে ঘটে। একে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলে।
  2. Stratosphere (স্ট্রাটোমন্ডল): ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের ১২.৮৭ কি.মি. হতে ৫০ কি.মি. পর্যন্ত এ স্তর বিস্তৃত। এখানে বায়ুর ঘনত্ব, তাপ ও চাপ কম। এ স্তরে বিমান চলাচল করে। এর গড় গভীরতা ট্রপোমন্ডল থেকে ৫০ কি. মি. উপর পর্যন্ত। একে শান্তমন্ডল বলে।

এ স্তরের উপরিভাগে ওজোনস্তর/ওজোনমণ্ডল। ওজোন একটি গ্যাসের স্তর। এর রং গাঢ় নীল। এটি স্ট্রাটোমণ্ডলের উপরের ১২ থেকে ১৬ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৫ কি.মি. উপরিভাগে ওজোন স্তর বিদ্যমান। এ স্তরে ভূপৃষ্ঠ থেকে উত্থিত শব্দ প্রতিফলিত হয়। ওজোনস্তর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে এবং প্রাণীকূলকে মারাত্মক সব রোগব্যাধি থেকে রক্ষা করে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ফলে চোখে ছানি পড়া, ত্বক ক্যান্সার প্রভৃতি রোগ দেখা দেয়।

  1. Mesosphere (মেসোমন্ডল): এখান থেকে যত উপরে যাওয়া হবে ততই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এর উর্ধ্বসীমার তাপমাত্রা 1500 ফারেনহাইট। এই স্তরে মহাকাশ থেকে আসা উল্কাপিন্ড পুড়ে ছাই হয়ে যায় অর্থাৎ ধ্বংস হয়।
  2. Thermosphere (থার্মোমন্ডল): এই স্তরে মেরুজ্যোতি বা অরোরা (Aurora) দেখা যায়। Aurora মূলত বায়ুমন্ডলের উচ্চতর স্তরে বৈদ্যুতিক বিচ্যুতির কারণে হয়। এর উপরিভাগে আয়নমন্ডল অবস্থিত যেখানে বেতারতরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে। এই স্তরে স্যাটেলাইটে থাকে। বেতারতরঙ্গের গতিবেগ প্রায় আলোর গতিবেগের সমান।
  3. Exosphere (এক্সোমন্ডল): এই স্তরে উল্কা ও মহাজাগতিক রশ্মি পাওয়া যায়। এই স্তরে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস রয়েছে যা দাহ্য পদার্থ। বেলুনে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়। হাইড্রোজেন গ্যাস নিজে জ্বলে কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে না। অক্সিজেন নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে।
  4. Magnetosphere (ম্যাগনিটোমন্ডল): এটি বায়ুমণ্ডলের তড়িৎ চুম্বকীয় স্তর। এই স্তরে ইলেক্ট্রন ও প্রোটনের সন্ধান পাওয়া যায়। এক্সোমণ্ডল ও ম্যাগনিটোমন্ডল এ দুটি স্তরকে Fountain Layer বলা হয়। কারণ এখানে অণু-পরমাণুগুলো সর্বদা উপরের দিকে ধাবিত হয়।

 

বায়ুর উপাদান:বায়ু হলো বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণ। এর উপাদানকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

  1. মুখ্য উপাদান:

 নাইট্রোজেন (78.01%)

 অক্সিজেন (20.71%)

 আর্গন (0.80%)

 ওজোন (0.0001%)

 কার্বন-ডাই-অক্সাইড (0.03%)

 হাইড্রোজেন (0.00005%)

 মিথেন (0.00002%)

 হিলিয়াম (0.0005%)

 নিয়ন (0.0018%)

 ক্রিপটন (0.00012%)

 জেনন (0.00009%)

 নাইট্রাস অক্সাইড (0.00005%)

  1. জলীয় বাষ্প(0.41%)
  2. ধূলিকণা বা Aerosol (0.4399%)

 


আবহাওয়া ও জলবায়ু


কোনো স্থানের বায়ুর তাপ, চাপ, উষ্ণতা, আর্দ্রতা, মেঘ, বৃষ্টি, জলীয়-বাষ্প, বায়ুপ্রবাহ ও তুষারপাত ইত্যাদির দৈনন্দিন অবস্থাকে সে স্থানের আবহাওয়া (Weather) বলে।সাধারণত কোনো স্থানের ৩০ থেকে ৪০ বছরের গড় আবহাওয়ার অবস্থাকে জলবায়ু (Climate) বলে।

*     পৃথিবীতে জলবায়ু অঞ্চল ৪টি। যথা:

  1. উষ্ণ (মরুভূমি অঞ্চল)
  2. নাতিশীতোষ্ণ
  3. মেরুদেশীয় (সাইবেরিয়া ও আলাস্কা অঞ্চল)
  4. পার্বত্যঅঞ্চল
  • জলবায়ু ২ ধরনের। যথা:

১।    সমভাবাপন্ন: সমুদ্র নিকটবর্তী এলাকার জলবাযু। এখানে তাপমাত্রার পার্থক্য কম-বেশি হয় না।
২।    চরমভাবাপন্ন:সমুদ্র দূরবর্তী এলাকার জলবায়ু। এখানে তাপমাত্রার তারতম্য ঘটে। এর অপর নাম মহাদেশীয় জলবায়ু।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর ৫টি উপাদান আছে। যথা:

  1. বায়ুর তাপ
  2. বায়ুর চাপ
  3. বায়ু প্রবাহ
  4. বায়ুর আর্দ্রতা
  5. পানিচক্র ও বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর নিয়ামকসমূহ: নিম্নোক্ত নিয়ামকসমূহ আবহাওয়া ও জলবায়ুকে নির্ধারণ করে। যেমন:

  1. অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ
  2. সমুদ্রস্রোত
  3. সমুদ্র থেকে দূরত্ব
  4. বনভূমির অবস্থান
  5. ভূমির বন্ধুরতা (বায়ুপ্রবাহ বাধা পায়)
  6. ভূমির ঢাল (বায়ুপ্রবাহ বাধা পায়)
  7. পর্বতের অবস্থান (বায়ুপ্রবাহ বাধা পায়)
  8. মৃত্তিকার গঠন
  9. ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা (উপরের দিকে গেলে বায়ুর চাপ ও তাপ কমে)

বায়ুর তাপ: বায়ুমন্ডলের মোট শক্তির ৯৯.৯৭% সূর্য থেকে আসে। বায়ুমন্ডল ৩টি প্রক্রিয়ায় উত্তপ্ত হয়। যথা:

  1. পরিবহন: এটি মূলত কঠিন পদার্থে হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়।
  2. পরিচলন: এটি মূলত তরল পদার্থে হয়ে থাকে।এর মাধ্যমে বায়ুর ঘূর্ণন প্রক্রিয়া, পানি ও তাপের বিনিময় হয়।
  3. বিকিরণ: এটি মূলত শূন্য মাধ্যমে হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় সূর্য থেকে তাপ পৃথিবীতে আসে এবং পৃথিবী তাপ হারিয়ে শীতল হয়।সূর্য আমাদের বিকিরণ মাধ্যমে তাপ দেয়।

বায়ুর চাপ: বায়ু তার ভরের জন্য চতুর্দিকে যে চাপ দেয় তাকে বায়ুচাপ বলে। বায়ুচাপ ৩টি নিয়ামকের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ বায়ুচাপ ৩টি কারণে হয়ে থাকে। যথা:

  1. 1. উচ্চতা:সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় বায়ুর চাপ তত কমে।
  2. উষ্ণতা:তাপে বায়ু প্রসারিত ও হালকা হয় ফলে বায়ু চাপ কমে। অর্থাৎ তাপ বাড়লে চাপ কমে, তাপ কমলে চাপ বাড়ে।
  3. জলীয় বাষ্প: এটি মূলত বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ। জলীয়বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র বায়ু শুষ্ক বায়ু অপেক্ষা হালকা। বায়ু আর্দ্র হলে চাপ কমে। শুষ্ক ও ঠান্ডা হলে চাপ বাড়ে।

বায়ুর স্বাভাবিক চাপ:

সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ ৭৬ সে.মি.।

ভূপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ ১০ নিউটন।

স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষের উপর বাযুর চাপ ১৪.৫/১৫ পাউন্ড।

ভূগর্ভস্থ পানি লিফট পাম্পের সাহায্যে সর্ব্বোচ্চ ১০ মিটার নিচ থেকে উঠানো যায়।

সাধারণ পাম্প পানিকে ৩৪ ফুটের অধিক উচ্চতায় উঠাতে পারে না।

  • নিম্নচাপ: বায়ুচাপের হ্রাস পাওয়াকে নিম্নচাপ বলে। এর ফলে বাতাসে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটা সর্বদা সাগর/মহাসাগরে হয়ে থাকে। হঠাৎবায়ুর চাপ কমে গেলে বায়ুপ্রবাহ বেড়ে যায়। বাতাসের চাপ নির্ণায়ক যন্ত্র ব্যারোমিটার। এই যন্ত্রে পারদ ব্যবহার করা হয়। পারদ একমাত্র তরল ধাতু যা সবচেয়ে ভারী। ব্যারোমিটারে পারদ স্তম্ভের উচ্চতা হ্রাস পেলে ঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
  • বায়ুপ্রবাহ: সূর্যতাপ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের জন্য বায়ু এক স্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়।বায়ু সাধারণত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়।

 

  • বায়ুপ্রবাহের কারণ ২টি। যথা:

১. সূর্যতাপ

২. বায়ুচাপ

বায়ু উচ্চচাপ বলয় থেকে নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। এই প্রবাহের সময় ফেরেলের সূত্র অনুযায়ী উত্তর গোলার্ধের ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধের বামদিকে বেঁকে যায়।

 উচ্চচাপ বলয়: ২৫-৩০ অক্ষাংশের মধ্যে।

→ নিম্নচাপ বলয়: ৬০-৭০ অক্ষাংশের মধ্যে।

  • বায়ুপ্রবাহের ৪টি প্রকার। যথা:

১.  নিয়ত বায়ু

২.  সাময়িক বায়ু

৩.  অনিয়মিত বায়ু

৪.  স্থানীয় বায়ু

  • নিয়ত বায়ু: এই বায়ু সারা বছর একই দিকে অর্থাৎ উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। এই নিয়তবায়ু আবার ৩ প্রকার। যথা:

     

অয়ন বায়ু: এর অপর নাম বাণিজ্য বায়ু। এ বায়ু পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়।

প্রত্যয়ন বায়ু: এর অপর নাম পশ্চিমা বায়ু। এ বায়ু পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হয়। উল্লেখ্য, প্রশান্ত মহাসাগরের ৪০থেকে ৪৭ দক্ষিণ অক্ষাংশে পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ সবচেয়ে বেশি। তাই এই অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশা বলে। এর অপর নাম প্রবল পশ্চিমা বায়ু।

মেরুবায়ু: উত্তর (সুমেরু) থেকে দক্ষিণে সুমেরু বায়ুপ্রবাহিত হয় এবং দক্ষিণ (কুমেরু) থেকে উত্তরে কুমেরু বায়ু প্রবাহিত হয়।

 

  • সাময়িক বায়ু: নির্দিষ্ট কোনো সময় ও ঋতুতে জল ও স্থলভাগের তাপের তারতম্যের জন্য যে বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয় তাকে সাময়িক বায়ু বলে। এই বায়ু অল্প সময়ের জন্য প্রবাহিত হয়। সাময়িক বায়ু ৩ প্রকার। যথা:

মৌসুমী বায়ু: ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এ বায়ুর দিক পরিবর্তন হয়। এই বায়ু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে এই বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়। বর্ষাকালে বাংলাদেশের উপর দিয়ে এ বায়ু প্রবাহিত হয়। শীতকালে মহাদেশীয় বায়ু অর্থাৎ পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা বায়ু প্রবাহিত হয়।

→ স্থলবায়ু: এ বায়ু স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। এটি রাতে প্রবাহিত হয়। মধ্যরাতে এর গতিবেগ বেশি থাকে।

→ সমুদ্রবায়ু: এ বায়ু সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এটি দিনে প্রবাহিত হয়। বিকেলে/অপরাহ্ণে এর গতিবেগ বেশি থাকে।

 

অনিয়মিত বায়ু: কোনো স্থানে অধিক উত্তাপের জন্য নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে কিংবা অধিক শৈত্যপ্রবাহের জন্য উচ্চচাপের সৃষ্টি হলে যে বায়ু প্রবাহ হয় সেটিই অনিয়মিত বায়ু। এ বায়ুর কারণে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। অনিয়মিত বায়ুর মধ্যে ‘টর্নেডো’ স্থলভাগে সৃষ্টি হয়।টর্নেডো স্প্যানিশ শব্দ। এটা এমন এক ধরনের ঘূর্ণিঝড় যা সীমিত স্থানে হয়। এর গতিবেগ ঘন্টায় ৪০০ কি.মি. পর্যন্ত হতে পারে। জলভাগে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড়ের মধ্যে:

 সাইক্লোন (ভারত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়)

 টাইফুন (প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়)

 হারিকেন (আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্টি হয়)

 

  • স্থানীয় বায়ু : স্থানীয় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ও তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে যে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয় তাকে স্থানীয় বায়ু বলে। অঞ্চলভেদেএর বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন:

সাহারা ও আরব মরুভূমিতে ‘সাইমুম’

যুক্তরাষ্ট্রের রকি পর্বতমালায়‘চিনুক’

মিশরীয় অঞ্চলে‘খামসিন’

উপমহাদেশে ‘লু’

আফ্রিকা ও ইতালিতে‘সিরক্কো’

দক্ষিণ আমেরিকায় ‘পাম্পেরু’

 

  • বায়ুর আদ্রর্তা: বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিকে আর্দ্রতা বলে। আর্দ্রতার পরিমাণও জলীয়বাষ্প একই কথা। বাতাসে তাপমাত্রা হ্রাস পেলে আর্দ্রতা বাড়ে; তাপমাত্রা বাড়লে আর্দ্রতা কমে। আর্দ্রতা দুই প্রকার। যথা:

      ১. পরম আর্দ্রতা: বায়ুতে জলীয় বাষ্পের প্রকৃত পরিমাণকে পরম আর্দ্রতা বলে।

      ২. আপেক্ষিক আর্দ্রতা: কোনো নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে জলীয় বাষ্পের প্রকৃত পরিমাণ এবং একই আয়তনের বায়ুকে একই উষ্ণতায় পরিপৃক্ত করতে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্পের প্রয়োজন; এ দুটির অনুপাতকেআপেক্ষিক আর্দ্রতা বলে।

আর্দ্র বা ভেজা বায়ুতে বায়ুর চাপ কমে। শুষ্ক বা ঠান্ডা বায়ুতে বায়ুর চাপ বাড়ে।

শীতকালে বায়ুর আর্দ্রতা কম থাকে বলে বাতাস শুষ্ক থাকে তাই ঠোঁট ও গায়ের চামড়া ফেটে যায়।

বর্ষাকালে বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশি থাকে এবং শীতকালে জলীয় বাষ্প কম থাকে ফলে বাতাস ভেজা কাপড় হতে জলীয় বাষ্প শোষণ করে তাই শীতকালে ভেজা কাপড় তাড়াতাড়ি শুকায়।

 

  • পানিচক্র:পানি প্রবাহের সার্বিক অবস্থাকে পানিচক্র বলে। পানিচক্রের ৪টি অবস্থা। যথা:
  1. বাষ্পীভবন: সমুদ্র জলীয় বাষ্পের উৎস। সূর্য-ই বাষ্পীভবনের কারণ।
  2. ঘনীভবন: বায়ু যত উষ্ণ হয় জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা তত বেশি হয়। বায়ু শীতল হতে থাকলে জলীয় বাষ্পের কিছু অংশ পানিতে পরিণত হয়। বায়ু যে উষ্ণতায় জলীয়বাষ্পরূপে ঘনীভূত হয় তাকে শিশিরাঙ্ক বলে। পানি ০সেলসিয়াস আকার ধারণ করলে তখন তুষারপাত হয়। অন্যথায় শিশির ও কুয়াশায় পরিণত হয়।
  3. বারিপাত:সকল বারিপাত জলীয় বাষ্পের উপর নির্ভরশীল। বারিপাত বলতে ৪টি জিনিসকে বুঝায়। যথা: শিশির (Dew), তুহিন (Frost), কুয়াশা (Fog), তুষার (Snow)। ঘন কুয়াশাকে কুজ্ঝটিকা বলে।
  4. পানিপ্রবাহ:ভূ-পৃষ্ঠে পানির মূলত ৪টি প্রবাহ। যথা: পৃষ্ঠপ্রবাহ, অন্তঃপ্রবাহ (মাটির নিচ দিয়ে প্রবাহ), চুয়ানো ও পরিস্রাবণ (ছাকন পদ্ধতি) ।

 

  • বৃষ্টিপাত: বৃষ্টিপাত প্রধানত ৪ ধরনের। যথা:
  1. পরিচলন বৃষ্টি: এটি নিরক্ষীয় অঞ্চল তথা পৃথিবীর কেন্দ্রভাগে হয়ে থাকে।
  2. শৈলৎক্ষেপণ বৃষ্টি: এটি পার্বত্য অঞ্চলে হয়ে থাকে।
  3. ঘূর্ণি বৃষ্টি: শীতকালে এটি ইউরোপে হয়ে থাকে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে হয়।
  4. বায়ুপ্রাচীর-জনিত বৃষ্টি: এটি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে হয়ে থাকে।

 


পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন


পৃথিবী প্রথম উত্তপ্ত গ্যাসীয় পিন্ড ছিল। ধীরে ধীরে পৃথিবী শীতল হয়ে কঠিন পদার্থগুলো নিচে ঘনীভূত হয়ে চারটি স্তরে বিভক্ত হয়। যেমন:

  1. ভূত্বক (Earth’s Crust)
  2. অশ্বমন্ডল (Lithosphere)
  3. গুরুমন্ডল (Barysphere)
  4. কেন্দ্রমন্ডল (Centrosphere)

 

ভূত্বক: ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে শিলার যে কঠিন বহি-আবরণ দেখা যায় তাকে ভূত্বক বলে। এর পুরত্ব গড়ে ২০ কিলোমিটার।ভূপৃষ্ঠ থেকে গর্ত করে নিচের দিকে গেলে চাপ ও তাপ উভয়ই বাড়বে। ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে উঠলে চাপ ও তাপ কমবে।ভূত্বক দুই শ্রেণির। যথা:

ক. মহাদেশীয় ভূত্বক: ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ থেকে এর পুরত্ব৩৫ কি. মি. প্রায়। এটি সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে গঠিত।

      খ. সমুদ্র তলদেশীয় ভূত্বক:সমুদ্র তলদেশ থেকে এর পুরত্ব ৫ কি.মি. প্রায়। এটি সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম দিয়ে গঠিত।

      → ভূত্বকের উপাদান: অক্সিজেন, সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম।

      → ভূত্বকের প্রধান উপাদানঅক্সিজেন (৪২.৭%)

      → পৃথিবী তৈরির প্রধান উপাদানসিলিকন (২৭.৭%)

(ভূপৃষ্ঠে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ধাতু অ্যালুমিনিয়াম(৮.১%)

 

অশ্বমন্ডল:ভূত্বকের নিচে এবং গুরুমন্ডলের উপরে ১০০ কি.মি. বিস্তৃত যে কঠিন শিলার আস্তরণ আছে তাকে অশ্বমন্ডল বলে। এর অপর নাম শিলামন্ডল। এটি তৈরির উপাদানসিলিকন (Si) ও অ্যালুমিনিয়াম (Al)। সংক্ষেপে: SiAl (সিয়াল)

 

গুরুমন্ডল: অশ্বমন্ডলের নিচে ও কেন্দ্রমণ্ডলের উপরে৩০৫৮ কি. মি. পর্যন্ত বিস্তৃত মন্ডলকে গুরুমন্ডল বলে। এটি মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত।এটি তৈরির প্রধান উপাদানসিলিকন (Si) ও ম্যাগনেসিয়াম (Ma)। সংক্ষেপে: SiMa (সিমা)

 

কেন্দ্রমন্ডল: গুরুমন্ডল থেকে পৃথিবীর কেন্দ্রভাগ পর্যন্ত যে স্তর তাকে কেন্দ্রমন্ডল বলে।এ স্তরের তাপমাত্রা ৩০০০ থেকে ৫০০০ সেলসিয়াস পর্যন্ত। এটি তৈরির উপাদান নিকেল (Ni) ও লোহা (Fe)। সংক্ষেপে: NiFe (নিফে)

 


শিলা ও খনিজ


ভূত্বক যে সব উপাদান দিয়ে তৈরি তার সাধারণ নাম শিলা। এটি মূলত একাধিক খনিজের সমন্বয়।কতগুলো মৌলিক পদার্থ প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগিক পদার্থের সৃষ্টি করে তাকে খনিজ বলে। পৃথিবীর বিচিত্র ভূমিরূপ প্রক্রিয়া শিলা ও খনিজের ধরন দ্বারা প্রভাবিত হয়।

  • শিলা ও খনিজের পার্থক্য:

শিলা:

  1. বিভিন্ন রং
  2. একাধিক খনিজের সমন্বয়
  3. সুলভ/সহজেই পাওয়া যায়
  4. রাসায়নিক সংকেত নেই
  5. প্রাকৃতিক নাও হতে পারে
  6. অসমসত্ত্ব (উপাদানগুলো একইভাবে সাজানো নয়)
  7. কঠিন ও হালকা নরম
  8. উদাহরণ: গ্রানাইট, ব্যাসল্ট, কোয়ার্টজাইট, চুনাপাথর ইত্যাদি।

খনিজ: 

  1. খনিজ একটি নির্দিষ্ট রং
  2. এক বা একাধিক মৌলিক পদার্থের সমন্বয়
  3. দুর্লভ/কম পাওয়া যায়
  4. রাসায়নিক সংকেত আছে
  5. প্রাকৃতিক
  6. সমসত্ত্ব (উপাদানগুলো একইভাবে সাজানো)
  7. কঠিন ও স্বচ্ছ
  8. উদাহরণ: মাইকা, কোয়ার্টাজ, স্বর্ণ, লোহা, ক্যালসাইট ইত্যাদি।

শিলা প্রধানত তিন প্রকার। যথা:

  1. আগ্নেয় শিলা
  2. পাললিক শিলা
  3. রূপান্তরিত শিলা

 

  1. আগ্নেয় শিলা: এ শিলা উত্তপ্ত গলিত অবস্থা থেকে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে কঠিন হয়েছে। এ শিলায় জীবাশ্ম নেই। একে প্রাথমিক শিলাও বলা হয়। এটি অস্তরীভূত শিলা। যেমন: গ্রানাইট, ব্যাসল্ট, শেল, ল্যাকোলিথ ইত্যাদি।

 

  1. পাললিক শিলা: এই শিলা পলি দ্বারা গঠিত হয়ে স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়। এ শিলায় জীবাশ্ম আছে। জীবাশ্ম মূলত বিভিন্ন প্রাণী ও বৃক্ষের ধ্বংসাবশেষ যা যুগ যুগ ধরে মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে। একে স্তরীভূত শিলা বলা হয়। এই শিলায় ভাঁজ আছে। যেমন: কয়লা, চুনাপাথর, নুড়িপাথর, বেলেপাথর, জিপসাম, চক, লবণ ইত্যাদি।

 

  1. রূপান্তরিত শিলা: এই শিলায় স্তরে স্তরে ভাঁজ থাকে। চাপ, তাপ ও রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে এই শিলায় গঠিত হয়। এটি মূলত আগ্নেয় শিলা ও পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত হয়। যেমন: গ্রাফাইট, মার্বেল, নিস, স্লেট, কোয়ার্টজাইট, ক্যালসাইট ইত্যাদি।
  • গ্রাফাইট: কয়লা থেকে সৃষ্ট
  • নিস: গ্রানাইট থেকে সৃষ্ট
  • স্লেট: শেল থেকে সৃষ্ট
  • কোয়ার্টজাইট: কোয়ার্টজ ও বেলেপাথর থেকে সৃষ্ট
  • মার্বেল ও ক্যালসাইট: চুনাপাথর থেকে সৃষ্ট

  • খনিজ: কতগুলো মৌলিক পদার্থ প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগিক পদার্থের সৃষ্টি করে তাকে খনিজ বলে। খনিজ দুই বা ততোধিক মৌলের সমন্বয়ে গঠিত।কিছু কিছু খনিজএকটি মাত্র মৌলিক পদার্থ দিয়েও গঠিত হতে পারে। যেমন: সোনা, রূপা, তামা, হীরা, পারদ, গন্ধক, টেলক প্রভৃতি এক মৌল দিয়ে গঠিত খনিজ।

→ হীরা সবচেয়ে কঠিন পদার্থ/খনিজ।

→ টেলক সবচেয়ে নরম পদার্থ/খনিজ।

 


ভূমিরূপ


ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন আকৃতি বা গঠনের উপর ভিত্তি করে পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় ভূমিরূপ মূলত ৪ শ্রেণির। যথা:

১. সমভূমি (Plain)

২.  মরুভূমি (Desert)

৩.  মালভূমি (Plateau)

৪.  পার্বত্যভূমি (Mountain)

 

পার্বত্যভূমি: সাধারণত ৬০০-১০০০ মিটার হালকা ঢালবিশিষ্ট ভূমিরূপকে পাহাড় বলে। কিন্তু ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু খাড়া ঢালবিশিষ্ট ভূমিকে পর্বত বলে। ৬০০ মিটার এর কম উচ্চতাসম্পন্ন ভূমিরূপকে টিলা বলে। সিলেট, নেত্রকোণা ও হবিগঞ্জেটিলা দেখতে পাওয়া যায়। দুই পর্বতের মধ্যবর্তী সংকীর্ণ ও অনুচ্চ পথকে গিরিপথ বলে। পর্বত ৪ ধরনের। যথা:

 

  1. ভঙ্গিল পর্বত:কোমল পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়ে যে পর্বত গঠিত হয়েছে তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। যেমন:এশিয়ার হিমালয়, ইউরোপের আল্পস, রাশিয়ার ইউরাল, উত্তর আমেরিকার রকি ও দক্ষিণ আমেরিকারআন্দিজ পর্বতমালা।
  2. আগ্নেয় পর্বত:আগ্নেয়গিরি থেকে উদ্গরিত পদার্থ সঞ্চিত ও জমাট বেঁধে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হয়। যেমন: সেন্ট হেলেনা (যুক্তরাষ্ট্র), ফুজিয়ামা (জাপান), ভিসুভিয়াস (ইতালি), কিলিমাঞ্জারো (কেনিয়া) ও পিনাটুবো (ফিলিপাইন) প্রর্ভতি পর্বত।
  3. ক্ষয়জাত পর্বত/চ্যুতি-স্তূপ পর্বত: এটি ভূ-আলোড়নের সময় ভূ-অভ্যন্তরে শিলার ফাটলের ফলে ভূত্বকের উপরের দিকে উঁচু হয়ে সৃষ্টি হয়। যেমন: ব্ল্যাক ফরেস্ট (জার্মানি), লবণ (পাকিস্তান), বিন্ধ্যা ও সাতপুরা (ভারত) প্রভৃতি পর্বত।
  4. ল্যাকোলিথ পর্বত/গম্ভুজ পর্বত: ভূ-অভ্যন্তরের আগ্নেয়গিরির লাভা উৎগরিত না হওয়ায়র কারণে ভূপৃষ্ঠে যে উঁচু উঁচু ঢিবির তৈরি হয় তাকে ল্যাকোলিথ বা গম্ভুজ পর্বত বলে। এর কোনো শৃঙ্গ নেই। যেমন: যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি পর্বত।

 

মালভূমি: পর্বত থেকে নিচু কিন্তু সমভূমি থেকে উঁচু বিস্তৃর্ণ সমতল ভূমিকে মালভূমি বলে। এটা ৩ ধরনের। যথা:

      ১পর্বত-মধ্যবর্তী মালভূমি:এটি দুই পর্বতের মধ্যবর্তী বিস্তৃর্ণ সমতল ভূমি। যেমন:পামির (এশিয়া), মেক্সিকো, মঙ্গোলিয়া, বলিভিয়া ও তিব্বতের মালভূমি।

২.  পাদদেশীয় মালভূমি:এটি উচ্চপবর্ত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সৃষ্টি হয়। যেমন: যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো, দক্ষিণ আমেরিকার পাতাগনিয়া মালভূমি।

      ৩. মহাদেশীয় মালভূমি: এটি সাগর ও নিম্নভূমি পরিবেষ্টিত উচ্চভূমি, যার সাথে পর্বতের কোনো সংযোগ নেই।

 

  • মরুভূমি: সমুদ্র থেকে দূরবর্তী পাহাড়ঘেরা স্থান, যেখানে সামুদ্রিক আর্দ্রতা ও মেঘ পৌঁছাতে পারে না এবং বিষুবরেখার নিকটবর্তী অঞ্চলে মরুভূমি দেখা যায়। ইউরোপ মহাদেশে কোনো মরুভূমি নেই।ক্যাকটাস ও উট যথাক্রমে মরুভূমির বৃক্ষ ও প্রাণী। মরুভূমি ২ ধরনের। যথা:

১.  শীতল মরুভূমি:উত্তর মেরুর আর্কটিক, দক্ষিণ মেরুর এন্টার্কটিক, ভারতেরলাদাখ প্রভৃতি মরুভূমি।

২.  উষ্ণমরুভূমি: সাহারা (উত্তর আফ্রিকা), কালাহারি (দক্ষিণ আফ্রিকা), আরব (মধ্যপ্রাচ্য), গোবি (মঙ্গোলিয়া), থর (ভারত ও পাকিস্তান), তাকমালাকান (চীন), পাতাগুনিয়ান (দক্ষিণ আমেরিকা), গ্রেট ভিক্টোরিয়া (অস্ট্রেলিয়া), দস্ত-ই-লূত (ইরান) প্রভৃতি মরুভূমি।

 

সমভূমি: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচু মৃদু ঢালবিশিষ্ট সুবিস্তৃত ভূমিকে সমভূমি বলে। এটি ২ ধরনের। যথা:

      ১. ক্ষয়জাত: এটি মাটি ক্ষয় হয়ে হয়ে সৃষ্টি হয়। যেমন: সাইবেরিয়ার সমভূমি, বাংলাদেশের মধুপুর ও ভাওয়াল, বরেন্দ্রভূমি (সোপান অঞ্চল) ইত্যাদি। এ ধরনের সমভূমি হলো:

    ক. পাদদেশীয় সমভূমি: রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল

    খ. স্রোতজ সমভূমি: খুলনা ও পটুয়াখালি অঞ্চল এবং বরগুনা জেলার কিছু অঞ্চল।

২. সঞ্চয়জাত:এটি পলি সঞ্চিত হতে হতে সৃষ্টি হয়। এগুলো মূলত নদীবিধৌত অববাহিকা।এ ধরনের সমভূমি চার প্রকার। যথা:

ক.প্লাবন সমভূমি: ধলেশ্বরী ও যমুনার প্লাবন ভূমি।

খ.বদ্বীপ সমভূমি: গঙ্গার বদ্বীপ অঞ্চল।

    গ.উপকূলীয় সমভূমি: চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চল।

ঘ.হিমবাহ সমভূমি: কানাডার প্রেইরি অঞ্চল ও মধ্য ইউরোপের সমভূমি।

 


ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন


যে কার্যাবলির কারণে প্রাকৃতিকভাবে ভূমিরূপের পরিবর্তন হয় তাকে ভূপ্রক্রিয়া বলে। এই প্রক্রিয়া তিনভাবে হয়ে থাকে। যথা:

  • আকস্মিক পরিবর্তন: আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূকম্পন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের সংকোচন, ভূগর্ভের তাপ ও অন্যান্য প্রচণ্ড শক্তির ফলে ভূপৃষ্ঠে হঠাৎ যে পরিবর্তন সাধিত হয় তাকে আকস্মিক পরিবর্তন বলে। এটি প্রধাণত ভূমিকম্প, সুনামি ও আগ্নেয়গিরিরি ফলে সৃষ্টি হয়।
  • ভূমিকম্প ও সুনামি:ভূ-অভ্যন্তরস্থ শিলারাশিতে সঞ্চিত শক্তির আকস্মিক অবমুক্তির কারণে সৃষ্ট স্পন্দন থেকে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। ভূপৃষ্ঠের নিচে ৫ কি. মি. থেকে ১১২৬ কি. মি. পর্যন্ত ভূমিকম্প (Earthquake) হতে পারে। ভূকম্পন যদি সমুদ্রের তলদেশে হয়ে বিশাল ঢেউ এর সৃষ্টি করে তাকে সুনামিবলে। সুনামি প্রশান্ত মহাসাগরে বেশি হয়। ভূমিকম্প প্রশান্ত মহাসাগরের বহিঃসীমানা বরাবর ঘটে। প্রধানত জাপান, চিলি, ফিলিপাইন, আলাস্কায় ভূমিকম্প বেশি হয়।ভূমিকম্প প্রধাণত৩ ধরনের। যথা: অগভীর (সবচেয়ে বেশি হয়), মাঝারি ও গভীর।

 

আগ্নেয়গিরি: ভূপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ বেশি হলে সেখানে গর্ত বা ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং সেই ফাটলের মধ্য দিয়ে ভূগর্ভস্থ বিভিন্ন পদার্থ নির্গত হয় তাকে আগ্নেয়গিরি (Volcano) বলে।

উদগিরিত পদার্থকে লাভা বলে।

লাভার উর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হওয়াকে (Eruption) অগ্ন্যুৎপাত বলে।

আগ্নেয়গিরির উদগিরণ মুখকে জ্বালামুখ বলে।

উদগিরণ শেষে জ্বালামুখ ধ্বসে পড়ে যে গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে ক্যালডেরা বলে।

লাভা ঠান্ডা হয়ে যে দ্বীপের সৃষ্টি হয় তাকে আগ্নেয় দ্বীপ বলে। যেমন: হাওয়াই দীপপুঞ্জ (যুক্তরাষ্ট্র)

এই লাভা যখন ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে গলিত অবস্থায় থাকে তাকে ম্যাগমা বলে।

সব আগ্নেয়গিরি মহাদেশ ও সমুদ্রসীমানা বরাবর অবস্থিত। এই সীমানাকে আগ্নেয় মেখলা বলে।

আগ্নেয়গিরির উৎক্ষিপ্ত পদার্থে হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, হাইড্রোক্লরিক এসিড, জলীয়বাষ্প ইত্যাদি গ্যাস থাকে। সবচেয়ে বেশি জলীয়বাষ্প থাকে। স্ট্রম্বোলি আগ্নেয়গিরিকে ভূমধ্যসাগরের আলোকস্তম্ভ বলা হয়। আগ্নেয়গিরি ৩ ধরনের হয়ে থাকে। যেমন:

 

  1. জীবন্ত বা সক্রিয় আগ্নেয়গিরি: যে আগ্নেয়গিরি থেকে মাঝে মাঝে বা সবসময় অগ্ন্যুৎপাত হয় তাকে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি বলে। এটি আবার২ ধরনের। যথা:

ক. অবিরাম আগ্নেয়গিরি: যে আগ্নেয়গিরি থেকে সবসময়অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।যেমন: লাসেনপিক (যুক্তরাষ্ট্র, ক্যালিফোর্নিয়া)

খ. সবিরাম আগ্নেয়গিরি:যে আগ্নেয়গিরি থেকে মাঝে মাঝেঅগ্ন্যুৎপাত ঘটে। যেমন:ভিসুভিয়াস (ইতালি)।

 

  1. সুপ্ত আগ্নেয়গিরি: যে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বহুদিন যাবৎ বন্ধ আছে, তবে যে কোনো সময় অগ্ন্যুৎপাত ঘটতে পারে। যেমন: ফুজিয়ামা (জাপান)। কোহি সুলতান (ইরান), হেকলা (আইসল্যান্ড)

 

  1. মৃতআগ্নেয়গিরি: যে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বহুদিন যাবৎ বন্ধ আছে এবং ভবিষ্যতে অগ্ন্যুৎপাত ঘটার সম্ভাবনা নেই। যেমন: কোহিসুলতান (ইরান), হ্যাকলা (আইসল্যান্ড)।

 

√ আগ্নেয়গিরির ফলে ৪ ধরনের ভূমিরূপ দেখা যায়। যথা:

ক. আগ্নেয়দ্বীপ (যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ)

খ. আগ্নেয় হ্রদ (যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার মাউন্ট আতাকমা হ্রদ)

গ. আগ্নেয় সমভূমি (উত্তর আমেরিকার স্লেক নদীর লাভা সমভূমি)

ঘ. আগ্নেয় মালভূমি (ভারতের দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকাময় মালভূমি)

 

  • ধীর পরিবর্তন: বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির মাধ্যমে বিশাল এলাকা জুড়ে ধীরে ধীরে যে পরিবর্তন সংঘটিত হয় তাকে ভূপৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তনবলে। মূলত এই ধীর পরিবর্তনের কারণে ভূপৃষ্ঠে ক্ষয়জাত ও সঞ্চয়জাত পরিবর্তন ঘটে। নিম্নে ধীর পরিবর্তনের কারণগুলো বর্ণিত হলো:

√ বায়ুপ্রবাহ:বাতাসের কারণে তথা বায়ুপ্রবাহে ভূমিক্ষয় হয়।

 

√ বৃষ্টিপাত: বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি অঞ্চলের বেশি ভূমিক্ষয় ঘটে।

 

√ হিমবাহ: এটি এক প্রকার চলন্ত বরফের স্তুপ। একে বরফের নদী বলে। এর ফলে ভূমিক্ষয় ঘটে। ভারতের কারাকোরাম পর্বতের ‘গ্লেট বালটোরা’ সবচেয়ে বড় হিমাবাহ। এর দৈর্ঘ্য ৫৮ কিলোমিটার।

 

√ নদীর কারণে সৃষ্ট পরিবর্তন: নদী প্রবাহের কারণে প্রকৃতিতে মূলত দুই ধরনের ভূমিরূপ দেখা যায়। যেমন:

১) ক্ষয়জাত

২) সঞ্চয়জাত

১) নদীর ক্ষয়জাত ভূমিরূপ: নদীর গতি ও পানিপ্রবাহের কারণে এ ধরনের ভূমিক্ষয় ঘটে। নদীর গতিপথ ৩ ধরনের। যথা:

  • ক. ঊর্ধ্বগতি: পর্বতের যে স্থান থেকে নদীর উৎপত্তি হয়েছে সেখান থেকে সমভূমিতে পৌঁছানো পর্যন্ত অংশকে নদীর ঊর্ধ্বগতি বলে। এ ঊর্ধ্বগতি অবস্থায় নদীর স্রোতের বেগ প্রবল হওয়ার কারণে নদী বড় বড় শিলাখণ্ড বহন করে নিচের দিকে অগ্রসর হয়। এর ফলে নিম্নক্ষয় বেশি হয় এবং ‘V’ আকৃতির উপত্যকা তৈরি হয়।
  • খ. মধ্যগতি: পার্বত্য অঞ্চল পার হয়ে নদী যখন সমভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন এর প্রবাহকে মধ্যগতি বলে। এর ফলে পার্শ্বক্ষয় বেশি হয় এবং ‘U’ আকৃতির উপত্যকা তৈরি হয়।
  • গ. নিম্নগতি:নদীর জীবনচক্রের শেষ পর্যায় হলো নিম্নগতি। এ অবস্থায় স্রোত একেবারে কমে যায়। এর ফলে নিম্নক্ষয়বন্ধ হয় ও পার্শ্বক্ষয় অল্প পরিমাণে হয়। নদীর উপত্যকা খুব চওড়া ও অগভীর হয়। স্রোতের বেগ কমে যাওয়ায় পানিবাহিত বালুকণা, কাদা প্রর্ভতি নদীগর্ভে ও মোহনায় সঞ্চিত হয়।
  • গিরিখাত ও ক্যানিয়ন: ঊর্ধ্বগতি অবস্থায় নদীর প্রবল স্রোত খাড়া পর্বতগাত্র বেয়ে নিচে প্রবাহিত হওয়ার সময় দুই পর্বতের মধ্যবর্তী সংকীর্ণ যে নদীপথ তৈরি হয় তাকে গিরিখাত (Gorge) বলে। সিন্ধু নদীর গিরিখাত পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ গিরিখাত। গভীর ও দীর্ঘতম গিরিখাতকে ক্যানিয়ন (Canyon) বলে। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীর গ্রান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীর গিরিখাত।
  • জলপ্রপাত: ঊর্ধ্বগতি অবস্থায় কঠিন ও নরম শিলার উপর দিয়ে নদীর পানি প্রবাহের সময় নরম শিলা ক্ষয়ে ভূগর্ভস্থ গর্তের সৃষ্টি হয় এবং সেখানে উঁচু ও কঠিন শিলাস্তর থেকে খাড়াভাবে পানির পতনকে জলপ্রপাত (Waterfall) বলে। উত্তর আমেরিকার সেন্ট লরেন্স নদীরনায়াগ্রা জলপ্রপাত পৃথিবীর বৃহত্তম জলপ্রপাত।

 

     ২) নদীর সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ: নদীর গতি ও পানিপ্রবাহের কারণে এ ধরনের ভূমিসঞ্চয় ঘটে। যেমন:

  • পলল কোণ ও পলল পাখা: পার্বত্য অঞ্চল থেকে হঠাৎ কোনো নদী যখন সমভূমিতে পতিত হয় তখন শিলাচূর্ণ, পলিমাটি প্রভৃতি পাহাড়ের পাদদেশে সমভূমিতে সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণ ও হাতপাখার ন্যায় ভূখণ্ডের সৃষ্টি হয়। এরূপ ভূমিকে পলল কোণ ও পলল পাখা বলে। হিমালয়ের পাদদেশে গঙ্গার বিভিন্ন উপনদীর গতিপথে এরূপ ভূখণ্ড দেখতে পাওয়া যায়।
  • পাদদেশীয় পলল সমভূমি: অনেক সময় পাহাড়ি নদী পাদদেশে পলি সঞ্চয় করতে করতে একটা বিশাল সমভূমি গড়ে তোলে, এরূপ ভূমিকে পাদদেশীয় পলন সমভূমি বলে। বাংলাদেশের তিস্তা, আত্রাই, করতোয়া নদী সংলগ্ন রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অধিকাংশ স্থানে পলল সমভূমি দেখতে পাওয়া যায়।
  • প্লাবন সমভূমি: প্লাবন বা বন্যার শেষে নদীর দুপাশের ভূমিতে খুব পুরু স্তরের কাদা ও পলি জমতে জমতে যে বিস্তৃত ভূখণ্ডের সৃষ্টি হয় তাকে প্লাবন সমভূমি বলে। বাংলাদেশের প্রায় সমগ্র জেলাই পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা প্রভৃতি নদীবিধৌত প্লাবন সমভূমি। এ ধরণের সমভূমিতে অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ, বালুচর ও প্রাকৃতিক বাধ প্রর্ভতি সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ দেখা যায়।
  • বদ্বীপ সমভূমি:মোহনার কাছাকাছি নদীর স্রোতের বেগ কমে গেলে নদীরতলদেশে বালু ও কাদা সঞ্চিত হয়। ঐ সমস্ত বালু ও কাদা নদীর মুখে জমে নদীমুখ প্রায় বন্ধ হয়ে ধীরে ধীরে এর স্তর সাগরের পানির উচ্চতার উপরে উঠে যায়। তখন নদী বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে সাগরে পতিত হওয়ার সময় ত্রিকোণাকার এক নতুন সমতলভূমি তৈরি হয়। এটা বাংলা ‘ব’ বর্ণের মতো দেখায় বলে একে ব-দ্বীপ সমভূমি বলে। এই ভূমি গ্রিক বর্ণ ডেলটা’র মতো দেখতে তাই এর ইংরেজি নাম Delta হয়েছে। হুগলী থেকে পূর্ব দিকে মেঘনার সীমানা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলা দেশের সমস্ত দক্ষিণাংশ গঙ্গা ও পদ্মা নদীর বিখ্যাত ব-দ্বীপ অঞ্চল।

 

→ ব্যারিয়ার রীফ:এটি উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘ ও সরু পলিস্তরযুক্ত প্রবালদ্বীপ, যা মূল ভূখন্ড থেকে জলাভূমি দ্বারা বিচ্ছিন্ন ওনিমজ্জিত থাকে, একেব্যারিয়ার রীফ বলে।

→ বালিয়াড়ি ও বারখান:বাতাসের সাথে বালুকণা প্রবাহিত হয়ে যে বালুর ঢিবি সৃষ্টি হয় তাকে বালিয়াড়ি বলে। এর আকৃতি অর্ধচন্দ্রাকৃতির ন্যায় বাঁকা হলে তাকে বারখান বলে।

→ প্রস্রবণ বা ঝরনা: ভূ-অভ্যন্তরে সঞ্চিত পানি ভূপৃষ্ঠের কোনো ছিদ্র দিয়ে নির্গত হলে তাকে প্রস্রবণ বা ঝরনা বলে।

 

ধীর ও আকস্মিক পরিবর্তন:

ভূ-আলোড়ন: এর ফলে ভূপৃষ্ঠে ধীর ও আকস্মিক উভয় পরিবর্তন ঘটে। এটি মূলত তাপ ও চাপের কারণে ভূগর্ভস্থ পরিবর্তন। ভূ-অভ্যন্তরীণ অথবা বাহ্যিক প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের আকস্মিক অথবা ধীর পরিবর্তনকে ভূগাঠনিক ঝামেলা বা ভূ-আলোড়ন বলে।

 


নমুনা প্রশ্ন


১. বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ স্তর কোনটি?

ক) ট্রপোমণ্ডল

খ) থর্মোমণ্ডল

গ) সমমণ্ডল

ঘ) এক্সোমণ্ডল

উত্তরঃ ঘ


২. ওজোন গ্যাস বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে বিদ্যমান?

ক) ট্রপোমণ্ডল

খ) স্ট্রাটোমণ্ডল

গ) মেসোমণ্ডল

ঘ) তাপমণ্ডল

উত্তরঃ খ


৩. হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন গ্যাসের প্রাধান্য আছে বায়ুমণ্ডল কোন স্তরে?

ক) ম্যাগনিটোমণ্ডল

খ) থার্মোমণ্ডল

গ) আয়নমণ্ডল

ঘ) মেসোমণ্ডল

উত্তরঃ ক


৪. ওজোনস্তর ভূপৃষ্ঠ থেকে কত মাইল উপরে?

ক) ৫০ মাইল

খ) ৬৫ মাইল

গ) ৮০ মাইল

ঘ) ১৬ মাইল

উত্তরঃ খ


৫. বায়ুর যে উপাদান জীবন ধারণের জন্যে অতি প্রয়োজনীয় –  

ক) অক্সিজেন

খ) ওজোন

গ) জলীয় বাষ্প

ঘ) নাইট্রোজেন

উত্তরঃ ক


৬. বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের উপাদান কত?

ক) ০.৮০%

খ) ০.৪১%

গ) ০.০৩%

ঘ) ২০.৭১%

উত্তরঃ খ


৭. আবহাওয়া ও জলবায়ুর নিয়ামক নয় কোনটি?

ক) পর্বতের অবস্থান

খ) বায়ুপ্রবাহ

গ) সমুদ্রস্রোত

ঘ) বারিপাত

উত্তরঃ ঘ


৮. সমুদ্র নিকটবর্তী এলাকার জলবায়ুকে বলে – 

ক) মহাদেশীয় জলবায়ু

খ) সমভাবাপন্ন জলবায়ু

গ) চরমভাবাপন্ন জলবায়ু

ঘ) মেরুদেশীয় জলবায়ু

উত্তরঃ খ


৯. পৃথিবী তাপ হারিয়ে শীতল হয় কোন প্রক্রিয়ায়?

ক) পরিবহন

খ) বিকিরণ

গ) পরিচলন

ঘ) পরিক্রমন

উত্তরঃ খ


১০. পৃথিবীতে কতটি চাপবলয় আছে?

ক) সাতটি

খ) পাঁচটি

গ) চারটি

ঘ) দুইটি

উত্তরঃ ক


১১. বায়ুর চাপ সম্পর্কে কোন তথ্যটি অসত্য?

ক) তাপ কমলে বায়ুর চাপ কমে

খ) তাপ কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে

গ) বায়ু আর্দ্র হলে বায়ুর চাপ কমে

ঘ) শুষ্ক ও ঠাণ্ডা হলে বায়ুর চাপ বাড়ে

উত্তরঃ ক


১২. বায়ুর চাপ কমে গেলে বায়ুপ্রবাহ – 

ক) স্বাভাবিক থাকে

খ) বেড়ে যায়

গ) কমে যায়

ঘ) বন্ধ হয়ে যায়

উত্তরঃ খ


১৩. স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি বর্গইঞ্চিতে মানুষের উপর বায়ুর চাপ – 

ক) ১০ নিউটন

খ) ১৫ পাউন্ড

গ) ৭৬ সেন্টিমিটার

ঘ) ১০ মিটার

উত্তরঃ খ


১৪. বায়ুর আর্দ্রতা বলতে বায়ুতে কীসের উপস্থিতিকে বুঝায়?

ক) তাপমাত্রা

খ) গ্যাসীয় পদার্থ

গ) জলীয় বাষ্প

ঘ) ধূলিকণা

উত্তরঃ গ


১৫. শীতকালে ভেজা কাপড় তাড়াতাড়ি শুকায়, কারণ – 

ক) বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকে

খ) বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে

গ) বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে

ঘ) বাতাসে তাপমাত্রা কম থাকে

উত্তরঃ গ


১৬. কোনটি ব্যতিক্রম?

ক) কুয়াশা

খ) শিশির

গ) তুষার

ঘ) বৃষ্টি

উত্তরঃ ঘ


১৭. জমাট হিমকণাকে কী বলে?

ক) শিশির

খ) তুহিন

গ) কুজ্ঝটিকা

ঘ) তুষার

উত্তরঃ খ


১৮. গ্রীষ্মকালে মৌসুমী বায়ু কোন দিক থেকে প্রবাহিত হয়?

ক) দক্ষিণ-পশ্চিম

খ) উত্তর-পূর্ব

গ) পূর্ব-পশ্চিম

ঘ) উত্তর-দক্ষিণ

উত্তরঃ ক


১৯. আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে বলে –  

ক) সাইক্লোন

খ) টাইফুন

গ) হারিকেন

ঘ) টর্নেডো

উত্তরঃ গ


২০. সকল প্রকার বারিপাত কীসের উপর নির্ভরশীল?

ক) সমুদ্রস্রোত

খ) জলীয় বাষ্প

গ) পানিপ্রবাহ

ঘ) সূর্য

উত্তরঃ খ


২১. ‘গর্জনশীল চল্লিশা’ কোন বায়ুর অন্তর্ভূক্ত?

ক) অয়ন বায়ু

খ) মেরু বায়ু

গ) প্রত্যয়ন বায়ু

ঘ) মৌসুমী বায়ু

উত্তরঃ গ


২২. শীতকালে বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় – 

ক) মহাদেশীয় বায়ু

খ) মৌসুমী বায়ু

গ) অনিয়মিত বায়ু

ঘ) স্থানীয় বায়ু

উত্তরঃ ক


২৩. ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় বায়ুর নাম কী?

ক) সাইমুম

খ) চিনুক

গ) খামসিন

ঘ) লু

উত্তরঃ ঘ


২৪. জলীয় বাষ্পের প্রধান উৎস কোনটি?

ক) বায়ুমণ্ডল

খ) সূর্য

গ) সমুদ্র

ঘ) মেঘ

উত্তরঃ গ


২৫. বায়ু সে উষ্ণতায় ঘনীভূত হয় তাকে কী বলে?

ক) ঘনীভবন

খ) শিশিরাঙ্ক

গ) বাষ্পীভবন

ঘ) ঊর্ধ্বপাতন

উত্তরঃ খ


২৬. মহাদেশীয় ভূত্বকের প্রধান উপাদান কী কী?

ক) সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম

খ) সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম

গ) আয়রন ও নিকেল

ঘ) সিলিকন ও পটাশিয়াম

উত্তরঃ খ


২৭. পৃথিবীতে যে মৌলিক পদার্থ বেশি বিদ্যমান – 

ক) নাইট্রোজেন

খ) সিলিকা

গ) অ্যালুমিনিয়াম

ঘ) অক্সিজেন

উত্তরঃ ঘ


২৮. কোন শিলার মধ্যে জীবাশ্ম দেখা যায়?

ক) আগ্নেয় শিলা

খ) পাললিক শিলা

গ) রূপান্তরিত শিলা

ঘ) অস্তরীভূত শিলা

উত্তরঃ খ


২৯. সবচেয়ে নরম খনিজ পদার্থ কোনটি?

ক) হীরা

খ) বোরজেন

গ) টেলক

ঘ) গন্ধক

উত্তরঃ গ


৩০. ‘গ্রাফাইট’ তৈরি হয় – 

ক) চুনাপাথর থেকে

খ) কয়লা থেকে

গ) গ্রানাইট থেকে

ঘ) কোয়ার্টজ থেকে

উত্তরঃ খ


৩১. কোনটি ল্যাকোলিথ পর্বত?

ক) লবণ (পাকিস্তান)

খ) হেনরি (যুক্তরাষ্ট্র)

গ) কিলিমাঞ্জারো (আফ্রিকা)

ঘ) ফুজিয়ামা (জাপান)

উত্তরঃ খ


৩২. কানাডার প্রেইরি অঞ্চল কোন সমভূমির অন্তর্ভূক্ত?

ক) ক্ষয়জাত সমভূমি

খ) প্লাবন সমভূমি

গ) হিমবাহ সমভূমি

ঘ) উপকূলীয় সমভূমি

উত্তরঃ গ


৩৩. আগ্নেয়গিরির উদগরিত পদার্থকে কী বলে?

ক) ম্যাগমা

খ) লাভা

গ) অগ্ন্যুৎপাত

ঘ) ক্যালডেরা

উত্তরঃ খ


৩৪. কোন আগ্নেয়গিরিকে ভূমধ্যসাগরের আলোকস্তম্ভ বলা হয়?

ক) ভিসুভিয়াস

খ) লাসেনপিক

গ) স্ট্রম্বোলি

ঘ) কোটোপ্যাক্সি

উত্তরঃ গ


৩৫. যে প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠে ধীর ও আকস্মিক উভয় পরিবর্তন আনে তাকে বলে – 

ক) অগ্ন্যুৎপাত

খ) ভূমিকম্প

গ) ভূ-আলোড়ন

ঘ) নগ্নীভবন

উত্তরঃ গ


গ্রন্থপঞ্জি


১. রওশন আরা বেগম, আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ, ‘মাধ্যমিক সামাজিক বিজ্ঞান’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, মার্চ ১৯৯৬)

২. মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, শওকত আরা বেগম প্রমুখ ‘বাংলাদেশে ও বিশ্বপরিচয়’ (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, অক্টোবর ২০১৩)

৩. সেলিনা শাহজাহান, ড. শেখ মো. রেজাউল করিম প্রমুখ,‘ভূগোল ও পরিবেশ’(জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, অক্টোবর ২০১২)

৪. কে. আশরাফুল আলম, ‘বৈশ্বিক পরিবেশের প্রাকৃতিক ভূগোল (পারফেক্ট পাবলিকেশন্স, ঢাকা, ২০১৪)

৫. রফিক আহমেদ, ‘আবহাওয়া ও জলবায়ুবিজ্ঞান’ (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৭)

BCS Computer & IT Lecture – 03

সফটওয়্যার (সিস্টেম সফটওয়্যার ও এপ্লিকেশন সফটওয়্যার), অপারেটিং সিস্টেম, উইন্ডোজ ও নমুনা প্রশ্ন


Software (সফটওয়্যার)


Computer এর সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে ধারাবাহিকভাবে সাজানো নির্দেশনাবলিকে Program বলে। এইProgram বা কর্মপরিকল্পনার কৌশলকে Software বলে। Software এক অদৃশ্য শক্তি যেটি ছাড়া Hardware অর্থহীন। যে Software Install বা Setup দিতে হয় না তাকে Portable Software (বহনযোগ্য) বলে।

Software এর প্রকারভেদ: সফটওয়্যার প্রথমত দুই প্রকার। যথা:

  1. System Software
  2. Application Software

 

System Software:

এই Software, Start-up Disk এ থাকে। এটি ছাড়া কম্পিউটার পরিচালনা অসম্ভব।এটি User এর সাথে Hardware ও Software এর সংযোগ স্থাপন করে। এটি আবার তিন প্রকার। যথা:

  1. Operating System
  2. Device Driver
  3. Utility Program

 

Operating System (OS): এটি ছাড়া Computer কাজ করতে পারে না। এর সাহায্যে Computer সকল Hardware ও Software নিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৫১ সালে Mainframe Computer এর জন্য প্রথম এটি তৈরি করা হয়েছিল যা পরীক্ষামূলক ছিল। ১৯৭১ সালে PC (Personal Computer) এ এটি ব্যবহার করা হয়।

 

Device Driver: এটি এক ধরনের Computer Program যা কোনো Hardware Device এর সাথে উভমুখী যোগাযোগের মাধ্যমে তাকে পরিচালনা করে। উদাহরণ: Printer ও ‍Scanner কাজে লাগাতে হলে এর Device Driver কম্পিউটারে Install করতে হয়।

 

Utility Program: Computer রক্ষণাবেক্ষণ, Virus থেকে সুরক্ষা, Daa Program এর Backup ও Recovery-সহ বিভিন্ন কাজের সুবিধা প্রদানকারী Software হলো Utility Program. উদাহরণ:

  1. Disk Defragmentation: Disk এর গতি বাড়ানো ও File পুনর্বিন্যস্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
  2. File Handler
  3. Anti-Virus Software
  4. Sort-Merge Program
  5. Library Program
  6. Linker Program

 

Application Software:

কম্পিউটারের ব্যবহারিক সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহৃত Program হলো Application Software (ব্যবহারিক সফটওয়্যার)। এটি ২ প্রকার। যথা:

  1. Customize Software
  2. Package Software

 

Customize Software:এটি হলোব্যবহারকারী নিজে তার এক বা একাধিক সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে যে Program তৈরি করে। যেমন: কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার হিসাব-নিকাশ করার জন্য একজন দক্ষ Programmer দিয়ে একটি Accounting Software তৈরি করলো; একে Customize Software বলে। এই ধরনের Software এর Access সবার থাকে না।

 

Package Software: বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক কাজের জন্য তৈরি করা যে Program-গুলো বাজারে কিনতে পাওয়া যায় সেগুলোকে Package Program বলে। বড় বড় Software নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্রেতার চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে এই Program তৈরি করেন।

 

বিভিন্ন ধরনের Package Program:

  1. Word Processing Software: এটি লেখার কাজে ব্যবহৃত হয়। MS Word (Microsoft Word) সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত প্যাকেজ সফটওয়্যার। এছাড়াও:
      • Word Perfect
      • Word Pad
      • Display Writer
      • Dox Writer
      • Mac Write
      • Note Pad
      • Latex
      • Lotus WordPro

 

  1. Spread-sheet Analysis Software: এটি হিসাব-নিকাশের কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন: বাজেট, ব্যালেন্স শিট, বাংলা স্থিতিপত্র ও স্কুল কলেজের ফলাফল তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। কিছু Spread Sheet Program হলো:
      • VisiCalc (পৃথিবীর প্রথম)
      • MS Excel (সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল-ব্যবহৃত)
      • Super Call
      • Lotus
      • Sorcim
      • Symphony
      • Multiplan
      • Numbers
      • Corel Quatropro

 

  1. Database Management Software (DBMS): একে DBM Software-ও বলে। বিভিন্ন তথ্য ব্যবস্থাপনার কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: আদমশুমারি, ভোটার তালিকা, ভূমি জরিপ ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিভিন্ন কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। যেমন:
      • MS Access (সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল-ব্যবহৃত)
      • Oracle
      • MS SQL Server
      • Dbse
      • Fox Pro
      • 4-D (Fourth Dimension)
      • File Maker Pro
      • Corel-Paradox
      • Lotus Approach

 

  1. Computer Aided Design (CAD): রেখা ও নকশা অঙ্কনের কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। CAD বিভিন্ন রকমের। যেমন: Auto CAD, Turbo CAD, Fast CAD ইত্যাদি।

 

  1. Graphics Software: বিভিন্ন ছবি ও প্রচ্ছদ তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। যেমন: Adobe Photoshop, Corel Draw, Maya ইত্যাদি।

 

  1. Desktop Publication Software: বিভিন্ন ধরনের Printing কাজের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। যেমন: Adobe Acrobat, Adobe Page Maker, Quark Xpress ইত্যাদি।

 

  1. Multimedia Software: Digital Movie তৈরি করে তাতে Sound, Animation বা বিভিন্ন effectদেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন: Adobe Flash Player, Jet Audio Player, Windows Media Player ইত্যাদি।

 

  1. Web Browsing Software: Web-page খোলা ও দেখার জন্য ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:
      • Google Chrome
      • Mozilla Firefox
      • Opera
      • Safari
      • Orbit
      • Dragon
      • Internet Explorer
      • Netscape Navigator
      • UC Browser

 

  1. Mail User Software: Email ব্যবহারের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:
      • Netscape Messenger
      • Mozilla Thunder Bird
      • Microsoft (MS) Outlook Xpress
      • K-mail
      • Eudora
      • IBM Lotus Note
      • G-mail
      • Y-mail

 

  1. Presentation Software: Electronic Slide Show Presentation এর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:
      • MS Power Point
      • Impress
      • Corel Presentation
      • Macro Media Flash
      • Harvard Graphics
      • Freelance Graphics

 

  1. File Compression Software: কোনো File এর সাইজ ছোট করতে ও অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহার রোধ করতে এটি ব্যবহৃত হয়। যেমন: Win-Zip, Turbo Zip ইত্যাদি।

 

  1. Other Apps: এগুলো এক এক ধরনের Computer Program যা মানুষকে বিশেষ কোনো ধরনের কাজ সম্পাদনে সাহায্য করে। যেমন:
      • Messenger
      • What’s App
      • Viber
      • Imo
      • Tango
      • Line
      • Instagram
      • Skype
      • Pinterest
      • Vine
      • Meetup
      • Tagged
      • VK
      • LinkedIn
      • Flicker
      • Tumbler
      • Google+
      • Twitter
      • Facebook

 


Operating System


এটি একটি Software যা Computer এর যাবতীয় কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে।

 

Operating System এর কার্যাবলি:

User Interface: ব্যবহারকারীর সাথে বিভিন্ন Software এর সংযোগ ও সমন্বয়সাধন করে।

Resource Management: Input-Output Device-গুলোর সমন্বয়-সাধন করে।

Security: ডেটা ও ইনফরমেশনকে অনাদিষ্ট ব্যবহারকারীর হাত থেকে রক্ষা করে।

Task Management: Program ব্যবহারকারীর নির্দেশ গ্রহণও বিশ্লেষণ করে।

File Management: File তৈরি, Copy, Save, Moveইত্যাদি করে।

Networking:Wi-Fi Connection ও অন্যান্য নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে।

Utilities: ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ধরনের Extra সুবিধা দেয়। যেমন: Defragmentation, Backup, Data Recovery, Antivirus ইত্যাদি।

 

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি Operating System এর উদাহরণ:

MS DOS (Disk Operating System): Microsoft Company এর প্রথম OS.

PC DOS: IBM Company এটি তৈরি করে

UNIX: USA এর বেল ল্যাবরেটরিতে ১৯৬৯ সালে এটি তৈরি করে, যা সবচেয়ে পুরাতন।

LINUX: Open Source OS(এটি বিনামূল্যে পাওয়া যায়)

XENIX

Mac OS: Apple Company ম্যাকিনটোশ Computer এর জন্য এটি তৈরি করে।

Android Operating System: এটি Google এর Open Source Operating System.

Symbian: এটি Nokia এর OS

Sun Solaries

MS Windows: এটি বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয়। Microsoft এটির নির্মাতা। Windows Operating System এর বিভিন্ন রূপ:

Windows 95

Windows 98

Windows NT (New Technology)

Windows 2000

Windows XP (Windows Experience): এটি সর্বাধিক জনপ্রিয়

Windows Vista: 32 Bit ও 64 Bit

Windows 7

Windows 8

Windows 10 (Multi Desktop Feature অর্থাৎ এক সাথে একাধিক OS পরিচালনা করা যায়।

 

Kinds of Operating System:

  • User Interface অনুসারেOperating System (OS) দুই প্রকার। যথা:
  1. CUI (Character User Interface): CUI হলো বর্ণভিত্তিক Operating System. উদাহরণ: MS DOS, PC DOS, UNIX, LINUX, XENIX ইত্যাদি।
  2. GUI (Graphical User Interface): GUI হলো চিত্রভিত্তিক Operating System. এই OS এর চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনাকে Icon বলে। যেমন:Windows এর সকল Operating System এবং Mac OS (Apple)ইত্যাদি।

 

ব্যবহারকারীর সংখ্যা হিসেবে Operating Systemদুই প্রকার। যথা:

  1. Single User: Android, Symbian, MSDOS, PC DOS, Windows95, Windows 98 ইত্যাদি।
  2. Multi User:UNIX, LINUX, XENIX, Windows NT, Windows 2000/XP/Vista/7/8/10 ইত্যাদি।

 

মালিকানা অনুসারে Operating System দুই প্রকার। যথা:

  1. Open Source: Android, LINUX ইত্যাদি।
  2. Closed Source: একে Proprietary OS বলা হয়। Windows এর সবগুলো এবং Mac OSএর অন্তর্ভুক্ত।

 

Processor এর সংখ্যা অনুসারে Operating System দুই প্রকার। যথা:

  1. Single-Processing: MS DOS, PC DOS, Windows-এর 95, 98, XP, Vista, Android, Symbian ইত্যাদি।
  2. Multi-Processing: UNIX, LINUX, XENIX, Windows NT/2000/7/8/10 ইত্যাদি।

 

Firmware: Computer তৈরির সময় Memory তে যে সকল Program সমূহ স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে দেয়া হয় তাকে Firmware বলে। এ Program এর কোনো পরিবর্তন করা যায় না। উদাহরণস্বরূপ: ROM-BIOS এর মধ্যে যে Data সংরক্ষিত থাকে তাকে Firmware বলে।

 

Bios: BIOS হলো Basic Input Output System. Computer এর Mother-board এর Firmware চিপের মধ্যে থাকা কতকগুলো নির্দেশনার সমষ্টি হলো BIOS. Computer Boot হওয়ার পরপর যে Software টি Run হয় সেটি হল BIOS. BIOS এর প্রধান কাজ হলো: Boot পরবর্তী Computer এর সকল Hardware check করে দেখা যাকে Power On Self-Test (POST) বলে।

যদি CPU এর সর্ব কাজ-কর্ম/যন্ত্রাংশ ঠিক থাকে তখন OS (Operating System) কে স্বয়ংক্রিয়ভাবে Hard Disk থেকে RAM এর মধ্যে তুলে দেওয়া হয় এবং Computer ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়। এই সামগ্রিক প্রক্রিয়াকে Booting বলে। মূলত Boot Start একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া, যা সম্পন্ন হওয়ার পরেই Computer কে ব্যবহার করা হয়।

 

  • Three (3) Finger Salute: Control + Alt + Delete এই 3টি Key এর সমন্বয়ে Computer Function চালনাকে 3 Finger Salute বলে। এর কাজ হলো: Computer Reboot করা, Task Manager তলব করা এবং নতুন Program চালু করা।

 

  • AdvancedStart-up Option: এই Option এর 2টি Mode (ধরণ) আছে। যথা: Safe Mode&Repair Mode. কোনো File System এ সমস্যা থাকলে SafeMode তা সনাক্ত করে দিতে পারে। এজন্য একে Diagnostic Mode বলা হয়। Windows চালু হওয়ার পর F8 চেপে Safe Mode চালু করা যায়।Boot Manager এর সমস্যা দূর করার জন্য Repair Mode ব্যবহার করা হয়।

 


Windows


  • Desktop: কম্পিউটার চালু করার পর Windows এ যে প্রাথমিক Screen প্রদর্শিত হয় তাকে Desktop বলে। (Location: C)

 

  • Taskbar: Desktop এর নীচের দিকে Start লেখা সম্বলিত Bar কে Taskbar বলে। এই Button থেকে বিভিন্ন Program, File Open ও Stop করা যায়। Windows-95 এ সর্বপ্রথম এটি ব্যবহৃত হয়। (Location: C)

 

  • My Document: Default Setting অনুসারে এই Folder এ বিভিন্ন File সংরক্ষিত হয়। যেমন: Downloads, My Picture, My Video, My Music ইত্যাদি। (Location: C)

 

  • My Computer:এই Folder এর ভিতর Floppy Drive (A), Hard Disk (C), CD ও DVD Drive এর আইকন থাকে। (Location: C)

 

  • Hard Disk: এটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নেওয়াকে Partition বলে। এগুলো C, D, E, F ইত্যাদি নামে চিহ্নিত করা হয়।

 

  • Control Panel: এখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অপশন থাকে। যেমন: System and Security, Network and Internet, Hardware and Sound, Programs, User Accounts and Family Safety, Appearance and Personalization, Clock, Language and Region, Ease of Access

 

  • Recycle Bin: এখান থেকে মুছে ফেলা তথ্য প্রয়োজনবোধে Restore করা যায়। Recycle Bin থেকে মুছে ফেললে তা ফিরিয়ে আনা যায় না। Shift + Delete Command দিয়ে তা মুছে ফেললে তা Recycle Bin এ জমা না হয়ে স্থায়ীভাবে মুছে যায়।

 

  • Disk Formatting: Disk কে তথ্য ধারণের উপযোগী করাকে Format বলে। Format করা হলে ঐ Disk এর সব তথ্য মুছে যায়।

 

  • Disk Defragmentation: কম্পিউটার অত্যধিক ব্যবহারের ফলে হার্ডডিস্কের লেখাগুলো বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। এর ফলে কম্পিউটারকে কোনো কিছু পড়তে বলেলে অপেক্ষাকৃত বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। এ অবস্থায় ডিস্কের সর্বোচ্চ কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য Disk Defragmenter কমান্ডটি ব্যবহৃত হয়।

 


নমুনা প্রশ্ন


১. কম্পিউটারের কর্ম পরিকল্পনার কৌশলকে কী বলে?

ক) অপারেটিং সিস্টেম

খ) প্রোগ্রাম

গ) সফটওয়্যার

ঘ) পাওয়ার পয়েন্ট

উত্তরঃ গ


২. কী ছাড়া কম্পিউটার কাজ করতে পারে না?

ক) অপারেটিং সিস্টেম

খ) মাউস

গ) ফ্লপি ডিস্ক

ঘ) হার্ডডিস্ক

উত্তরঃ ক


৩. কোনটি ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম?

ক) Symphony

খ) Latex

গ) Multiplan

ঘ) Sorcim

উত্তরঃ খ


৪. পৃথিবীর প্রথম স্প্রেডশিট প্রোগ্রাম – 

ক) এম এস ওয়ার্ড

খ) ভিসিক্যাল

গ) নোট প্যাড

ঘ) ম্যাক রাইট

উত্তরঃ খ


৫. নিচের কোনটি মেসেঞ্জিং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার নয়?

ক) Sorcim

খ) Line

গ) Viber

ঘ) Tango

উত্তরঃ ক


৬. কোনটি ইন্টারনেট ব্রাউজার হিসেবে কাজ করে না?

ক) Netscape Navigator

খ) Impress

গ) Mozilla Thunderbird

ঘ) Eudora

উত্তরঃ খ


৭. কোনটি গ্রাফিক্স সফটওয়্যার?

ক) Coral DRAW

খ) Adobe Photoshop

গ) Adobe Acrobat

ঘ) ক + খ

উত্তরঃ ঘ


৮. কোন কাজে স্প্রেডশিট প্রোগ্রাম ব্যবহৃত হয়?

ক) প্রতিবেদন ও জীবন বৃত্তান্ত লেখার কাজে

খ) বাজেট ও স্থিতিপত্র তৈরির কাজে

গ) আদমশুমারি ও ভূমি জরিপের কাজে

ঘ) ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজে

উত্তরঃ খ


৯. নিচের কোনটি কম্পিউটারের ভাইরাস নয়?

ক) AIDS

খ) CIH

গ) I Love You

ঘ) Cobra

উত্তরঃ ঘ


১০. কম্পিউটারের ইনপুট-আউটপুট ডিভাইসগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় সাধন করে- 

ক) ইউজার ইন্টারফেস

খ) রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট

গ) টাস্ক ম্যানেজমেন্ট

ঘ) ফাইল ম্যানেজমেন্ট

উত্তরঃ খ


১১. কোনটি একটি এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার?

ক) সিম্যান্টেক

খ) ফুজিতসু

গ) আউট লুক

ঘ) ক্রিপার

উত্তরঃ ক


১২. My Document এর অবস্থান কোথায়?

ক) D Drive

খ) B Drive

গ) A Drive

ঘ) A Drive

উত্তরঃ ঘ


১৩. কম্পিউটার Reboot করতে প্রয়োজন হয় –

ক) Ctrl + Alt + Del

খ) Ctrl + Alt + Tab

গ) Ctrl + Alt + Shift

ঘ) Ctrl + Shift + Del

উত্তরঃ ক


১৪. POST এর পূর্ণরূপ – 

ক) Power On Self-Test

খ) Power On Self-Test

গ) Point On Self-Test

ঘ) Point On Self-Test

উত্তরঃ ক


১৫. কম্পিউটারের মেমোরিতে যে প্রোগ্রামসমূহ স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে দেওয়া হয়, তাকে বলে – 

ক) Software

খ) BIOS

গ) Fireware

ঘ) Firmware

উত্তরঃ ঘ


১৬. GUI এর পূর্ণরূপ – 

ক) Graphical User Interface

খ) Global User Interface

গ) Global User Interface

ঘ) Graphics User Icon

উত্তরঃ ক


১৭. কোনটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম?

ক) MS DOS

খ) LINUX

গ) UNIX

ঘ) MAC OS

উত্তরঃ খ


১৮. অ্যাপল কোম্পানির তৈরী অপারেটিং সিস্টেমের নাম – 

ক) MS DOS

খ) PC DOS

গ) UNIX

ঘ) MAC OS

উত্তরঃ ঘ


১৯. ‘ওরাকল’ কোন ধরনের প্রোগ্রাম?

ক) Word Processing

খ) Database Management

গ) Database Management

ঘ) Utility Program

উত্তরঃ খ


২০. কোনটি ইউটিলিটি সফটওয়্যারের অন্তর্ভূক্ত নয়?

ক) Device driver

খ) Disk defragmentation

গ) File handler

ঘ) Anti-virus program

উত্তরঃ ক


ফাইল, ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ার পয়েন্ট (For Bank Exam)


২১. In MS word, which of the following indicates a word?

a) Backspace

b) Space bar

c) Enter

d) Tab

উত্তরঃ b


২২. Which key is to be pressed in a computer for moving to the beginning of a text?

a) Page up

b) Ctrl + Page up

c) Home

d) Ctrl + Home

উত্তরঃ c


২৩. In MS word, pressing Ctrl + X will result in-

a) Redo

b) Undo

c) Cut

d) Print

উত্তরঃ c


২৪. In MS word, which of the following shortcut commands used for central alignment?

a) Ctrl + H

b) Ctrl + N

c) Ctrl + R

d) Ctrl + E

উত্তরঃ d


২৫. In MS word, which used to spell checking?

a) F7

b) F1

c) F12

d) F9

উত্তরঃ a


২৬. When document is longer than it is wide, which page orientation should be selected?

a) Landscape

b) Portrait

c) Legal

d) None of these

উত্তরঃ b


২৭. You can produce same letter for different person by using-

a) Mail sender

b) Mail tracker

c) Mail marge

d) Mail table

উত্তরঃ c


২৮. Which one is a font style?

a) Superscript

b) Subscript

c) Regular

d) All of these

উত্তরঃ d


২৯. Which is not a Bengali font?

a) বিজয়

b) চন্দ্রবতী

c) সুতন্বী এমজে

d) সারদা

উত্তরঃ a


৩০. Maximum number of rows in an excel sheet are-

a) 65,536

b) 65,535

c) 256

d) 65,532

উত্তরঃ a


৩১. Which one is a series of recorded commands to automatic task?

a) Auditing

b) Outlining

c) Status Bar

d) Macro

উত্তরঃ d


৩২. In MS Power Point ‘Ctrl + M’ is used for-

a) Slide show

b) New slide

c) View show

d) End show

উত্তরঃ b


৩৩. DOS is stand for-

a) Disk Operating System

b) Data Operating System

c) Data Operating Service

d) None of these.

উত্তরঃ a


৩৪. “.ini & .inf” extension refers usually to what kind of file?

a) Image file

b) System file

c) Icon file

d) Backup file

উত্তরঃ b


৩৫. Which of the following is a video file?

a) .mpg

b) .ppt

c) .doc

d) .wav

উত্তরঃ a


গ্রন্থপঞ্জি:


১. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম,‘ব্যবহারিক কম্পিউটার শব্দকোষ’ (বাংলা একাডেমি, ফেব্রুয়ারি ২০১৩)

২. এ জেড এম আসাদুজ্জামান, মো. মাসুদ রানা ও মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ (জুলাই ২০১৩)

৩. তামিম শাহরিয়ার সুবিন, ‘কম্পিউটার প্রোগ্রামিং’ (১ম, ২য় ও ৩য় খণ্ড)

৪. প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র বসাক, ‘কম্পিউটারের কথা’

৫. ড. আবদুল্লাহ আল-মুতী, ‘কম্পিউটারের আশ্চর্য জগৎ’

৬. ডা. মো. শাহনেওয়াজ হোসেন জর্জ, ‘Easy কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি’ (জুন ২০১৬)

BCS Computer & IT Lecture – 02

হার্ডওয়্যার (প্রসেসিং, ইনপুট, আউটপুট ও স্টোরেজ),
কম্পিউটার মেমোরি, কম্পিউটারবাস, পোর্ট ও নমুনা প্রশ্ন


Hardware (হার্ডওয়্যার)


কম্পিউটারের কাঠামোর যে সকল যন্ত্রপাতি আমরা দেখতে ও স্পর্শ করতে পারি এবং যার বস্তুগত আয়তন আছে তার সমষ্টিকে Hardware বলে। এটি Computer এর যান্ত্রিক সরঞ্জাম। এটি ছাড়া Software অচল। Hardware& Software এর সম্মিলিত রূপকে Firmware বলে।একটি Computer System এর প্রধান কাজ চারটি। একে IPOS Cycle বলে। যথা:

I = Input

P = Processing

O = Output

S = Storage

 

Classification of Hardware: প্রাথমিকভাবে Hardware-কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়:

  1. Central Processing Unit (CPU)
  2. Input Unit
  3. OutputUnit

 

Central Processing Unit (CPU)

CPU-কে Computer এর মস্তিষ্ক (Brain) বলা হয়। এর অপর নাম System Unit. CPU-কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

  1. Arithmetic Logic Unit (গাণিতিক যুক্তি অংশ)
  2. Control Unit (নিয়ন্ত্রণ অংশ)
  3. Register Memory (স্মৃতি অংশ)

 

  • ALU (Arithmetic Logic Unit): এটি কম্পিউটারের Calculator স্বরূপ। এটি গাণিতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে কাজ করে থাকে। যাকে Computer এর মস্তিষ্কও বলা হয়।
  • Control Unit: এটি Micro Processor এর একটি অংশ। যার মাধ্যমে Computer এর সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয়।
  • Register Memory: এটা এক ধরনের Memory. এখানে প্রক্রিয়া করণের সময় স্বল্প সময়ের জন্য তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

 

CPU এর অন্যান্য অংশ:

  1. Micro Processor
  2. Motherboard
  3. Computer Case
  4. Heat Sink
  5. Cooling Fan
  6. Power Supply
  7. Memory (RAM& ROM)
  8. Storage Device
  9. Various Card

 

  • Micro Processor: Transistor দিয়ে IC Chip তৈরি হয়। IC দিয়ে Micro Processor তৈরি হয়। Processor হার্টজ (hz) এককে পরিমাপ করা হয়। বর্তমানে Core i7& Core i5 বহুল ব্যবহৃত মাইক্রোপ্রসেসর। ‍1st Micro Processor হলো: Intel-4004.
  • Mother board: এর অপর নাম System Board বা PCB (Printed Circuit Board), এর সাথে Computer এর অন্যান্য উপাদানসমূহ যুক্ত থাকে। উদাহরণ: Intel, Asus, Gigabyte, MSI ইত্যাদি।
  • Computer Case: Motherboard-সহ Disk Drive, Cooling Fan, Various Card এর মধ্যে Attest থাকে।
  • Heat Sink: এর মাধ্যমে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মধ্যে বিদ্যুৎ শক্তির যোগান দেওয়া হয়। এটি CPU এর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • Cooling Fan: CPU এর তাপমাত্রা হ্রাস করে।
  • Memory: ম্যামোরি RAM ও ROM হলো Data সংরক্ষণের মাধ্যম। RAM: Random Access Memory (অস্থায়ী স্মৃতি)ROM: Read Only Memory (স্থায়ী স্মৃতি)
  • Storage Device: এখানে মানুষের প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়। উদাহরণ:HDD (Hard Disk Drive), FDD (Floppy Disk Drive), CD (Compact Disk), DVD (Digital Video/Versatile Disk), SDD (Solid State Device) ইত্যাদি।
  • Various Cards:

Sound Card

Fax Modem

Network Interface Card (NIC)

LAN Card (Local Area Network)

VGA (Video Graphics Array)

AGP (Accelerated Graphic Port)

TV Card

Capture Card

Jack Card

USB Card (Universal Serial Card)

Adopter Card

 

Input Unit

Computer এর কাজ সম্পন্ন করার জন্য যে তথ্য সরবরাহ করা হয় তাকে Input বলে। Input প্রদানের জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে Input Device বলে।বিভিন্ন ধরনের Input Device এর নাম:

  1. Key Board
  2. Mouse
  3. Scanner
  4. Web cam
  5. light pen
  6. Graphics Tablet
  7. Joy Stick
  8. Sensor
  9. Microphone
  10. Digital Camera
  11. OMR (Optical Mark Reader/Recognition)
  12. OCR (Optical Character Recognition)
  13. MICR (Magnetic Ink Character Recognition)
  14. Bar Code Reader
  15. Punch Card Reader
  16. Magnetic Tape Drive
  17. Digitizer
  18. Tracker Ball

 

  1. Key Board: বর্তমানে প্রচলিত Keyboard এর 105টি Key রয়েছে।

Function Key 12টি (F1 – F12)

Modifier Key 5টি

a. Shift

b. Option

c. Command

d. Control

e. Alter

Cursor Movement Key 4টি।

Numeric Key 17টি

Alpha-numeric Key 36টি [A – Z (26টি), 0-9 (10টি)]

¨ Function Key (12 টি)

*     F1: Program এর Help Menu দেখতে ব্যবহৃত হয়।

*     F2: কোনো File/Folder এর নাম পরিবর্তনের জন্য।

*     F3: কোনো File/Program এর Searching সুবিধা চালুর জন্য।

*     F4: Alt+F4 চেপে সব Program Close করা যায়। Ctrl + F4 চেপে সব Window বন্ধ করা যায়।

*     F5: যে কোনো Page Refresh and Power Point Slide Show শুরু এবং বন্ধ করার জন্য।

*     F6: Mouse এর Coursor কে Internet Browser এর Address Bar এ নিয়ে যেতে ব্যবহৃত হয়।

*     F7: MS Word এর লেখার বানান ও ব্যাকরণ ঠিক করার কাজে ব্যবহৃত হয়। Shift + F7 চেপে কোনো শব্দের Synonym & Antonym জানা যায়।

*     F8: Operating System Safe moodএ চালু করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

*     F9: কোয়ার্ক Express এর Measurement toolbar চালুর জন্য ব্যবহৃত হয়।

*     F10: Internet Browser এর মেনু বার নির্বাচনে ব্যবহৃত হয়।

*     F11: Full Screen দেখতে ব্যবহৃত হয়।

*     F12: MS Word এর Save as Window চালুর জন্য F12 চেপে Bangla – English,English– Bangla করা যায়।

 

Keyboard এর বিন্যাস (Layout) 3টি। যথা:

  1. Q W E R T Y
  2. Q W E R T Z
  3. A Z E R T Y

 

অভ্র Keyboard: 2003 সালে ডা. মেহেদি হাসান খান আবিষ্কার করেন। এটা মূলত ইংরেজি উচ্চারণ করে বাংলা লেখন পদ্ধতি।

বিজয় Keyboard: 1988 সালে মোস্তফা জব্বার এই Keyboard চালু করেন। এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও দ্রুত কাজ করে এমন বাংলা Keyboard; যাতে বাংলা বর্ণ দেখে বাংলা টাইপ করা যায়।

 

Others Keyboard:

  • মুনির অপটিমা (মুনির চৌধুরী এর আবিষ্কারক)
  • শহিদলিপি
  • বসুন্ধরা
  • লেখনি
  • অনির্বাণ
  1. Mouse: 1963 সালে ডগলাস এঙ্গেলবার্ট প্রথম মাউস আবিষ্কার করেন। 1984 সালে মেকিন্টোসকম্পিউটারে প্রথম মাউস ব্যবহৃত হয়। মাউসের অপর নাম Pointing Device. মাউস দ্বারা কিছু Select করে টেনে আনাকে Dragging বলে। Dragging করে ছেড়ে দেয়াকে Dropping বলে। Monitor এর Screen এর যে কোনো জায়গায় Mouse move করানোকে Pointing বলে।

 

  1. Scanner: এটি ফটোকপি মেশিনের মতো। এর মাধ্যমে যেকোনো লেখা বা ছবি স্ক্যান করে Computer এ Digital Image হিসেবে Convert করা যায়। Adobe Photoshop এর মাধ্যমে এই Image কে ইচ্ছেমতো Edit করা যায়।

 

  1. Microphone: Microphone এর মাধ্যমে শব্দ Record করা হয়। শব্দ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এর বিপরীত Loud Speaker.

 

  1. Joystick: এটি সাধারণত Computer এ Games খেলতে ব্যবহৃত হয়। Joy Stick এর সাহায্যে Cursor কে পর্দার উপর ইচ্ছেমতো যেকোনো জায়গায় সরানো যায়। Monitor এর পর্দায় একটি ছোট আলোকচিহ্নকে Cursor বলে।

 

  1. Digitizer: এটি একটি কলমের মতো যার সাহায্যে Board এ কিছু লেখা বা আঁকা হয় এবং তা Monitor এর পর্দায় ভেসে উঠে। এর সাহায্যে Map, বাড়ির নকশা ও বিভিন্ন গ্রাফ Computer এ Input দেওয়া যায়।

 

  1. Graphics Tablet: এটি মুলত Mouse এর বিকল্প যন্ত্র এবং দেখতে অনেকটা Pencil এর স্লেটের মতো। বিশেষ কলম দিয়ে স্লেট বা Pad এর উপরে ছবি অলংকরণের কাজ করা হয়। এটা Digitizer এর চেয়ে আকারে ছোট।

 

  1. Web Cam: এর মাধ্যমে Computer to Computer এ Image ও Video আদান-প্রদান করা হয়। Internet এ Video Chatting ও Video Recording এর মাধ্যমে করা হয়।

 

  1. Digital Camera: এই Camera তে film থাকে না। এতে CCD (Charge Coupled Device) নামে একটি চিপ থাকে। CCD ফোটনকে ইলেকট্রনে Convert করে। আলোর ক্ষুদ্র কণাকে ফোটন বলে। অর্থাৎ ফোকাসের মাধ্যমে প্রাপ্ত ছবিকে Electronic Charge-এ পরিণত করে। এরপর CCD এর পৃষ্ঠদেশে ছোট ছোট অনেক বর্গাকার Pixel থাকে, যা Picture Quality ধরে রাখে। CCD তে যতবেশি Pixel থাকবে ততবেশি সূক্ষ্ম ও quality image তোলা যাবে। Computer এ তথ্য প্রদর্শনের ক্ষুদ্রতম একক Pixel (Picture Element).

 

  1. MICR: Magnetic Ink Character Recognition (MICR) এটি চুম্বক কালির সাহায্যে লেখা হয়। এই কালির রাসায়নিক নাম ফেরোসোফেরিক অক্সাইড। এই কালিতে লেখা কাগজ চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে কালি চুম্বকে পরিণত হয় এবং এই চুম্বকীয় বর্গগুলো তাড়িত চুম্বকীয় আবেশের দ্বারা তড়িৎ প্রবাহ উৎপন্ন করে। এই পদ্ধতিতে ব্যাংকের চেকনম্বর পড়া ও লেখা হয়।

 

  1. OMR: Optical Mark Recognition (OMR) এটি এমন একটি যন্ত্র যা Pencil বা কালির দাগ বুঝতে পারে। পেন্সিলের সীসে গ্রাফাইট থাকে যা বিদ্যুৎ পরিবাহী। কালির দাগের আলোর প্রতিফলন বিচার করে OMR কাজ করে। উত্তরপত্র পরীক্ষা, বাজার সমীক্ষা ও আদমশুমারি বা জনগণনায় এটি ব্যবহৃত হয়। শুমার ফার্সি শব্দ এর অর্থ গণনা করা।

 

  1. OCR: Optical Character Recognition (OCR) এটি কালির দাগের পাশাপাশি বর্ণের পার্থক্য বুঝতে পারে। চিঠির Pin code, Electric bill, Insurance premium ইত্যাদি পড়ার জন্য OCR ব্যবহৃত হয়।

 

  1. Light Pen: এটি এমন একটি কলম যার মাথায় Light Sensor থাকে যা আলো অনুভব করতে পারে। এর জন্য প্রান্ত Computer এর সাথে যুক্ত থাকে। প্রকৌশল ডিজাইন ও বিভিন্ন ধরনের নকশা এর মাধ্যমে করা যায়। এটি অনেকটা Digitizer এর মতো।

 

  1. Sensor: এটি কোনো সংকেতকে চিহ্নিত বা সনাক্ত করতে পারে। এটি এক ধরনের ট্রানডিউসার। অধিকাংশ Sensor electrical হয়ে থাকে।

 

  1. Bar Code Reader: একে Universal Product Code (UPC) বলে। বিক্রিত জিনিসের মোড়ক/প্যাকেটের উপর BarCode এর সাহায্যে নাম ও মূল্য লেখা থাকে। Computer, Bar Code Reader এর সাহায্যে Code টি পড়ে তার সংখ্যা জেনে নিতে পারে। সুপারশপে এটি বেশি ব্যবহৃত হয়। Bar Code Reader এর মাধ্যমে আলো নির্গত হয়।

 

  1. Tracker Ball: এটি মাউসের মতো। এখানে Scroll Button এর পরিবর্তে Tracking Ball থাকে।

 

  1. Punch Card Reader: এটি শক্ত কাগজের তৈরি যা এর উপরের ছিদ্রের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির ভিত্তিতে Digital তথ্য প্রকাশ করে। 1801 সালে জোসেফ মেরি জেকার্ড বস্ত্র শিল্পের নকশা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রথম পাঞ্চকার্ড ব্যবহার করেন।

 

  1. Magnetic Tape Drive: এটি ক্যাসেটের(Cassette) স্মৃতি ফিতা, যাতে শব্দ রেকর্ড করা হয়।

 

 

Output Unit

কম্পিউটারে দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হলে তার ফলাফল পাওয়া যায়। এই প্রাপ্ত ফলাফলকে Output বলে। বিভিন্ন ধরনের Output Device এর নাম:

  1. Monitor
  2. Printer
  3. Speaker
  4. Projector
  5. Headphone
  6. Plotter

 

  1. Monitor: এটি বহুল ব্যবহৃত আউটপুট ডিভাইস। এর কাজ হলো লেখা ও ছবি প্রদর্শন করা। এর অপর নাম VDU (Visual Display Unit). সাধারণত তিন ধরনের Monitor দেখা যায়:
  2. CRT (Cathode Ray Tube)
  3. LCD (Liquid Crystal Display)
  4. LED (Light Emitting Diode)

*     CRT: এ টিউবের ভেতরে ফসফর নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকে এবং লাল, সবুজ ও নীল এই 3টি মৌলিক রং থাকে। নীলকে আসমানী রং-ও বলা হয়। এই মনিটরে অপেক্ষাকৃত কম উজ্জ্বল, আকারে বড় এবং বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে।

*     LCD: এর অপর নাম Flat Panel Monitor (FPM). এই Monitor এ বিশেষ ধরনের তরল Crystal (পদার্থ) ব্যবহৃত হয়। যা বিদ্যুৎ পরিবাহিতার মাধ্যমে চার্জ হয়ে ছবি ফুটিয়ে তোলে। Digital ঘড়ি ও Calculator এ কালচে অনুজ্জল যে লেখা ফুটে উঠে তা LCD এর ভিত্তিতে তৈরি।

*     LED: এটি LCD Monitor এর মতো কাজ করে। কিন্তু এর Back Light ভিন্ন ধরনের ও Quality ভালো মানের। এটি তৈরির সময় Mercury (পারদ) ব্যবহৃত হয় না বলে এটি পরিবেশ বান্ধব।

উল্লেখ্য, Computer এ তথ্য প্রদর্শনের ক্ষুদ্রতম একক Pixel. Computer Monitor এ অসংখ্য Pixel থাকে।যা ছবির সূক্ষ্মতা নির্দেশ করে। একে Resolution বলে। Monitor এর বৈশিষ্ট্য বা Quality হার্টজ (hz) এককে মাপা হয়। একে Refresh Rate বলে।

Monitor-এ দৃশ্যমান ছবির গুণগত মান Video Controller এর উপর নির্ভর করে। কিছু Video Controller এর নাম:

  1. VGA (Video Graphics Array)
  2. SVGA (Super VGA)
  3. XGA (Extended Graphics Array)

 

  1. Printer: যে যন্ত্রের সাহায্যে কম্পিউটারে প্রাপ্ত ফলাফল কাগজে ছাপানো হয় তাকে Printer বলে। Printer এর মান নির্ভর করে এর Resolution এর উপর। Resolution পরিমাপক একক DPI (Dot per Inch). Printer কে Offline Device বলা হয়। Printer প্রধাণত 2 প্রকার। যথা:
  • Impact Printer (ধাক্কা): কাগজ স্পর্শ করে।
  • Non-Impact Printer (অধাক্কা): কাগজ স্পর্শ করে না।

 

  • Impact Printer 4 ধরনের:
  1. Line Printer: এ প্রিন্টারে প্রতিবারে একটি সম্পূর্ণ লাইন ছাপা হয়। এটি ধাক্কা প্রিন্টারের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতির। এটি দুই প্রকার: Chain Printer & Drum Printer.
  2. Serial Printer: এ প্রিন্টার টাইপ রাইটারের মতো একবারে মাত্র একটি বর্ণ ছাপা হয়। এগুলো ধীরগতি-সম্পন্ন।
  3. Dot Matrix Printer:আয়তাকারে সাজানো কতগুলো বিন্দুকে (…) ডট ম্যাট্রিক্স বলে। এই বিন্দুগুলোর মধ্যে কিছু বিন্দু নির্বাচন করে যে কোনো বর্ণ ফুটিয়ে তোলা যায়। এ প্রিন্টারের ছাপা অক্ষর সূক্ষ্ম হয় না। এর গতি পরিমাপক একক cps (character per second).
  4. Daisy Wheel Printer: এই Printer এ চ্যাপ্টা চাকার সাথে অনেকগুলো Spoke থাকে। প্রতিটি Spoke এর মাথায় বর্ণ বসানো থাকে। এই চাকাকে একটি Daisy ফুলের মতো দেখায়।

 

  • Non-Impact Printer 2 ধরনের:
  1. Inkjet Printer: এই Printer এ বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত তরল কালি কাগজে স্প্রে করা হয়। এই কালির কণাগুলো কাগজের উপর বর্ণ ফুটিয়ে তোলে। যেমন: Canon, Bubble Jet, HP Deskjet, Epson ইত্যাদি। এতে কার্টিজ ব্যবহার করা হয়।
  2. Laser Printer: এই Printer লেজার রশ্মির সাহায্যে কাগজে লেখা ফুটিয়ে তোলা হয়। এতে টোনার ওগুড়ো কালি ব্যবহৃত হয়। Laser Printer কে Page Printer বলে। এটি উন্নতমানের ও উচ্চগতি-সম্পন্ন। যেমন: HP Laser Jet, Samsung ML, Cannon LBP ইত্যাদি।

 

  1. Plotter: এটি এক ধরনের Printer. এতে Print করা হয় কলমের সাহায্যে। স্থপতি, প্রকৌশলী, নকশাবিদ এদের কাজে Plotter ব্যবহৃত হয়। কারণ এটি Printer এর চেয়েও সূক্ষ্মভাবে কাজ করে।

 

  1. Projector: এটি এক ধরনের Electro Optical যন্ত্র। যার সাহায্যে Computer এর কোনো তথ্য, ছবি ও ভিডিও বড় Screen এ উপস্থাপন করা হয়। উদাহরণ: HITACHI (জাপান) ইত্যাদি।

 

  1. Speaker: কোনো যান্ত্রিক শক্তিকে শব্দ শক্তিতে রূপান্তরিত করে। এর সাহায্যে Computer এর শব্দ শোনা যায়।

 

  1. Head Phone: এটি সাধারণত একা একা শব্দ শোনার জন্য ব্যবহৃত হয়। একে Ear phone ও Seriophone নামে ডাকা হয়।

 

 

Input & Output Unit

  1. Modem: Modulation+Demodulation শব্দ দুটির সমন্বয়ে Modem শব্দের উৎপত্তি। Computer এর সাথে Internet সংযোগ দেওয়ার জন্য Modem ব্যবহৃত হয়।
  2. Touch Screen
  3. Pen Drive
  4. Card Reader
  5. Camera
  6. VCR (Video Cassette Recorder)
  7. VTR (Video Tape Recorder)
  8. VCP (Video Cassette Player)
  9. Television
  10. Tape Recorder
  11. Printer-Scanner Device
  12. Photocopy Machine

 


Computer Memory


কম্পিউটারে প্রোগ্রাম ও ডাটা সংরক্ষণের জন্য Memory ব্যবহৃত হয়। মেমোরির যে স্থানে Data সংরক্ষিত হয় তাকেMemory Cell বলে। Memory Access এর সময় Nano-second এ পরিমাপ করা হয়। Computer Memory 2 ধরনের। যথা:

  1. Main Memory (প্রধান স্মৃতি): (RAM ও ROM)
  2. Supportive Memory (সহায়ক স্মৃতি): Storage Device

 

Bit and Byte: কম্পিউটারের মেমোরির ধারণক্ষমতা পরিমাপের ক্ষুদ্রতম একক Bit (Binary + Digit). o ও 1 অংকের প্রত্যেকটিকে এক একটি Bit বলে। এগুলো Binary (বাইনারি) সংখ্যা। উদাহরণ: 10101 সংখ্যাটিতে 5টি বিট আছে। 8 বিটের Code দিয়ে গঠিত শব্দকে Byte বলে। এটি Binary পদ্ধতিতে তথ্য প্রকাশের মৌলিক একক। উদাহরণ: 10001010 এটি হলো একটি Byte.কম্পিউটারের স্মৃতি ধারণ ক্ষমতা বাইটে প্রকাশ করা হয়। যেমন: MB, KB ইত্যাদি।

 

মূলত, শব্দগঠনের (কম্পিউটার) সংমিশ্রণ Bit এবং Memory পরিমাপের একক Byte. Each Bit Represents a signal and each Byte represents a character.

 

Memory Capacity:

1 Nibble = 4 bit

1 Byte = 8 bit

1 Kilobyte = 1024 Byte (210)

1 Megabyte = 1024 KB (220)

1 Gigabyte = 1024 MB (230)

1 Terabyte = 1024 GB (240)

1 Petabyte = 1024 TB (250)

 

RAM (Random Access Memory):

এটি একটি অস্থায়ী Memory. Computer এ যতক্ষণ বিদ্যুৎ সচল থাকে ততক্ষণ RAM এ তথ্যসমূহ সংরক্ষিত থাকে। RAM কে Volatile Memory বলা হয়। এটি কম্পিউটারের কর্ম এলাকা। Micro-processor প্রাথমিকভাবে RAM এ প্রয়োজনীয় তথ্য জমা করে এবং পরবর্তীতে তথ্য সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করে। RAM এ তথ্য পড়া ও লেখা উভয় কাজ করা যায় বলে একে Read-Write Memory-ও বলে।

 

ROM (Read Only Memory):

এটি একটি স্থায়ী Memory. বিদ্যুৎ সরবরাহের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ROM এ সংরক্ষিত তথ্যসমূহ কেবল ব্যবহার করা যায় কিন্তু সংযোজন, সংশোধন ও পরিবর্তন করা যায় না।

 

Classes of ROM:

  1. M ROM (Mask ROM)
  2. P ROM (Programmable ROM)
  3. EP ROM (Erasable Programmable ROM)
  4. EEP ROM (Electrically Erasable Programmable ROM): Pen Drive এ এটি ব্যবহৃত হয়।
  5. EAP ROM (Electrically Alterable Programmable ROM)

 

Others Memory

  1. DRAM Memory: Dynamic Random-Access Memory (DRAM) এটি Capacitor ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। কম্পিউটারের পরিভাষায় একে Memory Refreshing বলে।
  2. Flash Memory: Floppy Disk ও Hard Disk এর বিকল্প হিসেবে এ Memory ব্যবহৃত হয়। এটি একটি স্থায়ী মেমোরি (Non-volatile).
  3. Cache Memory: এটি উচ্চগতিসম্পন্ন এবং এতে দ্রুত Access করা যায়। কাজের গতি বৃদ্ধির জন্য Processor ও প্রধান Memory এর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত বিশেষ ধরনের স্মৃতিকে Cache Memory বলে। Computer এ যে তথ্যগুলো বারবার ব্যবহৃত হয় সেগুলো Cache Memory তে রাখা হয়।
  4. Virtual Memory: Windows Operating System এর Secondary Memory হার্ডডিস্কের কিছু Space কে Physical Memory হিসেবে ব্যবহার করা যায়, একে Virtual Memory বলে। Processor ক্যাশ মেমোরিতে কোনো Data না পেলে Virtual Memory তে খোঁজ করে। এটি RAM এর সাথে যুক্ত থাকে। এর Data Access গতি কম।

 

  • Data Transfer Rate: প্রতি সেকেন্ডে যতগুলো Bit এক Device থেকে অন্য Device এ স্থানান্তর করা যায় তাকে Data Transfer Rate বলে। উদাহরণ: 4MB/Sec অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে 4 মেগাবাইট Data Transfer হচ্ছে।

Question: Data Transfer Rate সেকেন্ডে 20 MB হলে 5 MB Data Transfer করতে কত সময় লাগবে?

নির্ণেয় সময় = = = 0.25

Ans: 0.25 সেকেন্ড।

 

Storage Device

ব্যবহারকারীর তথ্য দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করে রাখার জন্য অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন কিন্তু কম গতিসম্পন্ন বিশেষ ধরনের Memoryকে Storage Device বলে। এগুলো High Capacity কিন্তু Slow Speed. Some Storage Devices are:

  1. Hard Disk/Magnetic Disk
  2. Floppy Disk
  3. CD (Compact Disk)
  4. CDR (Compact Disk Recordable)
  5. CDW (Compact Disk Writable)
  6. DVD (Digital Video Disk)
  7. Smart Card
  8. Memory Card
  9. SSD (Solid State Device)
  10. Pen Drive
  11. Zip Disk
  12. Digital Tape
  13. Blue Ray DVD
  14. Magnetic Tape
  15. Magnetic Drum
  16. Flip Flop

 

  1. Hard Disk: ধাতব পাতের উপর চৌম্বকীয় প্রলেপ দিয়ে তৈরি গোলাকার এক ধরনের Memory কে Hard Disk বলে। পাতগুলোর পৃষ্ঠে অনেকগুলো এককেন্দ্রিক বৃত্তে ডাটা সংরক্ষণ করা হয়। এসব বৃত্তকে Track বলে। প্রতিটি বৃত্তকে কয়েকটি সমানভাগে ভাগ করা হয়। এসব ভাগকে Sector বলে। প্রতিটি Sector এর ধারণক্ষমতা 512 Bytes. পাতগুলোর মাঝে সামান্য কিছু ফাঁকা স্থান থাকে এবং এই ফাঁকা জায়গায় একটি দণ্ড বা Shaft থাকে। Hard Disk এর ধারণ ক্ষমতা প্রধানত গিগাবাইটে এককে নির্ণয় করা হয়। এটি অন্য Device এর মতো অপসারণযোগ্য নয়। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় Hard Disk নির্মাতা প্রতিষ্ঠান Toshiba, Seagate ইত্যাদি।

 

  1. CD (Compact Disk): এটি একটি Optical মাধ্যম যা Ploy-Carbonate Plastic and Aluminum দিয়ে তৈরি। এতে Data সংরক্ষণের জন্য Laser রশ্মির মাধ্যমে ক্ষুদ্র গর্ত সৃষ্টি করা হয়। এসব গর্তকে Pits বলে। Pits এর পাশের অংশকে Land বলে। এর Data ধারণক্ষমতা 700 মেগা বাইট পর্যন্ত।

 

  1. DVD (Digital Video Disk): সিডির তুলনায় এর Data ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। যা 4.7 to 17 Gigabyte পর্যন্ত Data ধারণ করতে পারে।

 

  1. Floppy Disk: 1973 সালে এটি প্রথম প্রচলন হয়। এটি Diskette নামে পরিচিত। এর Data ধারণ ক্ষমতা খুবই কম। মাত্র 1.44Megabyte. এটি আকারে CD এর চেয়ে খুবই ছোট এবং Hard Disk এর চেয়েও ছোট। বর্তমানে এর ব্যবহার নেই।

 

  1. Blue Ray DVD: সাধারণ DVD-র চেয়ে এর তথ্য ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। এর তথ্য ধারণ ক্ষমতা 100 Gigabyte পর্যন্ত হতে পারে। এতে 450 ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের Blue রঙের Laser রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

 

  1. SSD (Solid State Device): এটি হাল্কা ও অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন Storage Device এতে Data সংরক্ষণের জন্য Flash Memory ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে Hard Disk এর বিকল্প হিসেবে এটি জনপ্রিয়।

 

  1. Pen Drive: USB (Universal Serial Bus) পোর্টে লাগিয়ে সহজে তথ্য লেখা ও পড়ার নতুন সহায়ক স্মৃতি Pen Drive. এটি Floppy Disk এর স্থান দখল করেছে। Pen Drive এর জনক পুয়া কেইন সেং (তাইওয়ান)।

 

  1. Flip-Flop:এটি Digital Logic দ্বারা গঠিত একটি বিশেষ ধরনের মাল্টিভাইব্রেটর সার্কিট। এর দুটি Control Input ও দুটি Control Output আছে। যার একটি হলো High State অপরটি হলো Low State. একটি Flip-Flop মাত্র1 Bit তথ্য ধারণ করতে পারে। এটি Memory Device হিসাবেও কাজ করে।

 


Computer Bus


কম্পিউটারে এক অংশ থেকে অন্য অংশে তথ্য সরবরাহের জন্য Bus/Pathway ব্যবহৃত হয়। Bus এর প্রশস্ততা মাপা হয় Bits দিয়ে। অর্থাৎ কম্পিউটার Bus এর প্রশস্ততা যত বেশি তার মধ্য দিয়ে তত বেশি Bit একসাথে চলাচল করতে পারে। Bus এর গতি মাপা হয় মেগাহার্টজে। সাধারণত এর গতি 8 MH থেকে 800 MH পর্যন্ত হতে পারে।

 

Kinds of Bus: কম্পিউটার বাস ২ প্রকার। যথা:

  1. System Bus: এটি CPU এর সাথে অন্যান্য অংশের সংযোগ তৈরি করে।
  2. Expansion Bus: এটি CPU এর মাধ্যমে কম্পিউটারের Input ও Output Device এর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে।

 

  • System Bus 3 প্রকার। যথা:
  1. Data Bus
  2. Control Bus
  3. Address Bus

 

Data Bus:  এই Bus উভমুখী। এর কাজ হলো বিভিন্ন চিপের (RAM, ROM) এর মধ্যে Data আদান-প্রদান করা। এর উপর ভিত্তি করে Micro-processorএর Bit System কে 4 ভাগে ভাগ করা যায়।

  1. 8 Bit
  2. 16 Bit (DOS, Windos-3)
  3. 32 Bit (Windos-98, Windows NT, UNIX, Windows XP
  4. 64 Bit (Windows Vista), Windows-7 এর Processor Core i-3/5/7

 

Control Bus: Micro-Processor থেকে সংকেত বা নির্দেশ বহন করে সংশ্লিষ্ট অংশগুলোতে প্রেরণ করাই এরকাজ। এটি উভমুখী অর্থাৎদুই দিক থেকে তথ্য আদান-প্রদান হতে পারে।

 

Address Bus: এই Bus এর মধ্য দিয়ে MemoryAddress আসা-যাওয়া করে কিন্তু কোনো Data আসা-যাওয়া করে না। এটি একমুখী।

 

  • Expansion Bus কয়েক ধরনের। যথা:

Local Bus: বাহিরের কিছু Board কে CPU এর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য এই Bus ব্যবহৃত হয়। PCI (Peripheral Component Interconnect, VESA (Video Electronic Standard Architecture) এই ২টি 32 বিটের Local Bus যা Graphics এর কাজে ব্যবহৃত হয়।

 

USB (Universal Serial Bus): ১৯৯৮ সালে Intel Microprocessor দিয়ে তৈরি Computer এ প্রথম এই Bus ব্যবহৃত হয়। Key Board, Mouse, Printer এর সংযোগ এটি ব্যবহৃত হয়।

Fire-ware:এটি সবচেয়ে দ্রুতগতির Computer Bus. এর সাহায্যে প্রতি সেকেন্ডে 400 MB ডাটা transfer সম্ভব।

 

AGP (Accelerated Graphics Port): উন্নতমানের Graphics, Video, Game ইত্যাদি প্রদর্শনের জন্যএ বাস ব্যবহৃত হয়।

 


Computer Port


কম্পিউটারের সাথে বিভিন্ন যন্ত্রের সংযোগমুখকে Port বলে। কম্পিউটারের সাথে বিভিন্ন Device (PeripheralDevice) এর সংযোগ প্রক্রিয়াকে Interface বলে। বিভিন্ন ধরনের Port রয়েছে। যেমন:

  1. Parallel Port/Printer Port/LTP (Line Print Terminal)Port
  2. Serial Port: এতে মোট 9টি Pin থাকে। মডেম ও মাউসে এটি ব্যবহৃত হয়।
  3. Monitor Port/VGA (Video Graphics Array)Port: এখানে Pin 15টি।
  4. USB Port: এটি বহুল ব্যবহৃত।
  5. MIDI Port: এটি Musical Instrument Digital Port.
  6. PS/2 Port: এখানে 6টি Pin থাকে যা KeyBoard ও Mouse সংযোগে ব্যবহৃত হয় এবং এগুলো সাধারণত বেগুনি ও সবুজ রঙের হয়।
  7. Networking Port: Internet Connecting এ এটি ব্যবহৃত হয়।
  8. Audio Port: এখানে 3টি Port থাকে(Line in, Line Out, Microphone)
  9. Video Port
  10. Game Port: Pin 15টি।

 


নমুনা প্রশ্ন


১. নিচের কোনটি কম্পিউটারের গ্রহণমুখ নয়?

ক) কী বোর্ড

খ) সেন্সর

গ) মনিটর

ঘ) লাইট পেন

উত্তরঃ গ


২. কোনটি CPU এর অংশ নয়?

ক) গাণিতিক যুক্তি ইউনিট

খ) নিয়ন্ত্রণ ইউনিট

গ) রেজিস্টার স্মৃতি

ঘ) ইনপুট ইউনিট

উত্তরঃ ঘ


৩. নিচের কোনটি কম্পিউটার পেরিফেরাল ডিভাইসের অংশ নয়?

ক) মাদারবোর্ড

খ) মনিটর

গ) প্রিন্টার

ঘ) স্ক্যানার

উত্তরঃ ক


৪. বারকোড রিডারের অপর নাম কী?

ক) NIC

খ) UPC

গ) OCR

ঘ) VGA

উত্তরঃ খ


৫. ‘আলফা নিউমেরিক কী’ কতটি?

ক) ২৬

খ) ৩৬

গ) ১২

ঘ) ১০৫

উত্তরঃ খ


৬. Safe mood চালুর জন্য ব্যবহৃত হয় – 

ক) F8

খ) F7

গ) F9

ঘ) F10

উত্তরঃ ক


৭. ফাংশন কী (F11) ব্যবহৃত হয় –  

ক) লেখা, বানান ও ব্যাকরণ ঠিক করার কাজে

খ) উইন্ডো পর্দাজুড়ে (ফুলস্ক্রিন) দেখতে

গ) সক্রিয় সব প্রোগ্রাম বন্ধ করতে

ঘ) প্রোগ্রামের হেল্প মেনু দেখার কাজে

উত্তরঃ খ


৮. বিভিন্ন বাড়ির নকশা ও মানচিত্র কীসের সাহায্যে কম্পিউটারে ইনপুট দেওয়া যায়?

ক) জয়স্টিক

খ) ডিজিটাইজার

গ) গ্রাফিক্স ট্যাবলেট

ঘ) স্ক্যানার

উত্তরঃ খ


৯. নিচের কোনটি ব্যতিক্রম?

ক) মাইক্রোফোন

খ) হেডফোন

গ) এয়ারফোন

ঘ) স্টেরিওফোন

উত্তরঃ ক


১০. মাউসের বাম বাটন চেপে ধরে টেনে আনাকে বলে – 

ক) Looping

খ) Dragging

গ) Dropping

ঘ) Pointing

উত্তরঃ খ


১১. সাধারণত কী বোর্ডের বিন্যাস হলো –

ক) QWERTYR

খ) QYWERT

গ) QWTRYZ

ঘ) AZERTY

উত্তরঃ ঘ


১২. কোনটি ইনপুট ডিভাইস?

ক) ডিজিটাইজার

খ) জয়স্টিক

গ) গ্রাফিক্স ট্যাবলেট

ঘ) সবগুলো

উত্তরঃ ঘ


১৩. ব্যাংকিং শিল্পে কোন ধরনের স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়?

ক) OCR

খ) CAT

গ) OMR

ঘ) MICR

উত্তরঃ ঘ


১৪. প্লটার হলো একটি —— ডিভাইস।

ক) ইনপুট

খ) আউটপুট

গ) ইনপুট-আউটপুট

ঘ) সবগুলো

উত্তরঃ খ


১৫. LCD এর পূর্ণরূপ হলো –  

ক) Liquid Crystal Disk

খ) Liquid Crystall Display

গ) Liquid Crystall Disk

ঘ) Liquid Crystal Display

উত্তরঃ ঘ


১৬. VGA এর পূর্ণরূপ –  

ক) Video Graphics Array

খ) Visual Graphics Array

গ) Volatile Graphics Array

ঘ) Video Graphics Adapter

উত্তরঃ ক


১৭. কী দ্বারা প্রিন্টারের আউটপুটের মান পরিমাপ করা হয়?

ক) Dot per inch

খ) Dot per square inch

গ) Dot per second

ঘ) Dot per minute

উত্তরঃ ক


১৮. ‘ডট ম্যাট্রিক্স’ কী?

ক) স্ক্যানার

খ) প্রিন্টার

গ) মনিটর

ঘ) সফটওয়্যার

উত্তরঃ খ


১৯. সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রিন্টার হলো – 

ক) ইনক্ জেট

খ) লেজার

গ) ডট মেট্রিক্স

ঘ) বাবল

উত্তরঃ খ


২০. কোনটি ইনপুট ও আউটপুট রূপে ব্যবহার হয়?

ক) VCR

খ) VTR

গ) Camera

ঘ) সবগুলো

উত্তরঃ ঘ


২১. নিচের কোনটির সহযোগে প্রধান মেমোরি কাজ করে?

ক) NIC

খ) VGA

গ) GPC

ঘ) CPU

উত্তরঃ ঘ


২২. কম্পিউটারের প্রাইমারি মেমোরি হলো – 

ক) RAM

খ) ROM

গ) HD

ঘ) CD

উত্তরঃ ক


২৩. ১০১০১ সংখ্যাটিতে বিট রয়েছে?

ক) ৫টি

খ) ১০টি

গ) ২৫টি

ঘ) ৪ টি

উত্তরঃ ক


২৪. Each byte represents a-

ক) Signal

খ) Single

গ) Character

ঘ) Nibble

উত্তরঃ গ


২৫. কম্পিউটার সিস্টেম ওয়ার্ড গঠনের সংমিশ্রণ হলো –

ক) বাইট

খ) বিট

গ) কারেক্টার

ঘ) সিমবল

উত্তরঃ খ


২৬. ১ টেরাবাইট = কত বাইট?

ক) ২৫০ বাইট

খ) ২৪০ বাইট

গ) ২৩০ বাইট

ঘ) ১০২৪ বাইট

উত্তরঃ ঘ


২৭. বৃহত্তম ডাটা নির্দেশক হলো –  

ক) পিটাবাইট

খ) টেরাবাইট

গ) গিগাবাইট

ঘ) নিবল

উত্তরঃ ক


২৮. পেনড্রাইভে কোন ধরনের রম ব্যবহার হয়?

ক) MROM

খ) PROMM

গ) EPROMN

ঘ) EEPROM

উত্তরঃ ঘ


২৯. হার্ডডিস্কের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হয় –  

ক) ফ্ল্যাশ মেমোরি

খ) ক্যাশ মেমোরি

গ) ভার্চুয়াল মেমোরি

ঘ) সবগুলো

উত্তরঃ ক


৩০. মেমোরি এক্সেসের সময় পরিমাপ করা হয় –  

ক) ন্যানো সেকেন্ডে

খ) মিলি সেকেন্ডে

গ) পিকো সেকেন্ডে

ঘ) মাইক্রো সেকেন্ডে

উত্তরঃ ক


৩১. ডেটা ট্রান্সফার হার সেকেন্ডে ২৫ মেগাবাইট হলে, ৫ মেগাবাইট ডেটা স্থানান্তরে সময় লাগবে – 

ক) ০.২০ সেকেন্ড

খ) ০.২৫ সেকেন্ড

গ) ০.৩৩ সেকেন্ড

ঘ) ০.১৫ সেকেন্ড

উত্তরঃ ক


৩২. কোনটির ডেটা ধারণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি?

ক) Floppy Disk

খ) DVD

গ) Blue Ray DVD

ঘ) CD ROM

উত্তরঃ গ


৩৩. নিচের কোনটি স্টোরেজ মিডিয়া?

ক) মডেম

খ) স্ক্যানার

গ) সিডি

ঘ) প্রিন্টার

উত্তরঃ গ


৩৪. কোনটি ডাটা হস্তান্তরে ব্যবহার হয় না?

ক) পেনড্রাইভ

খ) ফ্লপি ডিস্ক

গ) ভিজিএ

ঘ) মেমোরি কার্ড

উত্তরঃ গ


৩৫. নিচের কোনটি অপসারণযোগ্য ডিস্ক নয়?

ক) ফ্লপি ডিস্ক

খ) সিডি

গ) হার্ডডিস্ক

ঘ) ডিভিডি

উত্তরঃ গ


৩৬. কোর আই-৭ কত বিটের মাইক্রোপ্রসেসর?

ক) ৩২

খ) ৬৪

গ) ১১২

ঘ) ১০৮

উত্তরঃ খ


৩৭. ডাটা গ্রহণ ও নির্গমন বাসের নাম –  

ক) ইনপুট

খ) আউটপুট

গ) পাওয়ার সাপ্লাই

ঘ) ডেটা বাস

উত্তরঃ ঘ


৩৮. সবচেয়ে দ্রুতগতির কম্পিউটার বাস হলো – 

ক) AGP

খ) Fireware

গ) Local Bus

ঘ) USB

উত্তরঃ খ


৩৯. SCSI এর পূর্ণরূপ – 

ক) Small Computer Software Interface

খ) Small Computer System Interface

গ) Small Computer Storage Interface

ঘ) Small Computer Standard Interface

উত্তরঃ খ


৪০. কম্পিউটারে গানের ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি সংযোগে ব্যবহার হয় –  

ক) PS 2

খ) USB

গ) HDX

ঘ)  MIDI

উত্তরঃ ঘ


গ্রন্থপঞ্জি:


১. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম,‘ব্যবহারিক কম্পিউটার শব্দকোষ’ (বাংলা একাডেমি, ফেব্রুয়ারি ২০১৩)

২. এ জেড এম আসাদুজ্জামান, মো. মাসুদ রানা ও মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ (জুলাই ২০১৩)

৩. তামিম শাহরিয়ার সুবিন, ‘কম্পিউটার প্রোগ্রামিং’ (১ম, ২য় ও ৩য় খণ্ড)

৪. প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র বসাক, ‘কম্পিউটারের কথা’

৫. ড. আবদুল্লাহ আল-মুতী, ‘কম্পিউটারের আশ্চর্য জগৎ’

৬. ডা. মো.শাহনেওয়াজ হোসেন জর্জ, ‘Easy কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি’ (জুন ২০১৬)

BCS Computer & IT Lecture – 01

কম্পিউটার, কম্পিউটারের ইতিহাস, বিবর্তন, প্রকারভেদ, প্রজন্ম ও নমুনা প্রশ্ন


কম্পিউটার


Computer শব্দটি গ্রিক শব্দ Compute থেকে এসেছে। এর অর্থ গণনাকারী যন্ত্র বা হিসাব যন্ত্র। Computer এর স্মৃতিশক্তি আছে কিন্তু বুদ্ধি-বিবেচনাশক্তি নেই। এটি মানুষের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে; বুদ্ধি অনুযায়ী কোনো কাজ করতে পারে না।কম্পিউটার বেশি সুবিধাজনক পুনরাবৃত্তিমূলক কাজের জন্য। Computer প্রোগ্রামের একই নির্দেশনা বার বার সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াকে Looping বলে।

Computer এর বৈশিষ্ট্যসমূহ:

  • দ্রুতগতি (High speed)
  • ভ্রমশূন্য/ভুলশূন্য ফলাফল (Accuracy)
  • ক্লান্তিহীনতা (Diligence)
  • বিশ্বাসযোগ্যতা (Reliability)
  • স্মৃতিশক্তি (Memory)
  • স্বয়ংক্রিয়তা (Automation)
  • বহুমুখিতা (Versatility)
  • যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত (Logical Decision)

 

Computer এর কাজের একক: Computer এর কাজের গতিকে বিভিন্ন এককে ভাগ করা যায়। যথা:

  1. Milli Second: 10–3; 1 সেকেন্ডের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ।
  2. Micro Second: 10–6; ১ সেকেন্ডের ১০ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ
  3. Nano Second: 10–9; ১ সেকেন্ডের ১০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ
  4. Pico Second: 10–12; ১ সেকেন্ডের ১ লক্ষ কোটি ভাগের ১ ভাগ

 


কম্পিউটারের ইতিহাস


পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রথম গণনাযন্ত্র অ্যাবাকাস (Abacus)। চীনে এটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। অনেকের মতে, এটি ব্যবিলনে প্রথম ব্যবহৃত বা আবিষ্কৃত হয় খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাচীন গণনাযন্ত্রের তালিকা:

  • Logarithm (লগারিদম): ১৬১৪ সালে জন নেপিয়ার এটি আবিষ্কার করেন। একে নেপিয়ারের অস্থি বলে।
  • Slide Rule (স্লাইড রুল): ১৬৩০ সালে উইলিয়াম অটোরেড এটি আবিষ্কার করেন। এটি এক ধরনের গণনাযন্ত্র।
  • Pascaline (প্যাস্কালেন): ১৬৪২ সালে ব্লেইজ প্যাসকেল এটি আবিষ্কার করেন।
  • Calculator (ক্যালকুলেটর): এটি রোমান শব্দ Calculi থেকে এসেছে। এর অর্থ ‘নুড়ি পাথর’। ১৬৭১ সালে জার্মান গণিতবিদ গডফ্রাইড উইলহেম লিবনিজপ্রথম ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেন। ১৮২০ সালে থমাস দ্য কলমার লিবনিচের যন্ত্রের অনুরূপ হস্তচালিত বাণিজ্যিক Calculator আবিষ্কার করেন। এর নাম ছিলো‘টমাস এরিথোমিটার’।

Computer: ১৮২২ সালে Difference Engine এবং ১৮৩৩ সালে Analytical Engine আবিষ্কারের মাধ্যমে কম্পিউটার তৈরির পরিকল্পনা প্রথম গ্রহণ করা হয়। এই Engine আবিষ্কার করেন ইংল্যান্ডের চার্লস ব্যাবেজ। এজন্য চার্লস ব্যাবেজকে কম্পিউটারের জনক বলে।

  • চার্লস ব্যাবেজের চিন্তা-ভাবনাকে প্রসারিত করে হাওয়ার্ড আইকেন ১৯৩০ সালে Mark-1নামে একটি যন্ত্র আবিস্কার করেন। এটি পৃথিবীর প্রথম স্বয়ংক্রিয় গণনাযন্ত্র এবং পৃথিবীর প্রথম Electronic Computer.
  • ১৯৪৬ সালে ENIAC (Electronic Numerical Integrator and Calculator) নামে একটি গণনাযন্ত্র তৈরি হয়। এটি পৃথিবীর প্রথম পূর্ণাঙ্গ Electronic Computer.

Modern Computer: আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয় জন ভন নিউম্যানকে। প্রথম আধুনিক কম্পিউটার EDVAC (Electronic Discrete Variable Automatic Computer) এর নির্মাতা নিউম্যান। তারপর EDSAC (Electronic Delay Storage Automatic Calculator) তৈরি করা হয়।বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তৈরি প্রথম আধুনিক কম্পিউটার UNIVAC (Universal Automatic Calculator).

Micro Computer: ১৯৭৫ সালে এডওয়ার্ড রবার্ট প্রথমMicro Computer তৈরি করেন। এর নাম Altair-880(অ্যালটেয়ার-৮৮০) । এজন্য এডওয়ার্ড রবার্টকে Micro Computer এর জনক বলে।

 


কম্পিউটারের বিবর্তন


Transistor: দুটি অর্ধ-পরিবাহী ডায়োডকে (অ্যানোড ও ক্যাথোড) পাশাপাশি যুক্ত করে একটি অর্ধ-পরিবাহী ট্রায়োড তৈরি করা হয়; একে ট্রানজিষ্টর বলে। 1948 সালে USA এর বেল ল্যাবরেটরিতে এটি আবিষ্কৃত হয়। Transistor-এ অর্ধ-পরিবাহী বস্তু হিসেবে সিলিকন/জার্মেনিয়াম ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটারের মূল মেমোরিও সিলিকন দিয়ে তৈরি। Transistorমূলত Amplifier (বিবর্ধক) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

Transistor ভিত্তিক প্রথম কম্পিউটার: TX-O (Transistor Experimental Computer)

Transistor ভিত্তিক প্রথম মিনি কম্পিউটার: PDP-8

Amplifier: এটি এক ধরনের Electronic Device, যার Input বর্তনীতে দুর্বল সংকেত প্রয়োগ করে Output বর্তনীতে বহুগুণ বিবর্ধিত সংকেত পাওয়া যায়।

IC (Integrated Circuit): আধুনিক কম্পিউটারের দ্রুতগতির মূলে রয়েছে IC. Transistor, Register and Capacitor এর সমন্বয়ে IC তৈরি হয়। যার ফলে Computer এর আকার/আকৃতি ছোট হয় এবং ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। ১৯৫৮ সালে জ্যাক কেলবি এটি আবিষ্কার করেন।

IC চিপ দিয়ে তৈরি প্রথম Digital Computer হলো: IBM System-360.

Micro Processor: যুক্তরাষ্ট্রের Intel Corporation 1971 সালে টেড হফএর নেতৃত্বে প্রথম Micro Processor তৈরি করে, যার নাম Intel-Intel-4004.IC প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে কম্পিউটারের CPU এর সকল উপাদানকে একটি মাত্র সিলিকন চিপের মধ্যে একীভূত করা সক্ষম হয়। এই চিপকে Micro Processor বলে।

Laptop: ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের EPSON কোম্পানি পৃথিবীর প্রথম Laptop তৈরি করেন। এটাতেও Micro Processor ব্যবহৃত হয়। তবে এটি Desktop এর তুলনায় ছোট, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও সহজে বহনযোগ্য।

 


কম্পিউটারের প্রকারভেদ


গঠন ও ক্রিয়া নীতির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

১. ‍Analog (অ্যানালগ)

২. Digital (ডিজিটাল)

৩. Hybrid (হাইব্রিড)

 

Analog Computer: এ কম্পিউটার প্রধানত কাজ করে সংকেতের পর্যায়ক্রমিক উঠানামার মাধ্যমে। এক এক ধরনের কাজের জন্য এক এক ধরনের Analog Computer ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ একটি অ্যানালগ কম্পিউটার দিয়ে একাধিক কাজ করা যায় না। এ ধরনের কম্পিউটারের কাজের সূক্ষ্মতা কম। উদাহরণ: মোটরগাড়ির Speedo-meter হলো Analog computer,এছাড়া ম্যানোমিটার, ফ্যাদোমিটার ইত্যাদি।

Digital Computer: এ কম্পিউটার প্রধানত Number Processing এর মাধ্যমে কাজ করে। এখানে 0 এবং 1; এই দুটি Digit বা অংক দিয়ে সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করা হয়। একটি Digital computer দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যায় এবং কাজের Accuracy 100%। উদাহরণ: আমরা সাধারণত যে Computer ব্যবহার করি তা ডিজিটাল কম্পিউটার।

Hybrid Computer: Analog ও Digital এর সমন্বয়ে এ Computer তৈরি হয়। সাধারণত মহাকাশ যান, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, বিমান পরিচালনা, পরমাণু শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র এবং মানবযন্ত্রের/মানুষের রোগ নির্ণয় ও শারীরিক ক্রিয়াকলাপে এই Computer ব্যবহৃত হয়।

আকার, আয়তন ও ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারকে চার ভাগে ভাগ করা যায়:

১.   Super Computer/Fastest Computer

২.   Mainframe Computer

৩.   Mini Computer/Midrange Computer

৪.   MicroComputer/Personal Computer (PC)

Super Computer: এ কম্পিউটার অত্যন্ত শক্তিশালী ও দ্রুতগতিতে কাজ করে। সাধারণত বৈজ্ঞানিক ও মহাকাশ গবেষণায় এবং নভোযান ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণে এই কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: তিয়ানহে-২ (চীন), পরম (ভারত) ওIBM RS/6000 SP (বাংলাদেশ) ইত্যাদি।

Mainframe Computer: এটি এমন এক বড় কম্পিউটার যার সাথে অনেকগুলো কম্পিউটার যুক্ত থাকে এবং একসঙ্গে অনেক মানুষ কাজ করতে পারে। সাধারণত ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এ কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে ১৯৬৪ সালে স্থাপিত IBM-1620 কম্পিউটারটি হল Mainframe Computer.

Mini Computer: Mainframe Computer এর চেয়ে ছোট এবং Personal Computer এর চেয়ে বড় মধ্যম-সারির কম্পিউটারকে Mini Computer বলে। Mainframe এবং Mini Computer এর কার্যক্রম একই ধরনের। তবে সাধারণত এটি কম ব্যবহার করা হয়।

Micro Computer: এ কম্পিউটারের আকার অনেকগুণ ছোট। একজন ব্যবহারকারী একা একটি Micro Computer ব্যবহার করতে পারেন, ফলে একে Personal Computer (PC) বলে। একে Digital Computer-ও বলা হয়। উদাহরণ: আমরা সাধারণত যে Computer ব্যবহার করি তা মাইক্রো-কম্পিউটার।

Micro Computer/Personal Computer (PC) কে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়:

১.     Desktop

২.    Laptop/Notebook

৩.    Netbook

৪.     Tab/Tablet PC

৫.    Palmtop/Handheld

 

Desktop: এ ধরনের কম্পিউটারেরসহজে বহনযোগ্য নয়। অফিস-আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটি ব্যবহৃত হয়।

Laptop: Lap অর্থ কোল। এ ধরনের কম্পিউটার কোলের উপর স্থাপন করে কাজ করা যায় এবং সহজে বহনযোগ্য। এতে Mouse এর পরিবর্তে Touch Pad ব্যবহৃত হয়। এটি Desktop এর চেয়ে বেশি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী।

Netbook: এটি Laptop এর চেয়ে ছোট আকারের Mobile Computer. এতে Ultra Low processor ব্যবহৃত হয় এবং কোনো Optical Drive (CD) থাকে না।

Tab: এটি লেটার সাইজের স্লেটের অনুরূপ এক ধরনের কম্পিউটার যাতে হাতের আঙুল বা Digital Pen ব্যবহার করা হয়।

Palmtop: এ কম্পিউটার হাতের তালুর মধ্যে রেখে কাজ করা যায়। একে PAD (Personal Digital Assistance) বলে।

 


কম্পিউটারের প্রজন্ম


Generation of Computer অর্থাৎ কম্পিউটারেরপাঁচটি প্রজন্ম রয়েছে:

  • 1st Generation (1946-59)
  • 2nd Generation (1959-65)
  • 3rd Generation (1965-71)
  • 4th Generation (1971-Present)
  • 5th Generation (Future)

First Generation:

  • Vacuum Tube এর ব্যবহার
  • পাঞ্চকার্ডের সাহায্যে ইনপুট-আউটপুট প্রদান
  • প্রোগ্রাম রচনায় সংকেতের ব্যবহার
  • উচ্চশব্দ ও উত্তাপ সৃষ্টি হওয়া
  • উদাহরণ: Mark-1, ABC, ENIAC, UNIVAC

Second Generation:

  • Transistor এর ব্যবহার
  • Magnetic Core Memory এর ব্যবহার
  • Programing ভাষার ব্যবহার
  • উদাহরণ: IBM-1401, IBM-1600, IBM-1620

Third Generation:

  • IC (Integrated Circuit) চিপের ব্যবহার
  • Semi-Conductor Memory এর ব্যবহার।
  • Higher Programing Language এর ব্যবহার
  • উদাহরণ: IBM-360, PDP-8

Fourth Generation:

  • VLSL (Very Large-Scale Integration) এর ব্যবহার
  • Micro Processor এর ব্যবহার
  • উদাহরণ: IBM-PC, IBM-3033, HP-3000

Fifth Generation:

  • অসংখ্য Micro Processor এর ব্যবহার
  • Artificial Intelligence and Robotics এর ব্যবহার
  • Program রচনায় Natural Language এর ব্যবহার
  • কন্ঠস্বর সনাক্তকরণ ও সকল ভাষায় Computing.
  • Multiprocessing system এর ব্যবহার।

 


নমুনা প্রশ্ন


1. এক ন্যানো সেকেন্ড হলো-

ক) এক সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের একভাগ

খ) এক সেকেন্ডের দশ লক্ষ ভাগের একভাগ

গ) এক সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের একভাগ

ঘ) এক সেকেন্ডের একলক্ষ কোটি ভাগের একভাগ

উত্তরঃ গ


2. লগারিদমের উদ্ভাবন করেন কে?

ক) উইলিয়াম অটরেড

খ) জন নেপিয়ার

গ) চার্লস ব্যাবেজ

ঘ) গডফ্রাইড

উত্তরঃ খ


3. সর্বপ্রথম বাণিজ্যিক ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেন-

ক) ব্লেইজ প্যাস্কেল

খ) কলমার লিবনিজ

গ) গডফ্রাইড

ঘ) উইলিয়াম অটরেড

উত্তরঃ খ


4. অ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন-

ক) চার্লস ব্যাবেজ

খ) কলমার লিবনিজ

গ) জন নেপিয়ার

ঘ) ব্লেইজ প্যাস্কেল

উত্তরঃ ক


5. পৃথিবীর প্রথম স্বয়ংক্রিয় গণনা যন্ত্র হলো-

ক) মার্ক-১

খ) অ্যাবাকাস

গ) এবিসি কম্পিউটার

ঘ) এনিয়াক-১

উত্তরঃ ক


6. প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইলেকট্রনিক কম্পিউটার হলো-

ক) মার্ক-১

খ) এনিয়াক-১

গ) এবিসি কম্পিউটার

ঘ) এডস্যাক

উত্তরঃ খ


7. প্রথম ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যাবহার করা হয় কোন কম্পিউটারে?

ক) এবিসি কম্পিউটার

খ) অ্যাবাকাস

গ) মার্ক-১

ঘ) এনিয়াক-১

উত্তরঃ ক


8. প্রথম আধুনিক কম্পিউটার হলো-

ক) এডস্যাক

খ) এডভাক

গ) ইউনিভ্যাক

ঘ) এনিয়াক

উত্তরঃ খ


9. ট্রানজিস্টর আবিষ্কার করা হয়-

ক) ১৯৪৮ সালে

খ) ১৯২২ সালে

গ) ১৯৭১ সালে

ঘ) ১৯৪২ সালে

উত্তরঃ ক


10. ট্রানজিস্টরে কোনটির ব্যবহার হয়-

ক) সিলিকন

খ) সেমিকন্ডাক্টর

গ) জার্মেনিয়াম

ঘ) সবগুলোই

উত্তরঃ ঘ


11. IC চিপ দিয়ে তৈরী প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটার হলো-

ক) IBM-System 360

খ) PDP-8

গ) Intel-4004

ঘ) UNIVAC-1

উত্তরঃ ক


12. আধুনিক কম্পিউটারের জনক-

ক) জন ভন নিউম্যান

খ) চার্লস ব্যাবেজ

গ) গটফ্রাইড

ঘ) এইচ এডওয়ার্ড

উত্তরঃ ক


13. কম্পিউটার জাদুঘর কোথায় অবস্থিত?

ক) নিউইয়র্ক

খ) আটলান্টা

গ) ক্যালিফোর্নিয়া

ঘ) ম্যানহাটন

উত্তরঃ খ


14. বাংলাদেশের প্রথম কম্পিউটার কোন প্রজন্মের?

ক) প্রথম

খ) দ্বিতীয়

গ) তৃতীয়

ঘ) চতুর্থ

উত্তরঃ খ


15. ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যবহার করা হয় কোন কম্পিউটার?

ক) এনালগ

খ) ডিজিটাল

গ) হাইব্রিড

ঘ) মেইনফ্রেম

উত্তরঃ গ


16. Handheld বলতে বুঝায়-

ক) পকেট পিসি

খ) পামটপ

গ) পিডিএ

ঘ) সবগুলো

উত্তরঃ ঘ


17. কোন প্রজন্মের কম্পিউটারে ম্যাগনেটিক কোর মেমোরি ব্যাবহার হয়?

ক) প্রথম

খ) দ্বিতীয়

গ) তৃতীয়

ঘ) চতুর্থ

উত্তরঃ খ


18. কোনটি তৃতীয় প্রজন্মের সময়?

ক) ১৯৪৬-১৯৬৫

খ) ১৯৬৫-১৯৭১

গ) ১৯৫৬-১৯৭১

ঘ) ১৯৭১-বর্তমান

উত্তরঃ খ


১৯. কম্পিউটারের কী নেই?

ক) বিবেচনা শক্তি

খ) স্মৃতি

গ) নির্ভুল কাজের ক্ষমতা

ঘ) দ্রুত গতি

উত্তরঃ ক


২০. কোন কাজের জন্যে কম্পিউটার বেশি সুবিধাজনক?

ক) গাণিতিক কাজ

খ) প্রতিবেদন প্রণয়ন

গ) পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ

ঘ) হিসাবরক্ষণের কাজ

উত্তরঃ গ


২১. পৃথিবীর প্রথম স্বয়ংক্রিয় গণনাযন্ত্র কত সালে নির্মিত হয়?

ক) ১৮৩৩ সালে

খ) ১৯৩০ সালে

গ) ১৯৪৬ সালে

ঘ) ১৮২২ সালে

উত্তরঃ খ


২২. সমন্বিত বর্তনী (IC) আবিষ্কার করেন কে?

ক) জন বারডিন

খ) উইলিয়াম শকলে

গ) ওয়াল্টার ব্রাটেইন

ঘ) জ্যাক কেলবি

উত্তরঃ ঘ


২৩. মাইক্রো-কম্পিউটারের জনক কে?

ক) এডওয়ার্ড রবার্ট

খ) টেড হফ

গ) হ্যারম্যান হলিরিথ

ঘ) বিল গেটস

উত্তরঃ ক


২৪. বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার স্থাপিত হয় – 

ক) ১৯৮৪ সালে

খ) ১৯৯৬ সালে

গ) ১৯৬৪ সালে

ঘ) ১৯৯০ সালে

উত্তরঃ গ


২৫. ‘মোটরগাড়ির স্পিডেমিটার’ কী ধরনের কম্পিউটার?

ক) হাইব্রিড

খ) সুপার

গ) অ্যানালগ

ঘ) ডিজিটাল

উত্তরঃ গ


২৬. ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোন কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়?

ক) মেইনফ্রেম

খ) মিনি

গ) সুপার

ঘ) অ্যানালগ

উত্তরঃ ক


২৭. ‘আল্ট্রা লো পাওয়ার প্রসেসর’ ব্যবহৃত হয় – 

ক) নোটবুকে

খ) নেটবুকে

গ) ট্যাবে

ঘ) ল্যাপটপে

উত্তরঃ খ


২৮. পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য হলো –  

ক) প্রাকৃতিক ভাষা

খ) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

গ) কণ্ঠস্বর সনাক্তকরণ

ঘ) সবগুলো

উত্তরঃ ঘ


২৯. VLSI ব্যবহার করা হয় কোন প্রজন্মের কম্পিউটারে?

ক) প্রথম

খ) দ্বিতীয়

গ) তৃতীয়

ঘ) চতুর্থ

উত্তরঃ ঘ


৩০. দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য – 

ক) প্রোগ্রাম রচনায় সংকেত ব্যবহার করা

খ) উচ্চতর প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যবহার

গ) প্রোগ্রামিং ভাষার উদ্ভব

ঘ) ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের ব্যবহার

উত্তরঃ গ


গ্রন্থপঞ্জি:


১. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম,‘ব্যবহারিক কম্পিউটার শব্দকোষ’ (বাংলা একাডেমি, ফেব্রুয়ারি ২০১৩)

২. এ জেড এম আসাদুজ্জামান, মো. মাসুদ রানা ও মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ (জুলাই ২০১৩)

৩. তামিম শাহরিয়ার সুবিন, ‘কম্পিউটার প্রোগ্রামিং’ (১ম, ২য় ও ৩য় খণ্ড)

৪. প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র বসাক, ‘কম্পিউটারের কথা’

৫. ড. আবদুল্লাহ আল-মুতী, ‘কম্পিউটারের আশ্চর্য জগৎ’

৬. ডা. মো. শাহনেওয়াজ হোসেন জর্জ, ‘Easy কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি’ (জুন ২০১৬)

BCS Bangla Lecture – 26

অনুবাদ ও নমুনা প্রশ্ন


অনুবাদ


এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় বক্তব্যকে রূপান্তরিত করাকে অনুবাদ (Translation) বলে। কোনো ভাষার সমৃদ্ধি সাধনে ও বিশ্বসাহিত্যের ক্ষেত্রে অনুবাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমানে অনুবাদ একটি সৃজনশীল কর্ম ও ভাষার উৎকর্ষ সাধনের অন্যতম উপায়। ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদের ক্ষেত্রে ইংরেজি চযৎধংব এর বাংলা অর্থ প্রায়ই অনুরূপ হয়। বাংলা অর্থ এক রকম ভাবানুযায়ী রাখতে হয়। অনুবাদ কাজকে প্রধানত দু ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন: আক্ষরিক অনুবাদ ও ভাবানুবাদ।

আক্ষরিক অনুবাদ: মূল ভাষার প্রতিটি শব্দের প্রতিশব্দ ব্যবহার করে হুবহু যে অনুবাদ করা হয় তাকে আক্ষরিক অনুবাদ বলে। সাধারণত প্রবন্ধ ও গদ্য রচনায় এ জাতীয় অনুবাদ করা হয়। এ জাতীয় অনুবাদে বিশ্বস্ততা থাকে তবে অনেক সময় মূল রচনার অর্থ পাল্টে যায়।

ভাবানুবাদ: মূল ভাষায় স্থিত মূল ভাব অক্ষুণœ রেখে নিজের ভাষায় মূলভাবকে তুলে ধরে যে অনুবাদ করা হয় তাকে ভাবানুবাদ বলে। অনুবাদের ক্ষেত্রে ভাবানুবাদই সর্বজন স্বীকৃত মাধ্যম। এ ক্ষেত্রে মূল রচনার প্রতিটি শব্দের অনুবাদ করা হয় না।প্রবাদ-প্রবচনের সাধারণত ভাবানুবাদ করা হয়। নিচে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কিছু অনুবাদ উল্লেখ করা হলো।

 


1. A cat has nine lives কই মাছের প্রাণ বড় শক্ত।


2. A cat has nine lives – কই মাছের প্রাণ বড় শক্ত।


3. A beggar can never be a bankrupt- মাথা নেই তার মাথাব্যাথা।


4. A beggar has nothing to loss – ন্যাংটার নেই বাটপারের ভয়।


5. A tree is known by its fruits – নামে নয় গুণে পরিচয়।


6. A guilty mind is always suspicious – ঠাকুর ঘরে কে? না, আমি কলা খাই না।


7. A bad workman quarrels with his tools – নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা।


8. A downing man catches at the straw/While there is life there is hope – যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আঁশ।


9. After meat comes mustard – নুন আনতে পানতা ফুরায়।


10.  As you so, so you reap – যেমন কর্ম তেমন ফল।


11. All that glitters is not gold – চকচক করলেই সোনা হয় না।


12. All’s well that ends well – সব ভালো যার শেষ ভালো তার।


13. All covet, all lost/Grasp all, lose all – অতি লোভে তাঁতী নষ্ট।


14. Birds of the same feather flock together – চোরে চোরে মাসতুতো ভাই।


15. Blessed be your tongue – তোমার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক।


16. Beggars must not be choosers – ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া।


17. Black will take no other hue – কয়লা ধুলে ময়লা যায় না।


18. Better an empty house than an ill tenant – দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল আচ্ছা।


19. Cut your coat according to your cloth – আয় বুঝে ব্যয় কর।


20. Charity begins at home – আগে ঘর তবে তো পর।


21. Don’t smile at anybody – কাউকে নিয়ে রসিকতা করবে না।


22. Don’t built castle in the air – আকাশে প্রাসাদ গড়ো না।


23. Don’t utter this word any more – এ কথা আর মুখে এনো না।


24. Don’t cry down your enemy – শত্রুকে  খাটো করে দেখ না।


25. Don’t speak ill of others – অপরের নিন্দা করো না।


26. Danger often comes where danger is feared – যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়/যেখানে ভয় সেখানেই রাত হয়।


27. Every man is for himself – চাচা আপন প্রাণ বাঁচা।


28. Every dog has his day – প্রত্যেকের জীবনে একবার সুদিন আসে।


29. Even a fool knows his business – আপন ভালো পাগলেও বুঝে।


30. Empty vessels sound much/Much ado about nothing – অসারের তর্জন গর্জন সার/বেশি আড়ম্বরে কাজ হয় না/খালি কলসি বাজে বেশি।


31. Fault is thick where love is thin – যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা।


32. Fortune smiled upon us at least – অবশেষে ভাগ্য আমাদের উপর মুখ তুলে চাইল।


33. Good wine needs no bush – চেনা বামুনের পৈতা লাগে না।


34. Give up the habit of banding words – কথা কাটাকাটির অভ্যাস ছেড়ে দাও।


35. Great minds think alike – মহৎ লোকেরা একরকম চিন্তা করেন।


36. He drank the tea by sips – সে অল্প অল্প করে চা খেল।


37. He takes after his father – সে দেখতে তার পিতার মতো।


38. He is man of world – তিনি বিষয়ী লোক।


39. He will make a good player – সে ভালো খেলোয়ার হবে।


40. He takes with an iron hand – তিনি কঠোর হাতে শাসন করেন।


41. He has no business to say that – সেটি বলার কোনো অধিকার তার নেই।


42. He has put on much weight – তার ওজন বেশ বেড়েছে।


43. He always talks more – সে সর্বদাই বাজে বকে।


44. He is a self-styled leader – গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল।


45. He is light fingered – তার হাতটান আছে।


46. He is very hard up now – সে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে।


47. He has broken with his friend – সে তার বন্ধুর সাথে ঝগড়া করেছে।


48. He has gone to dog – সে গোল্লায় গেছে।


49. He is yet to take in the situation – সে এখনও পরিস্থিতি বুঝে উঠতে পারেনি।


50. He is rogue to the backbone – সে হাড়ে হাড়ে বদমাস।


51. He looked daggered at me – সে আমার প্রতি চোখ রাঙালো।


52. He sheds crocodile tears – সে মায়াকান্না কাঁদিল।


53. He is doomed – তার আর রক্ষা নেই।


54. Hunger is the best sauce – ক্ষুধা পেলে বাঘে ধান খায়/খিদের বাড়া চাটনি নেই/ক্ষুধা পেলে নুন দিয়ে খাওয়া যায়।


55. He called me names – সে আমাকে গাল দিল।


56. No smoke without fire/Nothing comes out of nothing – কারণ বিনা কার্য হয় না/সব গুজবেরই ভিত্তি আছে।


57. Once unlucky always unlucky – অভাগা যদ্যপি চায়, সাগর শুকিয়ে যায়।


58. Oil your own machine/Mind your own business – আপন চরকায় তেল দাও।


59. I took him to be a man of taste – আমি তাকে একজন রুচিশীল মানুষ মনে করেছিলাম।


60. I will teach him a good lesson – আমি তাকে একহাত দেখে নিবো।


61. I have caught cold – আমার সর্দি হয়েছে।


62. I am an eyesore to him – আমি তার চক্ষুশুল।


63. I feel like weeping – আমার কান্না পাচ্ছে।


64. I cannot spare a moment – আমার তিলমাত্র সময় নেই।


65. I cannot but do this – আমি এটা না করে পারি না।


66. I am no stranger to this place – আমি এ জায়গায় অপরিচিত নই।


67. It takes two to make a quarrel – এক হাতে তালি বাজে না।


68. It is raining cats and dogs – মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।


69. It is lesser evil – এটি মন্দের ভালো।


70. It is a long story – সে অনেক কথা।


71. It culminated into failure – এটা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হল।


72. It is likely to rain today – মনে হয় বৃষ্টি হবে।


73. It was a got up match – এটি ছিল একটি পাতানো খেলা।


74. Ill got, ill spent – পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়।


75. Jack of all trades, master of none – সবজান্তা কিন্তু কোনোটিতেই ওস্তাদ নয়।


76. Leave no stone unturned – চেষ্টায় ত্রুটি না করা।


77. Let us wait to see the conclusion – কোথাকার জল কোথায় গড়ায়।


78. Let bygones be bygones/ It is no use crying over split milk – গতস্য শোচনা নাস্তি/অতীতকে মুছে ফেল।


79. Master’s will is law – কর্তার ইচ্ছাই কর্ম।


80. Many a little makes a mickle – রাই কুড়িয়ে বেল/দশের লাঠি একের বোঝা।


81. Misfortunes never come alone – বিপদ কখনও একা আসে না।


82. Might is right – জোর যার মুল্লুক তার।


83. Make hay while the sunshine – ঝোপ বুঝে কোপ মারা।


84. Necessity knows no law – অভাবে স্বভাব নষ্ট।


85. No pains, no gains – কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না।


86. Out of sight, out of mind – চোখের আড়াল, মনের আড়াল/কাছে থাকলে পোড়ে মন, দূরে গেলেঠনঠন।


87. One swallow does not make a summer – এক মাঘে শীত যায় না।


88. Pen through the word – শব্দটি কেটে দাও।


89. Pride goes its fall – অতি দর্পে হত লঙ্কা।


90. Penny wise pound foolish – বজ্র আটুনি ফস্কা গেরো।


91. Practice makes a man perfect – গাইতে গাইতে গায়েন।


92. Rumor has some element of truth in it – যা রটে তা কিছু বটে।


93. Something is better than nothing – নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো।


94. Self help is the best help – স্বাবলম্বন সর্র্বশ্রেষ্ঠ অবলম্বন।


95. Soon ripe, soon rotten – ইঁচড়ে পাকলেই গোল্লায় যায়।


96. To be spoilt at early youth – কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরা।


97. To add insult to injury – কাটা ঘায়ে নুনের ছিঁটা দেওয়া।


98. To lock the stable when the mare is stolen – চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।


99. To be up and doing – আদা জল খেয়ে লাগা।


100. To rob peter to pay Paul – গরু মেরে জুতো দান।


101. To rob the robber – চোরের উপর বাটপারি।


102. To cast pearls before swine – উলুবনে মুক্তা ছড়ানো/বানরের গলায় মুক্তার হার।


103. To make a cat’s paw of a person – পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙা।


104. To do a great injury – পাকা ধানে মই দেওয়া।


105. To build castles in the air – আকাশ কুসুম চিন্তা করা/ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা।


106. To make a mass of things – ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ।


107. To the pure all things are pure – আপন ভালো তো জগত ভালো।


108. To set a thief to catch a thief – কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা।


109. To carry coals to new castle – তেল মাথায় তেল দেওয়া/যার আছে তাকে আরও দেয়া।


110. To make sure something without risking anything – ধরি মাছ না ছুঁই পানি।


111. To speak ill of others is a sin – অপরের নিন্দা করা পাপ।


112. To utter such a thing is a sin – অমন কথা মুখে আনাও পাপ।


113. Truth will come out – ধর্মের ঢাক আপনি বাজে।


114. They are playing at fighting – তারা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছে।


115. Two heads are better than one – দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।


116. Too many cooks spoil the broth – অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট।


117. Too much courtesy, too much craft – অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।


118. Too much cunning over reaches itself – অতি চালাকের গলায় দড়ি।


119. Time hangs heavy on my head – আমার সময় কাটতে চায় না।


120. The child is father to the man/Morning shows the day – উঠন্তি মূলো পত্তনেই চেনা যায়।


121. The man is very shy – লোকটা বড় মুখচোরা (লাজুক)


122. The man looks gloomy – লোকটি মুখ ভার করে আছে।


123. The man is off his head – লোকটির মাথা খারাপ হয়েছে।


124. The man talks garrulously – লোকটি চোখে মুখে কথা বলে।


125. The fire is out – আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।


126. The grapes are sour – পেল না, তাই খেল না।


127. The crowd made way for the leader – জনতা নেতাকে জায়গা করে দিল।


128. The hard work is telling upon my health – এ কঠিন কাজ করতে আমার স্বাস্থ্যে কুলাচ্ছে না।


129. The ship was settled – জাহাজটি মেরামত করা হলো।


130. The trial was held in camera – বিচারানুষ্ঠানটি গোপনে পরিচালিত হয়েছিল।


131. The baby burst into a giggle – শিশুটি খিল খিল করে হেসে উঠলো।


132. The workers have called off their strike – শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে।


133. The child is cutting teeth – শিশুটির দাঁতে দাঁত লেগেছে।


134. The flag is fluttering in the breeze – পতাকাটি পত পত করে উড়ছে।


135. The train has been railed – ট্রেনটি ঠিকমতো চলছে।


136. The wind is howling – বাতাস তীব্র বেগে বইছে।


137. The leader gave a telling speech – নেতা জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিলেন।


138. The thief was caught red-handed – চোরটা হাতে নাতে ধরা পড়লো।


139. The girl is possessed – মেয়েটিকে ভূতে পেয়েছে।


140. The better days are gone by – সুখের দিন চলে গেছে।


141. The house has caught fire – ঘরে আগুন লেগেছে।


142. The die is cast – হাতের ঢিল ছোড়া হয়েছে।


143. The situation has come to a head – পরিস্থিতি চরম অবস্থায় পৌঁছেছে।


144. The girl went away dancing – মেয়েটি নাচতে নাচতে চলে গেল।


145. The horse is noble animal – ঘোড়া একটি প্রভুভক্ত প্রাণী।


146. The crowed made wayfor the leader – জনগণ নেতার কথা মানলো।


147. Use a little common sense – একটু বুদ্ধি খাটাও।


148. Vini, Vidi, Vici – এলাম, দেখলাম, জয় করলাম।


149. Virtue proclaims itself – ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।


150. Waste not, want not – অপচয় করো না, অভাব হবে না।


151. Wouldn’t mind a cup of tea – এক কাপ চা পেলে মন্দ হত না।


152. Wishes never fill the bag – শুধু কথায় পেট ভরে না।


153. You are really idiotic – তুমি আসলেই মাথামোটা।


নমুনা প্রশ্ন


১. অনুবাদ কোন প্রকার হবে তা কীসের উপর নির্ভর করে?

ক) ভাবের

খ) মনের

গ) বিষয়ের

ঘ) লেখনীয়

উত্তরঃ ক


২. Nero fiddles while Rome burns এর সঠিক অনুবাদ কী?

ক) গরু মেরে জুতো দান

খ) কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ

গ) ঝোপ বুঝে কোপ মারা

ঘ) রোম জ্বলছে নীরু বাঁষি বাজাচ্ছে

উত্তরঃ খ


৩. ‘He feels pins and needles in the leg.’ এর অনুবাদ কী?

ক) তার পায়ে আলপিন ও সুচের যন্ত্রণা অনুভব করছে

খ) তার পায়ে আলপিন ও সূচ বেঁধেছে

গ) তার পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরেছে

ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তরঃ গ


৪. A beggar must not be a chooser. এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক) ভিক্ষার চাল মোটা

খ) ভিক্ষার চাল সরু

গ) ভিক্ষার চাল মোটা আর সরু

ঘ) ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া

উত্তরঃ ঘ


৫. Necessity knows know law বাক্যটির সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক) যত গর্জে তত বর্ষে না

খ) নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা

গ) অভাবে স্বভাব নষ্ট

ঘ) যেমন কর্ম তেমন ফল

উত্তরঃ গ


৬. Rome was burning while Nero was playing on flute এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক) রোমে আগুন জ্বলছে নিরু তখন বাঁশি বাজাচ্ছে।

খ) রোম যখন পুড়ে যাচ্ছে নিরু তখন বাঁশি বাজায়।

গ) কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ।

ঘ) রোম ধ্বংসের পথে নিরু তখন বাঁশি বাজায়।

উত্তরঃ গ


৭. Bad workman quarrels with his tools এর অর্থ –

ক) নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা।

খ) এক হাতে তালি বাজে না।

গ) খারাপ কর্মী ঝগড়া করে।

ঘ) কাজ বেলায় কাজি, কাজ ফুরালে পাজি।

উত্তরঃ ক


৮. ‘কালনেমির লঙ্কাভাগ।’ প্রবাদের অনুবাদ – 

ক) What is sport to one is death to another.

খ) To count one’s chickens before they are hatched.

গ) When the cat is away, the mice will play.

ঘ) The cat is out of the bag.

উত্তরঃ খ


৯. অনুবাদের অর্থ কী?

ক) অনুসরণ

খ) ভাবান্তর

গ) ভাষান্তরকরণ

ঘ) সমার্থকরণ

উত্তরঃ গ


১০. He is very hard up now বাক্যটির যথাযথ বঙ্গানুবাদ?

ক. সে খুব শক্ত মনের মানুষ

খ. তাকে ইদানীং অসহ্য লাগে

গ. তার দিন আর চলছে না

ঘ. সে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে

উত্তরঃ ঘ


১১. I cannot spare a moment. বাক্যটির যথাযথ বঙ্গানুবাদ-

ক. আমি এক মুহূর্ত ব্যয় করতে পারি না

খ. আমার মুহূর্তের ছাড় নেই

গ. আমার তিলমাত্র সময় নেই

ঘ. আমার এক তিল সময় ছিল না

উত্তরঃ গ


১২. ইংরেজিতে অনুবাদ কর: আমি যাবই যাব।

ক. I must go.

খ. Go I must.

গ. I will must go.

ঘ. Of course I shall go.

উত্তরঃ ক


১৩. His monumental failure haunts him even today – এর সঠিক বাংলা অনুবাদ কোনটি?

ক. তার স্তম্ভ সমান ব্যর্থতা আজও তার চারপাশে ঘুরে বেড়ায়

খ. তার স্তম্ভ সমান ব্যর্থতা আজও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়

গ. তার বিপুল ব্যর্থতা আজও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়

ঘ. তার স্মৃতিস্তম্ভ ব্যর্থতা আজও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়

উত্তরঃ গ


১৪. The man is off his head – বাক্যটির যথাযথ বঙ্গানুবাদ-

ক. লোকটির সম্মান নষ্ট হয়েছে

খ. লোকটির মাথা খারাপ হয়েছে

গ. লোকটির মাথায় কিছু নাই

ঘ. লোকটির মাথা কাটা গিয়াছে

উত্তরঃ খ


১৫. He is out of luck – এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক. ভাগ্যহারা সে

খ. সে ভাগ্য মানে

গ. তার পোড়া কপাল

ঘ. সে ভাগ্যবান

উত্তরঃ গ


১৬. The anti-socials are still at large – বঙ্গানুবাদ নিম্নের কোনটি?

ক. সমাজ বিরোধীরা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে

খ. সমাজ বিরোধী দল এখনো বেশ বড়

গ. সমাজ বিরোধীরা এখন বেশ দূরে

ঘ. সমাজ বিরোধীরা বেশ দুষ্ট

উত্তরঃ ক


১৭. There is no rose but thorn – এর যথার্থ বাংলা ভাবানুবাদ হচ্ছে – 

ক. সেখানে কোনে গোলাপ নেই কিন্তু কাঁটা আছে

খ. কাঁটা আছে গোলাপ নেই

গ. গোলাপের কাঁটা থাকে না

ঘ. দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে!

উত্তরঃ ঘ


১৮. Patience has its reward – এর বাক্যর যথার্থ অনুবাদ-

ক. রোগীর জন্য পুরস্কার আছে

খ. রোগী পুরস্কার পেয়েছে

গ. ধৈর্য্যের মূল্যায়ন হয়েছে

ঘ. সবুরে মেওয়া ফলে

উত্তরঃ ঘ


১৯. We mean business – বাক্যটির যথার্থ অনুবাদ-

ক. আমরা ব্যবসা বুঝি

খ. আমরা ব্যবসা বুঝিয়ে থাকি

গ. আমরা আসলেই কাজ করি

ঘ. আমরা কাজ নিয়ে থাকি

উত্তরঃ ঘ


২০. He earns that much money which is necessary to keep body and soul – এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক. শুধু বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সে রোজগার করে

খ. প্রাণ ধারণের জন্য যতটুকু প্রয়োজন শুধুমাত্র সেই পরিমাণ অর্থ সে রোজগার করে

গ. জীবন ধারণের জন্য যতটুকু অর্থ প্রয়োজন সেই পরিমাণ অর্থ সে রোজগার করে

ঘ. জীবন যাপনের জন্য যে পর্যাপ্ত অর্থ প্রয়োজন সেই পরিমাণ অর্থ সে রোজগার করে

উত্তরঃ গ


২১. Books are a man’s best companions in life – এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক. পুস্তক মানুষের অপরিহার্য সঙ্গী

খ. পুস্তকে মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী

গ. পুস্তক মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু

ঘ. পুস্তক মানুষের জীবনের সর্বোত্তম সঙ্গী

উত্তরঃ ঘ


২২. One single bomb wiped the beautiful town Hiroshima and another Nagasaki – কোনটি সঠিক অনুবাদ?

ক. দুটি পৃথক বোমা দুটি সুন্দর শহর হিরোশিমা ও নাগাসাকিকে ধ্বংস করেছিল

খ. একটিমাত্র বোমা সুন্দর শহর হিরোশিমা ও নাগাসাকিকে ধ্বংস করেছিল

গ. একটি বোমা সুন্দর শহর হিরোশিমা ও অন্যটি নাগাসাকিকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল

ঘ. কোনোটিই নয়

উত্তরঃ ক


২৩. Diamonds cuts Diamonds – এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক. সঙ্গদোষে নষ্ট

খ. সৎসঙ্গে স্বর্গবাস

গ. সঙ্গ দেখে লোক চেনা যায়

ঘ. মানিকে মানিক চেনে

উত্তরঃ ঘ


২৪. The rose in a fragrant flower – এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক. গোলাপ কোমল ফুল

খ. গোলাপ কাঁটাযুক্ত ফুল

গ. গোলাপ সুগন্ধি ফুল

ঘ. গোলাপ সুন্দর ফুল

উত্তরঃ গ


২৫. The car turned turtle -বাক্যটির যথার্থ অনুবাদ – 

ক) গাড়িটি উল্টে গেল

খ) গাড়িটি পড়ে গেল

গ) গাড়িটি বাঁক ফিরল

ঘ) গাড়িটি ভেঙে গেল

উত্তরঃ ক


২৬.  He is out for your blood – বাক্যটির যথার্থ বাংলা অনুবাদ কোনটি?

ক) সে তোমার রক্ত খুঁজছে

খ) সে তোমার রক্তের জন্য বেরিয়েছে

গ) সে তোমাকে আক্রমণ করতে কৃতসংকল্প

ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তরঃ গ


২৭. Nothing success like success – এর বঙ্গানুবাদ হলো – 

ক) চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে

খ) চাঁদেও কলঙ্ক আছে

গ) জলেই জল বাঁধে

ঘ) জীবন থাকলেই আশ থাকবে।

উত্তরঃ গ


২৮. ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ কর Culture is constantly evolving.

ক) সংস্কৃতি সর্বদা বিবর্তিত হচ্ছে

খ) সংস্কৃতি সর্বদা বিকৃত হচ্ছে

গ) সংস্কৃতি সর্বদা বিসর্জিত হচ্ছে

ঘ) সংস্কৃতি সর্বদা অনুসৃত হচ্ছে

উত্তরঃ ক


২৯. বাক্যটির যথার্থ অনুবাদ She burst into tears.

ক) সে অশ্রু বর্ষণ করল

খ) সে কাঁদতে শুরু করল

গ) সে কান্নায় ভেঙে পড়ল

ঘ) সে কাঁদল

উত্তরঃ গ


৩০. True will come out – এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

ক) ধর্মের কথা সবাই শোনে

খ) সত্যটা সবাই জানবে

গ) ধর্মের ঢাক আপনি বাজে

ঘ) সত্য প্রকাশ পাবেই

উত্তরঃ গ


তথ্যসূত্র:


১. স্বরোচিষ সরকার, বাংলাদেশের কোষগ্রন্থ ও শব্দসন্ধান (বাংলা একাডেমি, মে ২০১০)
২. সুব্রত বড়–য়া, বাংলা পরিভাষার সন্ধানে (বাংলা একাডেমি, মে ২০১৪)
৩. জালাল ফিরোজ, পার্লামেন্টারি শব্দকোষ (বাংলা একাডেমি, জুন ১৯৯৮)
৪. নীলিমা ইব্রাহিম, বশীর আল হেলাল ও অন্যান্য, প্রশাসনিক পরিভাষা (বাংলা একাডেমি, ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫)
৫. রফিকুল ইসলাম, পবিত্র সরকার ও মাহবুবুল হক, প্রমিত বাংলা ব্যবহারিক ব্যাকরণ (বাংলা একাডেমি, জানুয়ারি ২০১৪)
৬. রফিকুল ইসলাম ও পবিত্র সরকার, প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, প্রথম খণ্ড (বাংলা একাডেমি, ডিসেম্বর ২০১১)
৭. রফিকুল ইসলাম ও পবিত্র সরকার, প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, দ্বিতীয় খণ্ড (বাংলা একাডেমি, ডিসেম্বর ২০১১)
৮. মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ (ফেব্রুয়ারি১৯৮৩)
৯. নির্মল দাশ, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও তার ক্রমবিকাশ (বিশ্বভারতী ২০০০)
১০. কাজী দীন মুহম্মদ ও সুকুমার সেন, অভিনব ব্যাকরণ (ঢাকা ১৯৪৮)
১১. মুহম্মদ আবদুল হাই, ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব (১৯৬৪)
১২. ড. হায়াৎ মামুদ, ভাষাশিক্ষা : বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (২০০৪)
১৩. ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ভাষাবিধি : বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও প্রবন্ধ রচনা (আদিল ব্রাদার্স, জানুয়ারি ২০০৯)
১৪. ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (অগ্নি পাবলিকেশন্স, এপ্রিল ২০০৪)
১৫. ড. মুহম্মদ এনামুল হক ও শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (বাংলা একাডেমি, স্বরবর্ণ অংশ: ডিসেম্বর ১৯৭৪ ও ব্যঞ্জনবর্ণ অংশ: জুন ১৯৮৪)

BCS Bangla Lecture – 25

পারিভাষিক শব্দ ও নমুনা প্রশ্ন


পারিভাষিক শব্দ


পারিভাষিক শব্দ মানে বিশিষ্টার্থবোধক শব্দ। যে শব্দের দ্বারা সংক্ষেপে কোনো বিষয় সংশয়মুক্ত ও সুনির্দিষ্টভাবে ব্যক্ত করা যায় তাকে পরিভাষা বলে। পারিভাষিক শব্দকে অনূদিত শব্দ বলা হয়। বাংলা ভাষায় প্রচলিত বিদেশি শব্দের ভাবানুবাদক বাংলা প্রতিশব্দকে পারিভাষিক শব্দ (Technical Word) বলে।

সৈয়দ আলী আহসানের মতে, শব্দের প্রকৃতি ও বোধগম্যতার লিখে লক্ষ্য রেখে পরিভাষা নির্ণয় করতে হবে। যে বিদেশি শব্দগুলো অতিরিক্ত প্রয়োগে বাংলায় একটি সবল ও সুষ্ঠুরূপ নিয়েছে সেগুলো পরিবর্তন না করাই ভালো। পারিভাষিক শব্দের অর্থ মূলত পণ্ডিতগণের সম্মতিতে স্থিরকৃত হয়েছে এবং এগুলো দর্শন ও বিজ্ঞানের আলোচনার প্রয়োগ করলে অর্থবিভ্রান্তি ঘটে না।

যেমন: Oxyzen অম্লজান, File-নথি, Act-আইন, Radio-বেতার, Secretary-সচিব, Final-সমাপ্তি ইত্যাদি। নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু পারিভাষিক শব্দের উল্লেখ করা হলো।


A
ইংরেজীবাংলা অর্থ
  Absconderফেরারি/পালাতক
  Abeyanceস্থগিত
  Abrogationরদ/নিরাকরণ
  Abilityকর্মদক্ষতা
  Absoluteপরিপূর্ণ
  Acidঅম্ল
  Actবিধান/আইন
  Acting/In chargeভারপ্রাপ্ত
 Addressভাষণ/অভিভাষণ
  Ad hocতদর্থক/অনানুষ্ঠানিক
 Adjournment/ Pendingমূলতবি
 Affidavitহলফনামা
Agencyঅনুসংগঠন
Ageযুগ
Agentপ্রতিনিধি
Aidসাহায্য
Allianceমৈত্রীজোট
Allowanceভাতা
Alternativeবিকল্প
Altruismপরোপকারিতা
Allotment/Quotaবরাদ্দ
Autonomyস্বশাসন
Arbiter/Mediatorমধ্যস্থ/সালিস
Armoury/Arsenalঅস্ত্রাগার
Auditনিরীক্ষা
Auditionশ্রবণ
 Auctionনিলাম
 Ambiguousদ্ব্যার্থক/অস্পষ্ট
Amnestyরাজক্ষমা/ সাধারণ ক্ষমা
Award/Verdictরায়/রোয়েদাদ
Apprenticeশিক্ষানবিশ
Arrearবকেয়া
Archivesমহাফেজখানা
 Assassinationগুপ্তহত্যা
 Assemblyপরিষদ
Assignmentকার্যভার
Associationসংসদ/সমিতি
 Attestation/ Endorsementপ্রত্যায়ন
Attestedপ্রত্যায়িত
Armisticeযুদ্ধবিরতি
Aboriginalআদিবাসী
Aliasউপনাম/ওরফে
Accountancyহিসাববিদ্যা
Almanacপঞ্জিকা
Ancestorপূর্বপুরুষ
Apartheidবর্ণবৈষম্য
Attachmentক্রোক
Atheismনিরীশ্বরবাদ/ নাস্তিক্যবাদ
 Agoraমুক্তাঞ্চল
Apologyত্রুটিস্বীকার
Archaeologyপ্রত্নতত্ত্ব
Anthropologyনৃতত্ত্ব
Affairsবিষয়াবলি
Amicus curieআদালতের বন্ধু

 

B
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Bacteriaজীবাণু
Bailজামিন
Ballotগোপন ভোট
Bankruptদেউলিয়া
Bannerপ্রচারপত্র
Bondপ্রতিজ্ঞাপত্র/মুচলেকা
Balance sheetস্থিতিপত্র
Blue printপ্রতিচিত্র
Benchএজলাস
Billমূল্যপত্র
Bill of exchangeহুন্ডি/বিনিময় পত্র
Bill of ladingবহনপত্র
Brokerageদালালি
Bulletinপ্রজ্ঞাপন পত্র
Barrackসেনানিবাস
Blocশক্তিজোট
Blockadeঅবরোধ
Bonafideবিশ্বস্ত
Badgeতকমা/পট্ট
Basinঅববাহিকা
Bonusঅধিবৃত্তি
Barআইনজীবী সমাজ/পানশালা
Bookingসংরক্ষণ
Bourgeoisমধ্যবিত্তশ্রেণি
Bribeউৎকো

 

C
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Cabinetমন্ত্রিসভা/মন্ত্রিপরিষদ
Cadreপদালি
Campusঅঙ্গন/চত্বর
Campশিবির
Canonনীতি
Cargoজাহাজে বাহিত মাল
Cashierখাজাঞ্চি
Casualনৈমিত্তিক
Categoryপর্যায়
Call moneyতলবি টাকা
Caution moneyজামানত
Casting voteনির্ণায়ক ভোট
Chancellorআচার্য
Cease fireযুদ্ধবিরতি
Censorবিচারক
Censusআদমশুমারি
Charterসনদ
Civilদেওয়ানি
Civil actionদেওয়ানি মামলা
Civil societyসুশীল সমাজ
Civil warগৃহযুদ্ধ
Circularবিজ্ঞপ্তি/পরিপত্র
Clientমক্কেল
Columnস্তম্ভ
Commentaryভাষ্য
Commodityপণ্য
Constituencyনির্বাচনী এলাকা
Convocationসমাবর্তন
Concessionরেয়াত/সুবিধা
Consulate/Chanceryদূতাবাস/দূতালয়
Counselকৌসুলী
Councilপরিষদ
Criminal lawদণ্ডবিধি
Custodyজিম্মি/অভিরক্ষা/ প্রহরা/হাওলা
Civicsপৌরনীতি
Cosmopoliteবিশ্ব নাগরিক
Custom houseশুল্কভবন
Calorieতাপাঙ্ক
Creditঋণ
Consentসম্মতি
Contractorঠিকাদার
Coupঅভ্যুত্থান
Certificateপ্রত্যয়ন পত্র
Cordonবেষ্টনী
Chatখোশগল্প
Consultantউপদেষ্টা
Confessionস্বীকারোক্তি

 

D
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Dataউপাত্ত
Dead letterনির্লক্ষপত্র
Dead lockঅচলাবস্থা
Diagnosisরোগনির্ণয়
Diagramপরিলেখ
 Discount/ Commission/ Rebateবাট্টা/ছাড়
Debentureঋণপত্র
Depositআমানত
Dealerব্যাপারি
Delegateপ্রতিনিধি
Debitখরচ
Deed of giftদানপত্র
Deficitঘাটতি
Deputy/Proxyপ্রতিনিধি
Deputationপ্রেষণ/নিয়োজন
Diplomaউপাধিপত্র
Diplomatকূটনীতিক
Dividendলভ্যাংশ
Dockyardপোতাঙ্গন
Due dateনির্দিষ্ট তারিখ
Dutyশুল্ক/কর্তব্য
Duplicateদ্বিতীয়ক/প্রতিরূপ
Dormitoryছাত্রাবাস
Delinquencyঅপরাধ
Dairyগব্যশালা
Diaryরোজনামচা
Draftখসড়া
Disarmamentনিরস্ত্রীকরণ
Decreeআজ্ঞপ্তি/ত্যাগপত্র
Defaulterখেলাপি
Developingউন্নয়নশীল
Dispensaryঔষধপ্রদান কেন্দ্র
Depressionঅবসাদ

 

E
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Editingসম্পাদনা
Editionসংস্করণ
Emigrationপ্রবাসন
Employerকর্মকর্তা
Employeeকর্মচারী
Embargoঅবরোধ/নিষেধাজ্ঞা
Emporiumগঞ্জ/বড় দোকান
Equityন্যায়বোধ
Epitaphসমাধিলিপি
Enterpriseউদ্যোগ
Estateসম্পত্তি
Etiquetteশিষ্টাচার
Executiveনির্বাহী
Exhibitionপ্রদর্শনী
Excise dutyআবগারী শুল্ক
Extraditionবহিঃসমর্পণ
Eye washধোঁকা
Euphoriaসুখোচ্ছ্বাস/রমরমা
Evolutionবিবর্তন/ক্রমবিকাশ/অভিব্যক্তি
Electoral collegeনির্বাচকমণ্ডলী
Emblem/Symbol/ Tokenপ্রতীক
Entityসত্তা
Economyঅর্থব্যবস্থা
Envoyদূত
Existentialismঅস্তিত্ববাদ
Eclipseগ্রহণ

 

F
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Face valueঅভিহিত মূল্য
Farewellবিদায়
Franchiseভোটাধিকার
Fanaticismধর্মান্ধতা
Feminismনারী আন্দোলন
Fileনথি
Finalসমাপ্তি
Fiscalঅর্থবছর
Fiscal policyরাজস্বনীতি
Fibreতন্তু
Focusকেন্দ্র
Forecastপূর্বাভাস
Forgeryজালিয়াতি
Fourth stateচতুর্থ রাষ্ট্র (সংবাদপত্র)
Freightমাল ভাড়া/পরিবহন মাশুল
Floraউদ্ভিদকুল
Faunaপ্রণিকুল
Fuelজ্বালানি
Fashionরেওয়াজ/ঢং
Fleetবহর
Fundamentalistমৌলবাদী
Funeralশেষকৃত্য/দাফন
Feudalismসামন্তবাদ

 

G
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Genesisউৎপত্তি
Getupঅঙ্গসজ্জা
Gymnasiumব্যায়ামাগার
Glacierহিমবাহ
Goodsপণ্য/মালপত্র
Galleryদর্শকমঞ্চ
Goodwillসুনাম/শুভেচ্ছা
Granaryশস্যাগার
Grantঅনুদান
Green roomসাজঘর
Gazetteঘোষণাপত্র
Gypsyবেদে

 

H
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Hand bill/ Manifestoপ্রচার পত্র/ইশতেহার
Hand moneyনগদ টাকা
Hand outজ্ঞাপনপত্র
Handicraftহস্তশিল্প
Handloomতাঁত
Hemisphereগোলার্ধ
Headlandঅন্তরীপ
Hangarবিমানশালা
Handyকৌশলী
Hypothesisপ্রকল্প
Horizontalঅনুভূমিক
Hostageজিম্মি
Honoraryঅবৈতনিক/সম্মানসূচক
Housingআবাসন
Humanityমানবতা/মনুষ্যত্ব
Humanismমানবিকতা/মানবতাবাদ
Hydrogenউদ্যান
Hinterlandপশ্চাদভূূমি
Hearingশুনানি
Hospitalityআতিথেয়তা
Hymnধর্মসঙ্গীত/স্তুতিগান
Hierarchyআধিপত্য পরম্পরা

 

I
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Idealismভাববাদ
Ideologyমতাদর্শ/ভাবাদর্শ
Idiosyncrasyআচরণ/বৈশিষ্ট্য
Impeachmentঅভিসংশন
Immigrantঅভিবাসী/পরদেশবাসী
Imprisonmentকারাদণ্ড
Inaugurationউদ্বোধন
Incrementবৃদ্ধি
Interfereহস্তক্ষেপ করা
Interimমধ্যকালীন/অন্তবর্তীকালীন
Invoiceচালান/জায়
Inheritanceউত্তরাধিকার
Imitationঅনুকরণ
Ideaভাব
Isolationismবিচ্ছিন্নতাবাদ

 

J
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Jurisdictionএখতিয়ার
Justiceবিচারপতি
Judgmentরায়
Juryনির্ণায়ক সভা
Job workখুচরা কাজ
Jewelerমনিকর
Joint estateএজমালি সম্পত্তি

 

K
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Knaveryপ্রতারণা
Knightসম্ভ্রান্ত বংশীয়
Kinsmanজ্ঞাতি

 

L
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Laboratoryপরীক্ষাগার
Leafletপ্রচারপত্র
Leap yearঅধিবর্ষ
Leaseইজারা/পাট্টা
Letter of creditআকলপত্র/ঋণপত্র
Legislationবৈধ
Licenseঅনুমতিপত্র/অনুজ্ঞাপত্র
Liberalismউদারতাবাদ
Litigationমামলা
Lenderমহাজন
Laissez faireবাণিজ্য সংক্রান্ত অবাধ নীতি
Ledgerখতিয়ান
Legal
statement
জবানবন্দি
Light
year
আলোকবর্ষ

 

M
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Maliceবিদ্বেষ
Marketingবিপণন
Make upরূপসজ্জা
Martialসামরিক
Monogramঅভিজ্ঞান
Monopolyএকচেটিয়া
Mobileভ্রাম্যমাণ
Materialismবস্তুবাদ
Metropolisরাজধানী/মহানগরী
Mayorমহানাগরিক
Mintটাকশাল
Missileক্ষেপণাস্ত্র
Mobile courtভ্রাম্যমাণআদালত
Monetary policyমুদ্রানীতি
Marginউপান্ত
Merchantবণিক
Mandateআজ্ঞা
Mailডাক
Magistrateশাসক
Masonরাজমিস্ত্রী
Mirageমরীচিকা
Mutinyরাজবিদ্রোহ

 

N
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Nominationমনোনয়ন
North
star/Pole star
ধ্রুবতারা
Nebulaনীহারিকা
Nomadযাযাবর
Nurseryশিশুশালা
Nemesisনিয়তি
Nationalizedজাতীয়করণ
Nationalityজাতীয়তা
Nationalismজাতীয়তাবাদ
Nationalizationরাষ্ট্রায়ত্তকরণ
Notificationপ্রজ্ঞাপন

 

O
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Oathশপথ/হলফনামা
Obituaryমৃত্যুসংবাদ/শোকসংবাদ
Observatoryমানমন্দির
Ordinanceঅধ্যাদেশ
Ordnanceসমরাস্ত্র
Outputউৎপাদন
Outpostফাঁড়ি
Orbitকক্ষপথ
Ombudsmanন্যায়পাল
Overtimeঅধিকাল
Orientationপরিচিতি
Obsoleteসেকেলে/অপ্রচলিত
Order sheetআদেশপত্র
Optionইচ্ছা
Oasisমরূদ্যান
Oxygenঅম্লজান
Objectionআপত্তি

 

P
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Packageমোড়ক
Payeeপ্রাপক
Passportছাড়পত্র
Public worksগণপূর্ত
Polityরাষ্ট্রব্যবস্থা
Policyনীতি/বীমাপত্র/খসড়া
Portfolio/ Officeদপ্তর
Pen friendপত্রমিতা
Pacifismশান্তিবাদ
Pessimismদুঃখবাদ
Petitionদরখাস্ত
Plaintiffবাদি/ফরিয়াদি
Postageডাক মাশুল
Power houseবিদ্যুৎকেন্দ্র
Postmodernউত্তরাধুনিক
Pragmaticপ্রয়োগিক
Penaltyদণ্ড/জরিমানা
Penal codeদণ্ডবিধি
Perjuryমিথ্যা সাক্ষ্য
Paroleশর্তাধীন মুক্তি/ সাময়িক মুক্তি
Pestilenceমহামারি
Phonographগ্রামোফোন
Propagandaপ্রচারণা
Protocolচুক্তির খসড়া
Par valueসমমূল্য
Promissory noteপ্রত্যর্থপত্র
Provostপ্রাধ্যক্ষ
Proctorপ্ররক্ষক
Pen name/ Pseudonymছদ্মনাম
Phobiaআতঙ্ক
Photonআলোককণা
Photoআলোকতড়িৎ
Peonচাপরাশি
Posterপ্রাচীরপত্র
Profileপার্শ্বচিত্র
Plaza/ Campusচত্বর
Philanthropist/ Humanitarianমানবপ্রেমী/লোকহিতৈষী/ বিশ্বপ্রেমিক
Postscriptপুনশ্চ
Proletarianসর্বহারা/শ্রমিকশ্রেণি

 

Q
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Quackহাতুড়ে
Quotationমূল্যজ্ঞাপন/দরপত্র
Quarterlyত্রৈমাসিক
Quorumগণপূর্তি
Queueসারি
Quantumপরিমাণ

 

R
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Racialismজাতিবিদ্বেষ
Radiationবিকিরণ
Relativeআপেক্ষিক
Raceজাতি
Ratingনির্ধারণ
Rotationআবর্তন
Rangeএলাকা
Rankপদমর্যাদা
Rehabilitationপুনর্বাসন
Retaliationপাল্টা দুর্ব্যবহার
Receiptপ্রাপ্তি
Robotমানবযন্ত্র
Ransomমুক্তিপণ
Realismবাস্তববাদ
Recordদলিল/বিবরণী
Recoveryআদায়
Referendum/ Plebisciteগণভোট
Regulationপ্রবিধান/নিয়ম
Resolutionঅনুমোদন
Renaissanceনবজাগরণ
Revenueরাজস্ব
Rationalismযুক্তিবাদ
Retailখুচরা

 

S
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Sanitationস্বাস্থ্য-ব্যবস্থা
Secularধর্মনিরপেক্ষ
Secular stateলোকায়ত রাষ্ট্র
Secularismধর্মনিরপেক্ষতা
Secretaryসচিব
Seminarআলোচনা সভা
Sessionঅধিবেশন
Sanctionঅনুমোদন/মঞ্জুরি
Satelliteউপগ্রহ
Seizureআটক
Sentryপ্রহরী
Session courtদায়রা আদালত
Spokesmanমুখপাত্র
Specimenনমুনা
Submarineডুবোজাহাজ
Schemeপরিকল্প
Snackনাশতা
Sponsorপোষক
Stipendবৃত্তি
Subsidyসরকারি সাহায্য/ভর্তুকি
Suburbশহরতলি
Spyগুপ্তচর
Suitমামালা
Suiteপ্রকোষ্ঠ/কক্ষ
Suffrageভোটারাধিকার
Sketchনকশা
Stop overযাত্রা বিরতি
Scrutinyসমীক্ষা/নিরীক্ষা
Surplusউদ্ধৃত্ত
Selfieনিজস্বী
Suretyজামানত/জামিন
Sculptorভাস্কর
Supporterপোষক
Scheduleঅনুসূচি/তফসিল
Shiftপালা
Supersedeঅপসারণ
Summonsআহবানপত্র/সমন
Shorthandসাঁটলিপি
Superintendentঅধীক্ষক

 

T
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Taxশুল্ক
Tenancyপ্রজাস্বত্ব
Trusteeঅছি
Tenantপ্রজা/ভাড়াটে
Titleস্বত্ব/উপাধি
Technicalকারিগরি
Technical
words
পারিভাষিক শব্দ
Terminalপ্রান্তিক
Terminologyপরিভাষা
Town hallনগর ভবন
Tropicalগ্রীষ্মমণ্ডলীয়/ক্রান্তীয়
Telephoneদূরালাপনী
Tribunalবিশেষ আদালত
Trialবিচার
Tenderদরপত্র
Treasurerকোষাধ্যক্ষ
Therapyচিকিৎসা
Typeনমুনা
Tariffশুল্ক/মাশুল
Townshipউপশহর

 

U
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Ultimatumচরমপত্র
Usageপ্রথা
Uniformউর্দি/একরূপ
Unilateralএকতরফা
Universalবিশ্বজনীন
Universeবিশ্বজগৎ
Ultramodernঅত্যাধুনিক
Unionসমিতি
Up-to-dateহালনাগাদ
Utilitarianismউপযোগবাদ/হিতবাদ

 

V
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Vacationঅবকাশ
Vividউজ্জ্বল/প্রাণবন্ত
Visaপ্রবাসাজ্ঞা
Ventureপ্রচেষ্টা/ঝুঁকি
Verificationপ্রতিপাদন
Verticalউল্লম্ব/খাড়া
Vacuumশূন্য
Vendeeক্রেতা
Vendorবিক্রেতা
Vested interestকায়েমিস্বার্থ
Vitaminখাদ্যপ্রাণ
Viva voceমৌখিকপরীক্ষা
Vice versaতদ্বিপরীত
Vis-a-visমুখোমুখি
Vaccinationটিকা/টিকাদান
Verbalমৌখিক
Versusবনাম
Volunteerসেচ্ছাসেবী
Viceপাপ
Videদ্রষ্টব্য
Voucherরসিদ

 

W
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Waiterপরিচারক
Waiting roomবিশ্রামাগার
Workshopকারখানা
Warshipরণতরী
Warrant/Writআজ্ঞালেখ/পরোয়ানা
Witরসিকতা
Witnessসাক্ষী
Walk outসভাবর্জন
Wildernessমরুভূমি
Waste landপতিত জমি

 

X
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Xenophobia(বিদেশিদের ব্যাপারে) ভয় বা ঘৃণা
Xantippeঝগড়াটে মহিলা
Xeroxফটোকপি/ আলোকচিত্র প্রতিলিপি

 

Y
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Yardগজকাঠি/উঠান
Year endingবৎসরান্ত/সালতামামি
Year bookবর্ষপঞ্জি

 

Z
ইংরেজীবাংলা অর্থ
Zenithখমধ্য/সুবিন্দু
Zanyবোকালোক/বিদূষক
Zionism/Judaismইহুদিবাদ
Zodiacরাশিচক্র

 


নমুনা প্রশ্ন


১. Fashion শব্দের সঠিক পারিভাষিক শব্দ – 

ক) সজ্জা

খ) তকমা

গ) রেওয়াজ

ঘ) অভিনব

উত্তরঃ গ


২. Polity শব্দের সঠিক পারিভাষিক শব্দ – 

ক) রাজনীতি

খ) রাষ্ট্রব্যবস্থা

গ) নীতিজ্ঞতা

ঘ) বীমাপত্র

উত্তরঃ খ


৩. Bulletin শব্দের পারিভাষিক অর্থ কী?

ক) বহনপত্র

খ) প্রচারপত্র

গ) মুচলেকা

ঘ) প্রজ্ঞাপনপত্র

উত্তরঃ ঘ


৪. Emporium শব্দের পারিভাষিক অর্থ কী?

ক) প্রদর্শনী

খ) বড় দোকান

গ) উদ্যোগ

ঘ) পূর্বাভাস

উত্তরঃ খ


৫. Regulation শব্দের পারিভাষিক অর্থ কী?

ক) নির্ধারণ

খ) প্রতিকার

গ) প্রবিধান

ঘ) অনুমোদন

উত্তরঃ গ


৬. Sponsor শব্দের পারিভাষিক অর্থ কী?

ক) নমুনা

খ) পোষক

গ) পৃষ্ঠপোষক

ঘ) প্রতিনিধি

উত্তরঃ খ


৭. Humanism শব্দের পারিভাষিক অর্থ কী?

ক) মানবতা

খ) মনুষ্যত্ব

গ) মানবিকতা

ঘ) মানবপ্রেমী

উত্তরঃ গ


৮. Mason শব্দের বাংলা পরিভাষা – 

ক) কসাই

খ) কাঠমিস্ত্রী

গ) রাজমিস্ত্রী

ঘ) শ্রমিক

উত্তরঃ গ


৯. ‘Debit’ শব্দটির পারিভাষিক শব্দ কোনটি?

ক) দলিল

খ) খরচ

গ) ধার

ঘ) চুক্তি

উত্তরঃ খ


১০. ‘Act’ শব্দটির পারিভাষিক শব্দ কোনটি?

ক) আইন

খ) ভারপ্রাপ্ত

গ) অভিনয়

ঘ) চুক্তি

উত্তরঃ ক


১১. নিম্নের কোনটি পারিভাষিক শব্দ?

ক) খদ্দর

খ) দারোগা

গ) সচিব

ঘ) কুপন

উত্তরঃ গ


১২. ‘স্নাতক’ কোন জাতীয় শব্দ?

ক) তৎসম

খ) খাঁটি বাংলা

গ) পারিভাষিক

ঘ) অর্ধতৎসম

উত্তরঃ গ


১৩. বিদেশি শব্দের ভাবানুবাদমূলক প্রতিশব্দকে বলে –

ক) মিশ্র শব্দ

খ) বিদেশি শব্দ

গ) তদ্ভব শব্দ

ঘ) পারিভাষিক শব্দ

উত্তরঃ ঘ


১৪. ‘Alien’ শব্দটির পারিভাষিক শব্দ কেনটি?

ক) বিদেশি

খ) দেশি

গ) পরিচিত

ঘ) অনুগত

উত্তরঃ ক


১৫. ‘Data’ শব্দটির পারিভাষিক শব্দ কোনটি?

ক) দলিল

খ) খরচ

গ) ক্ষতি

ঘ) উপাত্ত

উত্তরঃ ঘ


১৬. ‘Apology’ শব্দটির বংলা পরিভাষা কোনটি?

ক) ত্রুটি  স্বীকার

খ) নিয়োগ

গ) আশ্রয়

ঘ) বর্জন

উত্তরঃ ক


১৭. ‘Farm’ শব্দের পরিভাষা কোনটি?

ক) দোকান

খ) খামার

গ) ব্যবসায়

ঘ) গুদাম

উত্তরঃ খ


১৮. ‘Art’ শব্দের বাংলা পারিভাষিক রূপ কোনটি?

ক) ছবি

খ) চিত্র

গ) কলা

ঘ) সবগুলোই

উত্তরঃ গ


১৯. ‘Arrear’ শব্দের পারিভাষিক শব্দ কোনটি?

ক) বকেয়া

খ) নির্দিষ্ট এলাকা

গ) জরিমানা

ঘ) বন্ধনী

উত্তরঃ ক


২০. ‘Arrear’ এর পারিভাষিক শব্দ কী?

ক) বার্তাবাহক

খ) অভিযোগ করে যে

গ) সুরকার

ঘ) ভণ্ডপণ্ডিত

উত্তরঃ গ


২১. ‘Farce’ শব্দটির পারিভাষিক শব্দ কোনটি?

ক) সঙ্কেত

খ) প্রহসন

গ) খামার

ঘ) গল্প

উত্তরঃ খ


২২. ‘Housing’-এর পরিভাষা-

ক) আবাসন

খ) আবাস

গ) বাস

ঘ) নিবাস

উত্তরঃ ক


২৩. Hydrologist-এর পরিভাষা

ক) জীববিজ্ঞানী

খ) পানিবিজ্ঞানী

গ) মৃত্তিকা বিজ্ঞানী

ঘ) মাহাকাশ বিজ্ঞানী

উত্তরঃ খ


২৪. Aboriginal-এর পরিভাষা কোনটি?

ক) কৃত্রিম

খ) অমৌলিক

গ) আদিবাসী

ঘ) আদি মানব

উত্তরঃ গ


২৫. Vertical পরিভাষা কোনটি?

ক) অনুভূমিক

খ) খাড়া

গ) দিগন্ত

ঘ) উল্লম্ব

উত্তরঃ ঘ


২৬. Opera এর পরিভাষা –

ক) নৃত্যনাট্য

খ) গীতিনাট্য

গ) নাট্যকাব্য

ঘ) কাব্যনাট্য

উত্তরঃ খ


২৭. Canvasy শব্দের অর্থ – 

ক) প্রচার

খ) ক্যাম্বিস কাপড়

গ) ভোট চাওয়া

ঘ) বিক্রি করা

উত্তরঃ ক


২৮. Scanner বলতে বোঝায় – 

ক) সূক্ষ্ম পরীক্ষা যন্ত্র

খ) ধানমাড়াই যন্ত্র

গ) মুদ্রণ যন্ত্র

ঘ) কম্পিউটার

উত্তরঃ ক


২৯. ‘Postage’ শব্দের বাংলা পরিভাষা – 

ক) ডাক-সংক্রান্ত

খ) ডাকমাশুল

গ) ঢাকছাপ

ঘ) ডাকটিকিট

উত্তরঃ খ


৩০. Excise duty এর পরিভাষা –

ক) অতিরিক্ত কর

খ) আবগারি শুল্ক

গ) অর্পিত দায়িত্ব

ঘ) অতিরিক্ত দায়িত্ব

উত্তরঃ খ


৩১. Bill এর যথার্থ বাংলা পারিভাষিক শব্দ –

ক) দরপত্র

খ) পরিপত্র

গ) মূল্যপত্র

ঘ) খসড়াপত্র

উত্তরঃ গ


৩২. ‘True Copy’ শব্দের যথার্থ পরিভাষা হলো –

ক) নকল

খ) অনুকরণ

গ) অনুলিপি

ঘ) প্রতিলিপি

উত্তরঃ গ


৩৩. Thesaurus-এর পরিভাষা কোনটি?

ক) কোষগ্রন্থ

খ) অভিধান

গ) সমার্থ শব্দকোষ

ঘ) বিশ্বকোষ

উত্তরঃ গ


৩৪. Bloc এর যথার্থ পরিভাষিক শব্দ – 

ক) অবরোধ

খ) নির্দিষ্টসংখ্যক অট্টালিকা

গ) নির্ধারিত এলাকা

ঘ) শক্তিজোট

উত্তরঃ ঘ


৩৫. Notification এর পরিভাষা –

ক) স্মারক

খ) প্রজ্ঞাপন

গ) বিজ্ঞাপন

ঘ) বিজ্ঞপ্তি

উত্তরঃ খ


৩৬. ‘Epicurism’ এর যথার্থ পরিভাষা – 

ক) নিয়তিবাদ

খ) ভোগবাদ

গ) অস্তিত্ববাদ

ঘ) পরিবেশবাদ

উত্তরঃ খ


৩৭. Modernism এর পরিভাষা –

ক) আধুনিক

খ) আধুনিকতা

গ) আধুনিকতাবাদ

ঘ) আধুনিকবাদ

উত্তরঃ গ


৩৮. ‘Key Note’ – এর যথার্থ –

ক) গুরুত্বপূর্ণ

খ) চাবিকাঠি

গ) মূলভাব

ঘ) টীকা-টিপ্পনি

উত্তরঃ গ


৩৯. ‘Vivid’ শব্দের বঙ্গানুবাদ হলো –

ক) বিবিধ

খ) প্রাণবন্ত

গ) বিস্তৃত

ঘ) ব্যাপ্ত

উত্তরঃ খ


৪০. ‘Agora’ শব্দের অর্থ –

ক) মুদিখানা

খ) পন্যাগার

গ) পণ্য

ঘ) মুক্তাঞ্চল

উত্তরঃ ঘ

 

BCS Bangla Lecture – 24

বাচ্য, উক্তি, বিরাম চিহ্ন ও নমুনা প্রশ্ন


বাচ্য


একটি বাক্যকে আমরা বিভিন্নভাবে প্রকাশ করতে পারি। বাক্যের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশভঙ্গিকে বাচ্য (Voice) বলে। বাচ্য প্রধানত তিন প্রকার:

১. কর্তৃবাচ্য

২. কর্মবাচ্য

৩. ভাববাচ্য।

 

১. কর্তৃবাচ্য : যে বাক্যে কর্তার অর্থ-প্রাধান্য রক্ষিত হয় এবং ক্রিয়াপদ কর্তার অনুসারী হয়। যেমন – ছাত্ররা অঙ্ক করছে।
কর্তৃবাচ্যে ক্রিয়াপদ সর্বদাই কর্তার অনুসারী হয়।
কর্তৃবাচ্যে কর্তায় প্রথমা/শূন্য ও ষষ্ঠী বিভক্তি এবং কর্মে দ্বিতীয়া, ষষ্ঠী ও শূন্য বিভক্তি হয়। যথা – শিক্ষক ছাত্রদের/ছাত্রকে পড়ান। রোগী পথ্য সেবন করে।

২. কর্মবাচ্য: যে বাক্যে কর্মের সাথে ক্রিয়ার সম্বন্ধ প্রধানভাবে প্রকাশিত হয়। যেমন – শিকারি কর্তৃক ব্যাঘ্র নিহত হয়েছে।
কর্মবাচ্যে ক্রিয়াপদ কর্মের অনুসারী হয়।
কর্মবাচ্যে কর্মে প্রথমা/শূন্য এবং কর্তায় তৃতীয়া বিভক্তি ব্যবহৃত হয়। যথা – আলেকজান্ডার কর্তৃক/দ্বারা পারস্য দেশ বিজিত হয়। চোর ধরা পড়েছে।
কর্মবাচ্যে কখনো কখনো কর্মে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যথা – আসামিকে জরিমানা করা হয়েছে। মেহেদী কর্তৃক জিয়াকে ডাকা হল।

৩. ভাববাচ্য: যে বাচ্যে কর্ম থাকে না এবং বাক্যে ক্রিয়ার অর্থই বিশেষভাবে ব্যক্ত হয়। যেমন – আমার খাওয়া হবে না।
ভাববাচ্যের ক্রিয়ার কর্ম থাকে না। যেমন – তার ঘুমানো হল না।
ভাববাচ্যের ক্রিয়া সর্বদাই নাম পুরুষের হয়। যেমন – আমার খাওয়া হল না। তার খাওয়া হল।
ভাববাচ্যের কর্তায় ষষ্ঠী, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া ও সপ্তমী বিভক্তি প্রযুক্ত হয়। যেমন – আমার যেতে হবে। আমাকে যেতে হবে। আমায় যেতে হবে। রাজু কর্তৃক যাওয়া হল না।
কখনো কখনো ভাববাচ্যে কর্তা উহ্য থাকে, কর্ম দ্বারাই ভাববাচ্য গঠিত হয়। যেমন – এ বার ট্রেনে ওঠা যাক। কোথা থেকে আসা হচ্ছে?
মূল ক্রিয়ার সঙ্গে সহযোগী ক্রিয়ার সংযোগ ও বিভিন্ন অর্থে ভাববাচ্যের ক্রিয়া গঠিত হয়। যেমন – এ ব্যাপারে আমাকে দায়ী করা চলে না। এ রাস্তা আমার চেনা নেই।

কর্মকর্তৃবাচ্য
যে বাক্যে কর্মপদই কর্তৃস্থানীয় হয়ে বাক্য গঠন করে তাকে কর্মকর্তৃবাচ্যের বাচ্য বলা হয়। যেমন – কাজটা ভাল দেখায় না। বাঁশি বাজে এ মধুর লগনে। সুতি কাপড় অনেক দিন টেকে।

বাচ্য পরিবর্তন
কতৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্য
কর্তৃবাচ্যের বাক্যকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তিত করতে হলে কর্তায় তৃতীয়া, কর্মে প্রথমা/শূন্য বিভক্তি হয় এবং ক্রিয়া কর্মের অনুসারী হয়।কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়া অকর্মক হলে সেই বাক্যের কর্মবাচ্য হয় না।

কর্তৃবাচ্য: বিদ্বানকে সকলেই আদর করে।
কর্মবাচ্য: বিদ্বান সকলের দ্বারা আদৃত হন।

কর্তৃবাচ্য: খোদা তায়ালা বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন।
কর্মবাচ্য: বিশ্বজগৎ খোদা তায়ালা কর্তৃক সৃষ্ট হয়েছে।

কর্তৃবাচ্য: মুবারক পুস্তক পাঠ করছে।
কর্মবাচ্য: মুবারক কর্তৃক পুস্তক পঠিত হচ্ছে।

কর্তৃবাচ্য থেকে ভাববাচ্য
কর্তৃবাচ্যের বাক্যকে ভাববাচ্যে পরিবর্তিত করতে হলে কর্তায় ষষ্ঠী বা দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় এবং ক্রিয়া নাম পুরুষের হয়।

কর্তৃবাচ্য: আমি যাব না।
ভাববাচ্য: আমার যাওয়া হবে না।

কর্তৃবাচ্য: তুমিই ঢাকা যাবে।
ভাববাচ্য: তোমাকেই ঢাকা যেতে হবে।

কর্তৃবাচ্য: তোমরা কখন এলে?
ভাববাচ্য: তোমাদের কখন আসা হল?

কর্মবাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্য
কর্মবাচ্যের বাক্যকে কর্তৃবাচ্যে পরিবর্তিত করতে হলে কর্তায় প্রথমা, কর্মে দ্বিতীয়া বা শুন্য বিভক্তি প্রযুক্ত হয় এবং ক্রিয়া কর্তা অনুযায়ী হয়।

কর্মবাচ্য: দস্যুদল কর্তৃক গৃহটি লুণ্ঠিত হয়েছে।
কর্তৃবাচ্য: দস্যুদল গৃহটি লুণ্ঠন করেছে।

কর্মবাচ্য: হালাকু খাঁ কর্তৃক বাগদাদ বিধ্বস্ত হয়।
কর্তৃবাচ্য: হালাকু খাঁ বাগদাদ ধ্বংস করেন।

ভাববাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্য
ভাববাচ্যের বাক্যকে কর্তৃবাচ্যে রূপান্তরিত করতে হলে কর্তায় প্রথমা বিভক্তি প্রযুক্ত হয় এবং ক্রিয়া কর্তায় অনুসারী হয়।

ভাববাচ্য: তোমাকে হাঁটতে হবে।
কর্তৃবাচ্য: তুমি হাঁটবে।

ভাববাচ্য: এবার একটি গান করা হোক।
কর্তৃবাচ্য: এবার (তুমি) একটি গান কর।

ভাববাচ্য: তার যেন আসা হয়।
কর্তৃবাচ্য: সে যেন আসে।


উক্তি


কোনো কথকের বাককর্মের নামকে উক্তি (Narration) বলে। উক্তি দু প্রকার:

১. প্রত্যক্ষ উক্তি: যে বাক্যে বক্তার কথা অবিকল উদ্ধৃত হয় তাকে প্রত্যক্ষ উক্তি বলে। যথা – তিনি বললেন, “বইটা আমার দরকার”।

২. পরোক্ষ উক্তি: যে বাক্যে বক্তার উক্তি অন্যের জবানিতে রূপান্তরিতভাবে প্রকাশিত হয় তাকে পরোক্ষ উক্তি বলা হয়। যথা – তিনি বললেন যে বইটা তাঁর দরকার।

উক্তি পরিবর্তন
প্রত্যক্ষ উক্তিতে বক্তার বক্তব্যটুকু উদ্ধরণ চিহ্নের (“ ”) অন্তর্ভুক্ত থাকে। পরোক্ষ উক্তিতে উদ্ধারণ চিহ্ন লোপ পায়। প্রথম উদ্ধরণ চিহ্ন স্থানে ‘যে’ এই সংযোজক অব্যয়টি ব্যবহার করতে হয়।

বাক্যের সঙ্গতি রক্ষার জন্য উক্তিতে ব্যবহৃত বক্তার পুরুষের পরিবর্তন করতে হয়।
প্রত্যক্ষ উক্তি: খোকা বলল, “আমার বাবা বাড়ি নেই।”
পরোক্ষ উক্তি: খোকা বলল যে, তার বাবা বাড়ি নেই।

বাক্যের অর্থ-সঙ্গতি রক্ষার জন্য সর্বনামের পরিবর্তন করতে হয়।
প্রত্যক্ষ উক্তি: রশিদ বলল, “আমার ভাই আজই ঢাকা যাচ্ছেন।”
পরোক্ষ উক্তি: রশিদ বলল যে, তার ভাই সে দিনই ঢাকা যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষ উক্তির কালবাচক পদকে পরোক্ষ উক্তিতে অর্থানুযায়ী করতে হয়।
প্রত্যক্ষ উক্তি: শিক্ষক বললেন, “কাল তোমাদের ছুটি থাকবে।”
পরোক্ষ উক্তি: শিক্ষক বললেন যে, পর দিন আমাদের ছুটি থাকবে।

প্রত্যক্ষ উক্তির বাক্যের সর্বনাম এবং কালসূচক শব্দের পরোক্ষ উক্তিতে নিম্নলিখিত পরিবর্তন সংঘটিত হয় –

পত্যক্ষপরোক্ষ
এইসেই
ইহাতাহা
সে
আজসে দিন
এখানেসেখানে
আগামী কালপর দিন
গত কালআগের দিন
গত কল্যপূর্ব দিন
ওখানেঐখানে
এখনতখন

অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য পরোক্ষ উক্তিতে ক্রিয়াপদের পরিবর্তন হতে পারে। যেমন –

প্রত্যক্ষ উক্তি: রহমান বলল, “আমি এক্ষুনি আসছি।”
পরোক্ষ উক্তি: রহমান বলল যে, সে তক্ষুণি যাচ্ছে।

আশ্রিত খণ্ডবাক্যের ক্রিয়ার কাল পরোক্ষ উক্তিতে সব সময় মূল বাক্যাংশের ক্রিয়ার কালের ওপর নির্ভর করে না। যেমন –

প্রত্যক্ষ উক্তি: ছেলে লিখেছিল, “শহরে খুব গরম পড়েছে।”
পরোক্ষ উক্তি: ছেলে লিখেছিল যে, শহরে খুব গরম পড়েছিল।

প্রত্যক্ষ উক্তিতে কোনো চিরন্তন সত্যের উদ্ধৃতি থাকলে পরোক্ষ উক্তিতে কালের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন –

প্রত্যক্ষ উক্তি: শিক্ষক বললেন, “পৃথিবী গোলাকার।”
পরোক্ষ উক্তি: শিক্ষক বললেন যে, পৃথিবী গোলাকার।

প্রশ্নবোধক, অনুজ্ঞাসূচক ও আবেগসূচক প্রত্যক্ষ উক্তিকে পরোক্ষ উক্তিতে পরিবর্তন করতে হলে প্রধান খÐবাক্যের ক্রিয়াকে ভাব অনুসারে পরিবর্তন করতে হয়। যেমন –
প্রশ্নবোধক বাক্য

প্রত্যক্ষ উক্তি: শিক্ষক বললেন, “তোমরা কি ছুটি চাও?”
পরোক্ষ উক্তি: আমাদের ছুটি চাই কি না, শিক্ষক তা জিজ্ঞাসা করলেন।
প্রত্যক্ষ উক্তি: বাবা বললেন, “কবে তোমাদের ফল বের হবে?”
পরোক্ষ উক্তি: আমাদের ফল কবে বের হবে, বাবা তা জানতে চাইলেন।

অনুজ্ঞাসূচক বাক্য

প্রত্যক্ষ উক্তি: হামিদ বলল, “তোমরা আগামী কাল এসো।”
পরোক্ষ উক্তি: হামিদ তাদের পর দিন আসতে বলল।
প্রত্যক্ষ উক্তি: তিনি বললেন, “দয়া করে ভেতরে আসুন”।
পরোক্ষ উক্তি: তিনি আমাকে ভেতরে যেতে অনুরোধ করলেন।

আবেগসূচক বাক্য

প্রত্যক্ষ উক্তি: লোকটি বলল, “বাহ! পাখিটি তো চমৎকার।”
পরোক্ষ উক্তি: লোকটি আনন্দের সাথে বলল যে, পাখিটি চমৎকার।
প্রত্যক্ষ উক্তি: সে দুখের সাথে বলল, “শীতে আমি কতই না কষ্ট পাচ্ছি।”
পরোক্ষ উক্তি: সে দুখের সাথে বলল যে, তার শীতে বড়ই কষ্ট হচ্ছে।

 

 


বিরাম চিহ্ন


বাক্যের অর্থ সুস্পষ্টভাবে বোঝার জন্য বাকের মাঝে বা বাক্যের সমাপ্তিতে কিংবা বাক্যে আবেগ, হর্ষ, বিষাদ, জিজ্ঞাসা ইত্যাদি প্রকাশ করার উদ্দেশ্য বাক্যগঠনে যেভাবে বিরতি দিতে হয় এবং লেখার সময় বাক্যের মধ্যে তা দেখাবার জন্য যে সব সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে যতি, ছেদ বা বিরামচিহ্ন বলে।

যতিচিহ্নের নাম, আকৃতি এবং তাদের বিরতিকালের পরিমাণ:

যতি চিহ্নের নামআকৃতিবিরতিকালের পরিমাণ
কমা (পাদচ্ছেদ),১ বলতে যে সময় প্রয়োজন
সেমিকোলন (অর্ধচ্ছেদ);১ বলার দ্বিগুণ সময়
দাঁড়ি (পূর্ণচ্ছেদ)এক সেকেন্ড
জিজ্ঞাসা চিহ্ন?
আবেগসূচক চিহ্ন!
কোলন:
কোলন ড্যাস:-
ড্যাস
হাইফেন/যোজন চিহ্নথামার প্রয়োজন নেই।
ইলেক/লোপ চিহ্নথামার প্রয়োজন নেই।
উদ্ধরণ চিহ্ন“ ”‘এক’ উচ্চারণে যে সময় লাগে।
ব্রাকেট/বন্ধনী চিহ্ন( ) { } [ ]থামার প্রয়োজন নেই।

 

বিরাম চিহ্নের ব্যবহার:

১. কমা বা পাদচ্ছেদ (,)

ক) বাক্য পাঠকালে সুস্পষ্টতা বা অর্থ-বিভাগ দেখাবার জন্য যেখানে স্বল্পবিরতির প্রয়োজন সেখানে কমা ব্যবহৃত হয়। যেমন – সুখ চাও, সুখ পাবে পরিশ্রমে।

খ) পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত একধিক বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ এক সঙ্গে বসলে শেষ পদটি ছাড়া বাকি সবগুলোর পরেই কমা বসবে। যেমন – সুখ, দুঃখ, আশা, নৈরাশ্য একই মালিকার পুষ্প।

গ) সম্বোধনের পরে কমা বসাতে হয়। যেমন – রশিদ, এ দিকে এসো। ওহে মাঝি, আমাকে নিয়ে যাও।

ঘ) জটিল বাক্যের অন্তর্গত প্রত্যেক খণ্ডবাক্যের পরে কমা বসবে। যেমন – কাল যে লোকটি এসেছিল, সে আমার পূর্বপরিচিত।

ঙ) উদ্ধরণ চিহ্নের পূর্বে (খÐবাক্যের শেষে) কমা বসাতে হবে। যেমন – সাহেব বললেন, “ছুটি পাবেন না।”

চ) মাসের তারিখ লিখতে বার ও মাসের পর কমা বসবে। যেমন – ১৬ পৌষ, বুধবার, ১৩৯৯ সন।

ছ) বাড়ি বা রাস্তার নম্বরের পরে কমা বসবে। যেমন – ৬৮, নবাবপুর রোড, ঢাকা – ১০০০।

জ) নামের পরে ডিগ্রিসূচক পরিচয় সংযোজিত হলে সেগুলোর প্রত্যেকটির পরে কমা বসবে। যেমন – ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, এম, এ, পি-এইচ, ডি।

২. সেমিকোলন বা অর্ধচ্ছেদ (;)

(ক) কমা অপেক্ষা বেশি বিরতির প্রয়োজন হলে সেমিকোলন বসে। যথা – সংসারের মায়াজালে আবদ্ধ আমরা; এ মায়ার বাঁধন কি সত্যিই দুশ্ছেদ্য?

(খ) দুটি বাক্যের মাঝে নিকট সম্পর্ক থাকলে অথবা একাধিক স্বাধীন বাক্যকে একটি বাক্যে লিখলে সেগুলোর মাঝখানে সেমিকোলন বসে। যেমন – তিনি শুধু তামাশা দেখিতেছিলেন; কোথাকার জল কোথায় গিয়া পড়ে।

(গ) বক্তব্য স্পষ্ট করার জন্য সমজাতীয় বাক্য পাশাপাশি প্রতিস্থাপন করলে সেমিকোলন বসে। যেমন: বৃদ্ধ তাহারাই – যাহারা মায়াচ্ছন্ন নব মানবের অভিনব জয়যাত্রায় শুধু বোঝা নয়, বিঘ্ন; শতাব্দীর নব যাত্রীর চলার ছন্দে ছন্দ মিলাইয়া যাহারা কুচকাওয়াজ করিতে জানে না; পারে না; যাহারা জীব হইয়াও জড়; যাহারা অটল সংস্কারের পাষাণ-স্তূপ আঁকড়িয়া পড়িয়া আছে।

৩. দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ (।)
বাক্যের পরিসমাপ্তি বোঝাতে দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ ব্যবহার করতে হয়। যথা – শীতকালে এ দেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে।

৪. প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?)
বাক্যে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে বাক্যের শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে। যেমন – তুমি কখন এলে? সে কি যাবে?

৫. আবেগসূচক চিহ্ন (!)
হৃদয়াবেগ প্রকাশ করতে হলে (!) চিহ্নটি বসে। যেমন – আহা! কী চমৎকার দৃশ্য। কী সুন্দর জিনিস মাইরি!

৬. কোলন (:)
একটি অপূর্ণ বাক্যের পরে অন্য একটি বাক্যের অবতারণা করতে হলে কোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন সভায় সাব্যস্ত হল: এক মাস পরে নতুন সভাপতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

৭. ড্যাস চিহ্ন ( – )

(ক) যৌগিক ও মিশ্রবাক্যে পৃথক ভাবাপন্ন দুই বা তার বেশি বাক্যের সমন্বয় বা সংযোগ বোঝাতে ড্যাস চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন: তোমরা দরিদ্রের উপকার কর – এতে তোমাদের সম্মান যাবে না – বাড়বে।

(খ) কোনো কথার দৃষ্টান্ত বা বিস্তার বোঝাতে। যেমন: আমার একমাত্র সম্বল – আপনাদের তরুণদের প্রতি আমার অপরিসীম ভালোবাসা, প্রাণের টান।

(গ) বাক্য অসম্পূর্ণ থাকলে বাক্যের শেষে। যেমন: বাবা গর্জিয়া উঠিলেন, “বটে রে – ”

(ঘ) গল্পে-উপন্যাসে প্রসঙ্গের পরিবর্তন বা ব্যাখ্যায়। যেমন: শিশির – না, এ নামটা আর ব্যবহার করা চলিল না।

(ঙ) নাটক বা উপন্যাসে সংলাপের আগে। যেমন:  – হ গীত না তর মাথা।  – অপরাধ স্বীকার করলে?

৮. কোলন ড্যাস (: -)
উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগ করতে হলে কোলন এবং ড্যাস চিহ্ন এক সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। যেমন – পদ পাঁচ প্রকার: – বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।

৯. হাইফেন বা সংযোগ চিহ্ন (-)
শব্দ সংযোগের ক্ষেত্রে এবং সমাসবদ্ধ পদের অংশগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেখাবার জন্য হাইফেনের ব্যবহার হয়। যেমন – এ আমাদের শ্রদ্ধা-অভিনন্দন, আমাদের প্রীতি-উপহার।

১০. ইলেক (’) বা লোপ চিহ্ন
কোনো বর্ণ বিশেষের লোপ বোঝাতে বিলুপ্ত বর্ণের জন্য (’) লোপচিহ্ন দেওয়া হয়। যেমন – মাথার ’পরে জ্বলছে রবি (’পরে = ওপরে)। পাগড়ি বাঁধা যাচ্ছে কা’রা? (কা’রা = কাহারা)

১১. উদ্ধরণ চিহ্ন (“ ”)
বক্তার প্রত্যক্ষ উক্তিকে এই চিহ্নের অন্তর্ভূক্ত করতে হয়। যথা – শিক্ষক বললেন, “গতকাল জাপানে ভয়ানক ভূমিকম্প হয়েছে।”

১২. ব্রাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন ( ), { }, [ ]
এই তিনটি চিহ্নই গণিতশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়। তবে প্রথম বন্ধনীটি বিশেষ ব্যাখ্যামূলক অর্থে সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন – ত্রিপুরায় (বর্তমানে কুমিল্লা) তিনি জন্মগ্রহন করেন।
ব্যাকরণিক চিহ্ন

বিশেষভাবে ব্যাকরণে নিম্নলিখিত চিহ্নগুলো ব্যবহৃত হয়। যেমন –

  • ধাতু বোঝাতে (√) চিহ্ন : স্থা = স্থা ধাতু।
  • পরবর্তী শব্দ থেকে উৎপন্ন বোঝাতে (<) চিহ্ন: জাঁদরেল < জেনারেল। (উৎস চিহ্ন)
  • পূর্ববর্তী শব্দ থেকে উৎপন্ন বোঝাতে (>) চিহ্ন: গঙ্গা > গাঙ। (থেকে চিহ্ন)
  • সমানবাচক বা সমস্তবাচক বোঝাতে সমান (=) চিহ্ন: নর ও নারী = নরনারী।

 


নমুনা প্রশ্ন


১. বক্তব্য স্পষ্ট করার জন্য সমজাতীয় বাক্য পাশাপাশি প্রতিস্থাপন করলে কোন বিরাম চিহ্ন বসে?

ক) কমা (,)

খ) দাঁড়ি (।)

গ) সেমিকোলন (;)

ঘ) ড্যাস (-)

উত্তরঃ গ


২. একটি অপূর্ণ বাক্যের পরে অন্য একটি বাক্যের অবতারণা করতে হলে কোন বিরাম চিহ্ন বসে?

ক) ড্যাস (-)

খ) সেমিকোলন (;)

গ) কোলন (:)

ঘ) কোলন ড্যাস (:-)

উত্তরঃ গ


৩. আমি তাহার হাতখানি তুলিয়া ধরিয়া বলিলাম হৈম আমার উপর রাগ করিয়ো না আমি তোমার সত্যে কখনো আঘাত করিব না আমি যে তোমার সত্যের বাঁধনে বাঁধা – বাক্যটিতে কয়টি বিরাম চিহ্ন আছে?

ক) ৪ টি

খ) ৫ টি

গ) ৬ টি

ঘ) ৭ টি

উত্তরঃ গ


৪. পূর্ণ বাক্যের শেষে কয়টি বিরাম চিহ্ন বসে?

ক) ২ টি

খ) ৩ টি

গ) ৪ টি

গ) ১ টি

উত্তরঃ খ


৫. বক্তার মূলভাব ঠিক রেখে বক্তব্য পরিবর্তন করাকে কী বলে?

ক) বাচ্য পরিবর্তন

খ) উক্তি পরিবর্তন

গ) বাক্য পরিবর্তন

ঘ) পদ পরিবর্তন

উত্তরঃ গ


৬. ‘এবার একটি গান হোক।’ এটি কোন বাচ্যের উদাহরণ?

ক) কর্তৃবাচ্য

খ) কর্মবাচ্য

গ) ভাববাচ্য

ঘ) কর্ম-কর্র্তৃবাচ্য

উত্তরঃ গ


৭. দুইবা তার বেশি বাক্যের সমন্বয় বোঝাতে কোন চিহ্ন ব্যবহৃত হয়?

ক) ড্যাশ

খ) কোলন

গ) কমা

ঘ) হাইফেন

উত্তরঃ ক


৮. এক বলার সমপরিমাণ থামতে হয় কোন বিরাম চিহ্নে?

ক) কোলন

খ) হাইফেন

গ) কমা

ঘ) লোপ চিহ্ন

উত্তরঃ গ


৯. ‘এক বলার দ্বিগুণ সময়’ বিরতিকাল কোন যতি চিহ্নের?

ক) দাঁড়ি

খ) কমা

গ) হাইফেন

ঘ) সেমিকোলন

উত্তরঃ ঘ


১০. বাক্যে বিধেয় বিশেষণ কোথায় বসে?

ক) প্রথমে

খ) শেষে

গ) বিশেষণের পূর্বে

ঘ) বিশেষ্যের পরে

উত্তরঃ ঘ


১১. ‘না’ শব্দটি বাক্যে কোথায় বসে?

ক) সমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে

খ) অসমাপিকা ক্রিয়ার পরে

গ) সমাপিকা ক্রিয়ার পরে

ঘ)বিশেষণের পরে

উত্তরঃ গ


১২. বাক্যে ক্রিয়ার অর্থেই বিশেষভাবে ব্যক্ত হয় কোন বাচ্যে?

ক) ভাববাচ্যে

খ) কর্মবাচ্যে

গ) কর্তৃবাচ্যে

ঘ) কর্ম কর্তৃবাচ্যে

উত্তরঃ ক


১৩. ক্রিয়াপদ সর্বদাই কর্তার অনুসারী হয় কোন বাচ্যে?

ক) কর্তৃবাচ্যে

খ) কর্মবাচ্যে

গ) ভাববাচ্যে

ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্যে

উত্তরঃ ক


১৪. ‘বাঁশি বাজে ঐ মধুর লগনে’ এটা কোন বাচ্যের উদাহরণ?

ক) ভাববাচ্য

খ) কর্মবাচ্য

গ) কর্তৃবাচ্য

ঘ) কর্ম-কর্তৃবাচ্য

উত্তরঃ ঘ


১৫. ভাববাচ্যের বাক্যকে কর্তৃবাচ্যে রুপান্তরিত করলে কর্তায় কোন বিভক্তি হয়?

ক) ষষ্ঠী

খ) দ্বিতীয়া

গ) তৃতীয়া

ঘ) প্রথমা

উত্তরঃ ঘ


১৬. বক্তার কথা যে ভাবে বিবৃত হয়, ঠিক সে ভাবে বলাকে কী উক্তি বলে?

ক) পরোক্ষ উক্তি

খ) কটূক্তি

গ) প্রত্যক্ষ উক্তি

ঘ) উক্তি

উত্তরঃ গ


১৭. অর্থ-সঙ্গতি রক্ষার জন্য পরোক্ষ উক্তিতে কোন পদের পরিবর্তন হতে পারে?

ক) অব্যয়

খ) বিশেষ্য

গ) ক্রিয়া

ঘ) বিশেষণ

উত্তরঃ গ


১৮. হামিদ বলল, ‘তোমরা আগামী কাল এসো।’ এ বাক্যের পরোক্ষ উক্তি হবে-

ক) হামিদ তাদের পরদিন আসতে বলল।

খ) হামিদ তাদের পরদিন যেতে বলল।

গ) হামিদ তাদের আগামী কাল যেতে বলল।

ঘ) ক+খ

উত্তরঃ ঘ


১৯. উক্তি পরিবর্তন ব্যাকরণের কোন অংশে আলোচিত হয়?

ক) অর্থতত্ত্ব

খ) বাক্যতত্ত্ব

গ) রূপতত্ত্ব

ঘ) শব্দতত্ত্ব

উত্তরঃ খ


২০. শিক্ষক বললেন, ‘সদা সত্য কথা বলবে’। এর পরোক্ষ উক্তি কোনটি?

ক) শিক্ষক সদা সত্য কথা বলতে উপদেশ দিলেন

খ) শিক্ষক উপদেশ দিলেন যে তারা যেন সত্য কথা বলে

গ) তারা সত্য কথা বলতে শিক্ষক উপদেশ দিলেন

ঘ) শিক্ষক উপদেশ দিলেন তাদের সত্য কথা বলার জন্য

উত্তরঃ ক


 

BCS Bangla Lecture – 22

বাক্যের গুণ, বাক্যের অংশ, বাক্য প্রকরণ, বাক্য রূপান্তর, বাক্যে পদ সংস্থাপনার ক্রম, নমুনা প্রশ্ন

বাক্য

যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তাকে বাক্য বলে। ভাষার মূল উপকরণ বা প্রাণ বাক্য এবং বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ। কতগুলো পদের সমষ্টিতে বাক্য গঠিত হলেও যে কোনো পদসমষ্টিই বাক্য নয়। বাক্যের বিভিন্ন পদের মধ্য পারস্পারিক সম্পর্ক বা অন্বয় থাকা আবশ্যক। এ ছাড়াও বাক্যের অন্তর্গত বিভিন্ন পদ দ্বারা মিলিতভাবে একটি অখণ্ড ভাব পূর্ণরূপে প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন তবেই তা বাক্য হবে। ভাষার বিচারে বাক্যের মধ্যে তিনটি গুণ থাকা আবশ্যক। এই তিনটি গুণের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাক্যকে সার্থক বাক্য বলা হয়।

বাক্যের গুণ

১. আকঙ্ক্ষা: বাক্যের অর্থ পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্য পদ শোনার ইচ্ছাকে আকঙ্ক্ষা বলে। যেমন- ‘চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে’ এতটুকু বললে বাক্যটি সম্পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে না। আরও কিছু শোনার ইচ্ছা হয়। বাক্যটি এভাবে পূর্ণাঙ্গ করা যায়: চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে। এখানে আকঙ্ক্ষা নিবৃত্তি হয়েছে বলে এটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য।

২. আসত্তি: মনোভাব প্রকাশের জন্য বাক্যে শব্দগুলো এমনভাবে পর পর সাজাতে হবে যাতে মনোভাব প্রকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়। বাক্যের অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসই আসত্তি। যেমন- কাল আমাদের স্কুলে পুরস্কার বিতরণী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু ‘কাল হবে অনুষ্ঠিত বিতরণী স্কুলে আমাদের উৎসব পুরস্কার’ বললে বাক্য তার আসত্তি হারাবে।

৩. যোগ্যতা: বাক্যস্থিত পদসমূহের অন্তর্গত এবং ভাবগত মিলবন্ধনের নাম যোগ্যতা। যেমন – বর্ষার বৃষ্টিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়। এটি একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বাক্য। কারণ – বাক্যটিতে পদসমূহের অর্থগত এবং ভাবগত সমন্বয় রয়েছে। কিন্তু ‘বর্ষার রৌদ্র প্লাবনের সৃষ্টি করে।’ বললে বাক্যটি ভাবপ্রকাশের যোগ্যতা হারাবে। কারণ – রৌদ্র প্লাবনের সৃষ্টি করে না। শব্দের যোগ্যতার সঙ্গে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জড়িত থাকে।

(ক) রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতা: প্রকৃতি-প্রত্যয়জাত অর্থে শব্দ সর্বদা ব্যবহৃত হয়। যোগ্যতার দিক থেকে রীতিসিদ্ধ অর্থের দিকে লক্ষ্য রেখে কতকগুলো শব্দ ব্যবহার করতে হয়। যেমন –


শব্দ : বাধিত

রীতিসিদ্ধ অর্থ/ব্যবহারিক অর্থ : অনুগৃহীত/কৃতজ্ঞ

প্রকৃতি+প্রত্যয় : বাধ + ইত

প্রকৃতি-প্রত্যয়জাত অর্থ :  বাধাপ্রাপ্ত


শব্দ : তৈল

রীতিসিদ্ধ অর্থ/ব্যবহারিক অর্থ : তেল/তিল জাতীয়

প্রকৃতি+প্রত্যয় : তিল + ষ্ণ

প্রকৃতি-প্রত্যয়জাত অর্থ : তিলজাত স্নেহ পদার্থ/ যে কোনো শস্যের রস।


(খ) দুর্বোধ্যতা: অপ্রচলিত ও দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করলে বাক্যের যোগ্যতা বিনষ্ট হয়। যেমন – তুমি আমার সঙ্গে প্রপঞ্চ করেছো। এখানে প্রপঞ্চ শব্দটি চাতুরি বা মায়া অর্থে ব্যবহৃত কিন্তু বাংলায় ‘প্রপঞ্চ’ শব্দটি অপ্রচলিত।

(গ) উপমার ভুল প্রয়োগ: ঠিকভাবে উপমা-অলংকার ব্যবহার না করলে যোগ্যতার হানি ঘটে। যেমন – আমার হৃদয়-মন্দিরে আশার বীজ উপ্ত হল। বীজ ক্ষেতে বপন করা হয়, মন্দিরে নয়। কাজেই বাক্যটি হওয়া উচিত, আমার হৃদয়-ক্ষেত্রে আশার বীজ উপ্ত হল।

(ঘ) বাহুল্য দোষ: প্রয়োজনের অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহারে বাহুল্য দোষ ঘটে এবং এর ফলে শব্দ তার যোগ্যতাগুণ হারিয়ে থাকে। যেমন – দেশের সব আলেমগণই এ ব্যাপারে আমাদের সমর্থন দান করেন। ‘আলেমগণ’ বহুবচন-বাচক শব্দ। এর সঙ্গে ‘সব’ শব্দটির অতিরিক্ত ব্যবহার বাহুল্য দোষ সৃষ্টি করেছে।

(ঙ) বাগধারার শব্দ পরিবর্তন: বাগধারা ভাষাবিশেষের ঐতিহ্য। এর যথেচ্ছ পরিবর্তন করলে শব্দ তার যোগ্যতা হারায়। যেমন – ‘অরণ্যে রোদন’ অর্থ –  নিষ্ফল আবেদন। এর পরিবর্তে যদি বলা হয়, ‘বনে ক্রন্দন’ তবে বাগধারাটি তার যোগ্যতা হারাবে।

(চ) গুরুচণ্ডালী দোষ: তৎসম শব্দের সঙ্গে দেশীয় শব্দের প্রয়োগ কখনো কখনো গুরুচণ্ডালী দোষ সৃষ্টি করে। এ দোষে দুষ্ট শব্দ তার যোগ্যতা হারায়। ‘গরুর গাড়ি’, ‘শবদাহ’, ‘মড়াপোড়া’ প্রভৃতি স্থলে যথাক্রমে ‘গরুর শকট’, ‘শবপোড়া’, ‘মড়াদাহ’ প্রভৃতির ব্যবহার গুরুচণ্ডালী দোষ সৃষ্টি করে।

বাক্যের অংশ

প্রতিটি বাক্যে দুটি অংশ থাকে – উদ্দেশ্য ও বিধেয়। বাক্যের যে অংশে কারও সম্পর্কে কিছু বলা হয় তাকে উদ্দেশ্য এবং উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যা বলা হয় তাকে বিধেয় বলে। যেমন – খোকা এখন বই পড়ছে। বাক্যে খোকা এখন (উদ্দেশ্য) ও বই পড়ছে (বিধেয়)।

উদ্দেশ্যের প্রকারভেদ

  • একটি মাত্র পদবিশিষ্ট কর্তৃপদকে সরল উদ্দেশ্য বলে।
  • উদ্দেশ্যের সঙ্গে বিশেষণাদি যুক্ত থাকলে তাকে সম্প্রসারিত উদ্দেশ্য বলে।

উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ : বিশেষণযোগে:

সম্প্রসারণ : কুখ্যাত 

উদ্দেশ্য : দস্যুদল

বিধেয় : ধরা পড়েছে।



উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ : সম্বন্ধ পদযোগে:

সম্প্রসারণ : হাসিমের 

উদ্দেশ্য : ভাই

বিধেয় : এসেছে।


উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ : সমার্থক বাক্যাংশযোগে:

সম্প্রসারণ : যারা অত্যন্ত পরিশ্রমী 

উদ্দেশ্য : তারাই

বিধেয় : উন্নতি করে।


উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ : অসমাপিকা ক্রিয়া-বিশেষণযোগে:

সম্প্রসারণ : চাটুকার পরিবৃত হয়েই 

উদ্দেশ্য : বড় সাহেব

বিধেয় : থাকেন।


বিধেয়ের সম্প্রসারণ : ক্রিয়া-বিশেষণযোগে:

উদ্দেশ্য : ঘোড়া

সম্প্রসারণ : দ্রুত

বিধেয় : চলে।


বিধেয়ের সম্প্রসারণ : ক্রিয়া-বিশেষণীয়যোগে:

উদ্দেশ্য : জেট বিমান

সম্প্রসারণ : অতিশয় দ্রুত

বিধেয় : চলে।


বিধেয়ের সম্প্রসারণ : কারকাদিযোগে:

উদ্দেশ্য : ভুবনের

সম্প্রসারণ : ঘাটে ঘাটে 

বিধেয় : ভাসিছে।


বিধেয়ের সম্প্রসারণ : ক্রিয়া বিশেষণ-স্থানীয় বাক্যাংশযোগে:

উদ্দেশ্য : তিনি

সম্প্রসারণ : যে ভাবেই হোক 

বিধেয় : আসবেন।


বিধেয়ের সম্প্রসারণ : বিধেয় বিশেষণযোগে:

উদ্দেশ্য : ইনি

সম্প্রসারণ : আমার বিশেষ 

বিধেয় : অন্তরঙ্গ বন্ধু।


বাক্য-প্রকরণ

গঠন অনুযায়ী বাক্য তিন প্রকার। যথা – সরল বাক্য, মিশ্র বা জটিল বাক্য ও যৌগিক বাক্য।

১. সরল বাক্য: যে বাক্যে একটি মাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। যথা – পুকুরে পদ্মফুল জন্মে। এখানে ‘পদ্মফুল’ উদ্দেশ্য এবং ‘জন্মে’ বিধেয়। এ রকম – বৃষ্টি হচ্ছে। তোমরা বাড়ি যাও। খোকা আজ সকালে স্কুলে গিয়েছে। স্নেহময়ী জননী (উদ্দেশ্য) স্বীয় সন্তানকে প্রাণাপেক্ষা ভালোবাসেন (বিধেয়)।

২. মিশ্র বা জটিল বাক্য: যে বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্যের এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য পরস্পর সাপেক্ষভাবে ব্যবহৃত হয় তাকে মিশ্র বা জটিল বাক্য বলে। যথা –


আশ্রিত বাক্য : যে পরিশ্রম করে,

প্রধান খণ্ডবাক্য : সে-ই সুখ লাভ করে।


আশ্রিত বাক্য : সে যে অপরাধ করেছে,

প্রধান খণ্ডবাক্য : তা মুখ দেখেই বুঝেছি।


আশ্রিত বাক্য : যে ভিখারী,

প্রধান খণ্ডবাক্য : তাকে ভিক্ষা দাও।


 

আশ্রিত খণ্ডবাক্য তিন প্রকার। যথা –

বিশেষ্য-স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য (Noun clause): যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য (Subordinate clause) প্রধান খণ্ডবাক্যের (Principle clause) যে কোনো পদের আশ্রিত থেকে বিশেষ্যের কাজ করে তাকে বিশেষ্যস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যথা – আমি মাঠে গিয়ে দেখলাম, খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। (বিশেষ্য স্থানীয় খণ্ডবাক্য ক্রিয়ার কর্মরুপে ব্যবহৃত হয়), তিনি বাড়ি আছেন কি না, আমি জানি না। ব্যাপারটি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে ফল ভাল হবে না।

বিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য (Adjective clause): যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য প্রধান খণ্ডবাক্যের অন্তর্গত কোনো বিশেষ্য বা সর্বনামের দোষ, গুণ এবং অবস্থা প্রকাশ করে তাকে বিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যথা – লেখাপড়া করে যেই, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সেই। ‘খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি, আমার দেশের মাটি’। ‘ধনধান্য পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা।’ যে এ সভায় অনুপস্থিত, সে বড় দুর্ভাগা।

ক্রিয়া-বিশেষণ স্থানীয় খণ্ডবাক্য (Adverbial clause): যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য ক্রিয়াপদের স্থান, কাল ও কারণ নির্দেশক অর্থে ব্যবহৃত হয় তাকে ক্রিয়া-বিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যেমন – ‘যতই করিবে দান, তত যাবে বেড়ে।’ তুমি আসবে বলে আমি অপেক্ষা করছি।যেখানে আকাশ আর সমুদ্র একাকার হয়ে গেছে, সেখানেই দিকচক্রবাল।

৩. যৌগিক বাক্য : পরস্পর নিরপেক্ষ দুইবা ততোধিক সরল বা মিশ্র বাক্য মিলিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করলে তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত নিরপেক্ষ বাক্যগুলো (এবং, ও, কিন্তু, অথবা, অথচ, কিংবা, বরং, তথাপি) প্রভৃতি সমুচ্চয়ী অব্যয়যোগে সংযুক্ত বা সমন্বিত থাকে। যেমন – জননেতা জনগণকে উৎসাহিত করলেন বটে, কিন্তু কোনো পথ দেখাতে পারলেন না। বস্ত্র মলিন কেন, কেহ জিজ্ঞাসা করিলে সে ধোপাকে গালি পাড়ে, অথচ ধৌত বস্ত্রে তাহার গৃহ পরিপূর্ণ। উদয়াস্ত পরিশ্রম করব, তথাপি অন্যের দ্বারস্থ হব না।

স্বরভঙ্গি বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে বাক্য পাঁচ প্রকার। যথা –

১. বিবৃতিমূলক বাক্য (Assertive sentence) : সাধারণ ভাবে হাঁ বা না বাচক বাক্য। বিবৃতিমূলক বাক্য দু প্রকার হাতে পারে। হাঁ বাচক বাক্য (Affirmative sentence) এবং না বাচক বাক্য (Negative Sentence)। যেমন – হাঁ বাচক বাক্য: সে ঢাকা যাবে। আমি বলতে চাই।না বাচক বাক্য: সে ঢাকা যাবে না। আমি বলতে চাই না।

২. প্রশ্নবাচক বাক্য (Interrogative sentence) : এ ধরনের বাক্যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়। যথা – কোথায় যাচ্ছ? কী পড়ছ? কেন এসেছ? যাবে নাকি?

৩. আবেগসূচক বাক্য (Exclamatory sentence) : যে বাক্যে আশ্চর্যজনক কিছু বোঝায় বা মনের আবেগ প্রকাশ করা হয় তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে। যথা – তাজ্জব ব্যাপার! সমুদ্রের সে কী ভীষণ গর্জন, ঢেউগুলো পাহাড়ের চূড়ার মত উঁচু, আমি তো ভয়ে মরি! হুররে, আমরা জিতেছি!

৪. ইচ্ছাসূচক বাক্য (Optative sentence) : এ ধরনের বাক্যে শুভজনক প্রার্থনা, আশিস, আকাক্সক্ষা করা হয়। যথা – তোমার মঙ্গল হোক। ঈশ্বর তোমাকে জয়ী করুন। পরীক্ষায় সফল হও। দীর্ঘজীবী হও।

৫. আদেশসূচক বাক্য (Imperative sentence) : এ ধরনের বাক্যে আদেশ করা হয়। যথা – শিক্ষক মহোদয় শ্রেণিকক্ষে এলে উঠে দাঁড়াবে। চুপটি করে বস। উঠে দাঁড়াও। দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যুদ্ধ কর।
স্বরভঙ্গি তথা বাগভঙ্গির সাহায্যে ক্রোধ, আদর, আনন্দ, দুঃখ, বিরক্তি, বিস্ময়, লজ্জা ও ঘৃণা প্রভৃতি বিভিন্নপ্রকার অনুভূতি প্রকাশ করা যায়। ছেদ ও বিরতিসূচক চিহ্নগুলো বাগভঙ্গির লিখিত আকার প্রকাশে সাহায্য করে। দাঁড়ি, কমা, প্রশ্নবোধক ও বিস্ময়সূচক চিহ্ন বাক্যের ভাব ও অর্থবোধের জন্য সহায়ক। যেমন –
১. সাধারণ বিবৃতিতে: সে আজ যাবে।
২. জিজ্ঞাসায়: সে আজ যাবে?
৩. বিস্ময় প্রকাশে: সে আজ যাবে!
৪. ক্রোধ প্রকাশে: আমি তোমাকে দেখে নেব।
৫. আদর বোঝাতে: বড্ড শুকিয়ে গেছিস রে।
৬. আনন্দ প্রকাশে: বেশ বেশ, খুব ভাল হয়েছে।
৭. দুঃখ প্রকাশে: আহা, গাছ থেকে পড়ে পা ভেঙেছে।
৮. বিরক্তি প্রকাশে: আঃ, ভাল লাগছে না, এখান থেকে যাও তো।
৯. ভীতি প্রদর্শনে: যাবি কি না বল?
১০. লজ্জা প্রকাশে: ছিঃ ছিঃ তার সঙ্গে পারলে না।
১১. ধিক্কার দিতে: ছিঃ তোমার এই কাজ!
১২. অনুরোধ প্রকাশে: কাজটি করে দাও না ভাই।
১৩. প্রার্থনা: ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন।

বাক্য রূপান্তর

অর্থের কোনো পরিবর্তন না করে এক প্রকারের বাক্যকে অন্য প্রকার বাক্যে রূপান্তর করার নামই বাক্য রূপান্তর। বাক্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মৌলিক অর্থ ঠিক রাখতে হয়। প্রয়োজনে শব্দের কিছুটা পরিবর্তন, নতুন শব্দযোগ কিংবা শব্দ বর্জন করার দরকার পড়ে।

সরল বাক্যকে মিশ্র বাক্যে রূপান্তর:
সরল বাক্যকে মিশ্র বাক্যে পরিণত করতে হলে সরল বাক্যের কোনো অংশকে খণ্ডবাক্যে পরিণত করতে হয় এবং উভয়ের সংযোগ-বিধানে সম্বন্ধসূচক (যদি, তবে, যে, সে) প্রভৃতি পদের সাহায্যে উক্ত খণ্ডবাক্য ও প্রধান বাক্যটিকে পরস্পর সাপেক্ষ করতে হয়। যথা –

সরল বাক্য: ভাল ছেলেরা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।

মিশ্র বাক্য: যারা ভাল ছেলে, তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।

সরল বাক্য: তার দর্শনমাত্রই আমরা প্রস্থান করলাম।

মিশ্র বাক্য: যে-ই তার দর্শন পেলাম, সে-ই আমরা প্রস্থান করলাম।

সরল বাক্য: ভিক্ষুককে দান কর।

মিশ্র বাক্য: যে ভিক্ষা চায়, তাকে দান কর।

মিশ্র বাক্যকে সরল বাক্যে রূপান্তর:
মিশ্র বাক্যকে সরল বাক্যে রূপান্তর করতে হলে মিশ্র বাক্যের অপ্রধান খণ্ডবাক্যটিকে সংকুচিত করে একটি পদ বা একটি বাক্যাংশে পরিণত করতে হয়। যথা –

মিশ্র বাক্য: যাদের বুদ্ধি নেই, তারাই এ কথা বিশ্বাস করবে।

সরল বাক্য: বুদ্ধিহীনরাই এ কথা বিশ্বাস করবে।

মিশ্র বাক্য: যত দিন জীবিত থাকব, তত দিন এ ঋণ স্বীকার করব।

সরল বাক্য: আজীবন এ ঋণ স্বীকার করব।

মিশ্র বাক্য: যে সকল পশু মাংস ভোজন করে, তারা অত্যন্ত বলবান।

সরল বাক্য: মাংসভোজী পশু অত্যন্ত বলবান।

সরল বাক্যকে যৌগিক বাক্যে রূপান্তর:
সরল বাক্যকে যৌগিক বাক্যে পরিণত করতে হলে সরল বাক্যের কোনো অংশকে নিরপেক্ষ বাক্যে রূপান্তর করতে হয় এবং যথসম্ভব সংযোজক বা বিয়োজক অব্যয়ের প্রয়োগ করতে হয়। যেমন –

সরল বাক্য: তিনি আমাকে পাঁচ টাকা দিয়ে বাড়ি যেতে বললেন।

যৌগিক বাক্য: তিনি আমাকে পাঁচ টাকা দিলেন এবং বাড়ি যেতে বললেন।

সরল বাক্য: পরীক্ষায় সফলতার জন্য এখন থেকেই পড়া উচিৎ।

যৌগিক বাক্য: এখন থেকেই পড়া উচিৎ, তবেই পরীক্ষায় সফল হবে।

সরল বাক্য: আমি বহু কষ্টে শিক্ষা লাভ করেছি।

যৌগিক বাক্য: আমি বহু কষ্ট করেছি, ফলে শিক্ষা লাভ করেছি।

যৌগিক বাক্যকে সরল বাক্যে রূপান্তর:
বাক্যসমূহের একটি সমাপিকা ক্রিয়াকে অপরিবর্তিত রাখতে হয়।অন্যান্য সমাপিকা ক্রিয়াকে অসমাপিকা ক্রিয়ায় পরিণত করতে হয়।অব্যয় পদ থাকলে তা বর্জন করতে হয়।কোনো কোনো স্থলে একটি বাক্যকে হেতুবোধক বাক্যাংশে পরিণত করতে হয়। যথা –

যৌগিক বাক্য: সত্য কথা বলি নি, তাই বিপদে পড়েছি।

সরল বাক্য: সত্য কথা না বলে বিপদে পড়েছি।

যৌগিক বাক্য: তার বয়স হয়েছে, কিন্তু বুদ্ধি হয় নি।

সরল বাক্য: তার বয়স হলেও বুদ্ধি হয় নি।

যৌগিক বাক্য: মেঘ গর্জন করে, তবে ময়ূর নৃত্য করে।

সরল বাক্য: মেঘ গর্জন করলে ময়ূর নৃত্য করে।

যৌগিক বাক্যকে মিশ্র বাক্যে রূপান্তর:
যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত পরস্পর নিরপেক্ষ বাক্য দুটোর প্রথমটির পূর্বে ‘যদি’ কিংবা ‘যদিও’ এবং দ্বিতীয়টির পূর্বে ‘তা হলে’ কিংবা ‘তথাপি’ অব্যয়গুলো ব্যবহার করতে হয়। যেমন –

যৌগিক বাক্য: দোষ স্বীকার কর, তোমাকে কোনো শস্তি দেব না।

মিশ্র বাক্য: যদি দোষ স্বীকার কর, তা হলে তোমাকে কোনো শাস্তি দেব না।

যৌগিক বাক্য: তিনি অত্যন্ত দরিদ্র কিন্তু তাঁর অন্তঃকরণ অতি উচ্চ।

মিশ্র বাক্য: যদিও তিনি অত্যন্ত দরিদ্র, তথাপি তাঁর অন্তঃকরণ অতি উচ্চ।

যৌগিক বাক্য: এ গ্রামে একটি দরগাহ আছে, সেটি পাঠানযুগে নির্মিত।

মিশ্র বাক্য: এ গ্রামে যে দরগাহ আছে, সেটি পঠানযুগে নির্মিত।

মিশ্রবাক্যকে যৌগিক বাক্যে রূপান্তর:
মিশ্র বাক্যকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন করতে হলে খÐবাক্যগুলোকে এক একটি স্বাধীন বাক্যে পরিবর্তন করে তাদের মধ্যে সংযোজক অব্যয়ের ব্যবহার করতে হয়। যেমন –

মিশ্র বাক্য: যদি সে কাল আসে, তা হলে আমি যাব।
যৌগিক বাক্য: সে কাল আসবে এবং আমি যাব।

মিশ্র বাক্য: যখন বিপদ আসে, তখন দুঃখও আসে।
যৌগিক বাক্য: বিপদ এবং দুঃখ এক সময়ে আসে।

মিশ্র বাক্য: যদিও তাঁর টাকা আছে, তথাপি তিনি দান করেন না।
যৌগিক বাক্য: তাঁর টাকা আছে কিন্তু তিনি দান করেন না।

নির্দেশক বাক্য:
নির্দেশক বাক্যে কোন তথ্য, সংবাদ বা ঘটনার বর্ণনা বা বিবৃতি নির্দেশিত হয়। এ ধরনের বাক্য দুটো ভাগে বিভক্ত। যথা –

১. সদর্থক বা অস্তিবাচক বাক্য: বিশ্বকাপে পাকিস্তান জিতেছে। আজ দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

২. নঞর্থক বা নেতিবাচক বাক্য: আজ ট্রেন চলবে না। তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।

অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর:

অস্তি:বিবাহ সম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল।
নেতি:বিবাহ সম্বন্ধে আমার যাচাই করা আবশ্যক ছিল না।

অস্তি:পঞ্জিকার পাতা উল্টাইতে থাকিল।
নেতি:পঞ্জিকার পাতা উল্টানো বন্ধ রহিল না।

অস্তি:হৈমন্তী চুপ করিয়া রহিল।
নেতি:হৈমন্তী চুপ না থাকিয়া পারিল না।

অস্তি:সে কথাই এরা ভাবে।
নেতি:সে কথাই এরা না ভেবে পারে না।

অস্তি:বাড়িটা তারা দখল করেছে।
নেতি:বাড়িটা তারা দখল না করে ছাড়ে না।

অস্তি:তবে নালিশটা অযৌক্তিক।
নেতি:তবে নালিশটা যৌক্তিক নয়।

অস্তি:কোথাও তক্তা অদৃশ্য হয়ে যায়।
নেতি:কোথাও তক্তা অদৃশ্য না হয়ে যায় না।

অস্তি:কাঠের পুলের অবস্থাও ওরকম।
নেতি:কাঠের পুলের অবস্থাও অন্যরকম নয়।

নেতিবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর:

নেতি:দেশের প্রচলিত ধর্মকর্মে তাঁহার আস্থা ছিল না।
অস্তি:দেশের প্রচলিত ধর্মকর্মে তাঁহার অনাস্থা ছিল।

নেতি:কিন্তু বরফ গলিল না।
অস্তি:কিন্তু বরফ অগলিত রহিল।

নেতি:হৈম তাহার অর্থ বুঝিল না।
অস্তি:হৈম তাহার অর্র্থ বুঝিতে অসমর্থ হইল।

নেতি:দেবার্চনার কথা কোনদিন তিনি চিন্তাও করেন নাই।
অস্তি:দেবার্চনার কথা সর্বদা তাহার চিন্তার বাহিরে ছিল।

নেতি:এসব কথা সে মুখে আনিতে পারিত না।
অস্তি:এসব কথা সে মুখে আনিতে অপারগ ছিল।

নেতি:দেখিসে বিছানায় নাই।
অস্তি:দেখি সে বিছানায় অনুপস্থিত।

নেতি:তারা যাবে না কোথাও।
অস্তি:তারা এখানেই থাকবে।

নেতি:কারো মুখে কোন কথা সরে না।
অস্তি:প্রত্যেকেই নীরব হয়ে থাকে।

নেতি:সেখানে কেউ নেই।
অস্তি:জায়গাটা নির্জন।

নেতি:তাদের ভুলটা ভাঙতে দেরি হয় না।
অস্তি:অচিরেই তাদের ভুল ভাঙে।

নেতি:সে একটু বিস্মিত না হয়ে পারে না।
অস্তি:সে একটু বিস্মিত হয়।

নেতি:গাছটি উপড়ানোর জন্যে কারো হাত এগিয়ে আসে না।
অস্তি:গাছটি উপড়ানো থেকে সবাই বিরত থাকে।

নেতি:হয়তো তার যাত্রা শেষ হয় নাই।
অস্তি:হয়তো এখনো তার যাত্রা চলছে।

নেতি:ওকে চেনাই যায় না।
অস্তি:ও অচেনা মনে হয়।

নেতি:এ অবস্থায় কেউ কাউকে চিনতে পারে না।
অস্তি:এ অবস্থায় সবার কাছে অপরিচিত মনে হয়।

নেতি:ওদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
অস্তি:ওরা সবাই অনুপস্থিত ছিল।

নেতি:আমরা নড়লাম না।
অস্তি:আমরা অনড় রইলাম।

নেতি:এক পা দু পা করে না এগিয়ে পারে না।
অস্তি:এক পা দু পা করে এগিয়ে যেতেই হয়।

নেতি:কলিমদ্দি সে সব জানে না।
অস্তি:কলিমদ্দির সে সব অজানা।

বাক্যে পদ-সংস্থাপনার ক্রম
বাক্যের অন্তর্ভূক্ত পদগুলো উপযুক্ত স্থানে বসানোই পদ-সংস্থাপনার ক্রম। একে কেউ পদক্রম বলে থাকেন। বাক্যের অন্তর্গত পদগুলো বসানোর নিয়মাবলি নিচে দেওয়া হল।

১. সাধারণ বাক্যের প্রথমে সম্প্রসারকসহ উদ্দেশ্য (কর্তা) এবং বাক্যের শেষে সম্প্রসারকসহ বিধেয় (ক্রিয়াপদ) বসবে।
যেমন – মনোযোগী ছাত্ররাই (সম্প্রসারিত কর্তৃপদ) রীতিমত পড়াশোনা করে (সম্প্রসারিত ক্রিয়াপদ)।
কিন্তু বাক্যকে শক্তিশালী করার জন্য এর ব্যতিক্রমও হতে পরে। যেমন – লোকটি ছিল অত্যন্ত চতুর।

২. সম্বন্ধপদ বিশেষ্যের পূর্বে বসবে।
যেমন – “ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে।”
অর্থ-সঙ্গতি রক্ষার জন্য বা ছন্দের অনুরোধে সম্বন্ধপদ পরেও বসতে পারে। যেমন-  “হে আদি জননী সিন্ধু, বসুন্ধরা সন্তান তোমার।”

৩. কারক-বিভক্তিযুক্ত পদ বা অসমাপিকা ক্রিয়াপদ বিশেষণের আগে বসে।যেমন-  লোকটি ব্যবহারে খুবই ভদ্র। রাজশাহীর আম খেতে চমৎকার।

৪. বিধেয় বিশেষণ সর্বদাই বিশেষ্যের পরে বসে।
যথা – লোকটি যে জ্ঞানী তাতে সন্দেহ নেই।

৫. বাক্যের প্রথমে কর্তা, পরে কর্ম এবং শেষে ক্রিয়াপদ বসে।
যেমন – আমি ‘শাহানামা’ পড়েছি।
তবে, কবিতায় এর ব্যতিক্রম হতে পারে।
যেমন – ‘লহ নমস্কার, সুন্দর আমার।’
বাক্যে জোর দিতে গেলেও নিয়মের ব্যতিক্রম হতে পারে।
যেমন – জানি, তোমার মুরোদ কতটুকু।

৬. বহুপদময় বিশেষণ অবশ্যই বিশেষ্যের পূর্বে বসে।
যেমন – তোমার দাঁত-বের-করা হাসি দেখলে সবারই পিত্ত জ্বলে যায়।

বাক্যে ‘না’/‘নে’ অব্যয়ের ব্যবহার:
১. সামপিকা ক্রিয়ার পরে বসে। যেমন – আমি যাব না। আমি ভাত খাই না, রুটি খাই।

২. অসমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে। যেমন – না চাইতে দানের কোনো মর্যাদা নেই।

৩. বিশেষণীয় বিশেষণরূপে বিশেষণের পূর্বে বসে। যেমন – না ভাল, না মন্দ।

৪. ‘যদি দিয়ে বাক্য আরম্ভ করলে ‘না’ সমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে। যেমন – তুমি যদি আজ না যাও, তা হলে খুবই ক্ষতি হবে।

‘না’ (নঞ ব্যতীত) অন্য অর্থে:
১. বিকল্পার্থে: জিজ্ঞাসাবাচক বাক্যে – তুমি বাড়ি যাবে না আমি যাব?
২. অনুরোধ বা আদেশ অর্থে (নিরর্থকভাবে বাক্যের শেষে): একটা গান গাও না ভাই।

 


নমুনা প্রশ্ন


১. কোন বাক্যটি দ্বারা অনুরোধ বোঝায়?

ক) তুমি বাড়ি যাও

খ) ক্ষমা কর অপরাধ

গ) দূর হও

ঘ) কাল একবার এসো

উত্তরঃ ঘ


২. ‘হয় রওনা হও, নতুবা গাড়িতে ওঠ।’ কোন বাক্যের –  

ক) যৌগিক বাক্য

খ) মিশ্র বাক্য

গ) সরল বাক্য

ঘ) সন্দেহবাচক বাক্য

উত্তরঃ ক


৩. আশ্রিত খণ্ডবাক্য কত প্রকার?

ক) দুই প্রকার

খ) তিন প্রকার

গ) চার প্রকার

ঘ) পাঁচ প্রকার

উত্তরঃ খ


৪. ‘মেঘ গর্জন করে, তবে ময়ূর নৃত্য করে।’ এটি কোন ধরনের বাক্য?

ক) জটিল বাক্য

খ) সরল বাক্য

গ) মিশ্র বাক্য

ঘ) যৌগিক বাক্য

উত্তরঃ ঘ


৫. ‘ছিঃ ছিঃ, তার সঙ্গে পারলে না।’ বাক্যে কি ভাব প্রকাশ পেয়েছে?

ক) বিস্ময়

খ) ঘৃণা

গ) ধিক্কার

ঘ) লজ্জা

উত্তরঃ ঘ


৬. ‘কান্তা ও কামিনী কৌতুকে যামিনী যাপন করিল।’ এটি কোন বাক্য – 

ক) সরল বাক্য

খ) জটিল বাক্য

গ) যৌগিক বাক্য

ঘ) আশ্রিত বাক্য

উত্তরঃ গ


৭. ‘পৃথিবী চিরস্থায়ী নয়।’ বাক্যটির অস্তিবাচক রূপ কী?

ক) পৃথিবী চিরস্থায়ী

খ) পৃথিবী অচিরস্থায়ী

গ) পৃথিবী চিরকাল থাকবে না

ঘ) পৃথিবী ধ্বংসশীল

উত্তরঃ ঘ


৮. একটি মাত্র পদবিশিষ্ট কর্তৃপদকে বলা হয় –

ক) প্রধান উদ্দেশ্য

খ) একক উদ্দেশ্য

গ) সরল উদ্দেশ্য

ঘ) সাধারণ উদ্দেশ্য

উত্তরঃ গ


৯. কোনটি আদেশসূচক বাক্য?

ক) বসলে খুশি হব।

খ) তুমি কি বসবে?

গ) তোমাকে বসতে বলেছি।

ঘ) এখানে এস।

উত্তরঃ ঘ


১০. বাক্যে বহুপদময় বিশেষণ কোথায় বসে?

ক) প্রথমে

খ) সর্বনামের পূর্বে

গ) বিশেষ্যের পূর্বে

ঘ) শেষে

উত্তরঃ গ


১১. বাক্য কী?

ক) ভাষার উপাদান

খ) ভাষার ভিত্তি

গ) ভাষার উপকরণ

ঘ) ব্যাকরণের প্রাণ

উত্তরঃ গ


১২. বাক্যের অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসকে কী বলে?

ক) আসক্তি

খ) আকঙ্ক্ষা

গ) যোগ্যতা

ঘ) আসত্তি

উত্তরঃ ঘ


১৩. ‘টাকা পেলেই ধার শোধ করব।’ অর্থানুসারে বাক্যটি কোন প্রকার?

ক) জটিল

খ) অর্থবাচক

গ) সন্দেহবাচক

ঘ) শর্তবাচক

উত্তরঃ ঘ


১৪. ‘তুমি আমার সঙ্গে প্রপঞ্চ করেছো।’ বাক্যটিতে হয়েছে – 

ক) বাহুল্য দোষ

খ) গুরুচণ্ডালি দোষ

গ) উপমার ভুল প্রয়োগ

ঘ) দুর্বোধ্যতা

উত্তরঃ ঘ


১৫. কোনটি সরল বাক্য?

ক) তার বয়স হলেও বুদ্ধি হয় নি।

খ) খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি, আমার দেশের মাটি।

গ) যে ভিখারী তাকে ভিক্ষা দাও।

ঘ) বিপদ ও দুঃখ এক সময়ে আসে।

উত্তরঃ ক


১৬. পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা ততোধিক সরল বা মিশ্র বাক্য মিলিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করলে তাকে কী বলে?

ক) সরল বাক্য

খ) মিশ্র বাক্য

গ) জটিল বাক্য

ঘ) যৌগিক বাক্য

উত্তরঃ ঘ


১৭. বাক্যস্থিত পদসমুহের অন্তর্গত এবং ভাবগত মিলবন্ধনের নাম কী?

ক) আকঙ্ক্ষা

খ) যোগ্যতা

গ) আসত্তি

ঘ) সরল উদ্দেশ্য

উত্তরঃ খ


১৮. বাগধারার শব্দ পরিবর্তন করলে বাক্য তার কোন গুণটি হরায়?

ক) যোগ্যতা

খ) আকঙ্ক্ষা

গ) আসত্তি

ঘ) কোন গুণ হারায় না

উত্তরঃ ক


১৯. ‘তোমরা এখন যাও’ বাক্যটিতে প্রকাশ পেয়েছে-

ক) উপদেশ

খ) আদেশ

গ) অনুরোধ

ঘ) প্রার্থনা

উত্তরঃ খ


২০. ‘ঘোড়া তাড়াতাড়ি চলে’- বাক্যটি গঠিত হয়েছে-

ক) বিশেষণ যোগে

খ) ক্রিয়া বিশেষণ যোগে

গ) বিধেয় বিশেষণ যোগে

ঘ) কারকাদি যোগে

উত্তরঃ খ


২১. বাক্যের উদ্দেশ্যের সঙ্গে বিশেষণাদি যুক্ত থাকলে তাকে কী বলে?

ক) সম্প্রসারিত উদ্দেশ্য

খ) বিধেয় উদ্দেশ্য

গ) সম্পূরক উদ্দেশ্য

ঘ) পূর্ণ উদ্দেশ্য

উত্তরঃ ক


২২. প্রয়োজনের অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহারে বাক্যে কোন দোষ ঘটে?

ক) গুরুচণ্ডালী

খ) আকাক্সক্ষা

গ) দুর্বোধ্যতা

ঘ) বাহুল্য-দোষ

উত্তরঃ ঘ


২৩. ‘আমি বহু কষ্টে শিক্ষা লাভ করেছি।’ এটি কোন ধরনের বাক্য?

ক) সরল বাক্য

খ) জটিল বাক্য

গ) যৌগিক বাক্য

ঘ) মিশ্রবাক্য

উত্তরঃ ক


২৪. কোনটি বিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য?

ক) ধনধান্য পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা।

খ) তুমি আসবে বলে আমি অপেক্ষা করছি।

গ) তিনি বাড়ি আছেন কিনা আমি জানি না।

ঘ) সবগুলো

উত্তরঃ ক


২৫. ‘যত্ন না করলে রত্ন পাবে না।’ এটি কোন প্রকার বাক্য?

ক) সরল বাক্য

খ) মিশ্রবাক্য

গ) যৌগিক বাক্য

ঘ) জটিল বাক্য

উত্তরঃ ক


তথ্যসূত্র:

১. রফিকুল ইসলাম, পবিত্র সরকার ও মাহবুবুল হক, প্রমিত বাংলা ব্যবহারিক ব্যাকরণ (বাংলা একাডেমি, জানুয়ারি ২০১৪)
২. রফিকুল ইসলাম ও পবিত্র সরকার, প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, প্রথম খণ্ড (বাংলা একাডেমি, ডিসেম্বর ২০১১)
৩. রফিকুল ইসলাম ও পবিত্র সরকার, প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, দ্বিতীয় খণ্ড (বাংলা একাডেমি, ডিসেম্বর ২০১১)
৪. মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ (ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩)
৫. নির্মল দাশ, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও তার ক্রমবিকাশ (বিশ্বভারতী ২০০০)
৬. কাজী দীন মুহম্মদ ও সুকুমার সেন, অভিনব ব্যাকরণ (ঢাকা ১৯৪৮)
৭. মুহম্মদ আবদুল হাই, ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব (১৯৬৪)
৮. ড. হায়াৎ মামুদ, ভাষাশিক্ষা : বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (২০০৪)
৯. ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ভাষাবিধি : বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও প্রবন্ধ রচনা (আদিল ব্রাদার্স, জানুয়ারি ২০০৯)
১০. ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (অগ্নি পাবলিকেশন্স, এপ্রিল ২০০৪)
১১. ড. মুহম্মদ এনামুল হক ও শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (বাংলা একাডেমি, স্বরবর্ণ অংশ: ডিসেম্বর১৯৭৪ ও ব্যঞ্জনবর্ণ অংশ: জুন ১৯৮৪)